আন্তর্জাতিক
ভারতের সাথে বাণিজ্যিক চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালো কানাডা

আসন্ন অক্টোবরে ভারতের সাথে কানাডা ‘বাণিজ্য মিশন’ নামের একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করতে চলেছিলো। কিন্তু হুট করে এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালো কানাডা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাডার বাণিজ্যমন্ত্রী মেরি এনজি।
একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লিতে হয়ে যাওয়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে কানাডিয়ান সরকারকে তিরস্কার করার পরেই এই ঘোষণা আসে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মাত্র চার মাস আগে দুই দেশ বলেছিল যে তারা অক্টোবরে দিকে দুই দেশের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
মেরি এনজির মুখপাত্র শান্তি কসেন্টিনো কোনও কারণ না জানিয়েই বলেছেন, আমরা ভারতের সাথে হতে যাওয়া বাণিজ্য মিশন স্থগিত করছি। এর আগে গতকাল শুক্রবার ভারতও জানিয়েছে যে তারা কানাডার সাথে বাণিজ্যিক আলোচনা স্থগিত করেছে।
জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জি-২০ সম্মেলনের সময় অনেক বিশ্ব নেতার সাথে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে একটি সংক্ষিপ্ত এবং অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে করেন। ওই সময় মোদি কানাডায় অবস্থানরত প্রবাসীদের খালিস্তানপন্থী কার্যকলাপে বাঁধা না দেওয়ায় ট্রুডো সরকারের সমালোচনা করেছিলেন।

এ সময় ট্রুডো বলেছিলেন, তিনি কানাডার রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তিনি বলেন, তার দেশ যেকোন সহিংসতা বা ঘৃণার নিন্দা করে তবে এটি অবশ্যই মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর থেকে অটোমোবাইল, কৃষি এবং তথ্য-প্রযুক্তিসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কিছু সেক্টর নিয়ে দু’দেশের মধ্যে এই বাণিজ্য চুক্তি শুরু হওয়ার কথা ছিল।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
সৌদি আরবে বাড়ছে শিল্প কারখানা

সৌদি আরবের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি ফিরেছে, তার ছাপ পড়েছে দেশটির শিল্প খাতে। চলতি বছরের আগস্টে শিল্প ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ১৩৬টি শিল্প লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে, যা জুলাইয়ের চেয়ে বেশি। জুলাইয়ে অনুমোদনের সংখ্যা ছিল ১০২। খবর আরব নিউজ।
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) তথ্যমতে, আগস্টে খাদ্যপণ্য উৎপাদন খাতে শিল্প লাইসেন্স অনুমোদন দেয়া হয়েছে ২৯টি। এছাড়া অধাতু খনিজ শিল্প খাতে ২১টি, রাবার ও প্লাস্টিক খাতে ১৫ এবং কাগজ উৎপাদন খাতে ১২টি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেয়েছে।
জানুয়ারি-আগস্টের মধ্যে মোট ৭৯৫টি শিল্প লাইসেন্স অনুমোদন করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এ সময়ে দেশটিতে কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ১১০টিতে। কারখানাগুলোয় বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪৮৯ ট্রিলিয়ন সৌদি রিয়াল বা ৪০ হাজার কোটি ডলার।
অনুমোদনকৃত লাইসেন্সের উল্লেখযোগ্য অংশ দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে। মোট ইস্যুকৃত লাইসেন্সের ৭৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ পেয়েছে দেশীয় কোম্পানিগুলো। আর বিদেশী প্রতিষ্ঠান ও যৌথ বিনিয়োগ সংস্থাগুলো পেয়েছে যথাক্রমে ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেলেন করোনা টিকার দুই আবিষ্কারক

২০২৩ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার জিতলেন হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান বিজ্ঞানী ক্যাটালিন কারিকো এবং আমেরিকান বিজ্ঞানী ড্রিউ উইসম্যান। মহামারি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর এমআরএনএ টিকার বিকাশে সহায়ক নিউক্লিওসাইড বেস পরিবর্তনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের জন্য তারা এই পুরস্কার পান।
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ সময় সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে চিকিৎসায় সর্বোচ্চ পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে এ দুই বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করেছে করোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি। ঘোষণার আগে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষিপ্ত তালিকা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। বরাবরের মতোই পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছে।
পুরস্কার দেওয়ার কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ক্যাটালিন এবং উইসম্যানের আবিষ্কারের ফলে ২০২০ সালের শেষের দিকে অত্যন্ত কার্যকর দুটি এমআরএনএ-ভিত্তিক কোভিড-১৯ টিকা উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছিল। এই টিকাগুলো বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে এবং আরও অনেক লোকের গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করেছে।
এ বছর ২ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে ঘোষণা করা হবে নোবেল বিজয়ীদের নাম। সোমবার (২ অক্টোবর) জানা যাবে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল বিজয়ী বা বিজয়ীদের নাম। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) পদার্থে, বুধবার (৪ অক্টোবর) রসায়নে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সাহিত্যে এবং শুক্রবার (৬ অক্টোবর) শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম জানা যাবে। দুদিন বিরতি দিয়ে ৯ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীর নাম।
১৯০১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১১৩ বার মোট ২২৫ জনকে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। গত বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল জিতেছিলেন সুইডিশ বিজ্ঞানী সুভান্তে প্যাবো। আদিম মানুষের জিনোম উদঘাটন ও মানব বিবর্তনের জিনোম সম্পর্কিত আবিষ্কারের জন্য তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

তার আগের বছর (২০২১ সাল) তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড জুলিয়াস ও আর্ডেম প্যাটাপৌসিয়ান।
ডিনামাইট আবিষ্কারক সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ১৮৯৫ সালে করে যাওয়া একটি উইল অনুযায়ী নোবেল পুরস্কার প্রচলন করা হয়। প্রথম পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ১৯০১ সালে। সেময় সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সফল, অনন্যসাধারণ গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রমের জন্য পাঁচটি বিষয়ে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিষয়গুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য ও শান্তি। যদিও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ১৯৬৯ সাল থেকে।
এ বছর অর্থমূল্য বাড়ছে নোবেল পুরস্কারের। গতবারের চেয়ে এ বছরের বিজয়ীরা ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা বেশি পেতে চলেছেন।
নোবেল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়িয়ে ১ কোটি ১০ লাখ ক্রোনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সৌরশক্তিতে চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে চায় ইইউ

সৌরশক্তিতে চীনা পণ্যের আধিপত্য কমাতে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপে এ শিল্পের নীতিনির্ধারকরা। তবে এতে ক্লিন এনার্জির লক্ষ্যমাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন আমদানিকারকরা। খবর রয়টার্স।
ইইউ অঞ্চল সৌরশক্তি খাতে চীনের ওপর নির্ভরশীল। ইউরোপীয় কমিশনের মতে, চীন থেকে সৌর প্যানেলের জন্য ৯০ শতাংশের বেশি ইনগট ও ওয়েফার আমদানি করা হয়।
ইইউ গত বছর রেকর্ড ৪০ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ ক্ষমতা স্থাপন করেছে।
ব্রাসেলস ও ইউরোপীয় সরকারগুলো ক্লিন টেক ম্যানুফ্যাকচারিং সম্প্রসারণ ও এ সম্পর্কিত পরিবর্তনে প্রয়োজনীয় চীনা পণ্যের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করার চেষ্টা করছে। এ কারণে আমদানির ওপর কঠোর পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করায় এই আহ্বান আসে।
ইউরোপীয় কমিশন চলতি মাসে একটি তদন্ত শুরু করেছে। যার মাধ্যমে সস্তা চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানির বিরুদ্ধে ইইউ নিজস্ব নির্মাতাদের রক্ষার জন্য শুল্কের দিকে যেতে পারে। এরই মধ্যে জার্মানি বাণিজ্য সুরক্ষার বিভিন্ন ধরনের বিকল্প পরীক্ষা করে দেখেছে।

প্রতিক্রিয়ায় শিল্প গ্রুপ সোলারপাওয়ার ইউরোপের বোর্ড ডিরেক্টর গুন্টার এরফুর্ট বলেছেন, ইউরোপীয় সৌরশিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য শুল্ক ভালো কোনো সমাধান নয়। শুল্কের মাধ্যমে সমগ্র শিল্পকে সীমায়িত কারার পরিবর্তে ইউরোপের সৌর ইনস্টলেশনগুলোকে উৎসাহিত করতে হবে। সৌরশক্তির স্থাপন নিরবিচ্ছিন্ন থাকলেই ইউরোপীয় সৌর উৎপাদন ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে পারে।
এক বিবৃতিতে সোলারপাওয়ার ইউরোপ বলেছে, এ বাণিজ্যিক বাধার কৌশলে দুইপক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর পরিবর্তে স্থানীয় নির্মাতাদের সহায়তা করলে উৎপাদন বাড়বে।
ইউরোপীয় নির্মাতারা অভিযোগ করে আসছেন, কম দামী চীনা সৌর মডিউলে বাজার সয়লাব হওয়ায় তারা দাম কমাতে বাধ্য করছে।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, চীনা সরবরাহ সীমিত করলে ২০১৩-১৮ সালের অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। চীনা সৌর প্যানেল ও সেলের শুল্কমুক্ত আমদানি সীমা তুলে দিলে ওই সময় ইউরোপের সৌর শক্তি ইনস্টলেশন সাময়িকভাবে হ্রাস পায়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে ডলারের আধিপত্য বেড়েছে

আন্তর্জাতিক বিনিময়মাধ্যম হিসেবে ডলারের আধিপত্য বেড়েছে। চলতি বছরের আগস্টে বৈশ্বিক লেনদেনের ৪৮ শতাংশই হয়েছে ডলারে। জুলাইয়ের তুলনায় এ হার ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। ডলারের আধিপত্য কমাতে বিভিন্ন দেশ ও ব্লকে স্থানীয় মুদ্রাকে অগ্রাধিকার দেয়া হলেও শক্তিশালী হয়েছে মুদ্রাটি। দ্য সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশনের (সুইফট) ডাটা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
আর্থিক লেনদেনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফট প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় বেলজিয়ামে। বিশ্বের ১১ হাজার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেনের বিষয়ে বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। এটি মূলত একটি তাৎক্ষণিক মেসেজিং ব্যবস্থা, যা কোনো লেনদেনের ব্যাপারে গ্রাহককে জানিয়ে দেয়। বিশ্বের অধিকাংশ ব্যাংক নিজেদের মধ্যকার বার্তা আদান-প্রদানের কাজে সুইফট ব্যবহার করে।
সুইফটের তথ্য বলছে, বৈশ্বিক বিনিময়মাধ্যম হিসেবে ইউরোর অবস্থান রেকর্ড নিচে নেমে এসেছে। চলতি বছরের আগস্টে লেনদেনের ২৩ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে ইউরোয়, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ঢের কম। গত বছরের আগস্টে এ হার ছিল ৩৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। মুদ্রাটির পতনের পেছনে বিশেষজ্ঞরা ইউরোজোনের ২০ দেশের বাইরে ইউরোর জনপ্রিয়তা কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন।
বিনিময়মাধ্যম হিসেবে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের ব্যবহার বৃদ্ধি নতুন উদাহরণ তৈরি করেছে। আগস্টে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ হয়েছে ইউয়ানে, যা জুলাইয়ের তুলনায় বেশি। জুলাইয়ে এ হার ছিল ৩ দশমিক শূন্য ৬। ইউয়ানের প্রভাব বাড়ার অন্যতম কারণ ডলারের আধিপত্য কমাতে চীনের আঞ্চলিক ভূমিকা। বেইজিং দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক বাণিজ্যে তাদের নিজস্ব মুদ্রার ব্যবহার বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক অর্থনীতি বিশ্লেষক স্টিফেন জেনের দাবি, ২০১৬ সাল থেকে বিশ্ববাজারে ডলারের রিজার্ভ কমেছে ১১ শতাংশ। ডলার ও ইউরোর পতনে সৃষ্ট শূন্যস্থান পূরণ করছে চীনের রেনমিনবি ও অন্যান্য মুদ্রা। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক সংগঠন ব্রিকস। নতুন সদস্যদের যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক জিডিপিতে ব্লকটির অংশ ২৬ থেকে ২৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যে তাদের অবদান ১৮ থেকে বেড়ে ২১ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। ব্রিকস নিজেও তাদের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনতে সচেষ্ট। ব্লকের সদস্যদের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজেদের মুদ্রাকে অগ্রাধিকার দিতে চায় তারা। এ প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংকে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোয় জমা থাকা রাশিয়ার রিজার্ভের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ। এর বাইরে সুইফট ব্যবহারে রুশ ব্যাংকের ওপর আন্তর্জাতিক কমিউনিটির নিষেধাজ্ঞা ডলারে লেনদেনের ওপর আরেকটি চপেটাঘাত। রাশিয়া চাইছে ডলারের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে। তা বাস্তবায়নে দেশটি সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তেল ও গ্যাসের দাম রুশ মুদ্রা রুবলে পরিশোধের জন্য ক্রেতা দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে মস্কো। অনেক দেশ এ দাবি মেনে না নিলেও কেউ কেউ মস্কোর এমন চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে।
সুইফটের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক লেনদেনের প্রতি ১০টির মধ্যে সাতটিই হয়েছে ইউরো কিংবা ডলারে। ভবিষ্যতে ডলারের আধিপত্যে অবশ্য নতুন ঝুঁকি হিসেবে দেখা হচ্ছে ডিজিটাল মুদ্রা বা সিবিডিসিকে। সিবিডিসি পরিচালনায় ডলারের প্রয়োজন নেই। এটি স্বর্ণ কিংবা পণ্যদ্রব্যের মতোই বিনিময়যোগ্য হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সিবিডিসির ব্যবহার বিপুল পরিমাণে বাড়বে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সৌদিতে এক সপ্তাহে ১১ হাজার প্রবাসী গ্রেপ্তার

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব অবৈধ প্রবাসীদের ধরতে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে দেশটিতে ১১ হাজারেরও বেশি অবৈধ প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে হাজারও প্রবাসীকে অবৈধভাবে বসবাস এবং দেশের আবাসিক ব্যবস্থা লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার (১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে আবাসিক, শ্রম আইন এবং সীমান্ত নিরাপত্তা প্রবিধান লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১১ হাজার ৪৬৫ জনকে গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ২১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচালিত যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
খালিজ টাইমস বলছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৭ হাজার ১৯৯ জনকে অবৈধভাবে বসবাস এবং দেশের আবাসিক ব্যবস্থা লঙ্ঘনের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের জন্য ২ হাজার ৮৮২ জনকে এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ১ হাজার ৩৮৪ জনকে।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিস্তারিত তথ্য অনুযায়ী, সৌদি সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করার সময় অতিরিক্ত ৭১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫২ শতাংশ ইয়েমেনি, ৪৫ শতাংশ ইথিওপিয়ান এবং ৩ শতাংশ অন্যান্য জাতীয়তার নাগরিক রয়েছেন। এছাড়া সৌদির নিরাপত্তা বাহিনী আরও ১৪ জনকে আটক করেছে যারা সৌদি আরবের সীমান্ত দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিল।

এছাড়া বাসস্থান এবং কাজের নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন ও আশ্রয় সুবিধা দেওয়ার সাথে জড়িত ১৫ জন ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খালিজ টাইমস বলছে, আইন লঙ্ঘনের অপরাধে বর্তমানে ৪৩ হাজার ৭৭২ অবৈধ প্রবাসী আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৬ হাজার ৪০৪ জন পুরুষ এবং ৭ হাজার ৩৬৮ জন নারী। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ৩৭৯ জনকে প্রয়োজনীয় ভ্রমণ নথি পেতে তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে রেফার করা হয়েছে।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছে, যদি কোনও ব্যক্তি অন্যকে সৌদিতে অবৈধভাবে প্রবেশ, অবস্থান ও পরিবহনে সহায়তা করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। একইসঙ্গে দণ্ডের সঙ্গে ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা এবং গাড়ি ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে যেন অবৈধভাবে কেউ থাকতে না পারেন সেটি নিশ্চিতে গত কয়েক বছরে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে কয়েকদিন পরপর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান পরিচালনা করছে তারা।
এসব অভিযানে অনেকেই আটক হচ্ছেন এবং পরবর্তীতে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এমআই