ধর্ম ও জীবন
আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ বৃহস্পতিবার (১২ রবিউল আউয়াল)। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ৫৭০ সালের এই দিনে মানব জাতির জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর শুভ আবির্ভাব ঘটে।
দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। ৫৭০ সালের এই দিনে (১২ রবিউল আউয়াল) আরবের মক্কা নগরীর সভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর জন্মের আগে গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। ওই সময় আরবের মানুষ মহান আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’র যুগ।
তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করত। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন।
মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত লাভ বা মহান রাব্বুর আলামিনের নৈকট্য লাভ করেন।
পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না’। এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব জাহানের বাস্তবতায় এ দিনের (পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর) গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে থাকে।

এদিকে, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা মহানবী (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবকল্যাণে ব্রতী হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের জন্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর জীবনের ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্ম ও জীবন
১৩ দিনে হজের নিবন্ধন করেছেন ৮২৪ জন

২০২৪ সালে হজে যেতে গত ১৩ দিনে নিবন্ধন করেছেন হজ পালনে ইচ্ছুক ৮২৪ জন। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ২৯৬ জন আর বেসরকারি পর্যায়ে ৫২৮ জন।
আগামী বছরের হজযাত্রীদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে গত ১৫ নভেম্বর। এ নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলবে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটায় এক লাখ ১৭ হাজার জন। নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে।
সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হবে। বিশেষ হজ প্যাকেজের ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা খরচ হবে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। প্রথম প্যাকেজের (সাধারণ) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৪ সালের পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে ১৬ জুন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
হজের জন্য ১০ দিনে নিবন্ধন ৬০৭ জনের

২০২৪ সালে হজ পালন করতে ইচ্ছুকদের জন্য নিবন্ধন শুরু হয়েছে গত ১৫ নভেম্বর। যা চলবে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর ১০ দিন ৬০৭ নিবন্ধন করেছেন।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পোর্টালে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২২৩ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩৮৪ জন নিবন্ধন করেছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে আগামী বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি কোটায় ১ লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন।
নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে। সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হবে। বিশেষ হজ প্যাকেজের ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা খরচ হবে।

আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। প্রথম প্যাকেজের (সাধারণ) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দ্বিতীয় আজানের জবাব দেওয়া যাবে কি?

জুমার দ্বিতীয় আজান বা খুতবা পূর্ববর্তী আজানের জবাব দেওয়ার ব্যাপারে আলেমদের দুই ধরনের মতামত রয়েছে। নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী জবাব দেওয়া জায়েজ।
আবু উমামা ইবনে সাহল ইবনে হুনাইফ বলেন, আমি মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানকে (রা.) দেখেছি, তিনি মিম্বারে বসে ছিলেন, মুআজ্জিন আজান শুরু করলেন। মুআজ্জিন যখন বললেন, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ তখন মুআবিয়াও (রা.) বললেন, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। (এভাবে তিনি পুরো আজানের জবাব দিলেন) আজান শেষ হলে তিনি বললেন, এ মজলিসে যখন মুআজ্জিন আজান দেয়, তখন আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমনটিই বলতে শুনেছি। (সহিহ বুখারি: ৯১৪)
প্রখ্যাত তাবেঈ সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহ.) বলেন, ইমাম খুতবার জন্য বের হলে নামাজ পড়া যাবে না এবং খুতবা শুরু করে দিলে আর কথা বলা যাবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ৫৩৪২)
অর্থাৎ খুতবা শুরু করার আগ পর্যন্ত কথা বলার বৈধতা রয়েছে। তাই আজানের জবাব দেওয়া যেতে পারে। আজানের দোয়া পড়ার আগে ইমাম খুতবা শুরু করলে দোয়া পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
তবে অনেক আলেমের মতে ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকেই কথা বলা বন্ধ রাখতে হবে। তাই খুতবা পূর্ববর্তী আজানের জবাব দেওয়া যাবে না। আতা (রহ.) থেকে বর্ণিত রয়েছে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. জুমার দিন ইমাম সাহেব খুতবার জন্য বের হওয়ার পর নামাজ পড়া ও কথা বলা অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৫৩৪০)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
নামাজে বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব

পবিত্র কোরআন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত অনন্য এক নিয়ামত। কোরআন তেলাওয়াতকারী মূলত আল্লাহতায়ালার সঙ্গেই কথা বলে থাকেন। নামাজে কোরআন তেলাওয়াত অপরিহার্য বা ফরজ। সুতরাং বিশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করাও অত্যাবশ্যক। কেরাত সম্পর্কীয় মাসায়েল অবগত হওয়া প্রত্যেক মুসলমানের অপরিহার্য দায়িত্ব। ফিকাহ তথা মাসয়ালার কিতাবে নামাজে বিশুদ্ধ কেরাত সম্পর্কিত মাসায়েল নিম্নরূপ বর্ণনা করা হয়েছে।
১. আরবি অক্ষরগুলো বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে হবে। বিভিন্ন অক্ষরের উচ্চারণের পার্থক্য নিরূপণ করে যেটি যেভাবে উচ্চারণ করতে হয় ঠিক সেভাবেই উচ্চারণ করতে হবে। যথার্থ এবং বিশুদ্ধ উচ্চারণের জন্য সব সময় প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ভুল পড়লে গুনাহগার হবে। এমনকি নামাজ নষ্টও হয়ে যেতে পারে।
২. ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহার পর কোরআনের যে কোনো সুরা অথবা বড় এক আয়াত বা ছোট তিনটি আয়াত পড়া ওয়াজিব। তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে শুধু সুরা ফাতেহা পড়তে হবে। বিতর, সুন্নত ও নফল নামাজের সব রাকাতেই সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলিয়ে পড়তে হবে।
৩. নামাজের রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলানো ওয়াজিব। এক্ষেত্রে কেউ প্রথমে সুরা বা আয়াত পড়ার পর সুরা ফাতিহা পড়লে ওয়াজিব আদায় হবে না।
৪. ফজর, মাগরিব, এশা, জুমা ও দুই ঈদের নামাজে কেরাত উচ্চৈঃস্বরে পড়তে হবে, ইমাম ভুলে আওয়াজ না করে কিরাত পড়লে সিজদা সাহু করতে হবে। ইচ্ছাকৃত নীরবে নামাজ পড়লে নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।

৫. জোহর ও আসর নামাজে ইমামকে নীরবে কেরাত পড়তে হয়। একাকী বিতর নামাজ আদায়কারীর জন্য নীরবে কেরাত পড়া ওয়াজিব।
৬. ফজর, মাগরিব ও এশার নামাজ কোনো কারণবশত একাকী আদায় করলেও উচ্চৈঃস্বরে কেরাত পড়া উত্তম।
৭. জামাতের সঙ্গে ইমাম ফজর, মাগরিব ও এশার নামাজ কাজা আদায় করলেও উচ্চৈঃস্বরে কিরাত পড়া ওয়াজিব।
৮. একই সুরা প্রথম ও দ্বিতীয় রাকাতে না পড়াই উত্তম।
৯. আস্তে করে কেরাত পড়ার নামাজেও কেরাত মুখে উচ্চারণ করে পড়তে হয়। একেবারে মুখ বন্ধ করে শুধু মনে মনে পড়া জায়েজ নয়।
১০. নামাজে কেরাত শেষ হওয়ার আগেই রুকুতে ঝুঁকে গিয়ে সেখানেও কেরাত পড়তে থাকা মাকরুহ।
১১. ফরজ নামাজে ইচ্ছাকৃত কোরআনের ক্রমধারার বিপরীত কেরাত পড়াও মাকরুহ, তবে ভুলে পড়লে তা মাকরুহ হবে না।
১২. ফরজ নামাজে একই সুরার অনেক আয়াত একত্রে পড়ার পর মাঝখানে দুই আয়াতের কম ছেড়ে দিয়ে দ্বিতীয় রাকাতে সামনে থেকে পড়া মাকরুহ। এমনিভাবে দুই সুরা এভাবে পড়ে মাঝখানে তিন আয়াতসংবলিত সুরা ছেড়ে দিয়ে পরবর্তী সুরা পড়াও মাকরুহ। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা মাউন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুন পড়ে মাঝখানে সুরা কাউসার ছেড়ে দেয়, তাহলে মাকরুহ হবে। এ হুকুম ফরজ নামাজের জন্য, নফল নামাজের জন্য প্রযোজ্য নয়।
১৩. ফরজ নামাজের এক রাকাতে মাঝখানে এক বা একাধিক আয়াত ছেড়ে দ্বিতীয় রাকাত পড়া মাকরুহ। নফল নামাজের ক্ষেত্রে এ হুকুম প্রযোজ্য নয়।
১৪. কোনো ব্যক্তি নতুন মুসলমান হয়ে সবেমাত্র নামাজ আরম্ভ করেছে, কিন্তু কোরআনের কোনো সুরা বা আয়াত তার মুখস্থ নেই, এমতাবস্থায় অনতিবিলম্বে সুরা বা আয়াত মুখস্থ করতে হবে। মুখস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত নামাজে শুধু সুবহানাল্লাহ অথবা আলহামদুলিল্লাহ ইত্যাদি পড়ে নামাজ আদায় করতে হবে। তবে কোরআনের সুরা বা আয়াত মুখস্থ করার ব্যাপারে অলসতা বা অবহেলা করলে গুনাহগার হবে। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি পৃষ্ঠা ১৪৯ থেকে ১৫০) প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদুর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে ব্যক্তি কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করবে, তার প্রতিটি অক্ষরে অজুবিহীন অবস্থায় ১০ নেকি, অজু অবস্থায় ২০ নেকি, নামাজে বসে পড়লে ২৫ নেকি এবং দাঁড়িয়ে পড়লে ৫০ নেকি প্রদান করা হবে। নামাজে বিশুদ্ধ কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করা জরুরি। কেননা লাহনে জলি তথা মারাত্মক ভুল পড়ার দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায় এবং লাহনে খফি তথা অসুন্দর পড়ার দ্বারা নামাজ মাকরুহ হয়ে যায়।
লাহনেজলি তথা মারাত্মক ভুল যেমন: ১. ভিন্ন মাখরাজের ভুল উচ্চারণ। যদিও শুনতে কাছাকাছি মনে হয়। ২. হরকত তথা জের, জবর ও পেশের পরিবর্তন। যার দ্বারা অর্থের সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়, এমনকি কুফরিও হয়ে যায়। ৩. মাদের হরফকে টেনে না পড়া। লাহনে খফি তথা অসুন্দর পড়া। যেমন: গুন্নাহ, ঈদগাম, ইজহার, ইখফা ও ক্ললকলা ইত্যাদি যথাযথ নিয়মে আদায় না করা। এর দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে কিন্তু তিলাওয়াত অসুন্দর হয়। কেননা আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা কোরআন শরিফ বিশুদ্ধভাবে তিলাওয়াত কর। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে নামাজের ভিতরে ও বাহিরে বিশুদ্ধভাবে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করার তৌফিক দান করুন, আমিন। বাংলাদেশের বিভিন্ন মসজিদে বয়স্কদের জন্য বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত শিক্ষা কোর্স চালু হয়েছে। আপনাদের জামে মসজিদেও এ কোর্সটি স্বউদ্যোগে চালু করতে পারেন। আমাদের কাওলার বাজার জামে মসজিদে প্রতিদিন বাদ ফজর ‘এসো কোরআন শিখি’ নামক বিশুদ্ধ কোরআন শিক্ষা কোর্স চলছে। কোরআনের মহব্বতে সবাই সবান্ধব আমন্ত্রিত। আল্লাহুম্মা আমিন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
মসজিদে ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান

ইসলামে মসজিদ অত্যন্ত সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ স্থান। কোরআনে আল্লাহ মসজিদকে নিজের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন এবং মসজিদ আবাদকারীদের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ বলেন,
اِنَّمَا یَعۡمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰهِ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ اَقَامَ الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَی الزَّکٰوۃَ وَ لَمۡ یَخۡشَ اِلَّا اللّٰهَ فَعَسٰۤی اُولٰٓئِکَ اَنۡ یَّکُوۡنُوۡا مِنَ الۡمُهۡتَدِیۡنَ
একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, ওরা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সুরা বাকারা: ১৮)
মসজিদের মর্যাদা রক্ষা করা মুসলমানদের কর্তব্য ও তাকওয়ার দাবি। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,.
مَنۡ یُّعَظِّمۡ شَعَآئِرَ اللّٰهِ فَاِنَّهَا مِنۡ تَقۡوَی الۡقُلُوۡبِ

কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে সম্মান করলে এটাতো তার অন্তরের তাকওয়ারই বহিঃপ্রকাশ। (সুরা হজ্জ: ৩২)
মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করা মসজিদের আদবের বিপরীত কাজ। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي المَسْجِدِ فَقُولُوا: لَا أَرْبَحَ اللهُ تِجَارَتَكَ.
তোমরা মসজিদে কাউকে ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখলে তাকে বলো, আল্লাহ তোমার ব্যবসাকে অলাভজনক করুন! (সুনানে তিরমিজি: ১৩২১)
ইমাম মালেক (রহ.) থেকে বর্ণিত আতা ইবনুল ইয়াসার (রাহ.) কাউকে মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখলে বলতেন, তুমি দুনিয়ার বাজারে যাও; মসজিদ আখেরাতের বাজার। (মুআত্তা ইমাম মালেক: ৬০১)
তাই মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকা উচিত।