অর্থনীতি
রামপালের সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করবে সৌদি কোম্পানি

সৌদি আরবের এসিডব্লিউএ পাওয়ার কোম্পানির নেতৃত্বে যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় ৪৩০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে স্থাপন করা হবে বাংলাদেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র।
৩০০ মেগাওয়াটের এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশেই জমি দেবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
বেসরকারি খাতের কমফিট কম্পোজিট নিট লিমিটেড ও ভিয়েলাটেক্স স্পিনিং লিমিটেড বেসরকারি অংশীদার হিসেবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করবে। সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রটি বিল্ড-ওউন-অপারেট (বিওও) পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা থাকবে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি এসিডব্লিউএ পাওয়ারের।
বুধবার (৩০ আগস্ট) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ট্যারিফ প্রস্তাব অনুমোদন পেতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

বিপিডিবির প্রধান প্রকৌশলী (প্রাইভেট জেনারেশন) এবিএম জিয়াউল হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, সম্প্রতি তারা এমন একটি প্রস্তাব পেয়েছেন।
‘এখন বিপিডিবি চেয়ারম্যানের উইং প্রস্তাবটি যাচাই করছে,’ জানান তিনি।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে আরেকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য জমি রয়েছে বিপিডিবির। সেই জমিতেই ৩০০ মেগাওয়াটের এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। এতে প্রায় ৯০০ একর জমি লাগবে।
দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র
কমফিট কম্পোজিট নিট লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার কাওসার আলী বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। আমরা বিপিডিবি ও এসিডব্লিউএ পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে এই কেন্দ্রে বিনিয়োগ করছি।’
কমফিট কম্পোজিট নিট লিমিটেডের টেক্সটাইল কারখানাগুলো গ্রিন এবং প্লাটিনাম সনদপ্রাপ্ত বলে জানান তিনি।
‘আমরা ইতিমধ্যেই গ্যাস ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং মিডল্যান্ড বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করেছি। কেন্দ্র দুটিতে মোট ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে আমাদের গ্রুপ বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে,’ বলেন কাওসার।
কর্মকর্তারা জানান, সৌদি আরবের এসিডব্লিউএ পাওয়ার বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম বিদ্যুৎ কোম্পানি। কোম্পানিটি এখন প্রায় ৫৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
বাংলাদেশে ১ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য গত বছরের নভেম্বরে বিপিডিবির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে এসিডব্লিউএ পাওয়ার।
এছাড়াও সৌদি আরবের কোম্পানিটি বাংলাদেশে ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম একটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়। কোম্পানিটি ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর প্রাকৃতিক গ্যাস/আর-এলএনজিভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিপিডিবির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
কমফিট কম্পোজিট নিট লিমিটেড ও ভিয়েলাটেক্স স্পিনিং লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, রামপালে ৩০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান অংশীদার ও বিনিয়োগকারী হিসেবে থাকবে এসিডব্লিউএ পাওয়ার।
তবে বিপিডিবি ও দেশীয় দুই বেসরকারি কোম্পানির মালিকানার হিস্যা কত, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে রাজি হননি কর্মকর্তারা।
বাস্তবায়নে আড়াই বছর লাগবে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উৎপাদনে যেতে এখন থেকে প্রায় আড়াই বছর সময় লাগবে। প্রথম পর্যায়ের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সম্পন্ন হওয়ার পর একই স্থানে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৪০০ মেগাওয়াটের আরেকটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধে সরকার নতুন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র না করার ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে নবায়নযোগ্য শক্তি ও সৌরবিদ্যুতের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে সরকার।
গত মাসে ২০০ মেগাওয়াটের তিস্তা সোলার প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলেছে বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড।
এছাড়া রামপালে ৩৫০ একর জমির ওপর একটি সোলার পার্ক গড়ে তুলেছে ওরিয়ন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এনার্জন রিনিউয়েবলস। এ পার্ক থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৩৪.৩ মেগাওয়াট পিক (সৌরশক্তি পরিমাপক ইউনিট) বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
সোলার থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য সরকারের
২০২৫ সালের মধ্যে সৌর, জলবিদ্যুৎ ও বায়ুবিদ্যুৎসহ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার পেছনে ছুটছে সরকার।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ২ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনের জন্য এসব উৎস থেকে কমপক্ষে ১২ শতাংশ বিদ্যুতের প্রয়োজন।
বিপিডিবির তথ্য বলছে, দেশের ডিজেলচালিত কেন্দ্রগুলোয় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ২২ টাকা। এলএনজি গ্যাসে ১০ টাকা, বড়পুকুরিয়ার কয়লাবিদ্যুতে ৪ টাকা, আমদানি করা কয়লাবিদ্যুতে ৬ টাকা এবং ফার্নেস অয়েলে ১২ টাকা ব্যয় হয়। তবে এসব বিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব নয়।
সোলারে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ৮ থেকে ১০ টাকা। আর দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎকেন্দ্র কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় সময়ভেদে ৩০ পয়সা থেকে এক টাকা পর্যন্ত পড়ে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমলো ১২০ মিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার কমেছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে, যা গত ২২ নভেম্বর ছিল ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ফর্মুলার মেনে রিজার্ভের তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে, ২০২১ সালের আগস্টে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
কিন্তু, বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় রিজার্ভ কমতে শুরু করে এবং তা অব্যাহত আছে। ফলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত ১ জুলাই থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোর কাছে ৫ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তারা আরও জানিয়েছে, প্রতি কার্যদিবসে বাংলাদেশ ব্যাংক তার রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে গড়ে প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি ব্যয় পরিশোধের জন্য বেশিরভাগ রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মার্কিন ডলারের ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
করযোগ্য আয় করেন ৬৫-৭০ লাখ, রিটার্ন আসে অর্ধেক

বিভিন্ন জরিপের ভিত্তিতে আমাদের ধারণা ৬৫ থেকে ৭০ লাখ ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করের আওতায় আসা উচিত। আমরা পাচ্ছি তার অর্ধেক। অর্থাৎ কর প্রদানে সক্ষম ব্যক্তিদের করজালে আওতায় আনতে পারলে আয়কর রিটার্ন জমা ৫০ শতাংশের বেশি উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় আয়কর দিবস- ২০২৩ উপলক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাল্টিপারপাস হলে ‘নতুন আয়কর আইন এবং কর পরিপালন: পরিবর্তিত প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে এমন তথ্য উঠে আসে।
সেমিনারে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন করনীতি বিভাগের সদস্য ড. সামস উদ্দিন আহমেদ।
সেমিনারে বলা হয়, কর পরিপালন বিষয়ে করদাতার আচরণ পরিবর্তনের জন্য পরিবর্তন তত্ত্বের আবির্ভাব হয়েছে। করদাতা ও রাজস্ব প্রশাসনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে করসেবা উন্নততর করা সম্ভব। রাজস্ব প্রশাসনের কী কী আচরণের ফলশ্রুতিতে একজন করদাতার আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব তা পর্যবেক্ষণ করা যায়। এ পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসন ও করদাতার মানসিক সমঝোতা সৃষ্টি করে স্বেচ্ছাকর পরিপালন এবং রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত গতিশীলতা আনয়ন করা সম্ভব।
সেমিনারে আরও বলা হয়, গত পাঁচ দশকে মোট রাজস্বে প্রত্যক্ষ কর ক্রমান্বয়ে প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৩ সালে অনলাইন টিআইএন চালু হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে টিআইএন গ্রহণের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেমিনারে সামস উদ্দিন আহমেদ বলেন, করের আওতা বাড়াতে কর জরিপ গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কর জরিপের দুটি পদ্ধতি আছে। একটি হচ্ছে ডোর টু ডোর জরিপের মাধ্যম করের আওতা বৃদ্ধি করা যায়। আর একটি পদ্ধতি হলো তথ্যভিত্তিক জরিপ। বর্তমানে রাজস্ব বোর্ড সেই কাজটা করছে। সিস্টেম যত সহজ করদাতা তত বাড়বে। এর পাশাপাশি কর সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জরিপের ভিত্তিতে আমাদের ধারণা ৬৫ থেকে ৭০ লাখ ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করের আওতায় আসা উচিত। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ৩৫ লাখ আয়কর রিটার্ন। অর্থাৎ কর প্রদানে সক্ষম ৬৫ থেকে ৭০ লাখ ব্যক্তিকে করজালে আওতায় আনতে পারলে আয়কর রিটার্ন ৫০ শতাংশ বেশি উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব।
আয়কর দিবস উপলক্ষ্যে আজ সব আয়কর অফিস সজ্জিত করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতীয় আয়কর দিবসে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা করেছে।
দেশে বর্তমানে ৯৪ লাখের বেশি কর শনাক্তকারী নম্বরধারী (টিআইএন) করদাতা রয়েছেন। গত অর্থবছরে ৩৫ লাখ ২৯ হাজার ২৬৩টি রিটার্ন দাখিল করা হয়েছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জেলা পর্যায়ে সেরা ভ্যাটদাতা ১৩৮ প্রতিষ্ঠান

২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) পরিশোধকারী হিসেবে উৎপাদন, ব্যবসায় ও সেবা ক্যাটাগরিতে জেলা পর্যায়ে ১৩৮টি প্রতিষ্ঠানকে সেরা ভ্যাটদাতা নির্বাচিত করা হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মূসক-প্রশিক্ষণ ও পুরস্কার শাখার দ্বিতীয় সচিব প্রণয় চাকমা সই করা চিঠি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট দিবসে বিভাগীয় অফিস থেকে সেরা ভ্যাটদাতাকে পুরস্কার ও সম্মাননা স্মারক দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে জেলা পর্যায়ে উৎপাদন, ব্যবসা ও সেবা খাতে সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) পরিশোধকারী ১৩৮টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। অন্য আরেক আদেশে জাতীয় পর্যায়ে নয়টি প্রতিষ্ঠানকে সেরা ভ্যাটদাতা নির্বাচিত করা হয়েছে।
জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডলারের দাম আরও কমলো

ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসী আয় ও রফতানিতে ডলারের দাম ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। বুধবার (২৯ নভেম্বর) ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে রফতানি ও প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা পাওয়া যাবে। আর আমদানিকারদের কাছে বিক্রি করা হবে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা।
এর সঙ্গে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেবে ব্যাংক। আর কোনো ব্যাংক চাইলে এর সঙ্গে অতিরিক্ত আরও আড়াই শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করতে পারবে।
এর আগে ২২ নভেম্বর প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা কমিয়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ১১০ টাকা এবং আমদানিতে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর।

এর পর থেকে এই দুই সংগঠন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিনদিনের ব্যবধানে ফের বাড়লো স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে আবার সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনা দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে এক লাখ ৯ হাজার ৮৭৫ টাকা। এর আগে কখনো দেশের বাজারে সোনার এত দাম হয়নি।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ায় পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) থেকে এই দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর আর এক দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। অর্থাৎ তিনদিনে দুদফা বাড়লো সোনার দাম। তার আগে ৬ ও ১৯ নভেম্বর ও ২৭ অক্টোবার আরও তিন দফা বাড়ে সোনার দাম।
২৭ নভেম্বর ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়ানো হয়। এতে এই মানের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে হয় এক লাখ ৮ হাজার ১২৫ টাকা। এর মাধ্যমে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে সোনার দাম।
সোনার দামে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হওয়ার তিনদিনের মাথায় এই ধাতুটির দাম আরও বেড়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলো। বুধবার (২৯ নভেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৯ হাজার ৮৭৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৬৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪ হাজার ৮৫৯ টাকা।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ হাজার ৯২৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ২২৫ টাকা বাড়িয়ে ৭৪ হাজার ৯৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য সোনার গয়না কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গয়না বিক্রি করা হয়। একই সঙ্গে ভরিপ্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গয়না কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে এক লাখ ১৮ হাজার ৮৬৮ টাকা।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৮ হাজার ১২৫ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৬৯১ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৩ হাজার ২২৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ৮৮ হাজার ৪৭১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ বুধবার পর্যন্ত এ দামেই বিক্রি হয়েছে সোনা।
এখন সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম এক হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রূপা এক হাজার ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম