অর্থনীতি
অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষিতে বিনিয়োগ অপরিহার্য

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, কৃষি-শিল্প এবং কৃষি-উদ্যোক্তাদের বিকাশ স্থানীয় কৃষি খাতের পাশাপাশি ক্ষুদ্র কৃষকদের জীবিকার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। কৃষিতে বিনিয়োগ কেবল খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতি এবং টেকসই উন্নতির জন্য সবচেয়ে কার্যকরী কৌশল নয়, এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও অপরিহার্য। কৃষি খাতের উন্নতি কার্যত সমস্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার উপর প্রভাব রয়েছে এবং এটি উন্নয়নশীল দেশগুলির অর্থনীতির জন্য মৌলিক।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি আয়োজিত সিলেট জেলার কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, দেশের শিক্ষিত যুবকরা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কৃষি ও পশুপালন ব্যবসার প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহ প্রদর্শন করেছে, কেউ কেউ প্রচলিত চাকরির পরিবর্তে কৃষি ব্যবসায় ক্যারিয়ার গড়তে বেছে নিয়েছে, আবার কেউ কেউ বিকল্প উৎস হিসাবে এই খাতে বিনিয়োগ করছে। তাদের আয় বাড়ানোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে এবং উচ্চ ফলনশীল, উচ্চ মূল্যের ফসল ও গবাদি পশু উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতি ঘটাচ্ছে। সম্ভাব্য শিক্ষিত কৃষি-উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করার জন্য খাতটির আরও সহায়তা প্রয়োজন যারা দেশের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করতে পারে।
তিনি বলেন, আগ্রহী ব্যক্তিকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে এবং যে কেউ এই সুযোগ পেয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে। কৃষি-উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে এই বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের জন্য মন্ত্রী ইউসিবিকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ইউসিবির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম ভূঁইয়া বলেন, আমাদের বিশেষ সিএসআর প্রকল্প দেশের কৃষি-উদ্যোক্তাদের মনে একটি ‘ভরসার নতুন জানালা’ খুলে দেবে। সোনার বাংলা গড়ার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষি ও কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর ‘পথ’ খুঁজে পেতেই আমরা এই প্রকল্প গ্রহণ করেছি। আমরা কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই কৃষি উদ্যোক্তা সমাবেশ ও প্রশিক্ষণে সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার প্রায় ৪০০ নির্বাচিত কৃষি উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। ইউসিবির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সেক্রেটারি এটিএম তাহমিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও কৃষি তথ্য বিশ্লেষক রেজাউল করিম সিদ্দিক, বিসেফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বিশিষ্ট্য কৃষিবিজ্ঞানী ড. এম জয়নুল আবেদীন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সাউথ) মো. সোহেল রেজা, সিলেট জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মোবারক হোসেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. খায়ের উদ্দিন মোল্লা, জৈন্তাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ডা. আবদুল্লাহ আল মাসুদ, জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ, ইউসিবির আঞ্চলিক প্রধান আমিনুল হক চৌধুরী, বিয়ানীবাজারের কৃষি উদ্যোক্তা পারুল বেগম, গোলাপগঞ্জের কৃষি উদ্যোক্তা শাহজাহান আহমেদ টিপু, ইউসিবির সিলেট শাখার ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
কৃষি উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবির গৃহীত বিশেষ প্রকল্প ‘ভরসার নতুন জানালা’-এর আওতায় দেশের ৬৪ জেলায় ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত কৃষি উদ্যোক্তা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সিলেট আমান উল্লাহ কনভেনশন সেন্টারে সিলেট জেলার কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণ অধিবেশনে উদ্যোক্তা হিসেবে বিকশিত হওয়ার গুরুত্ব, সম্পদের ব্যবহার, মূলধনের যোগানের উৎস, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, বিপণন, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, ব্যাংকিং এবং কৃষি উদ্যোগের আর্থিক দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
গ্লোবাল ইকোনমিক ফোরামে সালমান এফ রহমানের অংশগ্রহণ

ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ইকোনমিক পলিসি ফোরামে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। দুদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে বর্তমান সময়ে বিদ্যমান নানামুখী সংকটের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধির কৌশল নির্ধারণের প্রতিপাদ্য তুলে ধরা হয়।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (৭ ও ৮ ডিসেম্বর) ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীণ অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগ এবং কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) যৌথ উদ্যোগে এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়।
ফোরামটির সভাপতিত্ব করেন ভারতের অর্থমন্ত্রী শ্রীমতি নির্মলা সীতারমন। ফোরামে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বিশেষজ্ঞ প্যানেল সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ কীভাবে দ্রুত অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক সমৃদ্ধি অর্জন করেছে সে বিষয়ে আলোচনার জন্য সালমান এফ রহমান এমপিকে ফোরামে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি ‘বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন যাত্রা থেকে অনুপ্রেরণা’ শীর্ষক সেশনে ভাষণ দেন।
বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহ কী ধরণের উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে পারে, সে সম্পর্কে আলোচনা ছিল সেশনের প্রধান উদ্দেশ্য। সালমান এফ রহমান সেশন সঞ্চালক ও অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৮৩ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরে ক্ষতি হয় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) এডিবির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (২০২৩-২০৫০) বাস্তবায়ন ও জলবায়ু কেন্দ্রিক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অর্জনে এই ঋণ অবদান রাখবে।
এডিবি জানায়, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি, বার্ষিক গড় ক্ষতি প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। এই ঋণের অর্থে জলবায়ু-টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রথম উপ-প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা হবে। যা বাংলাদেশকে জলবায়ু মোকাবিলায় শক্তিশালী করতে, কম কার্বন অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করবে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করতে এবং মূলধারায় লিঙ্গ সমতা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তিতে সহায়তা করবে।

সংস্থাটির প্রিন্সিপাল পাবলিক ম্যানেজমেন্ট ইকোনমিস্ট আমিনুর রহমান জানান, জলবায়ু ধাক্কা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এডিবিও বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত।
এই কর্মসূচি জলবায়ু অর্থায়নকে একত্রিত করার জন্য একটি সক্ষম প্রাতিষ্ঠানিক এবং নীতিগত পরিবেশ তৈরি করবে। যা বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এজেন্ডায় জলবায়ু কর্মকে অগ্রাধিকার দেবে। সরকারকে কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবহন ও অবকাঠামো, নগর উন্নয়নসহ জলবায়ু-সমালোচনামূলক খাতে সংস্কার বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এই প্রকল্প।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বৃষ্টির প্রভাবে সবজির দামে অস্বস্তি

দেশব্যাপী ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’এর প্রভাবে চলা বৃষ্টিতে সবজির দামে আঁচড় কেটেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় নানান সবজিতে দাম বেড়েছে কয়েক শতাংশ। তাতে বিক্রেতাদের ‘বেপরোয়া’ আচরণের মাঝে প্রয়োজনীয় বাজার করে ঘরে ফিরেছে সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজি কম, তাই বেশি দামেই আমাদের কিনে আনতে হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারে শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, যেখানে দুইদিন আগেও ছিল ৪০ টাকা কেজি। বেগুনও বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকায়। এদিকে শীতের সময়ে সবচেয়ে কমদামে থাকার কথা যেই সবজির, সেই ফুলকপি-বাঁধাকপিও বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে।
এছাড়াও বাজারে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, সিম ৫০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ কেজি। দুইদিন আগেও এই কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।
আজকের বাজারে অন্যান্য দিনের তুলনায় শাকের উপস্থিতিও কম দেখা গেছে, ফলেও দামও তুলনামূলক কিছুটা বেশি। এক আঁটি লালশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে, যা অন্যান্য সময়ে ১০-১৫ টাকা করেই পাওয়া যায়। এছাড়া লাউশাক ৫০ টাকা, পালংশাক ২০ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা আঁটি করে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা মো. কবির হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে আমাদেরও সবজি নষ্ট হয়, তাই সব ব্যবসায়ীরাই কম কম কিনে। আবার পাইকারি বাজারেও যে সবজি খুব বেশি তা না। বৃষ্টির কারণে ঢাকায় সবজি ঢুকেই কম। যে কারণে বাধ্য হয়েই দামটা একটু বাড়িয়ে রাখতে হয়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
শেয়ারবাজার-বন্ডে গোলাপের বিনিয়োগ দেড় কোটি টাকা

মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুস সোবহান মিয়া। নিজ এলাকায় তিনি গোলাপ নামে পরিচিত। এমপি হওয়ার পর তার নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। কিনেছেন কোটি টাকার গাড়িও। ২০২৩ সালে তার বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকা ভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ১ কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৯২ টাকার।
এদিকে গোলাপের চেয়ে ১২ গুণ বেশি নগদ অর্থ রয়েছে তার স্ত্রী গুলশান আরার।
মাদারীপুর জেলার মাদারীপুর সদরের একাংশ, কালকিনি ও ডাসার উপজেলা নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-৩ আসন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে প্রথম এমপি হন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ। নির্বাচনী হলফনামায় তিনি ও তার স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণী পেশ করেছেন। তাতে দেখা গেছে, নিজের তুলনায় তার স্ত্রীর নগদ অর্থ ১২ গুণ বেশি রয়েছে। এমপি হওয়ার পর গোলাপ কিনেছেন কোটি টাকার গাড়ি। এমপি হওয়ার আগে তার কোনো গাড়ি ছিল না।
নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে তার নিজের নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল ৫১ লাখ ৯ হাজার ৬৯০ টাকা। বর্তমানে তার জমা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৯৩১ টাকা এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ টাকা। আবদুস সোবহান গোলাপের নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৪ দশমিক ৩১ গুণ।
২০১৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় তার পেশা ব্যবসা ও রাজনীতি উল্লেখ করলেও ২০২৩ সালের নির্বাচনী হলফনামায় তার বর্তমান পেশা উল্লেখ করেছেন রাজনীতি। ২০১৮ সালে তার নগদ টাকা ছিল ৭৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৬৬ টাকা এবং স্ত্রীর গুলশান আরার নামে ছিল ১ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ১৩১ টাকা। ২০২৩ সালে তার নগদ টাকা কমেছে। বর্তমানে তার নগদ টাকার পরিমাণ ১৫ লাখ ২৮ হাজার ৬১৪। তবে স্ত্রীর টাকা বেড়েছে। তার স্ত্রীর নামে নগদ টাকা রয়েছে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৩ টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামা মোতাবেক তার স্ত্রীর কাছে ৯৮ হাজার ১১৮ ইউএস ডলার থাকলেও চলতি বছরে তার কাছে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা নেই বলে জানা গেছে। তবে আবদুস সোবহানা মিয়া গোলাপের আগের হলফনামা মোতাবেক আগে কোনো গাড়ি না থাকলেও বর্তমানে তার একটি টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ রয়েছে। যার বাজার মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৯০ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৭ টাকা।

গোলাপ ও তার স্ত্রী গুলশান আরার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণও বেড়েছে। ২০১৮ সালে তার নিজের নামে জমা ছিল ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল ৫১ লাখ ৯ হাজার ৬৯০ টাকা। বর্তমানে তার জমা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৯৩১ টাকা এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ টাকা। অপরদিকে তার নামে ২০১৮ সালে বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকা ভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার ছিল ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭২ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার।
২০২৩ সালে রয়েছে ১ কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৯২ টাকার এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার। এছাড়া মিরপুর এবং উত্তরাতে তার দুটি ভবন রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মমতাজের শেয়ার-সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৪ কোটি টাকা

মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের শেয়ার এবং জাতীয় সঞ্চয়পত্রে প্রায় ৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর, হরিরামপুর ও সদর) আসনের এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা ও তার আয়-ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য বিবরণী বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
তথ্য মতে, মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ৩ কোটি ৫০ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার আছে মমতাজ বেগমের। সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ আছে ৪৫ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমা অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৮ টাকা। এসব থেকে মমতাজ বেগম বার্ষিক ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯১ টাকা আয় করেন।
হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, মমতাজ বেগম সংসদ সদস্য ভাতা ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও আনুষঙ্গিক পারিতোষিক বাবদ তিনি বছরে আয় করেন ১৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসাবে মমতাজ বেগমের হাতে আছে নগদ ৫ লাখ টাকা। মমতাজ বেগমের নামে গাড়ি আছে তিনটি। ল্যান্ডক্রুজার নামে একটি গাড়ির দাম ১ কোটি ৩ লাখ ১২ হাজর ৫০০ টাকা। এছাড়া ল্যান্ডক্রুজার ভি-৮ মডেলের গাড়ির দাম ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ২৮ লাখ টাকা মূল্যের টয়োটা হাইয়েস আছে তার। এসব থেকে মমতাজ বেগমের পাঁচ বছরে আয় বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ।
২০১৮ সালে তার বাৎসরিক আয় ছিল ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ২৭৬ টাকা। বর্তমানে তার আয় দেখানো হয়েছে ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। এর মধ্যে তার পেশা থেকে আয় বছরে ৭ লাখ টাকা। বাকিটা কৃষি খাত থেকে ৩ লাখ, বাড়ি এপার্টমেন্ট অথবা দোকান ভাড়া থেকে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৭ টাকা এবং শেয়ার সঞ্চয়পত্র অথবা ব্যাংক আমানত থেকে আসে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯১ টাকা।
৫ বছরে প্রায় ৫২ লাখ ৫৩ হাজার টাকার ঋণের পরিমাণ কমেছে মমতাজের। ২০১৮ সালে মমতাজের ব্যাংক ঋণ ছিল ৩ কোটি ৩৪ লাখ ১১ হাজার ৪৬৪ টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় ব্যাংক ঋণ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ভারতের বহরমপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে এবং কলকাতার হাইকোর্টে মমতাজের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা চলমান আছে।

কৃষি জমি না বাড়লেও পাঁচ বছরে মমতাজের ৭০০ শতাংশ অকৃষি জমি কমেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী তার অকৃষি জমি ছিল ১২০০ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০০ শতাংশে। মহাখালীতে পাঁচতলা বিশিষ্ট এবং সিংগাইরের জয়মন্টপ এলাকায় দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি আছে মমতাজের। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৫৭ লাখ ৫ হাজার ৪৪০ টাকা।
হলফনামায় নিজের পরিচয়ে মৃত বাবার নাম উল্লেখ থাকলেও মমতাজের স্বামীর নামে নগদ ৫ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৮ লাখ টাকা এবং ১৩০০ সিসি ফান কার্গো নামে একটি গাড়ি দেখানো হয়েছে। গাড়িটির মূল্য ৮ লাখ টাকা।
অর্থসংবাদ/এমআই