আইন-আদালত
আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে (সিএসএ) বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভায় যোগদানের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে আমলযোগ্য অপরাধের মাত্র চারটি ধারা রয়েছে। আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া এ আইনে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নেই। এ বিষয়ে যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে এগুলো সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের অপব্যাখ্যা।
আইনমন্ত্রী বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে টেকনিক্যাল অপরাধ, হ্যাকিং এবং কম্পিউটারের ভেতরে ঢুকে যদি কেউ কোনো কিছু নষ্ট করে সেজন্য ১৪ বছরের সাজার বিধান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যেসব ধারা নিয়ে সাংবাদিক মহলের আপত্তি ছিল এগুলোর আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন-আদালত
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করবো

দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথিবীতে বাঙালি জাতি রাষ্ট্র বলতে একটিই দেশ আর সেটি হলো বাংলাদেশ। আর সেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন, আর সেই দেশ পরিচালনার জন্য দিয়ে গেছেন একটি সংবিধান।
তিনি বলেন, আমি এবং আমার সহকর্মী বিচারপতিবৃন্দ এই সংবিধান সংরক্ষণ করার শপথ নেই এবং আবারও আমি শপথ নিয়েছি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে। এই সংবিধান সংরক্ষণ করবো, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবো। সেই লক্ষ্যে ই আমি এবং আমার সহকর্মী বিচারপতিদের নিয়ে একসঙ্গে একযোগে কাজ করবো যাতে বঙ্গবন্ধুর সংবিধান ও তার নির্দেশিত পথেই আমরা থাকতে পারি। বাংলাদেশকে সাংবিধানিক পথে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
এর আগে তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে পৌঁছে সমাধি সৌধ বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ দোয়া মোনাজাত করেন। এরপর তিনি সমাধি সৌধের মসজিদে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এসময় আপিল বিভাগ, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
জমি কেনার আগে যে পাঁচটি বিষয় জানা প্রয়োজন

বাংলাদেশে জমি কেনা-বেচা বিষয়টি সতর্কতার সাথে না করা হলে বিপত্তি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা যেমন একটি ইস্যু, আবার নানা ধরণের জালিয়াতির শিকার হওয়ার ঘটনাও ঘটে প্রায়শই।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, তাড়াহুড়ো না করে জমি কেনার আগে কিছু বিষয় যাচাই করে নিতে পারলে প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ভূমি সংক্রান্ত কিছু সরকারি অফিসের তথ্য এবং ভূমি নিয়ে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের দুইজন আইনজীবীর কাছ থেকে নেয়া কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো যেগুলো জমি কেনার আগেই লক্ষ্য রাখা জরুরী। খবর বিবিসি।
কাগজপত্রের কপি
জমি কেনার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মালিকানার প্রমাণ সংক্রান্ত দলিল ও কাগজপত্র। যেসব কাগজপত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করতে হবে সেগুলো হচ্ছে হচ্ছে – জমির দলিল, ওয়ারিশ সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), সিএস/ এসএ/ আরএস/ মহানগর/ মিউটেশন পড়চা, ডিসিআর, খাজনার দাখিলা ইত্যাদি।
বিশেষত দলিল, মিউটেশন বা নামজারির কাগজপত্র এবং খাজনা হালনাগাদের তথ্যের দিকে প্রাথমিকভাবে জোর দেন আইনজীবীরা।
জমিভেদে সিএস, আরএস বা অন্য কাগজেরও প্রয়োজন হতে পারে, তাই যতদূর সম্ভব সেগুলো জোগাড় করা প্রয়োজন, যাতে জমি সংক্রান্ত অতীত তথ্য, বর্তমান মালিকানা, পরিমাপ ইত্যাদির নির্ভরযোগ্যতা যাচাই সম্ভব হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এএসএম সাকিব শিকদার বলেন, কাগজপত্রের বর্তমান মালিকানার বিষয় ছাড়াও ২৫ বছরের মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যের দিকে জোর দেয়া হয়। পুরনো দলিলের সাথে পরবর্তী নামজারির খতিয়ান মিলছে কী-না সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
“অনেক সময় মিউটেশনের (নামজারি) সময় আরেক জমির কিছু অংশ কাগজে চলে আসে। অথবা মামলা বা দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে মিউটেশন বাতিলের মত ঘটনাও ঘটতে পারে,” এমন ক্ষেত্রে কাগজগুলো মিলিয়ে নিতে হয়,” বলেন মি. শিকদার।
যিনি জমি বিক্রি করছেন তিনি ক্রয়-সূত্রে নাকি উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিক হয়েছেন এ বিষয়গুলোও পরিষ্কার হতে হয়। যদি উত্তরাধিকার-সূত্রে হয় তাহলে অন্য উত্তরাধিকার আছে কী না সেটি যাচাই করা জরুরী।
কাগজপত্র যাচাই
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যাচাই করতে তিনটি অফিসে যেতে হবে। তহসিল বা ভূমি অফিস, এসি (ল্যান্ড) বা সহকারী ভূমি অফিস এবং সাব-রেজিস্ট্রার অফিস।
তহসিল বা ইউনিয়ন ভূমি অফিস : জমির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পেতে তহসিল অফিস সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ।
খাজনার রশিদটি সঠিক কী-না, প্রস্তাবিত দাগ ও খতিয়ানের জমির প্রকৃত মালিক কে, জমিতে কোন সরকারি স্বার্থ জড়িত আছে কী-না সেটি দেখতে হবে। এখানে সরকারি স্বার্থ বলতে খাস জমি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি , ওয়াকফ এস্টেট এবং সরকারি অধিগ্রহণের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন ,জমি সংক্রান্ত অভিযোগ, দ্বন্দ্ব, মামলার তথ্য নিশ্চিত করতে তহসিল হচ্ছে প্রাথমিক জায়গা।
এসি ল্যান্ড অফিস – মিউটেশন বা নামজারি সংক্রান্ত তথ্য বা দ্বন্দ্বের বিষয়ে নিশ্চিত হতে যেতে হবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে। বিক্রেতার নামজারির কাগজপত্র (মিউটেশন পড়চা, ডিসিআর) ঠিকঠাক না হলে জমি রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হবে না। তহসিল এবং এসি (ল্যান্ড), এই দুই অফিস থেকে তথ্য যাচাইয়ের দিকে বিশেষভাবে জোর দিচ্ছেন আইনজীবী মি. শিকদার।
আরও পড়ুন: দখলে থাকলেই জমির মালিকানা নয়, লাগবে দলিল
সাব-রেজিস্ট্রার অফিস – তহসিল এবং এসি ল্যান্ড অফিস ছাড়াও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন।
মি. হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক বেচা-কেনার রেকর্ড, অর্থাৎ ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সে জমি বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য নিশ্চিতে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে যেতে হবে। মিঃ হোসেনের মতে অনেক সময় অন্যান্য সব তথ্য একই থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে একই জমি অন্য কাউকে বিক্রি করে দেয়ার মতো ঘটনা থাকতে পারে। সেজন্য সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে তথ্য নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করছেন তিনি।
সরেজমিন অবস্থা
কাগজপত্রের তথ্য পাওয়ার পর জমি কিনতে সরেজমিনে গিয়ে দেখার ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন । এতে করে জমিটি কেমন, সেখানে কোনো ডোবা বা পুকুর আছে কিনা, রাস্তার অবস্থান কী, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা তৈরি হবে। এছাড়া সেই জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে কিনা, বা জায়গা যেমন কাগজে উল্লেখ রয়েছে তার থেকে কম-বেশি আছে কিনা সেসব বিষয়ে ধারণা পাওয়া সম্ভব।
এছাড়া এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা করাটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ‘ভূমিদস্যু’রা সংশ্লিষ্ট জমির আশেপাশে থাকতে পারে যারা ‘সব ঠিক আছে’ এমন ধারণা দিতে পারে বলছেন মিঃ হোসেন। জায়গাটি ‘একাধিকবার ভিজিট’ করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি, কারণ তাঁর মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতায় “দশজন মানুষ হলে একজন অন্তত থাকে যিনি গোপনে হলেও সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন।”
এছাড়া সম্ভব হলে ভূমি অফিসের ম্যাপ সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী জমির উল্লেখিত দাগ মিলিয়ে নিতে পারলেও ভালো হয়।
পরামর্শ গ্রহণ
জমির কাগজপত্র ও সরেজমিন যাচাই – দুটো ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করা ব্যাপারে জোর দেন আইনজীবীরা।
সাধারণত জায়গা-জমি ক্রয়ের আগে বেশিরভাগ মানুষ আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করেন না। আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন আইনজীবীদের পরামর্শ না নিলেও জমি সংক্রান্ত ভালো জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
আরও কিছু সতর্কতা
এতো কিছু নিশ্চিত করে নেয়ার একটা বড় উদ্দেশ্য জমি নিষ্কটক নিশ্চিত করা। কারণ মামলা মোকদ্দমায় বা মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ পরবর্তীতে ক্রেতার জন্য বাড়তি ঝামেলা সৃষ্টি করতে পারে।
বড় জমি বা বেশিমূল্যবান সম্পত্তির ক্ষেত্রে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানান দেয়ার পরামর্শ দেন আইনজীবী মি. শিকদার।
অনেক সময় পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির মাধমে জমি কেনাবেচা হয়। সেক্ষেত্রে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহায়তায় মূল মালিকের সাথে অন্তত যোগাযোগ করে নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন মি. হোসেন।
কারণ এমন অনেক মামলা পরবর্তীতে আসে যেখানে ভুয়া পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির মধ্য দিয়ে জমি বিক্রি করা হয়।
যে কোনও অবস্থাতেই জমি কেনার ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্ত্বভোগীর সাথে আলোচনা না করে সরাসরি মালিকের সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন। এসব কিছু যাচাই করতে সময় লাগলেও কম দামে কিনতে তাড়াহুড়ো করতে গেলে সর্বসান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
জমি কেনার সময় করনীয়
জমির সব কাগজপ্ত্রের বিষয়ে সন্তুষ্ট থাকলে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া গেলে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে দলিল প্রস্তুত করতে হবে।
দলিল লেখার সময় অনেক ক্ষেত্রে ভুল হয়, তাই দলিল চূড়ান্ত করার আগে ড্রাফটে যা যা বলা হয়েছে সেসব তথ্য সঠিকভাবে এসেছে কিনা সেগুলো যাচাই করে নেয়ার কথা বলছেন আইনজীবী মি. শিকদার। সব ঠিক করে দলিল চূড়ান্ত হলে এর পরপরই মিউটেশন বা নামজারির জন্য আবেদন করতে হবে। এখন নামজারির বিষয়টি অনলাইনে করে নেয়া সম্ভব।
এর বাইরে “আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে রশিদ নেয়ার এবং সাক্ষী রাখার” এবং “যতটা সম্ভব চেক বা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন” করার পরামর্শও দিচ্ছে কক্সবাজার সদর উপজেলা ভূমি অফিস।
আরও কিছু বিষয় নিশ্চিত করা কথা বলা হয়েছে জাতীয় তথ্য বাতায়নে। সেগুলো হলো জমির দলিলের স্ট্যাম্প এবং দলিল রেজিষ্ট্রির রশিদ ক্রেতার নামে নিশ্চিত করে কিনে রশিদ যত্নসহকারে রাখা, জমি রেজিট্রির সময় ক্রেতা ও বিক্রেতা উপস্থিত থেকে স্বাক্ষর করা, বিক্রেতার নামে নামজরিপ কপি এবং আরএস পর্চা উপস্থাপন করা।
আগের তুলনায় ভূমি অফিসের তথ্য সংগ্রহ অনেক ক্ষেত্রেই সহজ হয়েছে বলে মত মি. শিকদারের।
নতুন আইন ও জরিপের মধ্য দিয়ে বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার হওয়ার ধারণা দিচ্ছেন তিনি। যেমন আগে জমি দখল একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হতো। এজন্য কেউ জমি কিনলে সেই সাথে দখন নিশ্চিত করাটাও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হতো।
কিন্তু নতুন আইনে দখলকে বাদ দিয়ে দলিলে নজর দেয়ায় দখল সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে বলে মনে করছেন মি. শিকদার।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ডিজিটাল আইনের চলমান মামলা বাতিলের সুযোগ নেই

বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা চলমান মামলা বাতিলের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, এ আইন বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা বিল পাস হয়েছে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরে গেজেট হলে বিলটি আইনে পরিণত হবে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলাগুলো চলমান থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে টেবিলে প্রশ্নোত্তর উপস্থাপন করা হয়।
গণফোরামের সংস সদস্য মোকাব্বির খান তার প্রশ্নে জানতে চান, বাতিল হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগে যারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানি, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন; এখনো অনেকেই কারাগারে আছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না? একইসঙ্গে বিষয়গুলো কীভাবে নিষ্পত্তি করা হবে তাও জানতে চান মোকাব্বির খান। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলা বাতিল করার সুযোগ নেই। এ সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, আইনের অবস্থান হলো যেসব অপরাধ পুরোনো আইনে করা হয়েছে, সেই পুরোনো আইনে যে শাস্তি, আদালত সেই শান্তি অপরাধীকে প্রদান করবে। আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ সংক্রান্ত যে বিধান রয়েছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘অপরাধের দায়যুক্ত কার্য সংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না। অপরাধ- সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না’।
আনিসুল হক বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনে রহিতকরণ ও হেফাজত সংক্রান্ত বিধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীন দায়ের করা অভিযোগ ও তৎসংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম বা সূচিত কোনো কার্যধারা বা দায়ের করা কোনো মামলা বা আপিল যেকোনো পর্যায়ে অনিষ্পন্ন থাকলে উক্ত কার্যধারা বা আপিল এমনভাবে চলমান থাকবে যেন তা সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীন সূচিত বা দায়েরকৃত।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) থেকে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব পালন করবেন।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে গত ৩১ আগস্ট এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১১ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর অনুপস্থিতিতে বা তার পুনরায় দায়িত্বভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব প্রদান করেছেন।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে জেলা আদালত, ১৯৮৮ সলে হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৯ সালের ৩০ জুন তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০১১ সালের ৬ জুন স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এরও চেয়ারম্যান ছিলেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
দখলে থাকলেই জমির মালিকানা নয়, লাগবে দলিল

জমির উপর দখলদারিত্ব থাকলেই মালিকানা বলে বিবেচিত হবে না, বরং মালিকানা প্রমাণে দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি অন্যের জমি নিজের দখলে রাখা, ভুয়া বা মিথ্যা দলিল তৈরি এবং নিজ মালিকানার বাইরে অন্য কোনও জমির অংশ বিশেষ উল্লেখ করে দলিল হস্তান্তরে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে এই নতুন আইনটি করা হচ্ছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে এ বিল তোলা হয়েছে। সংসদের বৈঠকে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল–২০২৩’ উত্থাপন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
পরে বিলটি পরীক্ষা করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়েছে, ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনও ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ কারেও কাছে হস্তান্তর, ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোনও দলিলে সই করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
বিলে বলা হয়, কোনও দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনও অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজাও হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনও মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করার সাজাও একই। এছাড়া প্রতারণামূলকভাবে কোনও ব্যক্তিকে কোনও দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা ভোগ করতে হবে।

বিলে বলা হয়েছে, সর্বশেষ খতিয়ান মালিক বা তার উত্তরাধিকার সূত্রে বা হস্তান্তর বা দখলের উদ্দেশ্যে আইনানুগভাবে সম্পাদিত দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে কোনও মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনও ব্যক্তি ওই ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। অবৈধ দখলের সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
আইনের খসড়া বিলে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তির নামে স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টিন্যান্সি অ্যাক্টের অধীনে প্রণীত বা হালনাগাদকৃত বলবৎ সর্বশেষ খতিয়ান না থাকলে এবং খতিয়ান ও হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলে তিনি ওই জমি বিক্রি, দান বা হেবা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন বা দলিল নিবন্ধন করতে পারবেন না।
বিলে আরও বলা হয়, কোনও ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া আবাদযোগ্য জমির উপরি স্তর কাটলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। বিলে উল্লেখ আছে, যদি কোনও ব্যক্তি এই আইনে বর্ণিত কোনও অপরাধ সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচনা দিলে মূল অপরাধীর সমান দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমির স্বত্ব সংরক্ষণ ও শান্তিপূর্ণ ভোগদখল বজায় রাখার লক্ষ্যে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ এবং দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এই আইন করা হচ্ছে। নাগরিকদের নিজ নিজ মালিকানাধীন ভূমিতে নিরবচ্ছিন্ন ভোগদখল অধিকারগুলো নিশ্চিতকরণ, ভূমি বিষয়ক প্রতারণা ও জালিয়াতির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত ও প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি ও সর্বসাধারণের প্রতিরোধ ও দমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, ভূমি সংক্রান্ত কিছু অপরাধের দ্রুত প্রতিকারের ব্যবস্থা লক্ষ্যে এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ভূমি হতে বে-আইনি দখল, স্থাপনা ব প্রতিবন্ধকতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অবৈধভাবে ভরাটকৃত মাটি, বালু, ইত্যাদি অপসারণ করতে এবং ওই ভূমিকে এর আগের শ্রেণি বা প্রকৃতিতে পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা সন্নিবেশ করা হয়েছে।
ভূমি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা দূরীকরণ এবং যথাসময়ে জনগণের বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং মাঠ পর্যায়ের মতামত গ্রহণসহ অংশীজনের মতামত গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে প্রস্তাবিত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই