আইন-আদালত
হাইকোর্টে ৫২ বেঞ্চ গঠন করলেন প্রধান বিচারপতি

আগামী রোববার (২৯ অক্টোবর) থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচার কাজ পরিচালনার জন্য ৫২টি বেঞ্চ গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা দেওয়ার নোটিশ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনায় বলা হয়, ‘আমি এতদ্বারা নির্দেশ করিতেছি যে, আগামী ২৯ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য নিম্নে উল্লেখিত বেঞ্চগুলো গঠন করা হলো। ’
নোটিশে ৫২ একক ও দ্বৈত বেঞ্চের নাম বিচারিক এখতিয়ারসহ উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩টি দ্বৈত বেঞ্চ এবং ১৯টি একক বেঞ্চ রয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন-আদালত
আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ মারা গেছেন

আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুর রশিদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহির রাজিউন।
মঙ্গলবার সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
এই অবসরপ্রাপ্ত প্রয়াত বিচারপতির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
বিচারপতি আবদুর রশিদ ১৯৯৯ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি অবসরে যান। এরপর একই বছরের এপ্রিলে তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। দেড় বছরের মাথায় ২০১০ সালের অক্টোবরে তিনি পদত্যাগ করেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

অপ্রয়োজনীয় সিজার কার্যক্রম বন্ধে নীতিমালার আলোকে পদক্ষেপ নেয়ার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জনসচেতনতা তৈরি করতে এ সংক্রান্ত নীতিমালাগুলো আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে, বুধবার প্রয়োজন ছাড়া প্রসূতির সিজার কার্যক্রম বন্ধে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়।
২০১৯ সালের ৩০ জুন প্রয়োজন ছাড়া প্রসূতির সিজার কার্যক্রম রোধে নীতিমালা তৈরি করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান প্রতিরোধে কার্যকর তদারকি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
২০১৯ সালের ২১ জুন বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ।

বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, এতে বাবা-মায়েদের সন্তান জন্মদানে ব্যাপক পরিমাণে খরচের ভার বহন করতে হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
পি কে হালদারের ২২ বছরের কারাদণ্ড

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে করা দুদকের মামলায় গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অভিযুক্ত বাকি ১৩ জনের ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে।
রোববার (৮ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত আসামি অবন্তিকা, শঙ্খ, সুকুমার ও অনিন্দিতার উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
এর মধ্যে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় ১০ বছর এবং অর্থপাচারের দায়ে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিন ধারার সাজা একটার পর একটা চলবে বিধায় পিকে হালদারকে ২২ বছর কারাভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
এর আগে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) একই আদালত উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য আজ দিন ধার্য করেন।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এ সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ এ সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা।

এছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডিতে পি কে হালদারের নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, পি কে হালদার তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন করেছেন। যার দাম ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন। যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। নিজের কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে ২ একর জমির ওপর নির্মাণ করেন ৮তলা হোটেল (র্যাডিসন নামে পরিচিত)। যার আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা।
এছাড়া পি কে হালদারের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি, এর বর্তমান দাম ১৬৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পি কে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকারও বেশি।
এসব অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন। এরপর তদন্ত করে দুদক পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করবো

দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথিবীতে বাঙালি জাতি রাষ্ট্র বলতে একটিই দেশ আর সেটি হলো বাংলাদেশ। আর সেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন, আর সেই দেশ পরিচালনার জন্য দিয়ে গেছেন একটি সংবিধান।
তিনি বলেন, আমি এবং আমার সহকর্মী বিচারপতিবৃন্দ এই সংবিধান সংরক্ষণ করার শপথ নেই এবং আবারও আমি শপথ নিয়েছি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে। এই সংবিধান সংরক্ষণ করবো, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবো। সেই লক্ষ্যে ই আমি এবং আমার সহকর্মী বিচারপতিদের নিয়ে একসঙ্গে একযোগে কাজ করবো যাতে বঙ্গবন্ধুর সংবিধান ও তার নির্দেশিত পথেই আমরা থাকতে পারি। বাংলাদেশকে সাংবিধানিক পথে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
এর আগে তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে পৌঁছে সমাধি সৌধ বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ দোয়া মোনাজাত করেন। এরপর তিনি সমাধি সৌধের মসজিদে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এসময় আপিল বিভাগ, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
জমি কেনার আগে যে পাঁচটি বিষয় জানা প্রয়োজন

বাংলাদেশে জমি কেনা-বেচা বিষয়টি সতর্কতার সাথে না করা হলে বিপত্তি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা যেমন একটি ইস্যু, আবার নানা ধরণের জালিয়াতির শিকার হওয়ার ঘটনাও ঘটে প্রায়শই।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, তাড়াহুড়ো না করে জমি কেনার আগে কিছু বিষয় যাচাই করে নিতে পারলে প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ভূমি সংক্রান্ত কিছু সরকারি অফিসের তথ্য এবং ভূমি নিয়ে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের দুইজন আইনজীবীর কাছ থেকে নেয়া কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো যেগুলো জমি কেনার আগেই লক্ষ্য রাখা জরুরী। খবর বিবিসি।
কাগজপত্রের কপি
জমি কেনার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মালিকানার প্রমাণ সংক্রান্ত দলিল ও কাগজপত্র। যেসব কাগজপত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করতে হবে সেগুলো হচ্ছে হচ্ছে – জমির দলিল, ওয়ারিশ সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), সিএস/ এসএ/ আরএস/ মহানগর/ মিউটেশন পড়চা, ডিসিআর, খাজনার দাখিলা ইত্যাদি।
বিশেষত দলিল, মিউটেশন বা নামজারির কাগজপত্র এবং খাজনা হালনাগাদের তথ্যের দিকে প্রাথমিকভাবে জোর দেন আইনজীবীরা।
জমিভেদে সিএস, আরএস বা অন্য কাগজেরও প্রয়োজন হতে পারে, তাই যতদূর সম্ভব সেগুলো জোগাড় করা প্রয়োজন, যাতে জমি সংক্রান্ত অতীত তথ্য, বর্তমান মালিকানা, পরিমাপ ইত্যাদির নির্ভরযোগ্যতা যাচাই সম্ভব হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এএসএম সাকিব শিকদার বলেন, কাগজপত্রের বর্তমান মালিকানার বিষয় ছাড়াও ২৫ বছরের মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যের দিকে জোর দেয়া হয়। পুরনো দলিলের সাথে পরবর্তী নামজারির খতিয়ান মিলছে কী-না সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
“অনেক সময় মিউটেশনের (নামজারি) সময় আরেক জমির কিছু অংশ কাগজে চলে আসে। অথবা মামলা বা দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে মিউটেশন বাতিলের মত ঘটনাও ঘটতে পারে,” এমন ক্ষেত্রে কাগজগুলো মিলিয়ে নিতে হয়,” বলেন মি. শিকদার।
যিনি জমি বিক্রি করছেন তিনি ক্রয়-সূত্রে নাকি উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিক হয়েছেন এ বিষয়গুলোও পরিষ্কার হতে হয়। যদি উত্তরাধিকার-সূত্রে হয় তাহলে অন্য উত্তরাধিকার আছে কী না সেটি যাচাই করা জরুরী।
কাগজপত্র যাচাই
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যাচাই করতে তিনটি অফিসে যেতে হবে। তহসিল বা ভূমি অফিস, এসি (ল্যান্ড) বা সহকারী ভূমি অফিস এবং সাব-রেজিস্ট্রার অফিস।
তহসিল বা ইউনিয়ন ভূমি অফিস : জমির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পেতে তহসিল অফিস সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ।
খাজনার রশিদটি সঠিক কী-না, প্রস্তাবিত দাগ ও খতিয়ানের জমির প্রকৃত মালিক কে, জমিতে কোন সরকারি স্বার্থ জড়িত আছে কী-না সেটি দেখতে হবে। এখানে সরকারি স্বার্থ বলতে খাস জমি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি , ওয়াকফ এস্টেট এবং সরকারি অধিগ্রহণের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন ,জমি সংক্রান্ত অভিযোগ, দ্বন্দ্ব, মামলার তথ্য নিশ্চিত করতে তহসিল হচ্ছে প্রাথমিক জায়গা।
এসি ল্যান্ড অফিস – মিউটেশন বা নামজারি সংক্রান্ত তথ্য বা দ্বন্দ্বের বিষয়ে নিশ্চিত হতে যেতে হবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে। বিক্রেতার নামজারির কাগজপত্র (মিউটেশন পড়চা, ডিসিআর) ঠিকঠাক না হলে জমি রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হবে না। তহসিল এবং এসি (ল্যান্ড), এই দুই অফিস থেকে তথ্য যাচাইয়ের দিকে বিশেষভাবে জোর দিচ্ছেন আইনজীবী মি. শিকদার।
আরও পড়ুন: দখলে থাকলেই জমির মালিকানা নয়, লাগবে দলিল
সাব-রেজিস্ট্রার অফিস – তহসিল এবং এসি ল্যান্ড অফিস ছাড়াও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন।
মি. হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক বেচা-কেনার রেকর্ড, অর্থাৎ ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সে জমি বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য নিশ্চিতে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে যেতে হবে। মিঃ হোসেনের মতে অনেক সময় অন্যান্য সব তথ্য একই থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে একই জমি অন্য কাউকে বিক্রি করে দেয়ার মতো ঘটনা থাকতে পারে। সেজন্য সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে তথ্য নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করছেন তিনি।
সরেজমিন অবস্থা
কাগজপত্রের তথ্য পাওয়ার পর জমি কিনতে সরেজমিনে গিয়ে দেখার ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন । এতে করে জমিটি কেমন, সেখানে কোনো ডোবা বা পুকুর আছে কিনা, রাস্তার অবস্থান কী, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা তৈরি হবে। এছাড়া সেই জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে কিনা, বা জায়গা যেমন কাগজে উল্লেখ রয়েছে তার থেকে কম-বেশি আছে কিনা সেসব বিষয়ে ধারণা পাওয়া সম্ভব।
এছাড়া এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা করাটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ‘ভূমিদস্যু’রা সংশ্লিষ্ট জমির আশেপাশে থাকতে পারে যারা ‘সব ঠিক আছে’ এমন ধারণা দিতে পারে বলছেন মিঃ হোসেন। জায়গাটি ‘একাধিকবার ভিজিট’ করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি, কারণ তাঁর মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতায় “দশজন মানুষ হলে একজন অন্তত থাকে যিনি গোপনে হলেও সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন।”
এছাড়া সম্ভব হলে ভূমি অফিসের ম্যাপ সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী জমির উল্লেখিত দাগ মিলিয়ে নিতে পারলেও ভালো হয়।
পরামর্শ গ্রহণ
জমির কাগজপত্র ও সরেজমিন যাচাই – দুটো ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করা ব্যাপারে জোর দেন আইনজীবীরা।
সাধারণত জায়গা-জমি ক্রয়ের আগে বেশিরভাগ মানুষ আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করেন না। আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন আইনজীবীদের পরামর্শ না নিলেও জমি সংক্রান্ত ভালো জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
আরও কিছু সতর্কতা
এতো কিছু নিশ্চিত করে নেয়ার একটা বড় উদ্দেশ্য জমি নিষ্কটক নিশ্চিত করা। কারণ মামলা মোকদ্দমায় বা মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ পরবর্তীতে ক্রেতার জন্য বাড়তি ঝামেলা সৃষ্টি করতে পারে।
বড় জমি বা বেশিমূল্যবান সম্পত্তির ক্ষেত্রে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানান দেয়ার পরামর্শ দেন আইনজীবী মি. শিকদার।
অনেক সময় পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির মাধমে জমি কেনাবেচা হয়। সেক্ষেত্রে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহায়তায় মূল মালিকের সাথে অন্তত যোগাযোগ করে নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন মি. হোসেন।
কারণ এমন অনেক মামলা পরবর্তীতে আসে যেখানে ভুয়া পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির মধ্য দিয়ে জমি বিক্রি করা হয়।
যে কোনও অবস্থাতেই জমি কেনার ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্ত্বভোগীর সাথে আলোচনা না করে সরাসরি মালিকের সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন। এসব কিছু যাচাই করতে সময় লাগলেও কম দামে কিনতে তাড়াহুড়ো করতে গেলে সর্বসান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
জমি কেনার সময় করনীয়
জমির সব কাগজপ্ত্রের বিষয়ে সন্তুষ্ট থাকলে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া গেলে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে দলিল প্রস্তুত করতে হবে।
দলিল লেখার সময় অনেক ক্ষেত্রে ভুল হয়, তাই দলিল চূড়ান্ত করার আগে ড্রাফটে যা যা বলা হয়েছে সেসব তথ্য সঠিকভাবে এসেছে কিনা সেগুলো যাচাই করে নেয়ার কথা বলছেন আইনজীবী মি. শিকদার। সব ঠিক করে দলিল চূড়ান্ত হলে এর পরপরই মিউটেশন বা নামজারির জন্য আবেদন করতে হবে। এখন নামজারির বিষয়টি অনলাইনে করে নেয়া সম্ভব।
এর বাইরে “আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে রশিদ নেয়ার এবং সাক্ষী রাখার” এবং “যতটা সম্ভব চেক বা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন” করার পরামর্শও দিচ্ছে কক্সবাজার সদর উপজেলা ভূমি অফিস।
আরও কিছু বিষয় নিশ্চিত করা কথা বলা হয়েছে জাতীয় তথ্য বাতায়নে। সেগুলো হলো জমির দলিলের স্ট্যাম্প এবং দলিল রেজিষ্ট্রির রশিদ ক্রেতার নামে নিশ্চিত করে কিনে রশিদ যত্নসহকারে রাখা, জমি রেজিট্রির সময় ক্রেতা ও বিক্রেতা উপস্থিত থেকে স্বাক্ষর করা, বিক্রেতার নামে নামজরিপ কপি এবং আরএস পর্চা উপস্থাপন করা।
আগের তুলনায় ভূমি অফিসের তথ্য সংগ্রহ অনেক ক্ষেত্রেই সহজ হয়েছে বলে মত মি. শিকদারের।
নতুন আইন ও জরিপের মধ্য দিয়ে বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার হওয়ার ধারণা দিচ্ছেন তিনি। যেমন আগে জমি দখল একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হতো। এজন্য কেউ জমি কিনলে সেই সাথে দখন নিশ্চিত করাটাও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হতো।
কিন্তু নতুন আইনে দখলকে বাদ দিয়ে দলিলে নজর দেয়ায় দখল সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে বলে মনে করছেন মি. শিকদার।
অর্থসংবাদ/এমআই