শিল্প-বাণিজ্য
যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র-চীন-জাপান শীর্ষ আমদানিকারক দেশ

একসময় ছিল বিনিময় প্রথা, অর্থাৎ এক পণ্যের বিনিময়ে আরেক পণ্য নেওয়া। সেই দিন এখন গত। তবে বিশ্ববাজারে যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়, তার মূল বিষয়ের সঙ্গে বিনিময় প্রথার বিশেষ কোনো ফারাক নেই। অর্থাৎ যে দেশ যে পণ্য উৎপাদনে পারদর্শী, তারা সেই পণ্য রপ্তানি করে। আর যাদের যেটা প্রয়োজন, তারা সেটা আমদানি করে।
সাধারণভাবে মনে হতে পারে, যেসব দেশ দুর্বল, তারাই বেশি আমদানি করে। কিন্তু বাস্তবতা মোটেও সে রকম নয়। যেমন বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র নানা বিবেচনায় নিজেরা উৎপাদন বন্ধ রেখে বিশ্বের শীর্ষ আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে, যার সঙ্গে বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার সংযোগ রয়েছে।
শুরুতে দেখা যাক বিশ্বের শীর্ষ ১০টি আমদানিকারক দেশ কোনগুলো। পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার তথ্যানুসারে, বিশ্বের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে এই দেশটি আমদানি করেছে ৩৩ হাজার ৭৬২ বিলিয়ন বা ৩৩ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পণ্য। যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ চীন, যারা একই সঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক। ২০২২ সালে এই দেশটি ২ হাজার ৭১৬ বিলিয়ন বা ২ লাখ ৭১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ হচ্ছে জাপান, ২০২২ সালে যারা ৮৯৭ দশমিক ২৪ বিলিয়ন বা ৮৯ হাজার ৭২৪ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। চতুর্থ স্থানে আছে যুক্তরাজ্য, ২০২২ সালে তারা আমদানি করেছে ৮২৩ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন বা ৮২ হাজার ৩২৩ কোটি ডলারের পণ্য। পঞ্চম স্থানে আছে দক্ষিণ কোরিয়া, ২০২২ সালে এই দেশটি আমদানি করেছে ৭৩১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন বা ৭৩ হাজার ১৩৭ কোটি ডলারের পণ্য।
ষষ্ঠ স্থানে আছে হংকং, গত বছর তারা আমদানি করেছে ৬৬৭ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন বা ৬৬ হাজার ৭৫৫ কোটি ডলারের পণ্য। সপ্তম স্থানে আছে কানাডা, গত বছর তারা আমদানি করেছে ৫৮১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন বা ৫৮ হাজার ১৬৭ কোটি ডলারের পণ্য। অষ্টম স্থানে আছে সিঙ্গাপুর, ২০২২ সালে এ দেশটির আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৭৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বা ৪৭ হাজার ৫৫৮ কোটি ডলার। নবম স্থানে আছে তুরস্ক, গত বছর তারা আমদানি করেছে ৩৬৩ দশমিক ৭১ বিলিয়ন বা ৩৬ হাজার ৩৭১ কোটি ডলারের পণ্য। দশম স্থানে আছে ভিয়েতনাম, গত বছর তাদের আমদানির পরিমাণ ছিল ৩৫৯ দশমিক ২৮ বিলিয়ন বা ৩৫ হাজার ৯২৮ কোটি ডলারের পণ্য।

এদের মধ্যে শীর্ষ আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক যন্ত্র, যানবাহন, খনিজ, জ্বালানি, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, পোশাকসহ নানা পণ্য আমদানি করে থাকে। দ্বিতীয় শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীন ইলেকট্রনিক পণ্য থেকে শুরু করে আইসি বা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ, যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক, সেমিকন্ডাক্টর প্রভৃতি পণ্য আমদানি করে থাকে।
চীন বিশ্বের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ হওয়ার পরও শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারকও বটে। এর কারণ হলো চীন রপ্তানির জন্য যেসব পণ্য উৎপাদন করে, তার জন্য কাঁচামালের বড় একটি অংশই তাদের আমদানি করতে হয়। বিশেষ করে ইলেকট্রনিকস ও গাড়ির অন্যতম মূল উপাদান হিসেবে পরিচিত সেমিকন্ডাক্টর আমদানি করতে হয় তাদের।
সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন বেশ জটিল, এটি উৎপাদন করতে দক্ষ বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি প্রয়োজন হয় সমন্বয়। আইফোনে যে চিপ ব্যবহৃত হয়, তা মূলত যুক্তরাষ্ট্রে ডিজাইন করা হয়েছে; তৈরি করা হয় তাইওয়ান, জাপান অথবা দক্ষিণ কোরিয়ায়, তারপর চীনে তা সংযোজন করা হয়। ফলে এই চিপ আমদানি করতে না পারলে চীনের রপ্তানি বাণিজ্য মার খাবে। এই প্রযুক্তির বেশির ভাগই আছে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। তারা এখন চীনের উত্থান ঠেকাতে চীনে চিপ রপ্তানি সীমিত করেছে। এতে বিপদে পড়েছে চীন। তাই চীন এখন নিজেরাই চিপ বানানোর চেষ্টা করছে। তাতে কিছুটা সফলও হয়েছে, সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ে নিজেদের তৈরি চিপ দিয়ে নতুন স্মার্টফোন বাজারে এনে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির পরিসংখ্যান তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র অনেক পণ্য উৎপাদন ছেড়ে দিয়েছে। ফলে চীনসহ বিশ্বের অনেক দেশ এসব পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে গেছে। যেমন অ্যাপল কোম্পানির আইফোন এত দিন মূলত চীনে উৎপাদিত হয়েছে; সেখান থেকে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও এখন রাজনৈতিক স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র চীন ছাড়ো নীতি গ্রহণ করেছে, সে কারণে আইফোন উৎপাদনকেন্দ্র ধীরে ধীরে ভারতের দিকে চলে আসছে। একইভাবে সেমিকন্ডাক্টরের জন্য তারা এত দিন তাইওয়ানের ওপর নির্ভরশীল ছিল, কিন্তু চীন সেখানে আক্রমণ চালালে কী হতে পারে, সেই ভয়ে তারা এখন ভিয়েতনামকে সহায়তা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে এখন প্রযুক্তি ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে সারা বিশ্বের শেষ ভরসা (ক্রেতা) হিসেবে কাজ করে। বিশ্বের আর্থিক খাতের ওপর তাদের যে নিয়ন্ত্রণ, তার বিনিময়ে তারা এতটা আমদানি করে বলে বিশ্লেষকেরা বলেন। সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় ও পারিবারিক ঋণ রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে।
এ ছাড়া শীর্ষ আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে জাপান সাধারণত রাসায়নিক, ধাতু ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি আমদানি করে। যুক্তরাজ্য, খাদ্য, পানীয়, জামাকাপড় আমদানি করে। সিঙ্গাপুর আমদানি করে আইসি বা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম, স্বর্ণ ও গ্যাস টারবাইন। দক্ষিণ কোরিয়া আমদানি করে অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম, আইসি, ফটো ল্যাবের উপকরণ ইত্যাদি। হংকং আমদানি করে আইসি, সম্প্রচার উপকরণ, স্বর্ণ, টেলিফোন ইত্যাদি।
এ ছাড়া কানাডা আমদানি করে মূলত যানবাহন ও যন্ত্রাংশ, পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক ইত্যাদি। তুরস্কের মূল আমদানি পণ্য হচ্ছে লোহা ও ইস্পাত, হীরা ও মূল্যবান ধাতু, যানবাহন, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। ভিয়েতনামের মূল আমদানি পণ্য হচ্ছে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক, যানবাহন, কম্পিউটারের যন্ত্রপাতি ইত্যাদি।
সূত্র: প্রথম আলো।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
বেনাপোল দিয়ে টিসিবির ২০১ টন পেঁয়াজ আমদানি

সরকার দেশের নিম্নআয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম চালানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৭ ট্রাকে ২০১ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি খরচ ৫৫ টাকা পড়লেও ভর্তুকি দিয়ে এসব পেঁয়াজ ফ্যামেলি কার্ডের মাধ্যমে নিম্নআয়ের মানুষের কাছে ক্রয়মূল্যের অনেক কমে বিক্রি করবে সরকার।
দ্রুত যাতে পেঁয়াজ বন্দর থেকে ছাড় হয় সব ধরনের সহযোগিতা করছে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা জানান, নিম্নআয়ের মানুষের কিছুটা স্বস্তি দিতে গত কয়েক বছর ধরে দেশের ১ কোটি ১ লাখ পরিবারের কাছে কমমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য বিক্রি করে আসছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক পরিবারের জন্য ২ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি চিনি, ২ কেজি মসুরডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল ও ৫ কেজি চাল।
এসব নিত্যপণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের যোগান দিতে ভারত থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তাই ৭ ট্রাকে ২০১ টন পেঁয়াজ আসে বন্দরে। কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী প্রতি কেজি পেঁয়াজের আমদানি খরচ পড়ছে ৫৫ টাকার মধ্যে। তবে সরকার কমদামে এ পেঁয়াজ তুলে দিবে নিম্নআয়ের ফ্যামেলি কার্ডধারী মানুষের হাতে।
এদিকে সরকারিভাবে পেঁয়াজ আমদানিতে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। বেনাপোল বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা হযরত জানান, সরকারি পেঁয়াজ আমদানিতে কমতে পারে দাম।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, খাওয়ার উপযুক্ত হওয়ায় বন্দর থেকে পেঁয়াজের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, দ্রুত যাতে টিসিবির পেঁয়াজ বন্দর থেকে ছাড় হয় ২৪ ঘণ্টা বন্দর সচল রেখে কাজ করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
আবারও কমেছে সোনার দাম

দুই দিনের ব্যবধানে ফের সোনার দাম কমছে। ভালো মানের তথা ২২ ক্যারটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা কমানো হয়েছে। এর ফলে এ ক্যাটাগরির সোনার নতুন মূল্য হবে ৯৮ হাজার ২১১ টাকা (প্রতি ভরি)। এতদিন যা ছিল ৯৯ হাজার ৯৬০ টাকা।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করে।
বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। রোববার ( ১ অক্টোবর) থেকে এটি কার্যকর করা হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম হবে ৯৮ হাজার ২১১ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৮০ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ৬৬ হাজার ৯৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম (ভরি) ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১০৫০ টাকা।

এর আগে, দাম কমিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সবশেষ সোনার মূল্য নির্ধারণ করেছিল বাজুস। যা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হয়। যেখানে ভালো মানের তথা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ২৮৪ টাকা কমানো হয়। যার মধ্য দিয়ে লম্বা সময় পর লাখের ঘর থেকে নামে সোনার দাম।
আজকে পর্যন্ত ওই দাম অনুযায়ী ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হয় ৯৯ হাজার ৯৬০ টাকায়। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৫ হাজার ৪১২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের সোনা ৮১ হাজার ৭৬৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৬৮ হাজার ১১৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তার আগে দাম বাড়িয়ে গত ২৪ আগস্ট সোনার মূল্য নির্ধারণ করেছিল বাজুস। যা ২৫ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়। যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। সেসময় ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম নির্ধারণ হয় এক লাখ এক হাজার ২৪৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৬ হাজার ৬৩৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৮২ হাজার ৮১৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম নির্ধারণ হয় ৬৯ হাজার ৫১ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
দুইদিন পর হিলিতে আমদানি-রপ্তানি শুরু

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে টানা ২ দিন বন্ধের পর দিনাজপুর হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের সব কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এই বন্দর দিয়ে দুই দেশের মাঝে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিলি পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় এই দুইদিন বন্দরের আমদানি-রপ্তানিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দুই দিনের ছুটি শেষে শনিবার সকাল থেকে আবারও সব কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আশরাফ বলেন, সরকারি ছুটির কারণে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানি করতে চায় মেক্সিকো

বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মেক্সিকান ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি তারা দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ইবারো আমেরিকানা ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সেমিনারে তারা এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এছাড়া সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান, দ্য মেক্সিকান বিজনেস কাউন্সিল ফর ফরেন ট্রেড, ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির এশিয়া ও ওশেনিয়া বিভাগের প্রেসিডেন্ট সার্জিও লে লোপেজ, ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইমপোর্টারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অব মেক্সিকান রিপাবলিকের ডিরেক্টর মিসায়েল ড্যানিয়েল রেয়েস এবং দ্য মেক্সিকান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনের মহাপরিচালক নাথান উলফ লাস্টবেডার সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন।
সেমিনারে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের (বিজনেস টু বিজনেস পিপল) মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তিসহ সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।

করোনা মহাসংকটের পর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মতো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং স্থিতিশীলতার কথাও তুলে ধরেন টিপু মুনশি।
প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর কথাও বলেন তারা।
কোমেক্সির মহাপরিচালক নাথান উলফ লাস্টবেডার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করে বাণিজ্য বাজারের বৈচিত্র্যের ওপর জোর দিতে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান বাংলাদেশের অনুকূল বাণিজ্য ল্যান্ডস্কেপ নিয়ে আলোচনা করেন। দেশটির ব্যবসায়ী নেতা এবং নীতিনির্ধারকদের কৃষি, ওষুধ, আইসিটি, খেলাধুলা, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির মতো একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সুযোগ অন্বেষণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।
ইবারো আমেরিকানা ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড বিভাগের সমন্বয়ক ড. আরিবেল কনটেরাস সুয়ারেজ, মেক্সিকোর অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন। এছাড়া দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে বিশাল ব্যবসায়িক সম্ভাবনা সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করেন।
মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম সেমিনারটি পরিচালনা করেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সমন্বয়মূলক অংশীদারিত্ব, কৌশলগত বিনিয়োগ, উদ্ভাবনী অনুশীলন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বাজার অনুসন্ধানের জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
দাম কমেছে মুরগির

ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। তবে চলতি সপ্তাহে গ্রীষ্মকালীন সবজির বাজার অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তালতলা ও শেওড়াপাড়া বাজার ঘুরে এমনটি জানা গেছে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তালতলা ও শেওড়াপাড়ায়, সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এসব বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৯০ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম কমে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় দেশি মুরগি কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। এ ছাড়া সোনালি মুরগিরও দাম কমেছে। সোনালি ৩০০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা কেজি এবং লেয়ার ৩৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারগুলোতে লাল ডিমের ডজন ১৫০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকায়। আর গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার এসব বাজারে সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

কলার হালি ৩০ টাকা, লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ধনে পাতা ৪০০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু ৪৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি দাম কিছুটা কমেছে। এসব বাজারে ছোট বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ছোট ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মুলা ৪০ টাকা, শিম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা এবং গাজর ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙাশ ১৯০ থেকে ২৫০ টাকা, ইলিশ (আকারভেদে) ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কাতল ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, মলা ৪৫০ টাকা, বাতাসি-টেংরা ১ হাজার ২০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা এবং পাঁচমিশালি চাষের মাছ ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।