অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত পোশাক রফতানির সুযোগ চাইবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) সংক্রান্ত পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আজ। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বাংলাদেশের তরফে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলাজাত সুতা-কাপড় থেকে তৈরি পোশাক দেশটিতে রফতানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চাওয়া হবে।
বৈঠকে বিনিয়োগ পরিবেশ, ডিজিটাল বাণিজ্য, মেধাস্বত্ব সম্পদ ও কৃষি খাতে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে। ঢাকার তরফে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী ওষুধ পণ্যের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজীকরণের ওপর জোর দেয়া হবে। এছাড়া বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন আর্থিক সহযোগিতা বা ডিএফসি সহায়তার বিষয়টিও তুলে ধরবে ঢাকা।
টিকফা কার্যকর হয় ২০১৩ সালে। এর পর থেকে নিয়মিত বিরতিতে বৈঠকে বসছে দুই পক্ষ। সর্বশেষ ষষ্ঠ সভা অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে। ঢাকার একটি হোটেলে আজ অনুষ্ঠিত হবে সপ্তম বৈঠক। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাণিজ্যবিষয়ক প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ব্রেন্ডন লিঞ্চ।
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, আজকের বৈঠকে মূলত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে প্রভাব রয়েছে এমন বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র থেকেও একই ধরনের তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে শ্রমের বিষয়টিও রয়েছে। এক্ষেত্রে আলোচনায় আসবে বাংলাদেশে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন এবং বিদ্যমান শ্রমচর্চার মতো বিষয়গুলো। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের শ্রম অধিকারসহ শ্রম আইনের সংস্কারও রয়েছে আলোচ্যসূচিতে। এছাড়া শ্রম পরিদর্শন ও পরিদর্শন সক্ষমতার বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।

কারিগরি সহায়তা নিয়েও দুই পক্ষের আলোচনা হবে। এক্ষেত্রে এলডিসি থেকে উত্তরণ এবং মানসম্পন্ন সনদ প্রদান অবকাঠামোর ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা নিয়ে আলাপ হতে পারে। বিনিয়োগ পরিবেশও রয়েছে টিকফা বৈঠকের এজেন্ডায়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। মুনাফা প্রত্যাবাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
ডিজিটাল বাণিজ্য নীতিও রয়েছে টিকফা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে। এক্ষেত্রে খসড়া ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট, ডিজিটাল, সামাজিক মাধ্যম ও ওটিটি প্লাটফর্মের জন্য খসড়া বিধির বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে। কৃষি বাণিজ্যও গুরুত্ব পাবে বৈঠকে। কৃষি খাতের উন্নয়নে সহযোগিতা এবং কৃষি বায়োটেকনোলজি বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। শুল্ক ও বাণিজ্য সহায়তাও রয়েছে বৈঠকের এজেন্ডায়। এক্ষেত্রে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) শুল্ক মূল্যায়ন চুক্তি এবং বাণিজ্য সহায়তা বা টিএফএ বাস্তবায়নের মতো বিষয়গুলো সামনে আসতে পারে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
রেমিট্যান্সে ডলারের দর বেড়ে দাঁড়ালো ১২৩ টাকায়

বুধবার (২৯ নভেম্বর) ডলারের আনুষ্ঠানিক দর কমিয়ে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো যা কমানো হয়। কিন্তু, এভাবে নিয়ন্ত্রণের সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, মাত্র একদিন পরেই বৃহস্পতিবার রেমিট্যান্স সংগ্রহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৩ টাকায়।
জানা গেছে, বৃহষ্পতিবার কিছু ব্যাংক সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা দরে রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছে। বুধবার তারা সর্বোচ্চ ১২১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা পর্যন্ত দরে রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছিল। আবার অনেক ব্যাংক ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা দরে কিছু রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে পারলেও– এ লেনদেনের পরিমাণ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কমই ছিল।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বেড়েছে ডলারের দাম। এই ধারাবাহিকতা ভেঙে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) রেমিট্যান্স সংগ্রহে ডলারের দর ৫০ পয়সা কমানোর ঘোষণা দেয়। কিন্তু, তার একদিন পরেই গত ২৩ নভেম্বরে বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ব্যাংকগুলো দর কমানোর পরিবর্তে আগের দিনের চেয়েও ৩ টাকা বেশি হারে ডলার কিনেছে। গত ৭ নভেম্বর রেমিট্যান্সের ডলার দর উঠেছিল রেকর্ড ১২৪ টাকায়।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) জারি করা এক সার্কুলারে দেশের ব্যাংকারদের শীর্ষ দুটি সংগঠন এবিবি ও বাফেদা – রেমিট্যান্সে ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্সের ডলার কেনার দর ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করার কথা জানানো হয়, যা আগে ছিল ১১০ টাকা। এ ছাড়া, আমদানি দায় মেটাতে ডলার বিক্রির দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা, যা আগে ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
আগামী রোববার থেকে ব্যাংকগুলো নতুন এ দর কার্যকর করবে।

এর আগে গত ২২ নভেম্বরে সংগঠন দুটি ৫০ পয়সা কমিয়ে আমদানি দায় নিষ্পত্তির জন্য প্রতি ডলারের দর ১১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে। আর রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স সংগ্রহে তা ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
অবশ্য ডলার কিনতে নির্ধারিত এই হারের চেয়ে সর্বোচ্চ ২.৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়ার মৌখিক নির্দেশনা দেয় বাফেদা। সে অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ১১২ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার কিনতে পারবে ব্যাংকগুলো। কিন্তু, বর্তমানে তারা এর চেয়েও ১০ টাকা বেশি দরে ডলার কিনছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলারের রেট রিপোর্টিং করার ক্ষেত্রে কম দেখানো হচ্ছে।
বাফেদা নির্ধারিত দরে ডলার বিক্রি করার কথা থাকলেও– ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত এই দাম আমদানিকারকদের থেকে আদায় করছে। ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ডলারের দাম কমানোর প্রচেষ্টা সফল হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।
আমদানিকারকদের মতে, এলসি খোলার ক্ষেত্রে ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৮ টাকায়।
দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জানায়, এক সপ্তাহ আগে প্রায় ৬ কোটি ডলারের একটি এলসি খুলেছে তারা, যা নিষ্পত্তি করতে প্রতিডলারে ১২৭ টাকা ৯৫ পয়সা দিতে হবে ব্যাংককে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি নভেম্বরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪৯ কোটি ডলার, এর আগে অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৮ কোটি ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঋণখেলাপি প্রার্থীদের তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আইন অনুযায়ী কোনো ঋণখেলাপি গ্রাহকের পক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। এ কারণে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ব্যাংকঋণের হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো হয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২’র ১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো ঋণখেলাপি ব্যক্তি জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। এর ফলে কেউ খেলাপি হলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না। অতীতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাতদিন আগে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে নিয়মিত করার নিয়ম ছিল। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ব্যাংকঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা হয়। এরপর ঋণখেলাপি সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা হয় চলতি বছর জুলাইয়ে।
নতুন আইনে, মনোনয়নপত্র জমার একদিন আগে খেলাপিঋণ পরিশোধ করলেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছাড় দেওয়ার কারণে ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ সহজ হয়েছে। ভোটে দাঁড়াতে আগের মতো ১০ শতাংশ নগদ অর্থ জমা দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে হচ্ছে না। এখন অনেক কম অর্থ জমা দিলেই হয়। আবার, ঋণ পুনঃতফসিলের প্রস্তাবও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর প্রয়োজন হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো যে যার মতো করে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে দিচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এমসিসিআই সভাপতি হলেন কামরান

কামরান তানভিরুর রহমান ২০২৪ সালের জন্য মেট্রপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সংগঠনটির নতুন বোর্ডের প্রথম সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা তাকে নির্বাচিত করেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এমসিসিআইয়ের ১১৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) তা নিশ্চিত করা হয়।
তিনি বাংলাদেশের পাট ও চা খাতের একজন নেতৃস্থানীয় উদ্যোক্তা। তিনি পূবালী জুট মিলস লিমিটেড এবং কাপনা টি কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কামরান তানভিরুর রহমান ২০২৩-২০২৫ সালের জন্য বাংলাদেশ চা অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান। তিনি অ্যাডভান্সড ক্যামিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং একই গ্রুপের কিছু সাবসিডিয়ারির স্বতন্ত্র পরিচালক। ২০২২ এবং ২০২৩ সালে এমসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন কামরান তানভিরুর রহমান।
অন্যদিকে হাবিবুল্লাহ এন. করিম ২০২৪ সালের জন্য মেট্রপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া সিমিন রহমান ২০২৪ সালের জন্য এমসিসিআই-এর নতুন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

পরিচালনা পর্ষদের অন্য সদস্যরা হলেন- মডার্ন ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ তারেক মো. আলী, শেলটেক (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসের এজাজ বিজয়, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক উজমা চৌধুরী, অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আরিফ দৌলা, পিকার্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সায়ফুল ইসলাম, সাতগাঁও টি এস্টেটের ম্যানেজিং পার্টনার আরদাশীর কবির, ডব্লিউ অ্যান্ড ডব্লিউ গ্রেইনস করপোরেশনের পরিচালক আনিস এ খান, রহমান রহমান হকের সিনিয়র পার্টনার আদিব হোসেন খান, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান গোলাম মাইনুদ্দিন এবং এম. জে. আবেদিন অ্যান্ড কো.-এর অংশীদার হাসান মাহমুদ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমলো ১২০ মিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার কমেছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে, যা গত ২২ নভেম্বর ছিল ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ফর্মুলার মেনে রিজার্ভের তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে, ২০২১ সালের আগস্টে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
কিন্তু, বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় রিজার্ভ কমতে শুরু করে এবং তা অব্যাহত আছে। ফলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত ১ জুলাই থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোর কাছে ৫ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তারা আরও জানিয়েছে, প্রতি কার্যদিবসে বাংলাদেশ ব্যাংক তার রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে গড়ে প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি ব্যয় পরিশোধের জন্য বেশিরভাগ রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মার্কিন ডলারের ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
করযোগ্য আয় করেন ৬৫-৭০ লাখ, রিটার্ন আসে অর্ধেক

বিভিন্ন জরিপের ভিত্তিতে আমাদের ধারণা ৬৫ থেকে ৭০ লাখ ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করের আওতায় আসা উচিত। আমরা পাচ্ছি তার অর্ধেক। অর্থাৎ কর প্রদানে সক্ষম ব্যক্তিদের করজালে আওতায় আনতে পারলে আয়কর রিটার্ন জমা ৫০ শতাংশের বেশি উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় আয়কর দিবস- ২০২৩ উপলক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাল্টিপারপাস হলে ‘নতুন আয়কর আইন এবং কর পরিপালন: পরিবর্তিত প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে এমন তথ্য উঠে আসে।
সেমিনারে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন করনীতি বিভাগের সদস্য ড. সামস উদ্দিন আহমেদ।
সেমিনারে বলা হয়, কর পরিপালন বিষয়ে করদাতার আচরণ পরিবর্তনের জন্য পরিবর্তন তত্ত্বের আবির্ভাব হয়েছে। করদাতা ও রাজস্ব প্রশাসনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে করসেবা উন্নততর করা সম্ভব। রাজস্ব প্রশাসনের কী কী আচরণের ফলশ্রুতিতে একজন করদাতার আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব তা পর্যবেক্ষণ করা যায়। এ পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসন ও করদাতার মানসিক সমঝোতা সৃষ্টি করে স্বেচ্ছাকর পরিপালন এবং রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত গতিশীলতা আনয়ন করা সম্ভব।
সেমিনারে আরও বলা হয়, গত পাঁচ দশকে মোট রাজস্বে প্রত্যক্ষ কর ক্রমান্বয়ে প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৩ সালে অনলাইন টিআইএন চালু হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে টিআইএন গ্রহণের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেমিনারে সামস উদ্দিন আহমেদ বলেন, করের আওতা বাড়াতে কর জরিপ গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কর জরিপের দুটি পদ্ধতি আছে। একটি হচ্ছে ডোর টু ডোর জরিপের মাধ্যম করের আওতা বৃদ্ধি করা যায়। আর একটি পদ্ধতি হলো তথ্যভিত্তিক জরিপ। বর্তমানে রাজস্ব বোর্ড সেই কাজটা করছে। সিস্টেম যত সহজ করদাতা তত বাড়বে। এর পাশাপাশি কর সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জরিপের ভিত্তিতে আমাদের ধারণা ৬৫ থেকে ৭০ লাখ ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করের আওতায় আসা উচিত। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ৩৫ লাখ আয়কর রিটার্ন। অর্থাৎ কর প্রদানে সক্ষম ৬৫ থেকে ৭০ লাখ ব্যক্তিকে করজালে আওতায় আনতে পারলে আয়কর রিটার্ন ৫০ শতাংশ বেশি উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব।
আয়কর দিবস উপলক্ষ্যে আজ সব আয়কর অফিস সজ্জিত করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতীয় আয়কর দিবসে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা করেছে।
দেশে বর্তমানে ৯৪ লাখের বেশি কর শনাক্তকারী নম্বরধারী (টিআইএন) করদাতা রয়েছেন। গত অর্থবছরে ৩৫ লাখ ২৯ হাজার ২৬৩টি রিটার্ন দাখিল করা হয়েছিল।