জাতীয়
বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রস্তাব

বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরে মহামারি প্রতিরোধের অংশ হিসেবে একটি বৈশ্বিক সহযোগিতা কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া (পিপিপিআর) বিষয়ে ৭৮তম ইউএনজিএ উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে ভাষণ দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের সবার জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে হাজির হয়েছে। আমরা সারাবিশ্বে অনেককে হারিয়েছি। আমরা বুঝতে পেরেছি যে মানুষের হস্তক্ষেপের জন্য প্রকৃতির নিজস্ব সীমা রয়েছে। আমরা বিশ্ব সংহতির অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতাও পেয়েছি। আমরা স্বীকার করেছি যে সবাই নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই নিরাপদ নই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অবশ্যই উত্তম চর্চা বাড়িয়ে এবং অতীতের ভুলগুলো এড়িয়ে আমাদের সম্মিলিত শিক্ষা নিতে হবে। সমতা ও সংহতি অবশ্যই আমাদের প্রচেষ্টার প্রাণভ্রমরা তৈরি করবে।
মহামারি প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি অগ্রাধিকার তুলে ধরেছেন। পাঁচটির মধ্যে তিনটি অগ্রাধিকার হলো- উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য রেয়াতযোগ্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন, মহামারি নজরদারি, প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে মোকাবিলার জন্য সম্পদ ও দক্ষতা একত্র করা; সবার জন্য ভ্যাকসিনসহ মানসম্পন্ন, সাশ্রয়ী ও কার্যকর মহামারি পণ্যগুলোর ন্যায়সঙ্গত ও অবাধপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা।
অবশিষ্ট দুটি অগ্রাধিকার হলো- প্রযুক্তির প্রাপ্যতা ও বাস্তব জ্ঞানের মাধ্যমে মহামারি পণ্যগুলোর উৎপাদন বৈচিত্র্যকরণ; এবং ডব্লিউএইচও’র নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে প্রাপ্যতা ও সুবিধা ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরি করা।

তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে আমরা একটি মহামারি চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালা (২০০৫) এর সংশোধনী থেকে ন্যায্য এবং সুনির্দিষ্ট ফলাফল দেখার আশা করি। বাংলাদেশ উভয় প্রক্রিয়ার সাথে গঠনমূলকভাবে জড়িত থাকবে।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক দূত সায়মা ওয়াজেদের উপস্থিতিতে সভায় শেখ হাসিনা ‘বাংলাদেশ কোভিড-১৯ এর প্রভাবের বাইরে ছিল না’ উল্লেখ করে বলেন, ‘তবু আমরা কোভিড-১৯ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে একটি বৈশ্বিক সূচকে পঞ্চম স্থানে রয়েছি। শুরু থেকেই, আমাদের জীবন বাঁচানো এবং জীবিকা রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়েছিল।’
প্রথম দিকে ডব্লিউএইচও’র সহায়তায় একটি জাতীয় প্রস্তুতি ও পরিস্থিতি মোকাবিলা পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা গরিবদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ ও পিপিই সরবরাহ নিশ্চিত করি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি করি। শূন্য থেকে ৮৮৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়। প্রায় সমস্ত হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। তিনি বলেন, কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার ডাক্তার ও ১৩ হাজার মেডিকেল সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ করা হয়। মৃত্যুর হার ১.৪৬ শতাংশ সীমিত রাখাসহ আমাদের ফ্রন্টলাইন কর্মীরা বিস্ময়করভাবে কাজ করেছে।
তিনি আরও বলেন, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পরিচালনার জন্য একটি ডেডিকেটেড ডিজিটাল অ্যাপ চালু করা হয়। আমরা কমপক্ষে দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে ৯৩ শতাংশ ভ্যাকসিন কভার করেছি। আমি মহামারি ভ্যাকসিনগুলোকে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের পণ্য হিসাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছি।
তার সরকার ২৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চার কোটিরও বেশি নিম্ন আয়ের মানুষকে সরাসরি খাদ্যসহায়তা দিয়েছি। বাংলাদেশ অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসীকর্মীদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।’
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
দক্ষ জনশক্তি নিতে কসোভোর প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান

বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নেওয়ার পাশাপাশি উন্নতমানের তৈরি পোশাক এবং ওষুধ আমদানির জন্য কসোভোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন।
রোববার (০৩ ডিসেম্বর) বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে কসোভোর বিদায়ী রাষ্ট্রদূত গানার উরেয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই আহ্বান জানান তিনি।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূতের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ ও কসোভোর মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সম্প্রসারণে দু’দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের আগ্রহের কথা মন্ত্রীকে অবহিত করেন।
তারা নারীর ক্ষমতায়ন এবং শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্তের বিষয়েও কথা বলেন। কসোভোর বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মানুষ, সংস্কৃতি ও সৌন্দর্যের প্রশংসা করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বস্ত্র খাতের রপ্তানি সম্প্রসারণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বস্ত্র খাতের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বস্ত্র মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম উপাদান। বস্ত্রশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ বস্ত্রশিল্প থেকে অর্জিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে দেশের বস্ত্র খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তা ছাড়া, উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে বস্ত্র-খাত কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি বিশ্বাস করেন।
তিনি আরও বলেন, বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিতে কল্যাণ তহবিল গঠন, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন আইন ও বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে। তাঁত শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং এর আধুনিকায়নে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী ও পরিবেশবান্ধব টেকসই বস্ত্রশিল্প স্থাপন, বস্ত্র খাতের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ এবং এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পের ইতিহাস সুপ্রাচীন এবং গৌরবময় এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ঢাকাই মসলিন ও জামদানি, টাঙ্গাইলের তাঁত, কুমিল্লার খাদি, রাজশাহীর সিল্ক এবং মিরপুরের বেনারসি শিল্প আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ সকল ঐতিহ্যবাহী বিশেষায়িত পণ্যের প্রসার বেগবান করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে – এ প্রত্যাশা করি।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
টিআরপি নিয়োগ দেবে এনবিআর

সারা দেশে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকারী (টিআরপি) নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতোমধ্যে টিআরপি বিধিমালা জারি এবং টিআরপি সহায়িকা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
জানা যায়, টিআরপির মাধ্যমে এনবিআর তার নিজস্ব জনবল দিয়ে সারা দেশে করযোগ্য আয় ও কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) আছে—এমন করদাতা খুঁজে বের করতে চায়। এতে দেশের করজাল বাড়তে পারে।
আয়কর বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, উন্নত দেশে বেসরকারিভাবে আয়কর সংগ্রহকারী সংস্থা আছে। আমাদের এখানে রিটার্ন প্রস্তুতকারী যারা হবেন, তারা প্রকৃত অর্থে করদাতাকে সহায়তা করবেন। বিধিতে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য উল্লেখ আছে। এখানে অনিয়মের সুযোগ নেই। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও আয়কর সংগ্রহ করা সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টা নতুন, স্বাভাবিকভাবেই মানুষের ভুল ধারণা থাকতে পারে। কর আদায় বাড়াতেই এ কৌশল নেওয়া হয়েছে। যারা এর বিরোধিতা করছেন, তারা না বুঝেই করছেন। সহায়িকা দেখলে স্পষ্ট ধারণা পাবেন তারা।
এনবিআরের জারি করা সহায়িকা অনুযায়ী টিআরপি হলেন রিটার্ন প্রস্তুতকারী বিধিমালা, ২০২৩-এর বিধি ৫-এর অধীনে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি। এ বিধিমালার অধীনে গৃহীত কর অভিজ্ঞান পরীক্ষায় (টিএএটি) উত্তীর্ণ ও সনদপ্রাপ্ত টিআরপিরা রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা আছে—এমন ব্যক্তির রিটার্ন প্রস্তুত ও দাখিল করতে পারবেন। তারাই সারাদেশের রিটার্ন দাখিলে সহায়তা করবেন।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
স্মৃতিসৌধ যে কারণে ১২ দিন বন্ধ থাকবে

সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে আগামী ১২ দিন দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে গণপূর্ত বিভাগ। মূলত মহান বিজয় দিবস উদযাপন ঘিরে প্রস্তুতি নিতেই এ আদেশ দেয়া হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানটিতে সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হবে।
গতকাল রোববার (৩ ডিসেম্বর) স্মৃতিসৌধের মূল ফটকে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ প্রদর্শন করা হয়। এ লক্ষ্যে আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ভিআইপি নিরাপত্তার জন্য ৪ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
নোটিশের সত্যতা নিশ্চিত করে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশি কূটনীতিকরা শ্রদ্ধা জানাবেন বিজয় দিবসে। এ জন্য ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্মৃতিসৌধে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ সময় স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হবে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধের উন্মুক্ত করা হবে।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কমেছে বিদেশি বিনিয়োগ

২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছিল ৩৪৪ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে এসেছে ৩২৫ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে এফডিআই কমেছে ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ।
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৈদেশিক ঋণ ও বিনিয়োগে গত জুন পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, মোট এফডিআইয়ের মধ্যে মাত্র ৮০ কোটি ডলার এসেছে বিদেশ থেকে পুঁজি হিসাবে। বাকি অর্থ দেশে কার্যরত বিদেশি কোম্পানিগুলোর মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ ও এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ।
দেশে ক্রিয়াশীল বিদেশি কোম্পানিগুলোর অর্জিত মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ হিসাবে এফডিআই এসেছে ২৩৭ কোটি ডলার।
মাত্র ৮ কোটি ডলার এসেছে এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ হিসাবে। গত অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি নিট পুঁজি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৬ কোটি ডলার। সব মিলে এসেছে ২৯ কোটি ডলার।

২০২১-২২ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ এসেছিল ৬২ কোটি ডলার। আলোচ্য এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে বিনিয়োগ কমেছে। বিদেশে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের স্থিতি গত বছরের জুনে ছিল ৪০ কোটি ডলার, চলতি বছরের জুনে তা সামান্য কমে ৩৮ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগের স্থিতি কমেছে ২ কোটি ডলার। এদিকে বৈদেশিক ঋণ গত এক বছরে বেড়েছে ৩৪৯ কোটি ডলার।
টাকার অঙ্কে যা ৩৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। গত বছরের (২০২২) জুনে মোট বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৫৪৫ কোটি ডলার। আর চলতি বছরের জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮৯৪ কোটি ডলার। এই সময়ে ব্যাপকভাবে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরও পরিমাণ বেড়ে চলেছে। আলোচ্য সময়ে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেড়েছে, কমেছে স্বল্পমেয়াদি ঋণ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছরের (২০২২) জুনের তুলনায় চলতি বছরের জুনে দেশের বৈদেশিক ঋণের স্থিতি বেড়েছে। দেশে আসা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বা এফডিআই কমেছে। আর বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগের স্থিতিও সামান্য কমেছে।
গত বছরের (২০২২) জুনে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। আর চলতি বছরের জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৯০ কোটি ডলার। গত বছরের (২০২২) জুনে স্বল্পমেয়াদি ঋণ ছিল ২ হাজার ৬৫ কোটি ডলার। আর চলতি বছরের জুনে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০৩ কোটি ডলার। সাম্প্রতিক সময়ে এ ঋণ আরও কমেছে।
গত দেড় বছর ধরে দেশে ডলার সংকট চলছে। সার্বিকভাবে মোট বৈদেশিক ঋণের স্থিতি বেড়ে গেছে, যা পরিশোধে ডলারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, বাজারে ডলারের প্রবাহ বেড়েছে। আগে যেসব ঘাটতি ছিল তা এখন কমে এসেছে। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধে ডলারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে না।
প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বৈদেশিক ঋণ বাড়লেও প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। ২০২১ সালের জুনে মোট ঋণ বেড়েছিল ১৯ শতাংশের বেশি। গত বছরের জুনে তা কমে ঋণ বৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১৭ শতাংশে। চলতি বছরের জুনে তা আরও কমে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।
গত বছরের (২০২২) জুনে তুলনায় চলতি বছরের জুনে স্বল্পমেয়াদি ঋণ কমেছে ২২ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ কমেছে প্রায় ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত বছরের (২০২২) জুনে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেড়েছিল ৪৭ শতাংশ এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেড়েছিল ১১ শতাংশ।