আন্তর্জাতিক
রুপির দরপতন ঠেকাতে আরবিআই’র ডলার বিক্রি

মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির ফের বড় দরপতন দেখা দিয়েছে। সোমবার লেনদেন শেষে ডলারের বিপরীতে দেশটির রুপির মান দাঁড়ায় ৮৩ দশমিক ২৮। এর আগে গত ২০২২ এর মে মাসে সর্বোচ্চ দরপতন দেখা গিয়েছিলো। সেবার প্রতি ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা মান দাঁড়িয়েছিলো ৭৭ দশমিক ৪১।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সংবাদে বলা হয়েছে, ইসরায়েল–হামাস সংকটের প্রভাবে ভারতীয় মুদ্রা রুপির দরপতন হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ সংকটে আশপাশের দেশগুলো জড়িয়ে পড়বে। সে কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম যেমন বাড়ছে, তেমনি মার্কিন মুদ্রা ডলারও শক্তিশালী হচ্ছে। এদিকে মুদ্রা মানের পতন ঠেকাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)।
ভারতের বিদেশি মুদ্রাবিশেষজ্ঞ কে এন দে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, মুদ্রাবাজারে ইসরায়েল-হামাস সংকটের প্রভাব পড়েছে এবং সেই সংকটে অন্যান্য দেশ যদি জড়িয়ে পড়ে আর তা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের রূপ নেয়, তাহলে তেলের দাম বেড়ে যাবে।
কে এন দে আরও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক সপ্তাহে দুবার ইসরায়েল সফর করেছেন এবং আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো–অপারেশনের জরুরি বৈঠক হচ্ছে—এসব ঘটনাপ্রবাহ থেকে বোঝা যায়, সময় অস্থির।
এই মুদ্রাবিশেষজ্ঞের মত, এখন ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে কতটা হস্তক্ষেপ করে, তার ওপর রুপির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। অর্থাৎ আরবিআই তার মজুত থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে দিলে রুপির আরও দরপতন হবে প্রতি ডলারের দর ৮৪ রুপিতে উঠে যেতে পারে।

মাঝে এক বছর রুপির দর অনেকটা স্থিতিশীল ছিল। এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার বৃদ্ধির জেরে ডলারের বিপরীতে রুপির দর প্রথমবারের মতো ৮৩ ছাড়িয়ে যায়।
এদিকে বাজারে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধিতে গত বছর আরবিআই বেশ কিছু মুদ্রা বিনিময়ের চুক্তি করেছিল। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এসব চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো না গেলে বাজারে ডলারের সংকট আরও বাড়তে পারে।
তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক ভিত্তিগুলো অতীতের তুলনায় শক্তিশালী। অর্থাৎ গত বছর যখন মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়, সেই সময়ের তুলনায় এবার ভারতের অর্থনীতির মৌল ভিত্তি আরও বেশি শক্তিশালী। সেপ্টেম্বরে ভারতের বাণিজ্যঘাটতি পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৫০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ফিলিপাইনে আবারও ভূমিকম্পের আঘাত

গত দুই দিনে ফিলিপাইনে তিন বার আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ভূমিকম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরের দিকে দক্ষিণ ফিলিপাইন উপকূলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৯।
বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প ফিলিপাইনের একই এলাকায় আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ।
তবে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসাইন্সেস (জিএফজেড) জানিয়েছে, সোমবার সকালে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমবার আঘাত হানা ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ৩৮ কিলোমিটার (২৩.৬১ মাইল)। মিনদানাও দ্বীপ থেকে ৭২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হিনাতুয়ান পৌরসভায় ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুনামি ওয়ার্নিং সিস্টেম জানিয়েছে, ওই ভূমিকম্পটি থেকে সুনামি আঘাত হানার কোনো হুমকি নেই। সে কারণে কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি।

ওই একই অঞ্চলে এর আগে গত শনিবার ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এবং গত রোববার ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। শনিবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়।
শনিবার ফিলিপাইনে আঘাত হানা ওই শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে জাপানের হাচিজোজিমা দ্বীপে ৪০ সেন্টিমিটার বা ১ দশমিক ৩ ফুট উচ্চার সুনামি ঢেউ লক্ষ্য করা গেছে। দ্বীপটি জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে। জাপানের আবহাওয়া বিভাগ এই তথ্য জানায়।
এর পরেই মিন্দানাওয়ের কিছু অঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের উপকূলগুলো থেকে লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়া ভ্রমণে নতুন নিয়ম

মালয়েশিয়া দর্শনার্থীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করেছে। এখন থেকে দর্শকদের দেশে আসার তিন দিন আগে অনলাইনে মালয়েশিয়া ডিজিটাল অ্যারাইভাল কার্ড (এমডিএসি) পূরণ করতে হবে।
এছাড়া ১০টি দেশের নাগরিকরা কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (কেএলআইএ) অভিবাসন ছাড়পত্রের জন্য অটোগেট ব্যবহারের অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন৷
শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানানো হয়।
ওই পোস্টে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর আগে বিদেশি নাগরিকদের (এমডিএসি) এসব বাধ্যবাধকতা চলতি বছরের ৭ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর করা হবে। যেখানে ৩টি ক্যাটাগরি ব্যতীত সব ভ্রমণকারীদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য বলে উল্লেখ করা হয়।
যেসব ভ্রমণকারীদের এমডিএসি জমা দিতে হবে না-
যারা অভিবাসন ছাড়পত্র না নিয়ে সিঙ্গাপুরের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট বা স্থানান্তর করছেন, মালয়েশিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা বা দীর্ঘমেয়াদী পাস হোল্ডারদের এবং মালয়েশিয়ান অটোমেটেড ক্লিয়ারেন্স সিস্টেম (এমএসিএস) হোল্ডার। এমডিএসি নিবন্ধন এবং জমা দেওয়ার জন্য, ভ্রমণকারীদের ইমিগ্রেশন বিভাগের ওয়েবসাইটের লিংকে গিয়ে নিবন্ধন ফর্মে নাম, জাতীয়তা, পাসপোর্ট নম্বর এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, ইমেল ঠিকানা এবং মোবাইল ফোন নম্বরের মতো তথ্যগুলো প্রদান করতে হবে এবং তাদের আগমনের তারিখ, প্রস্থানের তারিখ, পরিবহনের পদ্ধতি (আকাশপথ, স্থল বা সমুদ্র) এবং যাত্রার শেষ বন্দর পূরণ করতে হবে।

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সময় এয়ারপোর্টে দর্শনার্থীদের অবশ্যই তাদের পাসপোর্ট এবং সম্পূর্ণ এমডিএসি ইমিগ্রেশন অফিসারকে দেখাতে হবে।
আরও বলা হয়েছে, ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের এমডিএসি ওয়েবসাইটের ইনফোগ্রাফিকের ভিত্তিতে ১০টি দেশের দর্শনার্থীরা কেএলআইএর টার্মিনাল ১ বা টার্মিনাল ২ এ আসা ও ছাড়ার সময় অটোগেট ব্যবহার করতে পারবেন।
দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, জার্মানি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্সের জন্য কেএলআইএর অটোগেটগুলি ব্যবহার করতে দর্শনার্থীদের অবশ্যই ছয় মাস বা তার বেশি মেয়াদের পাসপোর্ট থাকতে হবে। স্থায়ী বাসিন্দা এবং দীর্ঘমেয়াদী পাসধারী ব্যতীত অন্য দর্শনার্থীদের অবশ্যই আগমনের তিন দিন আগে তাদের এমডিএসি জমা দিতে হবে।
তবে দর্শনার্থীরা যদি প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়া সফরে যান তবে তারা অটোগেটটি ব্যবহার করতে পারবেন না, কারণ তাদের প্রথম ভ্রমণের জন্য তাদের আগমনের তিন দিন আগে এমডিএসি জমা দিতে হবে এবং তারপরে ইমিগ্রেশন কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত ম্যানুয়াল কাউন্টারে তাদের পাসপোর্ট নিবন্ধন এবং যাচাই করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ৯ বছরের সর্বোচ্চে

দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা নয় বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। প্রতি বর্গফুটের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠেছে। এটা ২০১৪ সালের রেকর্ডও ভঙ্গ করেছে। খ্যাতনামা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি অলসোপ অ্যান্ড অলসোপের একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত অলসোপ অ্যান্ড অলসোপের ডেটা হাবের সাম্প্রতিক তথ্য দেখাচ্ছে, প্রপার্টি মনিটরের ডায়নামিক প্রাইস ইনডেক্স অনুসারে প্রতি বর্গফুটের গড় মূল্য ১ হাজার ২৫৭ দিরহাম।
এ সূচক সংযুক্ত আরব আমিরাতের রিয়েল এস্টেট ব্যবসার শক্তিশালী উত্থানকে চিহ্নিত করছে। একই সঙ্গে ২০১৪ সালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
ব্রিটিশ মালিকানাধীন অলসোপ অ্যান্ড অলসোপের সিইও লুইস অলসোপ বলেন, ‘৩৬ মাসের চক্র হিসাব করলে আরব আমিরাতের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বর্তমানে এর চূড়ায় অবস্থান করছে। আমরা এর সাক্ষী হয়ে থাকলাম। এটা ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে চলে যাচ্ছে। দুবাই রিয়েল এস্টেট ব্যবসার রেকর্ড শুরুর পর থেকে ২০২৩ সাল সবচেয়ে সক্রিয় ও বেশি লেনদেনের বছর হিসেবে বিবেচিত হবে।’
বর্তমান বাজারের সঙ্গে ২০১৪ সালের বাজার তুলনা করলে কিছু পার্থক্য দেখা যায়। অলসোপের মতে, শহরের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় প্রান্তিক মানুষের লেনদেন বেড়েছে। এ কারণে বাজার দ্রুতগতিতে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এটা টেকসই প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। যেখানে ২০১৪ সালে বিনিয়োগকারীদের পরিকল্পিত প্রচেষ্টায় বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল।

বিভিন্ন সংস্থা যে প্রক্ষেপণগুলো করছে লুইস অলসোপ সেগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক সূচকগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
অলসোপ অ্যান্ড অলসোপ জানায়, দুবাইয়ের রোড অ্যান্ড ট্রাফিক অথরিটির তথ্যানুযায়ী, ব্যক্তিগত নতুন গাড়ির মালিক (দুবাইয়ের টোল সিস্টেম) নিবন্ধন প্রতি বছর ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রতি বছর ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতি বছর ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অলসোপ আরব আমিরাতের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আস্থা প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে ২০৪০ সালের আরবান মাস্টার প্ল্যান এ প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তারা মনে করে।
দুবাইয়ের জনসংখ্যা ৩৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতি বছর ৩ শতাংশ বাড়ছে। ২০৪০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ৫৮ লাখ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে টেকসই রিয়েল এস্টেট ব্যবসা নিশ্চিত করার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
তবে দুবাইয়ের সম্পদের অপর্যাপ্ত মজুদ নিয়ে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। ডেভেলপারদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও অলসোপ বাজারের অপর্যাপ্ত মজুদ ভবিষ্যতেও রয়ে যাবে বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
২০২৩ সালের শেষে প্রায় ৫০ হাজার নতুন প্রপার্টি হস্তান্তর করা হবে। একই বছরের মোট জনসংখ্যা বৃদ্ধির চেয়ে এটা কিছুটা কম।
লুইস অলসোপ বলেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকালে আমি অন্য কিছুই দেখতে পাই না। যদি ২০২৪ সালে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে, দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করবে। অবনতির কোনো আশঙ্কা নেই। সাম্প্রতিক সর্বকালের সেরা উচ্চতায় পৌঁছার মতো ২০২৪ সালে বরং নতুন রেকর্ড হতে পারে।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় মিন্দানাও দ্বীপে শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। শনিবার (২ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৭ মিনিটের দিকে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিন্দানাও। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ ভূমিকম্পে কোনো হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানা যায়নি।
এদিকে, এ ভূমিকম্পের ফলে এক মিটার (৩ ফুট) বা তার বেশি সুনামি ঢেউয়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ফলে মিন্দানাওয়ের কিছু অঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের উপকূলগুলো থেকে লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপসংস্থা ইউএসজিএস বলছে, শনিবার ফিলিপাইনের মিন্দানাও দ্বীপে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে।
অন্যদিকে, ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি) বলছে, মিন্দানাওয়ে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৩ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মার্কিন সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থা ভূমিকম্পের পর মিন্দানাও দ্বীপে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে।

এর আগে, গত মাসে ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ১৭ নভেম্বরের ওই ভূমিকম্পে দেশটির সারাঙ্গানি, কোটাবাটো এবং দাভাও প্রদেশে অন্তত আটজনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ভূকম্পনে আহত হন আরও ১৩ জন। ভূমিকম্পে দেশটিতে অর্ধ-শতাধিক বাড়িঘর এবং অন্যান্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘‘রিং অব ফায়ারে’’ অবস্থিত ফিলিপাইনে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপসংস্থা রিং অব ফায়ারকে বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির সক্রিয় অঞ্চল হিসেবে শনাক্ত করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
২০২৪ সালে এশিয়ায় চাল উৎপাদন কমার আশঙ্কা

এশিয়ায় ২০২৪ সালে চালের উৎপাদন কমার আশঙ্কা করা হয়েছে। এল নিনোর প্রভাবে আবহাওয়ায় শুষ্ক অবস্থা বিরাজ করবে, যা মাটির আর্দ্রতা কমিয়ে দেবে। ফলে এশিয়ার শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোয় ফলন ব্যাহত হবে। এতে খাদ্যপণ্যটির মজুদও কমে আসবে। সব মিলিয়ে বাজারে সরবরাহ স্বল্পতার ফলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দেখা দিতে পারে। খবর রয়টার্স।
বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিশ্বের বৃহত্তম চাল রফতানিকারক ভারত ও দ্বিতীয় শীর্ষ সরবরাহকারী থাইল্যান্ড নতুন বছরের প্রথম প্রান্তিকে তাদের চাল উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে। একই সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় খরার কারণে ঠিকমতো ধান চাষ করতে পারেননি কৃষকরা। ফলে শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক দেশটি থেকে আমদানি চাহিদা আগের চেয়ে আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিলের বিশ্লেষক পিটার ক্লাব বলেন, ‘উচ্চ দামের কারণে কৃষক ধান চাষে আগ্রহী হতে পারে। কিন্তু অনেক এলাকায় পর্যাপ্ত পানি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। এ কারণে ফলন কমে যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘ভারত ও থাইল্যান্ড আগামীতে রফতানি আরো কমিয়ে দেবে। চলতি বছরের শুষ্ক মৌসুমে দেখা গেছে, ইন্দোনেশিয়ায় জলাশয়গুলোর পানি কমে গেছে। তাই ২০২৪ সালের শুষ্ক মৌসুমে সেচ দেয়ার মতো পর্যাপ্ত পানির অভাব রয়েছে সেখানে।’
চলতি বছর প্রধান রফতানিকারক ও আমদানিকারক দেশগুলোয় এল নিনোর প্রভাবে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় চাল উৎপাদন কমে গেছে। আগামী বছর এ সংকট আরো বাড়তে পারে। এতে বৈশ্বিক চালের বাজার বড় ধরনের সরবরাহ সংকটের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বৈশ্বিক চাল বাণিজ্যের সিংহভাগই আসে এশিয়া থেকে। অঞ্চলটির প্রধান রফতানি কেন্দ্রগুলোয় এ বছর চালের দাম ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। গত আগস্টে ভারত চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যটির দাম ১৫ বছরের রেকর্ড সর্বোচ্চে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়ার পূর্বাভাসদাতারা সম্প্রতি বলেছেন, এল নিনোর প্রভাব উত্তর গোলার্ধে ২০২৪ সালের এপ্রিল-জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। একই তথ্য জানিয়ে জাপানের আবহাওয়া ব্যুরো বলেছে, উত্তর গোলার্ধে এল নিনোর প্রভাব বাজায় থাকার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ।
ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা বলেছেন, ‘কম চাল উৎপাদন ও খাদ্য মূল্যস্ফীতির ঝুঁকির সঙ্গে ভারত আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রফতানি নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে পারে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডেও রফতানি করার মতো কম উদ্বৃত্ত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে।
ফিচ সলিউশনের শাখা বিএমআই বলেছে, ‘ভারতীয় চাল রফতানির অনুপস্থিতিতে বড় রফতানিকারকের স্থান নেবে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। তবে সরবরাহ স্বল্পতার কারণে উভয় দেশের বাজারে দাম থাকবে চড়া।’
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাডায় এক রফতানিকারক বলেন, ‘ধান উৎপাদনকারী অনেক রাজ্যে মাটির আর্দ্রতার মাত্রা স্বাভাবিকের নিচে নেমে গেছে। পুকুর-জলাধারেও গত ১০ বছরের গড়ের চেয়েও কম পরিমাণে পানি ধারণ করছে।’
রফতানিকারকরা জানিয়েছেন, ভারতের শীতকালীন ফসল ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে রোপণ করা হয় এবং মার্চের দিকে কাটা হয়। এ মৌসুমের ফলন এক-পঞ্চমাংশ থেকে প্রায় দুই কোটি টন কমে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।
কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ায় গত চার মাস অত্যন্ত শুষ্ক অবস্থায় গেছে। ফলে মাটির আর্দ্রতা কমে গেছে এবং ধান রোপণ বিলম্বিত হয়েছে।