পাঁচ মাসে ৪৭৬ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ৪৭৬ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে দেশীয় মুদ্রায় প্রতি এক ডলার ১০৯ টাকা ধরে যার পরিমাণ ৫১ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশের পণ্য আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫৭২ কোটি ডলারের। একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি ডলারের পণ্য। এতে ৪৭৬ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। গত বছরের একই সময়ে বাণিজ্যে ঘাটতি ছিলো ১ হাজার ১৮২ কোটি ডলার। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বাণিজ্যে ঘাটতি কমেছে ৫৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছর দেশে ডলারের প্রকট আকার ধারণ করে। এরপরে বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে। এরফলে এলসি খোলার হার কমে যায়। এসব উদ্যোগের সুফল ব্যবসায়ীরা এখন পেতে শুরু করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাণিজ্যে ঘাটতি পুরোপুরি কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা।

তথ্যানুযায়ী, অর্থবছরের আলোচ্য এই সময়ে চলতি হিসাবে কোনো ঘাটতি তৈরি হয়নি। উল্টো এই সূচকে ইতিবাচক ধারা দেখা গেছে। এই সময়ে ৫৮ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিলো। আগের অর্থবছরের একই সময়ে চলতি হিসাব ঘাটতিতে ছিলো। অর্থাৎ বছরের শুরুতে চলতি হিসেবে এখন ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিলো ৫৬৭ কোটি ডলার।

চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।

এদিকে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই-নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ যেখানে ২১৬ ডলারের এফডিআই পেয়েছিল। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা কমে ১৮৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমেছে। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সরাসরি মোট যে বিদেশি বিনিয়োগ আসে তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ নিয়ে যাওয়ার পর যেটা অবশিষ্ট থাকে সেটাকে নিট এফডিআই বলা হয়। আলোচিত সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগও কমেছে। এ সূচকটি আগের বছরের চেয়ে ১০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কমে ৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার হয়েছে। আগের অর্থবছর একই সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৭৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

এছাড়া আলোচিত সময়ে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ নেতিবাচক অবস্থা অব্যাহত আছে। অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (নিট) যা এসেছিল তার চেয়ে ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার চলে গেছে। তার আগের অর্থবছরের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল (ঋণাত্মক) ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার