পুঁজিবাজার
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টে মিউচুয়াল ফান্ডের উন্নয়ন প্রয়োজন

দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসি এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজারে ‘ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান এ মন্তব্য করেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে এই খাতের উন্নয়ন সাধনের অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করছে। বর্তমান চ্যালেঞ্জিং সময়ে বিনিযোগকারীরা বেশি মুনাফা লাভ করতে না পারলেও যেন কোনভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন না হোন তার জন্য বিএসইসি কাজ করছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের শিল্পায়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার হচ্ছে যা অদৃঢ় ভবিষ্যতে আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আগামী ৫ বছর হবে বাংলাদেশের জন্য সোনালি সময় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাত ভালো করছে এবং ভবিষ্যতে আরো ভালো করবে। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে এই খাতের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি বলে জানান তিনি। সামনের দিনগুলোতেও বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারা ধরে রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসময় বিএসইসির চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারকে দেশের অর্থনৈতিক পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা উল্লেখ করেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শনিবার সকাল ১০ টায় কক্সবাজারের ইনানিতে অবস্থিত সী পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড হোটেলে কনফারেন্স অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং মো. আবদুল হালিম। এছাড়াও কনফারেন্স অনুষ্ঠানে বিএসইসি, ডিএসই, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ড (এএএমসিএমএফ) এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ ও প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রথমেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার। তিনি কনফারেন্সে অংশ নেয়া সকলকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের বিস্তার ঘটানোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে বিকশিত করার সুযোগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে সকল অংশীজনের সাথে একসাথে কাজ করার কথা বলেন এবং দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে মিউচুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করতে ডিএসই কাজ করছে বলে জানান।
কনফারেন্স অনুষ্ঠানে ‘কারেন্ট স্টেট অ্যান্ড ফিউচার ডিরেকশন অব মিউচুয়াল ফান্ড অ্যান্ড কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমস্ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান। তিনি তথ্যবহুল উপস্থাপনায় বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। তিনি এশিয়া ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের সাথে দেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন এবং সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে দেশে এই খাতকে আরো বর্ধিত করা যায় সেবিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। দেশে মিউচুয়াল ফাও খাতের সম্প্রসারণের জন্য আগামীতে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিধিবিধান ও নীতি সংশ্লিষ্ট পুনর্গঠন প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, এই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিএসইসি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজনদের সাথে কাজ করছে। তার বিশ্লেষণী ও তথ্যবহুল প্রেজেন্টেশন উপস্থিত সকলের দ্বারা প্রশংসিত হয় এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে সকলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
কনফারেন্স অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের (এএএমসিএমএফ) প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম। তিনি বলেন, বিশ্বে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে মিউচুয়াল ফান্ডের ৩০০ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিরা একইসাথে দেশের পুঁজিবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী এবং পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বৃহৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি সকলকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলোর উত্তরণে কাজ করার অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার মো. আবদুল হালিম। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় অর্থনীতির তুলনায় দেশের পুঁজিবাজার এখনও অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে। আমরা দেশের পুঁজিবাজারকে উন্নত ও স্মার্ট পুঁজিবাজারে পরিণত করতে কাজ করছি। তিনি অংশীজনদের সকলকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে এই খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কথা বলেন।
অর্থনৈতিক সকল সূচকে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে হবে। তিনি উপস্থিত সকল অংশীজনদের পরামর্শ ও মতামত দেয়ার অনুরোধ করেন এবং দেশের পুঁজিবাজারকে আরো এগিয়ে নিতে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করতে এখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সুনাম অর্জন প্রয়োজন এবং এ খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা দরকার। মিউচুয়াল ফান্ড খাতকে আরো বিকশিত করতে এ খাত সম্পর্কে সকলকে আরো জানানো প্রয়োজন এবং প্রচার প্রয়োজন। তিনি আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অধিক রিটার্ন দেয়ার সুযোগ-সম্ভবনাকে কাজে লাগনো উচিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতকে বিকশিত করতে দেশের পুঁজিবাজারের ইক্যুইটি মার্কেটেরও উন্নয়ন প্রয়োজন এবং তার জন্য দেশের পুঁজিবাজারের ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তি প্রয়োজন। তিনি ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারের নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো সচেষ্ট হতে অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় ‘টেকনোলজি ফর ট্রান্সফারেন্সি অ্যান্ড লিকুইডিটি অব মিউচুয়াল ফান্ড অ্যান্ড আদার্স কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনা আলোচক হিসেবে অংশ নেন এএএমসিএমএফ’র প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মো শামীম আহসান, ডিএসইর চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) আবু তাহের মোহাম্মদ খায়রুল বাশার এবং সিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক। প্যানেল আলোচনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ড এবং অন্যান্য কালেকটিভ বিনিয়োগ স্কীমের তারল্য এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচকবৃন্দ আগামীতে দেশে মিউচুয়াল ফান্ড এবং অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড খাতের সুযোগ ও সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি আরোও এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর কনফারেন্স অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়াংশে বিএসইসির পরিচালক মো. মাহমুদুল হক ‘রেগুলেটরি ওভারসাইট অব অ্যাসেট ম্যানেজার, ট্রাস্টি অ্যান্ড কাস্টোডিয়ান’ শীর্ষক উপস্থাপনা প্রদান করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়াংশে ‘অ্যাকাউন্টিং, অডিটিং অ্যান্ড রিপোটিং অব কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমস্’ বিষয়ে হুদা ভাসি চৌধুরী এন্ড কোম্পানির সাব্বির আহমেদ এবং ‘মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ফর এক্সচেঞ্জ ট্রেড ফান্ড (ইটিএফ)’ বিষয়ে সাদাত মান্নান প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন।
কনফারেন্স অনুষ্ঠানের শেষাংশে বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি ‘ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কনফারেন্স অনুষ্ঠানে আগত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ব্যাপ্তি আরো বাড়বে এবং দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তিনি কনফারেন্স অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
লেনদেন ও বাজার মূলধন কমেছে শেয়ারবাজারে

বিদায়ী সপ্তাহে (২৬ নভেম্বর-৩০ নভেম্বর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় লেনদেন শেষ হয়েছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন ও বাজার মূলধন দুইটায় কমেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।
আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে ১ হাজার ৯০৭ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ০২ কোটি ১০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন কমেছে ৯৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।
গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিলো ৭ লাখ ৭২ হাজার ৪৯১ কোটি ৫৫ লাখ ৭৪ হাজার ২৫৫ টাকা। সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭১ হাজার ৮১৬ কোটি ৯০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৩৭ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬৭৪ কোটি ৬৪ লাখ ৯৬ হাজার ৬১৮ টাকা বা ০ দশমিক ০৯ শতাংশ।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১০ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট কমেছে। সপ্তাহ শেষে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ২২৩ পয়েন্টে।

প্রধান সূচকের সঙ্গে ‘ডিএসইএস’ বা শরীয়াহ সূচক এক সপ্তাহে ০ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ‘ডিএসই-৩০’ সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৬১ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৪০৪ প্রতিষ্ঠান শেয়ার লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ২২২টির শেয়ারের দরই অপরিবর্তিত ছিল। অপরদিকে দর বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৩ টির, বিপরীতে কমেছে ৯২ কোম্পানির শেয়ারদর।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
নতুন নামে আসছে আর. এন. স্পিনিং

নতুন নামে আসছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি আর. এন. স্পিনিং মিলস লিমিটেড। ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানিটির নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন নাম হলো ‘স্মার্ট ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নিতে আগামী ২৭ ডিসেম্বর কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) উপস্থাপন করা হবে। শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি এবং রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসি) এর অনুমতি সাপেক্ষে নাম পরিবর্তন হবে।
এর আগে কোম্পানিটি একই উদ্যোক্তাদের মালিকানাধীন অপর কোম্পানি সামিন ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড টেক্সটাইল মিলসের সাথে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনুমোদনও দিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
আর্থিক খাতে জবাবদিহি ছাড়া এসডিজি অর্জন সম্ভব নয়

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে আর্থিক খাতে শক্তিশালী জবাবদিহি ও সুশাসন নিশ্চিত না হলে টেকসই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় জবাবদিহি ও সুশাসন’ বিষয়ে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, ডিএসই চেয়ারম্যান হাফিজ মুহম্মদ হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিএবি সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ও সিইও শুভাশীষ বসু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটনের বিজনেস অ্যান্ড গভর্নমেন্ট স্কুলের একাডেমিক প্রোগ্রাম লিডার ইয়ানকা মোজেস।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে আর্থিক বিষয়ের পাশাপাশি এর পরিবেশগত, সামাজিক ও নৈতিক দিকগুলোও দেখতে হবে। প্রতিবেদনে দেখানো কোম্পানির টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অবশ্যই পরিমাপযোগ্য ও বাস্তবায়নযোগ্য হতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, গত ১৫ বছরে দেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও অর্জিত হয়েছে। এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে হলে জবাবদিহি ও সুশাসন নিশ্চিতের বিকল্প নেই। দুর্নীতি কমানোর জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া পরিবেশগত ও সামাজিক বিষয়গুলো বাস্তবায়নেও জোর দিতে হবে।

অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে টেকসই ধারণাটা বেশি দিনের না হলেও আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন টেকসই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছি। দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই পণ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ আছে; ঘাটতি আছে প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই রিপোর্টিং–পদ্ধতিতে, প্রশ্ন আছে তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও। সে জন্য আমাদের দক্ষ নেতৃত্ব ও নিরীক্ষকদের মাধ্যমে সব সমস্যা চিহ্নিত করে সমন্বিত টেকসই রিপোর্টিং–প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।
ডিএসই চেয়ারম্যান হাফিজ মুহম্মদ হাসান বলেন, পুরো আর্থিক ব্যবস্থাকেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে পেশাগত নিরীক্ষকদের বড় ভূমিকা আছে। তারা প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই টেকসই প্রক্রিয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেবে।
মূল প্রবন্ধে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটনের একাডেমিক প্রোগ্রাম লিডার ইয়ানকা মোজেস বলেন, করপোরেট খাতে সুশাসন ও জবাবদিহির দুর্বলতা বৈশ্বিক সমস্যা। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটি বেশ খারাপ অবস্থায় আছে। টেকসই ব্যবস্থা নিশ্চিতে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের হার বাড়ছে। যেমন নিউজিল্যান্ডে অস্ত্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় মাদক খাতে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করা হয়। বেশি কার্বন নিঃসরণ করে, এমন কোম্পানিতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে অনেক দেশ বেশি সুদহার নির্ধারণ করছে। এসব কারণে বিশ্বে টেকসই বিনিয়োগ সম্পদের (সাসটেইনেবল ইনভেস্টমেন্ট এসেট) পরিমাণ বাড়ছে।
নিরীক্ষকদের উদ্দেশে ইয়ানকা মোজেস আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে টেকসই ও জবাবদিহিনির্ভর পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। এ সময় রানা প্লাজা দুর্ঘটনার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মসংস্থান ও মুনাফার চিত্রের পাশাপাশি ওই প্রতিষ্ঠান এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করছে কি না, সেটাও প্রতিবেদন তৈরির সময় দেখতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে আইসিএবি সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানই যেন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে চলে, সে লক্ষ্যে সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদেরা কাজ করে যাচ্ছেন। এ লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি টেকসই প্রতিবেদন তৈরির ধরনেও অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
মতিন স্পিনিং মিলসের লভ্যাংশ অনুমোদন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মতিন স্পিনিং মিলস পিএলসির ২১ তম বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভায় সভাপতিত্ব করেন মতিন স্পিনিং মিলস পিএলসির চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জব্বার, পরিচালক এম এ কাদের, পরিচালক তানজিন খুরশিদ, পরিচালক তাসলিমা বেগম, মো. আবদুস সালাম, ব্যারিস্টার শামছুল হাসান, এ কে এম ফজলুল হক, হারুনর রশিদ ও মোহাম্মাদ ইমারত হোসেন। সভা পরিচালনা করেন কোম্পানির সচিব মো. শাহ আলম মিয়া।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ব্লকে ২২ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে মোট ৫০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ২২ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ব্লকে সবচেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে এমারেল্ড অয়েল লিমিটেডের। কোম্পানিটি ৪ কোটি ৭৭লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে।
স্কয়ার ফার্মা ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কেডিএস এক্সেসরিজের ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর ইনফরমেশন সার্ভিসেসের ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া, আজ ব্লকে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- খান ব্রাদার্সের ১ কোটি ৮২ লাখ ৯২ হাজার, ফাইন ফুডসের ১ কোটি ৮২ লাখ ৯১ হাজার, একমি পেস্টিসাইডসের ১ কোটি ৭৫ লাখ ২৬ হাজার, দেশবন্ধু পলিমারের ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার, একমি ল্যাবরটরিজের ৪৪ লাখ ৬০ হাজার এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।