শিল্প-বাণিজ্য
বেনাপোল দিয়ে টিসিবির ২০১ টন পেঁয়াজ আমদানি

সরকার দেশের নিম্নআয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম চালানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৭ ট্রাকে ২০১ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি খরচ ৫৫ টাকা পড়লেও ভর্তুকি দিয়ে এসব পেঁয়াজ ফ্যামেলি কার্ডের মাধ্যমে নিম্নআয়ের মানুষের কাছে ক্রয়মূল্যের অনেক কমে বিক্রি করবে সরকার।
দ্রুত যাতে পেঁয়াজ বন্দর থেকে ছাড় হয় সব ধরনের সহযোগিতা করছে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা জানান, নিম্নআয়ের মানুষের কিছুটা স্বস্তি দিতে গত কয়েক বছর ধরে দেশের ১ কোটি ১ লাখ পরিবারের কাছে কমমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য বিক্রি করে আসছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক পরিবারের জন্য ২ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি চিনি, ২ কেজি মসুরডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল ও ৫ কেজি চাল।
এসব নিত্যপণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের যোগান দিতে ভারত থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তাই ৭ ট্রাকে ২০১ টন পেঁয়াজ আসে বন্দরে। কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী প্রতি কেজি পেঁয়াজের আমদানি খরচ পড়ছে ৫৫ টাকার মধ্যে। তবে সরকার কমদামে এ পেঁয়াজ তুলে দিবে নিম্নআয়ের ফ্যামেলি কার্ডধারী মানুষের হাতে।
এদিকে সরকারিভাবে পেঁয়াজ আমদানিতে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। বেনাপোল বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা হযরত জানান, সরকারি পেঁয়াজ আমদানিতে কমতে পারে দাম।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, খাওয়ার উপযুক্ত হওয়ায় বন্দর থেকে পেঁয়াজের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, দ্রুত যাতে টিসিবির পেঁয়াজ বন্দর থেকে ছাড় হয় ২৪ ঘণ্টা বন্দর সচল রেখে কাজ করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
নভেম্বরে ৪৭৮ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি

নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববাজারে পণ্য রফতানি হয়েছে ৪৭৮ কোটি ৪৮ লাখ ১০ হাজার ডলারের। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে পণ্য রফতানির অর্থমূল্য ছিল ৫০৯ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
এ হিসেবে গত নভেম্বরে পণ্য রফতানি কমেছে বা নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.০৫%।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
টানা দুই মাস পণ্য রফতানি কমে যাওয়ায় সামগ্রিক রফতানি বৃদ্ধির গতিও কমে গেছে। চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে (জুলাই–অক্টোবর) পণ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ।
কিন্তু নভেম্বর মাসে রফতানি কমায় পাঁচ মাসের হিসাবে (জুলাই–নভেম্বর) প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত জুলাই–নভেম্বর সময়ে রফতানি হয়েছে ২ হাজার ২২৩ কোটি ডলারের পণ্য।

প্রসঙ্গত, গত ২০২২–২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল। চলতি অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তৈরি পোশাক ছাড়া বেশিরভাগ পণ্যের রফতানি কমে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদি।
ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে ১ হাজার ৮৮৪ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এই রফতানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। আলোচ্য সময়ে তৈরি পোশাকের মধ্যে নিট পোশাকের রফতানি ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। তবে ওভেন পোশাকের রফতানি কমেছে সাড়ে ৪ শতাংশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
শ্রম অধিকার নিয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি

বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, শ্রম আইনের সংশোধন ও বেজা আইনের মাধ্যমে শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে, শিগগির যুক্তরাষ্ট্রকে এ অগ্রগতির চিত্র জানানো হবে।
আজ সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শ্রমসংক্রান্ত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা নিয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে তপন কান্তি ঘোষ এ কথা বলেন।
বাণিজ্যসচিব বলেন, শ্রম অধিকারের ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে নতুন শ্রমনীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী শ্রম পরিবেশের আরও উন্নতি হোক। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
সভায় পররাষ্ট্র, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘কারও দয়ায় নয়, পণ্যের গুণগত মান, আন্তর্জাতিক চাহিদা ও শ্রমিক অধিকার রক্ষা করেই তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দ্বিবার্ষিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের শ্রম আইনে শ্রম অধিকারের যেসব বিষয় আছে, তার মধ্যে বেশ কিছু পরিপালন করা হয়েছে। তবে তারা চায় আরও অগ্রগতি হোক।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে নতুন ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা হয়েছে জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। এ ছাড়া শ্রমিক কল্যাণে আরও কী করা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন, ইইউ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশের কিছু শর্ত ছিল। শ্রম আইন ও বেজা আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে চাওয়া ছিল, তা অনেকটাই পূরণ করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে তিনবার শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে।
সভাসূত্র জানায়, সভায় কর্মক্ষেত্রে শ্রমমান, শ্রম আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি, শ্রম অধিকার ও ন্যায্য মজুরি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বেনাপোল বন্দরে ৪ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪০ কোটি টাকা

দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক মন্দার কবলে পড়ে ডলার ও ভারতীয় রুপির বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মান অস্বাভাবিক কমেছে। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোলে অবস্থিত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এলসি কমে অর্ধেকে নেমেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাণিজ্য ও ভ্রমণ খাতে।
এছাড়াও বিগত বছরগুলোর তুলনায় যাতায়াত কমেছে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের। এসব কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে গত ৪ মাসে বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায় ২৪০ কোটি টাকা কম হয়েছে। তবে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য রপ্তানি বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানী-রপ্তানি বাণিজ্য ও পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত সবচেয়ে বেশি হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে স্বাভাবিক সময়ে দিনে ৪৫০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ২৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হতো। আর চিকিৎসা, ব্যবসা, উচ্চ শিক্ষা ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন যাতায়াত করে ৭ থেকে ৮ হাজার পাসপোর্টধারী।
৩ মাস আগের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশি ১০০ টাকার বিপরীতে ৭৭ রুপি মিললেও বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ৭০ রুপি। আর ১শ ডলার কিনতে ১০ হাজার ৬০০ স্থলে এখন গুনতে হচ্ছে ১২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত। এতে লোকশানের কারণে অনেক আমদানিকারকেরা ব্যাংকে এলসি কমিয়েছেন। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতে যাচ্ছেন না অনেকে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ভারত থেকে আমদানি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ১৮৩ ট্রাক পণ্য, রপ্তানি পরিমাণ ছিল ১৪৯ ট্রাক। বর্তমানে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ কম।

চলতি ২০৩৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। গত ৪ মাসে এ রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক অবস্থা খারাপ থাকায় আদায় হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। এতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে ২৪০ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ডলার সংকটের কারণ দেখিয়ে চাহিদা মতো এলসি দিচ্ছে না। এতে কমেছে আমদানির পরিমাণ।
আমদানিকারক উজ্বল বিশ্বাস জানান, ডলারের সংকটে চাহিদা মত পণ্য আমদানি সম্ভব হচ্ছেনা। ব্যাংক নানান অযুহাত দেখিয়ে এলসি খুলতে বিমূখ করছে। স্বাভাবিক সময়ে মাসে ৮ থেকে ১০ টি পণ্য চালান আমদানি করলেও এখন ৩ টির বেশি সম্ভব হচ্ছেনা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, বৈশ্বিক মন্দার মারাত্বক বিরুপ প্রভাবের মুখে পড়েছে বাণিজ্য। বর্তমানে আমদানির পরিমাণ কমে প্রায় অর্থেকে নেমেছে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, ব্যাংক চাহিদা মতো এলসি দিতে পারছে না। কিছু এলসি দিলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাজের ধীরগতিতে পণ্য আমদানি করতে ৩ মাস সময় লেগে যাচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন জানান, উচ্চ শুল্কায়ন যুক্ত পণ্য মেশিনারি, গার্মেন্টস, ট্রাক চ্যাসিচ ও মটরপার্টস আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আয়ে মারাত্বক বিরুপ প্রভাব পড়েছে। এতে গত ৪ মাসে লক্ষমাত্রার চেয়ে ২৪০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত কমেছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ২২২৬ জন পাসপোর্টধারী গেছে ভারতে এবং ভারত থেকে ফিরেছে ২৩৮৩ জন। তবে বিগত বছরগুলোতে এমন দিনে অনেক বেশি মানুষের যাতায়াত ছিল।
বেনাপোল সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার কর্মাস ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন জানান, বর্তমান বৈশ্বিক মন্দার কারণে ডলার সংকটে আমদানিকারকদের চাহিদা মতো এলসি দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। তবে রপ্তানি বেশি করতে পারলে সেখান থেকে যে অর্থ আসবে তা থেকে আমদানি ব্যয় মেটানো সহজ হবে। আমদানিকারকদের রপ্তানি বাণিজ্যে জোর দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
ভারত থেকে এলো ৭৪ মেট্রিক টন আলু

দেশের বাজারে আলুর দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় এবার ভারত থেকে আলু আমদানি করেছে সরকার। চাল, ডা, গম, পেঁয়াজ, সজনে ডাটা ও কাঁচামরিচসহ নানা ধরনের পণ্যের পর ভারত থেকে প্রথমবারের মতো এবার আলু আমদানি শুরু করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিন ট্রাকে করে এক হাজার ৪৮০ বস্তায় ৭৪.০১ মেট্রিক টন আলু ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। আলুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রিগ্রেটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ বাংলাদেশ। রফতানিকারক পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস ভারত। শুক্রবার সরকারি ছুটি থাকায় শনিবার (২ ডিসেম্বর) আলুর চালানটি ছাড়ের কাজ সম্পন্ন হবে।
সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ৭৭টি আবেদনের বিপরীতে সরকার ১২ আমদানিকারককে ভারত থেকে প্রায় ৫০ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কোনোক্রমেই আলুর কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকার বেশি হতে পারে না। ৭০ থেকে ৮০ টাকা আলুর কেজি হবে কেন?
আলু আমদানির এই সিদ্ধান্ত বাজারে প্রভাব পড়বে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পড়বে বলেই আমরা আমদানির অনুমতি দিয়েছি।
দেশের বেনাপোল স্থলবন্দর ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে অনুমতিপ্রাপ্ত আলুগুলো আমদানি করা হবে।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মেট্রিক টন আলুর কাস্টমস শুল্কায়ন মূল্য ১৮০ ডলার। সে হিসাবে মেট্রিক টন প্রতি আলুর ডিউটি দিতে হচ্ছে ৬৬৮৯.৫০ টাকা। সে মোতাবেক প্রতি কেজি আলুতে ডিউটি দিতে হচ্ছে ৬.৭০ টাকা। আলু কেনা, এল সি খরচ এবং ডিউটিসহ প্রতি কেজি আলুতে আমদানি কারকের খরচ পড়ছে প্রায় ২৯ টাকা। ফলে বাজারে ৩০-৩২ টাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এতে করে দেশের বাজারে আলুর দাম অনেক কমে আসবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ৭৪ মেট্রিক টন আলু বন্দরে প্রবেশ করেছে। শুক্রবার ছুটি থাকার কারণে আজ আলুর চালানটি খালাস হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
জনশক্তি রপ্তানিতে রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ

জনশক্তি রপ্তানিতে বড় এক মাইলফলক অর্জন করেছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত দেশটি যে পরিমাণ জনশক্তি রপ্তানি করেছে তা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে চলতি বছরের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ চার হাজার কর্মী বিদেশে গেছে। গত বছর এ সংখ্যাটি ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার।
এ বছর শ্রম অভিবাসনের একটি ইতিবাচক দিক হলো মধ্যপ্রাচ্যের প্রচলিত বাজারগুলোর পরিবর্তে ইতালি এবং যুক্তরাজ্যের মতো অপ্রচলিত গন্তব্যে রেকর্ডসংখ্যক কর্মী পাঠানো।
যদিও এক্ষেত্রে উদ্বেগ রয়েই গেছে। কারণ অসংখ্য কর্মী প্রধানত ওমান, সৌদি আরব এবং মালয়েশিয়ায় ভুয়া চাকরির প্রলোভনে পড়ে সঠিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
উদ্বেগের আরেকটি বিষয় হলো- বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সত্ত্বেও সেই হারে প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) প্রবাহ বাড়েনি। গত দুই অর্থবছর ধরে রেমিট্যান্স মাত্র ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচেই স্থবির হয়ে আছে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাংকাররা এই অসমতার জন্য তিনটি প্রাথমিক কারণকে দায়ী করেছেন। এগুলো হলো- স্বল্প-দক্ষ পেশার ব্যাপকতা, অর্থ স্থানান্তরের জন্য অবৈধ চ্যানেলের ব্যবহার (হুন্ডি) এবং আর্থিক লাভের জন্য বিদেশি নিয়োগদাতার ভুয়া চাকরির প্রস্তাব এনে অদক্ষ শ্রমিকদের কাছ থেকে দেশের কিছু রিক্রুটারের অর্থ নেওয়ার ঘটনা।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো- চার বছর বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় খুলে দেওয়া। দেশটি উৎপাদন, নির্মাণ, পরিষেবা, কৃষি, খনি ও গৃহস্থালীসহ বিভিন্ন খাতে এ বছর তিন লাখ ২৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে সৌদি আরবের পরেই এখন মালয়েশিয়ার অবস্থান। উল্লেখ্য, বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরব।
এছাড়াও সৌদি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিগুলোতে বাংলাদেশি শ্রমিক বা কর্মীদের জন্য কোটা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ নির্ধারণ করাও গত দুই বছর ধরে বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
এ বছর বিশেষ করে কৃষি, আতিথেয়তা এবং উৎপাদন খাতে ১৬ হাজার ২৯৭ জন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। একক বছরের হিসাবে এটিই সর্বোচ্চ।
যুক্তরাজ্য সেবা, গৃহকর্মী ও আতিথেয়তা খাতে রেকর্ড ৯ হাজার ৪২৭ জন নিয়োগ দিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরও এ বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে।
নিয়োগকারীরা এ কথা স্বীকার করেন যে কভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বিদেশে যেতে না পারা শ্রমিকরা পরবর্তী বছরগুলোতে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।
জনশক্তি রপ্তানি খাতের এই সাফল্যের পেছনে ভুয়া চাকরির প্রলোভনের অভিযোগও নেহাত কম নয়।
রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (আরএমএমআরইউ) একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, করোনা পরবর্তীকালে বিদেশে গিয়েছিলেন, কিন্তু চাকরি সংক্রান্ত বিভিন্ন শর্তাবলী পূরণ না করায় এক থেকে ১৬ মাসের মধ্যে ৩৫ শতাংশেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন।
শ্রম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রিক্রুটিং এজেন্সি ও বিদেশি নিয়োগদাতারা অনেক কর্মীকে মধ্যপ্রাচ্যে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে থাকে। যে কারণে এখন অন্য দেশগুলোতে অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে।
খাত সংশ্লিষ্ট অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর ওমানের সম্প্রতি নতুন ভিসা স্থগিতাদেশে উদ্বেগ বেড়েছে। কর্মীরা চাকরি হারাচ্ছে, মধ্যস্থতাকারীর দ্বারা প্রতারিত হচ্ছে এবং কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাচ্ছে না বলে শোনা যাচ্ছে।