জাতীয়
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন’ উদ্বোধন

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের একটি সাইড ইভেন্টে ‘ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন’ উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এটির উদ্বোধন করেন তিনি।
ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন এর মাধ্যমে ‘ডিজিটাল বৈষম্যমুক্ত বিশ্বের রূপকল্প’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও এটুআই-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়। গাম্বিয়া, উগান্ডা, ঘানা, সোমালিয়া, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাতিসংঘ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং এটুআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ই-কোয়ালিটি সেন্টারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সাউথ-সাউথ সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিগত বিভাজন দূর করা। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিষ্ঠিত এই সেন্টারটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার, গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্বের দেশগুলোর মাঝে প্রযুক্তিগত পার্থক্য দূরীকরণে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি হস্তান্তর, গবেষণা এবং অর্থনৈতিক সহায়তার মাধ্যমে সমতামূলক ডিজিটাল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যবস্থার উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের যাত্রার বিষয়টি তুলে ধরেন। উন্নয়নশীল দেশে প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা, দেশসমূহের মধ্যে সহযোগিতা, সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এবং ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণের ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইসিটি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি অনুবিভাগের মাধ্যমে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিতকরণ ও প্রয়োজনীয় উদ্ভাবনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল ভিশন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ই-কোয়ালিটি সেন্টারের কারিগরি ও ব্যবহারিক নানা দিক উপস্থাপন করা হয়। উপস্থিত বিভিন্ন দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এই উদ্যোগের ব্যাপারে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। তারা প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক বণ্টন, উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহের মধ্যে সহযোগিতা এবং নতুন ডিজিটাল বাস্তবতার চ্যালেঞ্জসমূহের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ লক্ষ্যে ই-কোয়ালিটি সেন্টার কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এই অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল আইসিটি ইনোভেশন ফ্যাসিলিটির বিজয়ী প্রকল্পসমূহকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুরষ্কার বিতরণ করেন।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের অংশগ্রহণে আরো একটি অনলাইন সেশন আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইসিটি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মুনতাসির মামুন এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা সেশনটিতে অংশগ্রহণ করেন। দেশ ও বিদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্যদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সাইড ইভেন্ট এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সাফল্যের সাথে সমাপ্ত হয়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
চার অঞ্চলে ভাগ হচ্ছে রেলওয়ে

রেল নেটওয়ার্ক আরও সম্প্রসারণ করে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়েকে দুটি (পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল) থেকে ৪টি অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে বিদ্যমান ৪টি বিভাগ থেকে বিস্তৃত করে ৮টি বিভাগ করা হবে।
দুটি অঞ্চলের অধীনে বর্তমানে ৩ হাজার ৯৩ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার রেলপথ আছে। রেলওয়ের বিদ্যমান মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ কিলোমিটার।
গত ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়ের বিদ্যমান কাঠামো বিভাজন সংক্রান্ত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান।
জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা নিয়ে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল গঠিত। এটিকে ভেঙে খুলনা ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন ‘দক্ষিণাঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। নতুন এ অঞ্চলের অধীনে পরিচালন বিভাগ হিসেবে যথাক্রমে যশোর ও ফরিদপুর করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ নিয়ে গঠিত বর্তমান পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের ঢাকা ও ময়মনসিংহ আলাদা করে ‘মধ্যাঞ্চল’ নামে নতুন অঞ্চল গঠিত হবে। এ অঞ্চলের অধীনে পরিচালন বিভাগ থাকবে ময়মনসিংহ ও ঢাকা। এ সিদ্ধান্তের আলোকে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে থেকে ঢাকা বিভাগ বাদ পড়ায় নতুন পরিচালন বিভাগ হিসেবে সিলেটকে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী ও রংপুর নিয়ে গঠিত রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পরিচালন পরিধির এলাকা কমলেও বিদ্যমান পরিচালন বিভাগ পাকশী ও লালমনিরহাট অপরিবর্তিত থাকছে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক নতুনভাবে প্রস্তাবিত বিভাগসমূহের অধিক্ষেত্র, জনবলসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পার্সোনেল শাখার মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে দ্রুত প্রেরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী ২৩ অক্টোবর, ২০১৪ তারিখে রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং জনগণের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিদ্যমান দুটি অঞ্চলকে ৪টি অঞ্চলে বিভক্ত করার অনুশাসন প্রদান করেন। সে অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ৪ জন মহাব্যবস্থাপক নতুন চার চার অঞ্চলের প্রধান হবেন। আর তাদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একজন করে বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক। ট্রেন পরিচালনাগত সিদ্ধান্তগুলো নেবে অঞ্চল ও বিভাগ। আর নীতিনির্ধারণী বিষয়গুলো দেখবে রেলের সদর দফতর তথা রেলভবন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গণমাধ্যমে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীসেবাসহ রেল নেটওয়ার্ক বাড়াতেই ৪ অঞ্চলে ভাগ করা হচ্ছে রেলওয়েকে। ট্রেন পরিচালনা ও সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে এসব বিভাগ ও অঞ্চল। এর আলোকে রেলওয়ের জনবল কাঠামো পুনর্বিন্যাসের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গণহত্যা প্রতিরোধে সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণহত্যা প্রতিরোধে সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গণহত্যা প্রতিরোধে বাংলাদেশের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমি সারাবিশ্বে শান্তি ও অহিংসার সংস্কৃতি প্রচারসহ এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে আমাদের সম্মিলিত শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই।
গণহত্যার অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণ ও মর্যাদা এবং এই অপরাধ প্রতিরোধবিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবসের প্রাক্কালে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গণহত্যার অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণ ও মর্যাদা এবং এই অপরাধ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক দিবস এবং গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত কনভেনশনের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বের ইতিহাসজুড়ে গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে এবং গণহত্যা প্রতিরোধে ও অপরাধীদের ভোগ করা দায়মুক্তির অবসানে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তির প্রতি আমাদের অঙ্গীকার আমাদের নিজস্ব বেদনাদায়ক ইতিহাস থেকে উদ্ভূত ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে দমন করতে পূর্ব পাকিস্তানের নিরীহ নাগরিকদের বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক অভিযান চালায়। আমাদের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ সময়ে দখলদার বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের হাতে ত্রিশ লাখ নিরীহ মানুষ নির্মমভাবে নিহত হয়। দুই লাখেরও বেশি নারী যৌন সহিংসতা ও নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং এক কোটি মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে সীমান্তের ওপারে পাড়ি দিতে হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা যে বেদনা ও ট্রমা সহ্য করেছি তা আমাদের যে কোনো স্থানে গণহত্যা বন্ধ করতে এবং এই জঘন্য অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের জন্য ন্যায়বিচার দাবি করতে অনুপ্রাণিত করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালের গণহত্যার কিছু মূল অপরাধীকে বিচারের আওতায় এনে আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ এবং এই ক্ষত প্রতিরোধে আমাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে আমরা বাংলাদেশে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করি। আমরা আমাদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন দান এবং ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, ‘গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত কনভেনশনের ৭৫তম বার্ষিকী পালন করছি এমন সময় যখন আমরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যার ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মাত্রা ও তীব্রতা, বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যা আমাদের একই ধরনের বেদনাদায়ক ইতিহাসের কথা মনে করিয়ে দেয় যার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া উচিত নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের অঞ্চলে রোহিঙ্গা মুসলমানরা কীভাবে নিয়মতান্ত্রিক নিপীড়ন ও নৃশংসতার শিকার হয়েছে তা দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়েছি। নির্যাতনের শিকার দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার আশ্রয়দাতা দেশ হিসেবে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে শান্তি ও মর্যাদার সাথে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বসবাস করতে পারে এমন একটি নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্ঠিতে তাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার আহ্বান জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন অংশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে জেনোফোবিয়া, বর্ণবাদ এবং ঘৃণা ছড়ানোর কারণে আমরা উদ্বিগ্ন। এগুলো দুর্বল মানুষকে গণহত্যার মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলেছে।’
প্রধানমন্ত্রী সব রাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের এই ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে, গণহত্যার ঘটনা রোধ করতে এবং সেই ঝুঁকিগুলো দৃশ্যমান হয়ে গেলে দ্ব্যর্থহীনভাবে তাদের নিন্দা করার আহ্বান জানান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রপ্তানি বন্ধের খবরে বাড়লো পেঁয়াজের দাম

২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারত— এমন খবর গণমাধ্যমে আসতে না আসতেই দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দেওয়া এক আদেশে রপ্তানি বন্ধের খবর জানায় ভারত। তবে এই সিদ্ধান্ত আসার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই এক লাফে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে পেঁয়াজের।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাজার ঘুরে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবর জানা গেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালেই রাজধানীর বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহেও ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।
এছাড়াও পাবনার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা করে। তবে সন্ধ্যার পরই পাল্টে যায় পেঁয়াজের বাজারের দৃশ্যপট। বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা করে এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি করে।

মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার খবর সন্ধ্যার মধ্যেই পৌঁছে যায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের কানে। এরপরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন তারা।
ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা খবর পেয়ে পেঁয়াজ কিনতে বাজারে আসেন মধ্য বাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্টে বসবাসকারী মওদুদ আহমেদ। দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সন্ধ্যার দিকেই দেখেছি ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, তখনই বুঝতে পারলাম দেশেও দাম বেড়ে যাবে। তাই দ্রুত বাজারে চলে আসলাম, কিন্তু এসে দেখি আমি আসার আগেই দাম বেড়ে গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ দুইদিন আগেও ১০০ টাকা কেজি কিনেছি, আজ কিনতে হয়েছে ১৫০ টাকা করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর ব্যাপারে খুবই দক্ষ। কোন একটা ঘোষণা আসার আগেই অটোমেটিক দাম বেড়ে যায়। ভারত আজ ঘোষণা দিয়েছে, তাই বলে আজই দাম বাড়িয়ে ফেলতে হবে?
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে মো. মানিক নামে এক বিক্রেতা বলেন, ভারত থেকে বেশি দামেই পেঁয়াজ আনতে হচ্ছে। যার কারণে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেশি। আজ আবার শুনেছি ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে, তাহলে তো পেঁয়াজের বাজারে আরও অস্থিরতা তৈরি হবে।
দেশি পেঁয়াজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশি পেঁয়াজের সিজন শেষ, যে কারণে দামটা একটু বেশি। তবে আগামী ১৫ দিন পরই বাজারে নতুন পেঁয়াজ চলে আসবে, আশা করি দেশিটার দাম তখন কমে যাবে।
বিক্রেতা রাকিব মিয়া বলেন, গত দুই দিনের বৃষ্টিতে কৃষকের পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে৷ যার কারণে নতুন পেঁয়াজ এলেও দাম তেমন একটা কমবে না। এছাড়া বাজারে সব জিনিসেরই তো দাম বেশি। পেঁয়াজের দাম কমবে কী করে?
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দেওয়া এক আদেশে, ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার এ পদক্ষেপ নেয়।
এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) জানায়, পেঁয়াজের রপ্তানি নীতি ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে, তবে তা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অনুরোধের পর কেন্দ্রীয় সরকার থেকে দেওয়া প্রদত্ত অনুমতির ভিত্তিতে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আজ বেগম রোকেয়া দিবস

আজ (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস। নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতিবছর এই দিবসটি পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দিবসটি উপলক্ষ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আজ বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ দেওয়া উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও গৌরাবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখায় এবছর পাঁচজন বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হচ্ছে। পদকপ্রাপ্ত পাঁচ বিশিষ্ট নারী ও তাদের অবদানের ক্ষেত্র হলো- নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য খালেদা একরাম, মরণোত্তর (ঢাকা জেলা), নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডা. হালিদা হানুম আখতার (রংপুর জেলা), নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা, মরণোত্তর (নেত্রকোনা জেলা), নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার (লক্ষ্মীপুর জেলা) এবং পল্লী উন্নয়নে রনিতা বালা (ঠাকুরগাঁও জেলা)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পদক দেবেন।
বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম এই উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠান এবং নিবন্ধ প্রচার ও প্রকাশ করবে। নারী শিক্ষা, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার বিতরণ ও স্থাপন করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ফি কমালো চীন

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা ফি কমিয়েছে চীন। আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে নতুন ভিসা ফি কার্যকর হবে। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার চীনা দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ঢাকায় চীনা দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের চীনে একবারে প্রবেশে আবেদনের জন্য ভিসা হবে ২ হাজার ৪০০ টাকা। এ ক্ষেত্রে আবেদনের পর চতুর্থ কর্মদিবসে ভিসা পাওয়া যাবে। আবেদনের পর তৃতীয় কর্মদিবসে ভিসা পেতে খরচ পড়বে ৫ হাজার ১০০ টাকা এবং দ্বিতীয় কর্মদিবসে ভিসা পেতে খরচ পড়বে ৬ হাজার ৪০০ টাকা।
একইভাবে চীনে ডাবল এন্ট্রি ভিসার জন্য বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে ভিসা আবেদন ফি হবে ৩ হাজার ৬০০ টাকা (চতুর্থ কর্মদিবসে ডেলিভারি), ৬ হাজার ৩০০ টাকা (তৃতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারি) ও ৬ হাজার ৬০০ টাকা (দ্বিতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারি)।
একাধিকবার চীনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৬ মাসের বেশি মেয়াদি ভিসার জন্য বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ফি হবে ৬ হাজার ৮০০ টাকা (চতুর্থ কর্মদিবসে ডেলিভারি), সাড়ে ৭ হাজার টাকা (তৃতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারি) ও ৮ হাজার ৮০০ টাকা (দ্বিতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারি)।
একাধিকবার চীনে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ১২ থেকে ২৪ মাস মেয়াদি চীনা ভিসার ফি হবে ৭ হাজার ২০০ টাকা (চতুর্থ কর্মদিবসে ডেলিভারি), ৯ হাজার ৯০০ টাকা (তৃতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারি) ও ১১ হাজার ২০০ টাকা (দ্বিতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারি)।

বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসে আমেরিকান পাসপোর্টধারীদের ভিসা আবেদন ফি হবে আবেদনের চতুর্থ কর্মদিবসে ডেলিভারির ক্ষেত্রে ১৫ হাজার ৯০০ টাকা, তৃতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারির ক্ষেত্রে ১৮ হাজার ৬০০ টাকা ও দ্বিতীয় কর্মদিবসে ডেলিভারির ক্ষেত্রে ১৯ হাজার ৯০০ টাকা।
তবে আমেরিকান পাসপোর্টধারী সাংবাদিকদের চীনা ভিসা ফি আরও বেশি। চতুর্থ কর্মদিবসে ভিসা পেতে ১৯ হাজার ৫০০ টাকা, তৃতীয় কর্মদিবসে ভিসা পেতে ২২ হাজার ২০০ টাকা ও দ্বিতীয় কর্মদিবসে ভিসা পেতে ২৩ হাজার ৫০০ টাকা দিতে আমেরিকান পাসপোর্টধারী সাংবাদিকদের।
বাংলাদেশে কানাডার পাসপোর্টধারীদের চীনা ভিসা আবেদনের জন্য গুনতে হবে ৬ হাজার ৩০০ থেকে ১০ হাজার ৩০০ টাকা। রাশিয়ার পাসপোর্টধারীদের ঢাকায় চীনা ভিসা আবেদনের ফি চার হাজার ৩০০ থেকে ১২ হাজার টাকা।
এর বাইরে অন্য কোনো দেশের পাসপোর্টধারীদের জন্য চীনের ভিসা আবেদন ফি হবে ৩ হাজার থেকে ৭ হাজার (সিঙ্গেল এন্ট্রি)।
দুইবার চীনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ফি হবে সাড়ে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। ৬ মাসের বেশি মেয়াদে ভিসা ফি হবে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। ১২ থেকে ২৪ মাস মেয়াদি ভিসার ক্ষেত্রে ফি হবে ৯ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বিদেশে চীনা দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলো ভিসা ফি বর্তমান হারের ৭৫ শতাংশে নামিয়ে আনছে। কোভিড মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে চীনে যাতায়াতের সুবিধার্থে ভিসা ফি কমানো হয়েছে।