বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরী বা শিল্প পার্কে প্লট বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন হয়েছে। যাতে প্রতিটি বিসিক শিল্প নগরীতে নারী উদ্যোক্তাদের ১০ শতাংশ কোটা সুবিধাসহ প্লটের টাকা পরিশোধে বাড়তি সুবিধা এবং এককালীন পরিশোধে বাড়তি রিবেট সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিসিক কনফারেন্স রুমে এ নতুন নীতিমালা অবহিতকরণ সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিসিক চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান। সভায় বিসিক পরিচালক পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন শিল্পনগরী এবং শিল্প পার্কের প্লট বরাদ্দ ও অর্থ পরিশোধে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাড়তি সুবিধা দিয়ে বিসিকের নতুন নীতিমালা প্রণয়ন হয়েছে। প্লট বরাদ্দের ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ, ১৪ কিস্তিতে সাত বছরে টাকা পরিশোধ এবং চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত প্লটের মূল্য পরিশোধ ২ শতাংশ আবার ফেরত দেওয়া হবে।
নতুন নীতিমালা অনু্যায়ী প্লট বরাদ্দ পেতে নারী উদ্যোক্তারা এককালীন জমা (ডাউন পেমেন্ট) দিতে পারবেন প্লটের মোট দামের ১৫ শতাংশ। বাকি অর্থ ১৪ কিস্তিতে মোট সাত বছরে পরিশোধ করবেন; যা আগে ছিল ১০ কিস্তি। ১৪ কিস্তিতে পরিশোধের ক্ষেত্রে প্লটের সম্পূর্ণ মূল্য সুদসহ হিসাব করে এককালীন জমা ও কিস্তি নির্ধারিত হবে। অন্যদিকে পুরুষ উদ্যোক্তাদের প্লটের মূল্যের ২০ শতাংশ এককালীন জমা দিতে হবে। বাকি অর্থ ছয় বছরে ১২ কিস্তিতে শোধ করতে হবে। প্লট দখল বুঝে পাওয়ার বরাদ্দপত্র জারির এক বছর পর থেকে কিস্তিগুলো দিতে হবে।
শিল্পনগরী বা শিল্পপার্কের জমি অধিগ্রহণ শেষ হওয়ার পর, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে সাময়িকভাবে নির্ধারিত প্লটের মূল্য সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করলে পরে চূড়ান্তভাবে প্লটের নির্ধারিত মোট মূল্যের ১.৫ শতাংশ ফেরত দেওয়া হবে। নারী উদ্যোক্তাদের ফেরত দেওয়া হবে ২ শতাংশ হারে।
অন্যদিকে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিল্পনগরী বা শিল্প পার্কে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দের ১০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা হবে। কোনো এলাকায় উপযুক্ত নারী উদ্যোক্তা না পাওয়া গেলে জেলা বা বিশেষায়িত প্লট বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা কমিটি আগ্রহী অন্য উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ দিতে পারবে।
নীতিমালায় প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে আরও বলা হয়েছে, শিল্পনগরী যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার জেলা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নাসিবের সভাপতি, বিসিকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধানসহ ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটির মাধ্যমেই প্লট বরাদ্দ দিতে হবে। তবে জেলা পর্যায়ের এই কমিটি ১৫ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত আয়তনের প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে। ১৫ হাজার বর্গফুট থেকে ৪৫ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত আয়তনের প্লট বিসিকের চেয়ারম্যান বরাদ্দ দেবেন। এর বেশি হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিবের অনুমোদন নিতে হবে।
তবে বিশেষায়িত শিল্পনগরী বা শিল্প পার্কের জেলা কমিটি দুই লাখ ২৫ হাজার বর্গফুটের প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে। এর বেশি হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিবের অনুমতি নিতে হবে। শিল্প প্লটের বরাদ্দপত্র জারির ৩০ দিনের মধ্যে উদ্যোক্তাকে দখল অবস্থান হস্তান্তর করতে হবে।
গত ১৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিল্প মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরী বা শিল্প পার্কে প্লট বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৩’ নামের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।