লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো ভারত। সম্প্রতি মূল উৎপাদনকেন্দ্রগুলোতে পেঁয়াজের দাম অনেকটা কমে আসায় রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। সংশ্লিষ্ট এক সরকারি কর্মকর্তা ইকোনমিক টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত ৮ ডিসেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মূলত দেশটিতে গত বছর পেঁয়াজ উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিসেম্বরের আগের তিন মাসে দেশটির বাজারে এই পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এরপর রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
তবে উৎপাদন বাড়ায় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলতে পারে কর্তৃপক্ষ। যদিও আগে বলা হয়েছিল, পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ৩১ মার্চ পর্যন্ত থাকবে।
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে ভারতের বাজারে দাম কমতে শুরু করে। গত কয়েক দিনে পেঁয়াজের দাম ২০ শতাংশ কমে কুইন্টালপ্রতি ১ হাজার ৫০০ রুপিতে নেমে আসে, যা একসময় ১ হাজার ৮৭০ রুপিতে উঠেছিল। নিষেধাজ্ঞার পর মহারাষ্ট্রের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ৬০ শতাংশ কমেছিল। মূলত নতুন খরিফ পেঁয়াজ বাজারে আসায় দাম এভাবে কমছে। এখন প্রতিদিন ১৫ হাজার কুইন্টাল খরিফ পেঁয়াজ বাজারে আসছে।
রবিশস্যের তুলনায় খরিফ শস্যের মেয়াদ কম। সে জন্য এই পেঁয়াজ খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, তাঁরা চান না যে দাম খুব বেশি পড়ে যাক।
ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, বিশ্ববাজারে ভারত রপ্তানিকারক হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চায় এবং যেসব দেশের সঙ্গে ইতিমধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, তার প্রতি সম্মানও দেখাতে চায়।
২০২৩ সালে মহারাষ্ট্রে অসময়ে ভারী বৃষ্টির কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। শুধু পেঁয়াজ নয়, গত বছর ভারতের বাজারে টমেটোর দামও অনেক বেড়ে যায়, এমনকি কেজিতে তা ২০০ রুপি পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটে।
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। তখন এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এমনকি তাঁরা ধর্মঘটও করেন। এরপর রপ্তানির ন্যূনতম দাম বেঁধে দেওয়া হয় এবং শেষ পর্যন্ত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
এমআই