বিশ্ব বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের ‘ডায়নামিক ডেইলি প্রাইসিং মেথড’ ব্যবস্থা আগামী ১-২ মাসের মধ্যে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা কয়েকটি বিষয় নিয়ে কাজ করছি, যেগুলো আগামী ১-২ মাসের মধ্যে আসবে। প্রাইসিং নিয়ে কাজ করছি, আমরা চাচ্ছি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে যাতে ভর্তুকি থেকে বিদ্যুৎ-জ্বালানি বেরিয়ে আসে। জ্বালানি ক্ষেত্রে যাতে ডায়নামিক প্রাইসিং আসে মূলত। যাতে এটা সহনীয় পর্যায়ে হয়, এরকম একটা পরিস্থিতি যাতে থাকে।
তিনি বলেন, ভারতে জ্বালানির যেমন দাম থাকে, সকাল-বিকেল তারা মূল্য পরিবর্তন করে। সেটা বিদ্যুতের ব্যাপারে তেলের ব্যাপারে। আমরা ঠিক সেইরকম মেকানিজমের দিকে যাচ্ছি। যখন দাম কমবে তখন দাম কমবে, যখন দাম সমন্বয় করার দরকার হবে তখন সমন্বয় হবে। এ বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই একটা ডায়নামিক প্রাইসিং হচ্ছে। এটা একটা অন্য জায়গা বা অন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করবে।
এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগ খুবই বড় একটা নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছে। প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ নিয়ে আমরা কাজ করছি। আগামী মাসগুলোর মধ্যে নেপালের বিদ্যুৎ আনতে চুক্তি সই হয়ে যাবে। ৫০ মেগাওয়াটের জন্য একটি, ৭০০ মেগাওয়াটের জন্য আর একটি চুক্তি হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি চলে আসবে। আগামী দুই বছর মধ্যে দুই হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি ঢুকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এগুলো বড় একটা পরিবর্তন করবে। গ্রিডগুলোকে স্মার্ট করা হবে। গ্যাস এবং বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্ন করার কাজ আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে শেষ হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার যারা বাসিন্দা আছেন তাদের জন্য সুখবর হলো- আগামী পাঁচ বছরের মাথায় আমরা চেষ্টা করছি ঢাকার যত বিদ্যুতের লাইন আছে মাটির নিচ দিয়ে চলে যাবে। অলরেডি ধানমন্ডিতে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
নসরুল হামিদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন ইস্যুতে যে সমস্যাটা দেখা গেছে, সেটি আরও বড় হলে আর একটা বাজে পরিস্থিতি তৈরি হবে। পৃথিবীব্যাপী মন্দ অবস্থা এখনো বিরাজ করছে। এটা আরও বড় হলে সেই পরিস্থিতিতে আমরা কি করবো এর ব্যাপারে বিদ্যুৎ-জ্বালানি মন্ত্রণালয় একটি প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু ওই প্রস্তুতির ওপরে যদি চলে যায় তাহলে একটু সমস্যা হবে।
নিজের ১০ বছরের মূল্যায়ন করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ সব সময় বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তিতে এক নম্বর হয়েছে। এডিপি বাস্তবায়ন আমাদের ১০০ শতাংশের বেশি। এই ধারাবাহিকতা গত ১০ বছর ধরে ছিল। কোভিডের মধ্যেও আমরা সেটা ধরে রেখেছিলাম। বিদ্যুৎ বিভাগ তার পারফরমেন্সের জন্য স্বাধীনতা পদক পেয়েছে। আজকে অর্থনীতির যে গতিশীলতার কথা বলা হচ্ছে, এর সমস্ত ক্রেডিট বিদ্যুতের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের। তারা সময়মতো জ্বালানি বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পেরেছিল বলেই অর্থনীতিতে একটা বিশাল গতি সঞ্চালিত হয়েছে।