সারাদেশ
বগুড়ায় নকল বিড়ি তৈরির কারখানায় র্যাবের অভিযান

বগুড়ার সোনাতোলা উপজেলার বালুয়াহাটাস্থ নকল আকিজ বিড়ি তৈরির একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল আকিজ বিড়ি, জাল ব্যান্ডরোলসহ বিড়ি তৈরির বিভিন্ন উপকরন জব্দ করেছে র্যাব-১২ এবং বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ।
রোববার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টা থেকে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা অভিযান চালিয়ে এসব নকল বিড়ি তৈরির উপকরন জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নকল বিড়ি তৈরির কারখানা সিলগালা করা হয়েছে।
র্যাব-১২ সূত্রে জানা যায়, সরকারের মোট অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বগুড়ার সোনাতোলা উপজেলার বালুয়াহাটার একটি বাড়ির অভ্যন্তরে কারখানা বানিয়ে বিপুল পরিমান নকল আকিজ বিড়ি তৈরি হচ্ছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় বগুড়া র্যাব-১২ এবং বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ উক্ত নকল আকিজ বিড়ি তৈরির করাখানায় অভিযান চালায়। অভিযানের খবর পেয়ে অভিযুক্তরা কারখানায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে তালা ভেঙ্গে কারখানার ভিতরে তল্লাশি চালানো হয়।
বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা অভিযানে তিন বস্তা তামাক, ১৫ বস্তা নকল বিড়ি, ৫ বস্তা জাল ব্যান্ডরোল ও বিড়ির লেভেল এবং বিপুল পরিমান বিড়ি তৈরির বিভিন্ন উপকরন জব্দ করে র্যাব-১২ এবং বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ। অভিযান শেষে ওই নকল বিড়ি তৈরির কারখানা সিলগালা করা হয়েছে।
র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মীর মুনির হোসাইন (এসপি) এবং বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহকারী কমিশনার মালকিন নাসিরের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।

র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মীর মুনির হোসাইন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একটি নকল বিড়ি কারখানায় বিপুল পরিমান জাল ব্যান্ডরোলসহ বিড়ি তৈরির বিভিন্ন উপকরন মজুদ রয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টায় ওই কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বিপুল পরিমান জাল ব্যান্ডরোল জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া বিড়ি তৈরির বিভিন্ন উপকরন জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহকারী কমিশনার মালকিন নাসির জানান, জাল ব্যান্ডরোল ছাপিয়ে তারা রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তিনি আরও জানান, নকলের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত থাকবে। এছাড়া রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কেউ অবৈধভাবে বিড়ি বিক্রি ও বাজারজাত করলে তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, বগুড়া ছাড়াও তারা দেশের বিভিন্ন বিড়ি ফ্যাক্টরিতে জাল ব্যান্ডরোল সরবরাহ করে। এতে করে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিলো।
এ সময় নকলের বিরুদ্ধে র্যাব, পুলিশ এবং কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাট বিভাগের অভিযান ও তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানান তারা। একইসাথে অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিও দাবি করেন।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ
আজ চাঁদপুর মুক্ত দিবস

আজ ৮ ডিসেম্বর, চাঁদপুর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে চাঁদপুর পাক হানাদার বাহিনীর বলয় থেকে মুক্ত হয়েছিল। ভারতের মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণে ৩৬ ঘণ্টা তীব্র লড়াইয়ের পর ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা মুক্ত হয়।
চাঁদপুর থানার সম্মুখে বিএলএফ বাহিনীর প্রধান মরহুম রবিউল আউয়াল কিরণ প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল চাঁদপুরে পাক হানাদার বাহিনী দুটি বিমান থেকে সেলিংয়ের মাধ্যমে প্রথম আক্রমণের সূচনা করেছিল। প্রথম দিনেই হামলায় শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরান বাজারের এক নারী পথচারী নিহত হয়েছিলেন।
পর দিন বিকেলে প্রায় পাঁচ শতাধিক পাকসেনার একটি বহর চাঁদপুর আসে। শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে চাঁদপুর কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়টি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে পাকিস্তানি সেনারা। আর পাকিস্তানি সেনা অফিসারদের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজটি নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওই স্কুলের মাঠ থেকে প্রতিদিনের মতো লতুফা বেগম নামে এক বৃদ্ধা গরু-ছাগল নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন।
এ সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা রাতের আহার জোগাড় করার জন্য প্রথম অপারেশন হিসেবে ওই বৃদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করে এবং বৃদ্ধার একটি গরু ও একটি ছাগল নিয়ে যায়।

নিহত লতুফা বেগমের প্রতিবেশী তাফাজ্জল মিজি (৭৫) জানান, স্কুল মাঠ দিয়ে যাওয়ার সময় লতুফা বেগমকে প্রকাশ্যে গুলি করে তার গরু-ছাগল নিয়ে যায় হানাদার বাহিনী। ওই সময় তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরে বাড়িতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার দৃশ্য অনেক লোক দূর থেকে দেখলেও ভয়ে কেউ কাছে আসতে পারেনি।
৮ এপ্রিল রাতেই চাঁদপুরে অবস্থানরত ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা বিচ্ছিন্নভাবে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালান। হামলা দেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। তখন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা মারাত্মক আহত হন।
৯ এপ্রিল ভোরে পাকিস্তানি মিলিটারি শহরে ঢুকে চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইসমাইল হোসেন ভলন্টিয়ার (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। একই সঙ্গে তারা শহরের হাসান আলী হাই স্কুলের মোড়ে আপাক ও মাখন নামে দুই যুবককে সাইকেলে চালাতে দেখে গুলি করে হত্যা করে।
এর পরেই তারা শুরু করে তাদের মূল অপারেশন কার্যক্রম। এ জন্য চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় হানাদার বাহিনীর একটি টর্চার সেল করা হয়।
এখানে চাঁদপুর রেলপথ, সড়কপথ এবং নৌ-পথে যে সব যাত্রীদের সন্দেহ হয়েছে তাদের ধরে এনে অমানবিক নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ করা হতো। পরে ওই মরদেহগুলো মেঘনা এবং পদ্মা নদীতে ফেলে দিতো। যার সাক্ষী আজও পদ্মা-মেঘনা নদী বহন করছে।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে চাঁদপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০১৩ সালে বড় স্টেশনে ‘রক্তধারা’ নামে বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়। এর আগে চাঁদপুরের প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সুশীল, সংকর ও খালেকের নামে ট্রাক রোডে নির্মাণ করা হয় ‘মুক্তিসৌধ’ ও চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে লেকের ওপর দৃশ্যত ভাসমান মুক্তিস্মৃতি সৌধ ‘অঙ্গীকার’ নির্মাণ করা হয়। চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ জেলায় স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া চাঁদপুর পৌরসভার ৫ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় ‘শপথ চত্বর’।
এপ্রিল থেকে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের চলে দফায় দফায় গোলাগুলি। পরে গঠন করা হয় শান্তিবাহিনী। তারপর নতুন কায়দায় শান্তি বাহিনী ও পাকিস্তানি বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় চালাতে থাকে বর্বর অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ। ৩৬ ঘণ্টা যুদ্ধের পর পালিয়ে যায় তারা। এভাবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানের দোসররা কত লোককে হত্যা করেছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
চাঁদপুর জেলায় (তৎকালীন মহকুমা) সর্বশেষ যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর লাকসাম ও মুদাফ্ফরগঞ্জ মুক্ত হওয়ার পর। যৌথ বাহিনী হাজীগঞ্জ দিয়ে ৬ ডিসেম্বর চাঁদপুর আসতে থাকলে মুক্তিসেনারা হানাদার বাহিনী প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। ভারতীয় গার্ডস রেজিমেন্টের নেতৃত্বে ৩১১তম মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণ চালায়। দিশে না পেয়ে পাকিস্তান ৩৯ অস্থায়ী ডিভিশনের কমান্ডিং অফিসার মেজর জেনারেল রহিম খানের নেতৃত্বে দুইটি জাহাজে করে নৌ-পথে ঢাকার উদ্দেশ্যে চাঁদপুর থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল।
এ সময় মুক্তি বাহিনী, মিত্র বাহিনীর ট্যাংক ও বিমান আক্রমণে তাদের চির কবর রচনা হয় মেঘনা নদীতে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
সেন্টমার্টিনে বন্ধ জাহাজ চলাচল

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে সম্ভাব্য বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সাগর উত্তাল থাকায় বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জাহাজ চলাচল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া।
এদিকে, মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে পর্যটকবাহী কেয়ারি সিন্দাবাদ বার আউলিয়া ও আটলান্টিক জাহাজে দ্বীপ ভ্রমণে যান প্রায় ১ হাজার পর্যটক। একই দিন বিকেলে ৭০০ পর্যটক দ্বীপ ছাড়লেও বাকিরা সেখানে রাত্রিযাপন করেন।
বিআইডব্লিউটিএ এর টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। ফলে সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখানো হয়েছে। এ কারণে বুধবার সকালে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে দ্বীপে ভ্রমণে আসা বেশ কিছু পর্যটককে সেখানে রাত্রিযাপন করতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের নিয়ে আসা হবে।
পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি সিন্দবাদের টেকনাফের ব্যবস্থাপক শাহ আলম বলেন, ৩ নম্বর সংকেতের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় বুধবার জাহাজ বন্ধ থাকবে। তবে বেড়াতে আসা কিছু পর্যটক দ্বীপে রয়েছেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। এ ধরনের ঘটনায় কমপক্ষে ২ দিন জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে।

জাহাজ চলাচল বন্ধের কথা স্বীকার করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, বৈরী আবহাওয়ার ফলে সমুদ্র উত্তালের কারণে বুধবার এ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে ভ্রমণে আসা বেশকিছু পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছে, তাদের খোঁজখবর রাখা হবে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
সাড়ে ৩ কোটি টাকার স্বর্ণ ফেলে পালালো পাচারকারীরা

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী সীমান্ত এলাকা থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাগুড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত রমজানপাড়া সীমান্ত এলাকার ৪১০ মেইন পিলারের কাছ থেকে স্বর্ণগুলো উদ্ধার করে বিজিবি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্বর্ণ চোরাচালানের ব্যাপারটি জানতে পারেন তারা। সে মোতাবেক বিশেষ টহলে একটি টিম সীমান্ত পিলারের কাছে গেলে সেখানে তারা একটি ধান খেতে এক ব্যক্তিকে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করতে দেখে। ওই ব্যক্তিকে কাছে ডেকে নাম জিজ্ঞেস করতেই তিনি একটি কালো ব্যাগ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। ব্যাগটিতে প্যাকেট করা ২০টি স্বর্ণের টুকরো পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৫টি বিস্কুট আকৃতির ও বাকি ৫টি ছোট বড় মাঝারি বার। স্বর্ণ উদ্ধার করে গিরিগাঁও বিওপিতে আনা হয়। পরে পঞ্চগড় জুয়েলারি সমিতিতে নিয়ে পরীক্ষা করলে মোট ৩৫১ ভরি চার আনা স্বর্ণ পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ৫১ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান জানান, স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারলেও পাচারকারীকে আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় আটোয়ারী থানায় জিডি করা হবে।
তিনি বলেন, কিছু দিন আগে ৫৬ বিজিবি নিয়ন্ত্রিত পঞ্চগড়ের একটি সীমান্ত এলাকায় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ঠিক তখন থেকেই আমরা সচেতন হয়ে আটোয়ারীর সীমান্তে টহলসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাড়িয়ে দিলে ফলশ্রুতিতে এই স্বর্ণ আটক করতে সক্ষম হয়েছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প

রাজধানী ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্র ছিল ৫.৮।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটের দিকে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
চলতি বছর যত ভূমিকম্প
চলতি বছর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০টি হালকা ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। এতে জানমালের তেমন ক্ষতি না হলেও বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বছর প্রথম ভূকম্পন অনুভূত হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের পাশাপাশি কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট জেলাও। ৩ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পে জানমালের তেমন ক্ষতি হয়নি।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে মাঝারি মাত্রার জোড়া ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির আয়াবতি ও রাখাইন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের কক্সবাজারেও ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার আগারগাঁও থেকে ৩৭৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১।

চট্টগ্রামে গত ৩০ এপ্রিল ৪ দশমিক ৬ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল অক্ষাংশ ২২ দশমিক ৯৩ ডিগ্রি উত্তর, দ্রাঘিমা ৯৪ দশমিক ১৯ ডিগ্রি পূর্ব মিয়ানমারের মাউলাইকে। রাজধানীর ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এর দূরত্ব ছিল ৪০০ কিলোমিটার।
গত ৫ মে রাজধানীতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে দোহারে।
গত ৫ জুন ৩ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে বঙ্গোপসাগরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের কাছে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে।
গত ১৬ জুন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ, মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫।
গত ১৪ আগস্ট সিলেটে ফের ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। একই সঙ্গে ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায়ও এটি অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল আসামের মেঘালয়, গভীরতা ছিল ৩৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২২৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে।
ঠিক ১৬ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২৯ আগস্ট সিলেট মহানগরীর আশপাশে ফের মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫। উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জৈন্তাপুরে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে ৪ দশমিক ৪ মাত্রার মৃদু ভূমিকম্প আঘাত হানে। আসামে আঘাত হানা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের সিলেট জেলাও। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২৬৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের আসামের কাছাড়ে।
১৭ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলে ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল সদরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর অবস্থান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে একই সাথে শুরু হয়েছে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ জরিপের কাজ। রবিবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে হাড়বাড়ীয়া ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাঘ গণনার উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।
আগামী বছরের এপ্রিলে মাসে এই সুন্দরবনের এই দুই রেঞ্জের বাঘ জরিপের কাজ শেষ হবে। আগামী বছরের ২৯ জুলাই বাঘ দিবসে সমগ্র সুন্দরবনের বাঘের হালনাগাদ সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে বন বিভাগ। ২০১৮ সালে সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ছিল ১১৪টি।
সুন্দরবনের দুই রেঞ্জে বাঘ জরিপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক ড. আবু নাসের মহসিন হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল করিম, চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব ও করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবিরসহ বাঘ গণনার কাজে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা।
সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক ড. আবু নাসের মহাসিন হোসেন জানান, সুন্দরবনে বাঘ জরিপের কাজ শরিু হয় ২০১৩-১৪ সালে। ২০১৮ সালে সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ছিল ১১৪টি। এবার বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাঘ জরিপে ব্যয় হচ্ছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি দুটি রেঞ্জ বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই ও শরণখোলা ৫ নভেম্বর থেকে জরিপ চালানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরের এপ্রিল মাসে এই জরিপ কাজ শেষ হবে। চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে ৩০০টি স্থানে দুটি করে মোট ৬০০টি ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। বিশ্লেষণ শেষে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে সুন্দরবনে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হবে। ২০১৫ সালের সেই জরিপে ১০৬টি বাঘ সুন্দরবনে আছে বলে জানা যায়। এরপর ২০১৮ সালে জরিপ সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি। এখন বাঘের সেই সংখ্যা কমেছে, নাকি বেড়েছে তা জানতে নতুন করে জরিপ চালানো হচ্ছে। আগামী বছরের এপ্রিল মাসে এই জরিপ কাজ শেষ হবে।
তিনি আরও জানান, গত বছব সুন্দরবনে বাঘের শিকার করা প্রাণীর সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজারে। তাই ধারনা করা হচ্ছে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।