সমাপ্ত বছরে বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় তিন গুণ হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমায় গেল বছর ব্যয়বহুল প্রাকৃতিক গ্যাস, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ওপর বেশি নির্ভর করতে হয়।
বুধবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) প্রতিদিনের হিসাব অনুসারে, ২০২২ সালে কয়লা দিয়ে উৎপাদন হয় ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ। আর ২০২৩ সালে ওই উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ২১ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, নতুন নতুন ইউনিট চালু হওয়ায় এ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার অংশীদারিত্ব আরও বাড়বে। তবে গ্যাসের ওপর নির্ভরতা থাকবে এবং তরল জ্বালানির ব্যবহার কমতে পারে।
পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি হিসেবে ২০২২ সালে কয়লার অংশ ছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয় ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশ ২০২৩ সালে ৫৫ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হয়, যা ২০২২ সালে ছিল ৫১ শতাংশ। তবে গেল বছর প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশ গত ১০ বছরের গড়ের তুলনায় ছিল কম। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি হিসেবে গত ১০ বছরে প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশ গড়ে প্রায় ৬৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বাড়ায় বাংলাদেশ সরকার গ্যাস ব্যবহারে সংকোচন নীতি গ্রহণ করে। এ ছাড়া দেশে গ্যাসের উৎপাদনও গত বছর কম ছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার বাড়ায় ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের মতো তরল জ্বালানিতে সরকারের ব্যয় কমেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২০২২ সালে ওই দুই জ্বালানি তেলের অংশ ছিল ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে ২০ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসে।
পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিদ্যুতের সামগ্রিক ঘাটতি প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বা চাহিদার ২ দশমিক ৮ শতাংশ হয়। তবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ায় বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ঘাটতি কমতে শুরু করে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে দেশে প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট-ঘণ্টা) বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড়ে খরচ হয় ৫ টাকা ২৩ পয়সা, যা ২০২২ সালের গড় খরচের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম।
এমআই