চিত্র-বিচিত্র
কোরিয়ান ‘মুন জার’ কেন লাখ লাখ ডলারে বিক্রি হয়?

কোরিয়ার জাতীয় জাদুঘরের সাবেক পরিচালক চে সুনু এই জাদুঘরের মুন জারগুলোকে মানুষের ‘সঙ্গী’ অথবা অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, জনপ্রিয় বিটিএস তারকা আরএম আধুনিককালে তৈরি একটি মুন জারকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে টুইটারে ছবি পোস্ট করেন এবং ভক্তদের বলেন যে, এটি তার মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
পুরনো, গোল, ত্রুটিযুক্ত এবং সুন্দর- এভাবেই কোরিয়ান শিল্পের ভক্তরা ‘মুন জার’ বা ‘ডালহাংগারি’কে বর্ণনা করে। দেখতে সাদাসিধে, কারুকার্যহীন সাদা রঙের এই পাত্রগুলো কে-পপ ব্যান্ড বিটিএসের র্যাপার আরএম থেকে শুরু করে দার্শনিক অ্যালা দে বোতো- সবাইকেই অভিভূত করেছে।
লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়ামের সাবেক পরিচালক বেথ ম্যাককিলপ মুন জারকে ‘কোরিয়ান পরিচয়ের প্রতিমূর্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আর দামের নিরিখে যদি জনপ্রিয়তা বিচার করা হয়, তাহলেও এই পাত্রগুলোর দাম শুনে আপনার চোখ কপালে উঠবে! সম্প্রতি ক্রিস্টি’স-এর নিলামে ৪.৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছে একটি মুন জার।
১৭ শতকের শেষভাগে কিংবা ১৮ শতকের শুরুর দিকে তৈরি একটি বিরল মুন জার চলতি মাসে নিউইয়র্কে সোথবি’স এর নিলামে তোলা হবে। নিলামে এটি ৩ মিলিয়ন ডলারের বেশি দামে বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
“বড় আকৃতির মুন জার সবসময়ই বেশ দামি হয়। কিন্তু আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে এটির যে আবেদন তৈরি হয়েছে সে কারণেই এগুলোর দাম ও মূল্যমান আকাশছোঁয়া। দলে দলে আন্তর্জাতিক নিলামকারীরা এই শিল্পকর্মের কেনাবেচা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন, তাই এটা এখন শুধু কোরিয়ান শিল্প-সমঝদারদের শিল্প নিদর্শন সংগ্রহের নেশার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই”, বলেন আমেরিকা ও ইউরোপ অঞ্চলে সোথবি’স-এর ‘চাইনিজ ওয়ার্কস অব আর্ট’ বিভাগের প্রধান অ্যাঞ্জেলা ম্যাকঅ্যাটিয়ার।

তাছাড়া, মুন জারের অবিশ্বাস্য রকম উচ্চমূল্যের কারণেও এগুলো বিরল হিসেবে বিবেচিত। যদিও কোরিয়া শাসনকারী শেষ রাজবংশ, জোসন রাজবংশের সময় এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে রাজকীয় চুল্লীতে এই পাত্রগুলো তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে অতি অল্প সংখ্যক মুন জার টিকে আছে। বড় সাইজের পাত্র (১৫.৭ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ) টিকে রয়েছে মাত্র ১২ থেকে ৩০টি।
বিভিন্ন নিলাম হাউজ এবং অ্যান্টিক ডিলারদের হাত পেরিয়ে কিছু কিছু মুন জার এখন ব্রিটিশ মিউজিয়াম এবং বোস্টনের মিউজিয়াম অব ফাইন আর্টস-এ জায়গা করে নিয়েছে; সেইসঙ্গে কিছু পাত্র গিয়েছে ব্যক্তিগত সংগ্রাহকদের কাছে।
‘এক টুকরো সুখ’
কোরিয়ান শিল্পের এই বিখ্যাত নিদর্শনটিকে সাধারণ কোনো পাত্র ভাবলে ভুল করা হবে। শুধুমাত্র দাম এবং বিরল শিল্পকর্মের দিক থেকেই নয়, এই পাত্রের সঙ্গে মানুষের গভীর আবেগ ও অনুভূতিও জড়িয়ে আছে।
ইতিহাস বলে, ১৬৫০ থেকে ১৭৫০ সালের মধ্যে গোয়াংজু শহরে রাজকীয় চুল্লীতে প্রথম মুন জার তৈরি করা হয়। সাদা চীনামাটি এবং কাওলিন কাদামাটির সাহায্যে এই পাত্রগুলো তৈরি করা হতো এবং তখনকার দিনের নব্য-কনফুসিয়ান ফ্যাশন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে উপযুক্ততা, নম্রতা, মিতব্যয়িতা এবং বিশুদ্ধতার মতো মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটে এর মধ্যে। এই পাত্রগুলো রাজদরবারে এবং উচ্চবিত্তদের ঘরে খাবার বা তরল কিছু রাখার কন্টেইনার হিসেবে কিংবা ঘর সাজানোর পাত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: ইতালিতে যে ভাস্কর্য ঘিরে উত্তেজনা
২০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মুন জার আন্তর্জাতিক মহল থেকেও প্রশংসা পেতে শুরু করে; এর জন্য জাপানি ফোক ক্রাফট বিষয়ক পণ্ডিত ইয়ানাগি সোয়েৎসু এবং ব্রিটিশ মৃৎশিল্পী বার্নার্ড লিচকে ধন্যবাদ দিতেই হয়- যিনি সিউলের একটি অ্যান্টিকের দোকান থেকে ১৯৩৫ সালে একটি মুন জার কিনে এনেছিলেন। লিচ একবার বলেছিলেন, একটা মুন জার নিজের কাছে থাকা মানে ‘এক টুকরো সুখের মালিকানা পাওয়া’। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি পাত্রটিকে আরেক মৃৎশিল্পী লুসি রাইয়ের কাছে দিয়ে যান নিরাপদে রাখার জন্য। লুসির মৃত্যুর আগপর্যন্ত এটা তার স্টুডিওতেই ছিল এবং পরে তা ব্রিটিশ মিউজিয়ামের হাতে চলে যায়।
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ-এর কোরিয়ান আর্ট হিস্টোরি বিভাগের প্রভাশক শার্লট হরলিক আর্ট বুলেটিন নামক জার্নালে লিখেছেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মুন জার উত্তর-ঔপনিবেশিক কোরিয়ান শিল্পী গোষ্ঠী ও পণ্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে- যারা কিনা কোরিয়ান শিল্পের ইতিহাস ও জাতীয় পরিচয় পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিলেন। তারা মুন জারের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন কারণ স্বতন্ত্র কোরিয়ান শিল্পকর্মের উদাহরণ হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আধুনিকতাবাদের সঙ্গেও এটির সাদৃশ্য ছিল।
মুন জারের আকর্ষণ
সোথবি’স যখন তাদের আসন্ন নিলামের কথা ঘোষণা করে, তখন ৪৪ সেন্টিমিটার বা ১৭.৩ ইঞ্চি উচ্চতার মুন জারটিকে তারা এমন একটি বস্তু হিসেবে আখ্যা দেয় যা এটির সামনে উপস্থিত সবাইকে অনুপ্রাণিত, বিস্মিত করে এবং এক ধরনের প্রশান্তি দেয়। একটা সাদামাটা পাত্রকে নিয়ে এমন স্তুতি হয়তো অনেকের হাসির খোরাক হতে পারে, কারণ এমনভাবে বলা হয়েছিল যেন এটি জীবন্ত কোনো প্রাণী। কিন্তু মানুষের ওপর এটির আবেগীয় প্রভাবের কথা বারবার সাহিত্যে উঠে এসেছে।
কোরিয়ার জাতীয় জাদুঘরের সাবেক পরিচালক চে সুনু এই জাদুঘরের মুন জারগুলোকে মানুষের ‘সঙ্গী’ অথবা অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে অভিহিত করেছেন, যেগুলো তাকে লিখতে অনুপ্রাণিত করেছে এবং তার ভেতরের সৃজনশীলতাকে নাড়া দিয়ে গেছে। বার্নার্ড লিচ পাত্রগুলোকে এগুলোর ‘সহজাত আত্মচেতনাহীনতা’র জন্য প্রশংসা করেছেন। ২০১২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন একীকরণ মন্ত্রী ইউ উ-ইক এই পাত্রটিকে পুনরায় একত্রিত কোরিয়ান উপদ্বীপের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন (দুটি আলাদা গোলার্ধের আকৃতিতে বানিয়ে মাঝখানে জোড়া দিয়ে তৈরি হয় মুন জার।)
হালের জনপ্রিয় বিটিএস তারকা আরএম আধুনিককালের একটি মুন জারকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে টুইটারে ছবি পোস্ট করেন এবং ভক্তদের বলেন যে, এটি তার মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
ম্যাকএটিয়ার বলেন, “একটা পাত্র কিভাবে মানুষকে শান্ত থাকতে সাহায্য করে সেটা বিশ্বাস করা অনেকের পক্ষেই কঠিন। এর মধ্যে ধ্যান বা চিন্তাশীলতার একটা উপস্থিতি আছে। আপনি যদি মার্ক রথকোর (বিখ্যাত মার্কিন শিল্পী) একটা বিখ্যাত চিত্রকর্মের সামনে বসে থাকেন, তাহলে আপনার মনে হবে সেখান থেকে একটা প্রাণশক্তি বিচ্ছুরিত হচ্ছে এবং আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা এটার সামনে বসে থাকতে পারবেন- মুন জারও সেরকমই একটা বস্তু।”
“আপনি যতই এটার দিকে তাকিয়ে থাকবেন, ততই আরও বেশি দেখতে মন চাইবে। প্রতিটি দৃষ্টিকোণ থেকে এটা ভিন্ন রকম মনে হয়। আমাদের এটার ছবি তুলতেই হিমশিম খেতে হয়েছে, কারণ যতবার আপনি পাত্রটাকে ঘুরাবেন বা আলোকসজ্জা পরিবর্তন করবেন, ততবারই মনে হবে যেন আলাদা জিনিস দেখছেন। পাত্রটির উপরিতলকে সত্যিই জীবন্ত মনে হয়। আপনার মনে হবে আপনি যেন এর মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছেন!” যোগ করেন তিনি।
আধুনিক শিল্পীদের কাজ
আধুনিক কোরিয়ান মৃৎশিল্পীরা মুন জার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের মতো করে একই ধরনের পাত্র তৈরি করেছেন। সিরামিস্ট কিম সিয়ং তার নির্মিত পাত্রের উপরিতলে কালো চকচকে রঙ দিয়েছেন; অন্যদিকে, ইয়ুন জু চিওল অনেকটা পাফারফিশের মতো দেখতে ছুঁচালো রূপ দিয়েছেন তার পাত্রের; এবং চে বো রুম তৈরি করেছেন বার্নিশবিহীন, অমসৃণ, ডেনিম নীল শেডের মুন জার।
তবে ৭১ বছর বয়সী সিরামিস্ট কন দে সুপ অতীতের মৃতশিল্পীদের প্রক্রিয়া অনুসরণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি তার তৈরি পাত্রগুলোকে একেবারেই অলঙ্কৃত করেন না, বরং ত্রুটিগুলোকেই এই পাত্রের বিশেষত্ব হিসেবে ফুটিয়ে তোলেন। তিনিও গোয়াংজুর একটি স্টুডিওতে কাজ করেন, যেখানে অতীতে রাজকীয় চুল্লীগুলোতে মুন জার তৈরি করা হতো।
বলে রাখা ভালো, ঐতিহ্যবাহী প্রক্রিয়ায় মুন জার তৈরি বেশ কষ্টসাধ্য। প্রক্রিয়াটি শ্রম-নিবিড় ধৌত করা, কাদামাটি থেকে ময়লা দূর করা, বাতাস যেন না থাকে তার জন্য পেষণ ও রোল করা, এই বিশাল মাটির দলা বয়ে নিয়ে যাওয়া; সেইসঙ্গে হাত দিয়ে সঠিক আকৃতি দেওয়া। এরপরে চুল্লীর মধ্যে ২৪ ঘণ্টা ধরে পাইন কাঠের আগুন জ্বালিয়ে রেখে পাত্রগুলো পুড়িয়ে শক্ত করা। এমনকি পুরনো কৌশল অবলম্বন করতে কন দে সুপ নিজস্ব চুল্লীও তৈরি করেছেন।
সিএনএনকে এই সিরামিস্ট বলেন, “আমি এগুলো বানাই কারণ কাজটা আমার কাছে মজা লাগে। প্রতিবার যখন আমি কিছু বানাই, এটা অভিনব মনে হয়… প্রতিবারই উপাদানগুলোর মান ভিন্ন রকম হয়। প্রতিবারই পাত্র বানানোর সময় নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করি।”
কন দে সুপ আরও জানান, মুন জারের সঙ্গে তার একটা আবেগ জড়িয়ে আছে। ছাত্রাবস্থায় একবার একটা কোরিয়ান অ্যান্টিকের দোকানে এই পাত্র দেখে তিনি এতটাই অভিভূত হয়েছিলেন যে তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, ভবিষ্যতে এটাই হবে তার পেশা। “এগুলোকে জীবন্ত মনে হয়”, বলেন এই শিল্পী।
২০১৯ সালে তাঁর কাজের উপর ভিত্তি করে অক্সল ফেরভুলট গ্যালারির প্রকাশিত বইয়ে তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, তিনি এমন শিল্পকর্ম তৈরির চেষ্টা করেন যেগুলোর মধ্যে কিছু সংযুক্ত করার বা বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। “আমি এমন শিল্পকর্ম তৈরি করতে চাই যার একটা চিত্তাকর্ষক ও প্রভাবশালী উপস্থিতি থাকবে; তবে এগুলো যেখানেই প্রদর্শিত হোক না কেন, পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে একটা সামঞ্জস্য বা ছন্দ বজায় রাখবে। যারাই এটা দেখবে, তারা যেন মনে শান্তি এবং স্বস্তি অনুভব করে।”
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চিত্র-বিচিত্র
হেলিপ্যাডে ‘এইচ’ লেখা থাকে কেন?

বিমান কিংবা হেলিকপ্টার দুটোই আকাশে উড়তে পারে। কিন্তু তাদের অবতরনের পদ্ধতি আলাদা। বিমানের জন্য চাই বিশাল রানওয়ে তবে হেলিকপ্টারের হেলিপ্যাডে হলেই যথেষ্ট। দুর্গম অঞ্চলে হেলিপ্যাড থাকলে সেখানেও হেলিকপ্টার অবতরণ করানো যায়। হেলিপ্যাড হয় বড় একটি বৃত্তাকার স্থান। আর এর মাঝে লেখা থাকে ইংরেজি অক্ষর ‘এইচ’।
হেলিপ্যাডে অনেকেই অনেক ধরনের রং ব্যবহার করেন। তবে হলুদ ও সাদা রং বেশি ব্যবহার করা হয়। বৃত্তের রং থাকে হলুদ এবং বৃত্তের মাঝে বড় করে ইংরেজি অক্ষর ‘এইচ’ সাদা রঙে লেখা থাকে।
অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে হেলিপ্যাডে কেন ইংরেজি অক্ষর ‘এইচ’ লেখা থাকে? ল্যান্ডিং বোঝাতে ‘এল’ অথবা পার্কিং বোঝাতে ‘পি’ লেখা যেত। তা না করে সব দেশেই কেন শুধু ‘এইচ’ অক্ষরটি লেখা হয়?
মূলত এইচের লম্বা ২টি দাঁড়ি হলো হেলিকপ্টারের ২টি লম্বা পায়াকে দাঁড় করানোর জন্য। তাছাড়া হলুদ বৃত্ত ও মাঝে সাদা অক্ষরের এইচ পাইলটের দৃষ্টি আকর্ষণে সাহায্য করে। এর ফলে পাইলট সহজেই হেলিপ্যাডে হেলিকপ্টারটিকে নামাতে পারেন।
হেলিপ্যাডগুলো সাধারণত কংক্রিটের তৈরি। সময় বাঁচাতে ধনী শ্রেণি মানুষেরা হেলিকপ্টার বেশি ব্যবহার করে থাকেন। নিজেদের বাড়ির ছাদে বা খোলা স্থানে হেলিপ্যাড তৈরি করেন। এছাড়াও বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা আপদকালীন সময়ে হেলিকপ্টার ওঠানামা করার জন্য দুর্গম এলাকায় অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করেন।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
আইনস্টাইনের পাণ্ডুলিপি ১৪ কোটি টাকায় বিক্রি

সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের একটি পাণ্ডুলিপি বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকায় (১০ কোটি ৭০ লাখ রুপি) বিক্রি হয়েছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর চীনের বৃহত্তম শহর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইয়ে এক নিলামে বিক্রি হয়েছে পাণ্ডুলিপিটি।
‘বিংশ/একবিংশ শতাব্দির শিল্প বিক্রয় সন্ধ্যা’ নামের সেই নিলামের আয়োজক ছিল সাংহাইভিত্তিক নিলাম সংস্থা ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টোরিয়া সাংহাই। যে ক্রেতা পাণ্ডুলিপিটি কিনেছেন, তার নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
এই পাণ্ডুলিপিটি আসলে আইনস্টাইনের বিখ্যাত আপেক্ষিকতাতত্ত্ব (থিওরি অব রিলেটিভিটি) সম্পর্কিত দু’টি প্রবন্ধ থিওরি অব স্পেশাল রিলেটিভিটি এবং থিওরি অব জেনারেল রিলেটিভিটির হাতে লেখা অনুলিপি। ‘থিওরি অব স্পেশাল রিলেটিভিটি’ তিনি লিখেছিলেন ১৯০৫ সালে, আর ‘থিওরি অভ জেনারেল রিলেটিভিটি’ লিখিত হয়েছিল তার ১০ বছর পর (১৯১৫) সালে।
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব উদ্ভাবনের জন্য ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার জয় করেন আইনস্টাইন। সেই তত্ত্বের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেই এ দু’টি প্রবন্ধ লিখেছিলেন আইনস্টাইন। প্রবন্ধগুলো প্রথম মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে। মহান এই বিজ্ঞানীর নোবেল জয়ের ৮ বছর পর এ দু’টি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
জার্মান ভাষায় লেখা মাত্র ১৪ পৃষ্ঠার এই পাণ্ডুলিপিতে আইনস্টাইন লিখেছেন, কীভাবে পৃথিবী ও মহাবিশ্ব সম্পর্কিত বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে করতে তিনি আপেক্ষিকতাতত্ত্বের উদ্ভাবন করলেন, কীভাবে এই তত্ত্বটি কাজ করে এবং আরও কিছু তথ্য।

বিবরণমূলক নানা তথ্যের পাশাপাশি মহাজাগতিক সময়ের দু’টি গাণিতিক ইকুয়েশন এবং আইনস্টাইনের নিজের হাতে আঁকা একটি ডায়াগ্রামও সংযুক্ত রয়েছে পাণ্ডুলিপিটিতে।
ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টোরিয়া সাংহাই মূলত ক্রিটিকস চায়না নামের একটি কোম্পানির অঙ্গসংগঠন। অ্যান্টিক পণ্য ক্রয়বিক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই কোম্পানির মুখপাত্র রেবেকা ইয়াং জানিয়েছেন, আইনস্টাইনের এ প্রবন্ধটি তাদের কোম্পানির ‘ক্ল্যাসিক আর্ট’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত ছিল।
তিনি বলেন, ‘আর কিছুদিনের মধ্যে হংকংয়ে আমাদের আরও দু’টি নিলাম আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেসব নিলামেও দুর্লভ অ্যান্টিক সামগ্রী তোলার পরিকল্পনা আছে কোম্পানির।’
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
চুলের স্টাইলের কারণে স্কুল থেকে দুইবার বরখাস্ত

চুলের স্টাইল পছন্দ না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের চেম্বারস কাউন্টির মন্ট ভেলভিউতে এক শিক্ষার্থীকে দুইবার স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দুই সপ্তাহের শাস্তি শেষ করে গত সোমবার স্কুলে এসেছিল সে। আবার একইভাবে চুলে বেঁধে (ড্রেডলকস স্টাইল) স্কুলে যায় ড্যারিল জর্জ (১৭)। তাই আবার তাকে একই শাস্তি দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। খবর এনডিটিভির
ড্যারিল মন্ট ভেলভিউর বারবারস হিল হাইস্কুলে ঘটেছে এই ঘটনা। স্কুল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ড্যারিলের ছোট ছোট বেনি বাঁধা চুল তার চোখের নিচে, কানের নিচে এসে পড়ে, যা তাদের প্রতিষ্ঠানের পোশাকবিধির লঙ্ঘন। তবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ওই শিক্ষার্থীর মা দারেশা জর্জ।
চুলের কারণে ড্যারিল গত ৩১ আগস্ট স্কুল থেকে প্রথম সাময়িক বরখাস্ত হয়। শাস্তির কথা শুনে সে কান্না করে। তার মা দারেশা বলেন, একটি ছোট্ট ঘরে বেঞ্চে আট ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এটি খুবই অস্বস্তিকর। প্রতিদিন সে বাড়িতে এসে বলে, দীর্ঘ সময় টুলে বসে থাকার কারণে তার পিঠে খুব ব্যথা হয়।’
দারেশা বলেন, ‘আমাদের পরিবারে সব পুরুষের চুলই ড্রেডলকস স্টাইলে রাখা। এই স্টাইল আমাদের পূর্বসুরিদের কাছ থেকেই এসেছে। ঐতিহ্য ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ওই চুলের স্টাইলের গুরুত্ব অনেক। আমাদের শক্তির জায়গা এই চুল। এটি আমাদের শিকড়।’
দারেশা জর্জ বলেন, ড্যারিল স্কুলে গেলে তার সব চুল একসঙ্গে ওপরের দিকে বেঁধে রাখে। এতে কীভাবে পোশাকবিধির লঙ্ঘন হলো, তা দারিশা বুঝতে পারছেন না।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
বিষাক্ত তেলাপিয়া খাওয়ায় হারালেন হাত-পা

বাড়িতে তেলাপিয়া মাছ রান্না করে খেয়েছিলেন লরা বারাজাস নামে এক মার্কিন নারী। তবে তেলাপিয়া মাছ খাওয়ার পরই ঘটে মারাত্মক বিপত্তি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার হাত-পা অবশ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচাতে চারটি অঙ্গই কেটে ফেলেন চিকিৎসক। সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে।
চিকিৎসকদের দাবি, তেলাপিয়া মাছ খাওয়ার পর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত হন লরা, যা ওই মাছ থেকে ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার লরা বারাজাসের অস্ত্রোপচার করা হয়। এক মাস ধরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে লরার বান্ধবী আনা মেসিনা বলেন, সান জোসের একটি স্থানীয় বাজার থেকে তেলাপিয়া মাছ কিনেছিলেন লরা। বাড়িতে নিজের হাতে ওই মাছ রান্না করেন তিনি। পরে মাছটি খাওয়ার পর একটু একটু করে কোমায় চলে যান তিনি। এর আগে, তার মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। কোমায় চলে গেলে যেরকমের চিকিৎসা করা হয়, সেটাই তাকে দেওয়া হয়েছিল।
মেসিনা জানান, নিজের চোখে দেখেছি, একটি একটি করে আঙুল কালো হয়ে যাচ্ছে লরার। এরপর পায়ের পাতা কালো হয়ে গেল। তারপর নিচের ঠোঁটের রঙ বদলে গেল। এ সময় তার সারা দেহে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে তার কিডনি বিকল হতে শুরু করে।

চিকিৎসকদের দাবি, মূলত সামুদ্রিক মাছ থেকে এ ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে ঢোকে।
মার্কিন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ নাতাশা স্পটিসউডের বলেন, সমুদ্রের মাছ খেতে হলে আমাদের বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার জরুরি। যদি কেউ সিফুড খেতে চয়, তাহলে রান্নার পদ্ধতি বদলাতে হবে। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এ মাছগুলোকে দীর্ঘক্ষণ ফেলে রেখে সিদ্ধ বা ভাজতে হবে। তাহলে এ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
ব্যাংকের লকার খুলতে ব্যর্থ চোর, প্রশংসা জানিয়ে চিরকুট

ব্যাংকে চুরি করতে ঢুকেছিলেন চোর। কিন্তু কোনো লকারই খুলতে না পেরে শেষে ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশংসা করে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান। সেই সঙ্গে তাকে যেন খোঁজা না হয়, সেই অনুরোধও করেছেন। ঘটনাটি ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের মাঞ্চেরিয়াল জেলার।
গত বৃহস্পতিবার রাতে তেলেঙ্গানা গ্রামীনা ব্যাংকের একটি শাখায় এই ব্যর্থ চুরির প্রচেষ্টা ঘটে। পরদিন শুক্রবার সকালে কর্মচারীরা এসে ব্যাংক খোলার পর চোরের রেখে যাওয়া বার্তা পান।
প্রথমে শঙ্কিত হয়ে উঠলেও পরে ব্যাংকের সব মূল্যবান জিনিস অক্ষত আছে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
চোরের লিখে রেখে যাওয়া চিরকুটটি পুলিশকেও দেখিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ওই বার্তায় চোর লিখেছেন, ‘আমার আঙুলের ছাপ পাবেন না। ভালো ব্যাংক। একটা রুপিও নিতে পারিনি। কাজেই আমাকে ধরবেন না।’

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ নিশ্চিত করেছে, ব্যাংকের সমস্ত লকার অক্ষত ছিল।
চোরের ব্যাংকে প্রবেশ এবং চলাফেরা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, ওই চোর মাঞ্চেরিয়াল জেলার কোনো স্থানীয় লোক হতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, চোড় মুখোশ পরে এসেছিল, তাই তার চেহারা দেখা যায়নি। তাকে দেখে পেশাদার চোর বলেও মনে হয়নি বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা অবশ্য বলেন, ব্যাংকটি অল্পের জন্য বেঁচে গেছে, কারণ তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো নয়। শুধু লকার ডোরে একটি অ্যালার্ম আছে জানিয়ে একজন পুলিশ বলেন, ‘আগেও আমরা ব্যাংকটিকে গ্রিলের দরজা, অ্যালার্ম আর নিরাপত্তা প্রহরী বসিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বলেছিলাম।’
অর্থসংবাদ/এমআই