সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বরও যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানি রেকর্ড স্পর্শ করেছে। এর মধ্য দিয়ে গত বছর দেশটি কাতার ও অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রপ্তানিকারক দেশের তকমা নিজের করে নিয়েছে। খবর রয়টার্স।
বাজার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান র্যাপিডান এনার্জি গ্রুপের গ্লোবাল গ্যাস অ্যান্ড এলএনজি রিসার্চের পরিচালক অ্যালেক্স মানটন বলেন, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র এলএনজি সরবরাহে লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ডিসেম্বরেই দেশটির টার্মিনালগুলো থেকে রপ্তানি হয়েছে ৮৬ লাখ টন এলএনজি।
মার্কিন সরকারের দেয়া তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রপ্তানিকারক দেশ ছিল কাতার। ওই বছর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল অস্ট্রেলিয়া।
অ্যালেক্স মানটন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড এলএনজি রপ্তানির পেছনে মূলত দুটি বিষয় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে একটি হলো ফ্রিপোর্ট এলএনজির ঘুরে দাঁড়ানো। কোম্পানিটির কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হওয়ায় এটি জাতীয় রপ্তানিতে যুক্ত করেছে ৬০ লাখ টন এলএনজি। অন্যটি হলো ভেঞ্চার গ্লোবাল এলএনজির উৎপাদন বৃদ্ধি। বিশেষ করে কোম্পানিটির ক্যালকাসিও পাস ফ্যাসিলিটি থেকে এ বছর জাতীয় রপ্তানিতে যুক্ত হয়েছে ৩০ লাখ টন এলএনজি।’
লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ গ্রুপের দেয়া তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানি এর আগের বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৮৯ লাখ টনে, ২০২২ সালে যা ছিল ৭ কোটি ৭৫ লাখ টন। ফ্রিপোর্ট এলএনজি প্লান্ট পুরোপুরিভাবে উৎপাদনে ফেরায় রপ্তানিতে এমন উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। ২০২২ সালে এক অগ্নিকাণ্ডে প্লান্টের উৎপাদন ব্যাপক মাত্রায় ব্যাহত হয়েছিল।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ফোরামের পর্যবেক্ষণ বলছে, পাঁচ বছরের মধ্যে জ্বালানিটির বৈশ্বিক বাণিজ্য আরো ২৫ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে এলএনজির চাহিদা বেশি। প্রতি বছরই চাহিদা অব্যাহত বাড়ছে। এটি একদিকে যেমন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে, বিশ্বজুড়ে তেমনি জ্বালানি সুরক্ষাও জোরদার করছে। আর এ বাণিজ্যিক প্রবৃদ্ধিতে রসদ জোগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান এলএনজি রপ্তানি গন্তব্য ছিল ইউরোপ। মোট রপ্তানির ৬১ শতাংশ বা ৫৪ লাখ ৩০ হাজার টন গেছে অঞ্চলটিতে, নভেম্বরে যা ছিল ৬৮ শতাংশ। ইউরোপে শীতের তীব্রতা কমায় রপ্তানি হিস্যাও কিছুটা কমে এসেছে। পাশাপাশি অঞ্চলটিতে গ্যাসের মজুদও ঊর্ধ্বমুখী।
এমআই