স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে আরও ১১ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৭৮ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৬৬৩ জন।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৬৬৩ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯০০ জন ও ঢাকার বাইরের এক হাজার ৭৬৩ জন। একই সময়ে মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে ছয়জন ঢাকার ও পাঁচজন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৫ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৭০ হাজার ৬৬০ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৮৯ হাজার ১৭৫ জন ভর্তি হয়েছেন।
বছরের একই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৪৯ হাজার ১৪৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৬ হাজার ৫১ জন এবং ঢাকার বাইরের ৮৩ হাজার ৯৩ জন।

এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

স্বাস্থ্য
হার্টের যত্নে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ জরুরি

বিশ্বে প্রতিবছর ২ কোটিরও বেশি মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে, যার অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ। হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ৮০ ভাগ প্রতিরোধযোগ্য হলেও বাংলাদেশে হৃদরোগ ঝুঁকি এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং এখাতে সরকারের বাজেট বৃদ্ধি করার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ ঝুঁকি অনেকাংশেই মোকাবেলা করা সম্ভব।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে হৃদরোগ ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন জনস্বাস্থ্য ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞগণ। এই আয়োজনে সহযোগিতা প্রদান করেছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি ৪ জনে ১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। ডব্লিউএইচও এর গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন ২০২৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লক্ষ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে, যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের (৩০-৭৯ বছর বয়সি) অর্ধেকই জানে না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের হার খুবই কম, মাত্র ৩৮ শতাংশ। নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে মাত্র ১৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি ৭ জনে ১ জন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. ফারজানা আক্তার ডরিন বলেন, বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর- জিএইচএআই এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি।
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগের প্রকোপ ও করণীয় সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞার হেড অব প্রোগ্রামস মো. হাসান শাহরিয়ার। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি ২ লাখের বেশি

চলতি বছর সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ গতকাল নতুন করে আরো ১ হাজার ৭৯৩ জনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে এ বছর মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৮১।
চলতি বছর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি এক লাখ ছাড়িয়েছিল গত ২১ আগস্ট। সেদিন নতুন করে ২ হাজার ১৯৭ জন ভর্তি হওয়ায় মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ২ হাজার ১৯১। আর জানুয়ারি থেকে তখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছিল ৪৮৫ জনের। এর মধ্যে রাজধানীর ছিলেন ৩৬৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে রাজধানীর হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন ৫৮৪ জন। আর রাজধানীর বাইরে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ২০৯ জন। একই সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চারজন ঢাকার। এ নিয়ে চলতি বছর নয় মাস না পেরোতেই ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৭৫। এর মধ্যে ৬৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে। ঢাকার বাইরে মারা গেছেন ৩৪৪ জন। ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এ ভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ছিল ৮৫৩।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট ৯ হাজার ৫২৬ জন চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে ৩ হাজার ২৮৩ ঢাকায় এবং ৬ হাজার ২৪৩ জন ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসা নিচ্ছে।
গতকাল পর্যন্ত ভর্তি রোগীর মধ্যে ঢাকায় ৮২ হাজার ৪৭১ এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫১০ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। ঢাকায় ৭৮ হাজার ৫৫৭ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ১১ হাজার ৯২৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা মূলত বাড়তে শুরু করে গত জুলাইয়ে। চলতি সেপ্টেম্বরে ৭৭ হাজার ১৭৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। জানুয়ারিতে ভর্তি হয়েছিল ৫৬৬ জন। ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬, মার্চে ১১১, এপ্রিলে ১৪৩, মে মাসে ১ হাজার ৩৬, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬, জুলাইয়ে ৪৩ হাজার ৮৫৪ এবং আগস্টে ৭১ হাজার ৯৭৬ জন ভর্তি হন। মৃতদের মধ্যে জানুয়ারিতে ৬, ফেব্রুয়ারিতে ৩, এপ্রিল ও মে মাসে দুজন করে চারজন, জুনে ৩৪, জুলাইয়ে ২০৪, আগস্টে ৩৪২ এবং সেপ্টেম্বরের ২৮ দিনে মারা গেছে ৩৮২ ডেঙ্গু রোগী। মার্চে কোনো রোগী মারা যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশে সরকারিভাবে ডেঙ্গুকে রোগ হিসেবে দেখা হয়। সে বছর আক্রান্ত সাড়ে পাঁচ হাজার ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। ২০০১ সালে আক্রান্ত আড়াই হাজার জনের মধ্যে ৪৪ জন মারা যায়। ২০০২ সালে ছয় হাজার রোগীর মধ্যে ৫৮ জন, ২০০৩ সালে ৪৮৬ জনের মধ্যে ১০, ২০০৪ সালে চার হাজারের মধ্যে ১৩, ২০০৫ সালে এক হাজারের মধ্যে চার, ২০০৬ সালে আক্রান্ত দুই হাজারের মধ্যে ১১ জন মারা যান।
২০০৭-১০ পর্যন্ত চার বছরে আড়াই হাজার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। ২০১১ সালে দেড় হাজারের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়। ২০১২ সালে ৬৭১ জনের মধ্যে এক, ২০১৩ সালে প্রায় দুই হাজারের মধ্যে দুজন মারা যায়। ২০১৪ সালে ৩৭৫ জন আক্রান্ত হলেও বছরটিতে কেউ মারা যায়নি। এরপর প্রতি বছরই রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ২০১৫ সালে তিন হাজারের মধ্যে ছয়, ২০১৬ সালে ছয় হাজার জনের মধ্যে ১৪, ২০১৭ সালে তিন হাজারের মধ্যে আট, ২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে ২৬, ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জনের মধ্যে ১৭৯ জন মারা যায়। ২০২০ সালে দেড় হাজার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়, মারা গেছে চারজন। আর ২০২১ সালে আক্রান্ত হয় সাড়ে ২৮ হাজার, মারা যায় ১০৫ জন। আর ২০২২ সালে ৬১ হাজার রোগীর মধ্যে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।
বিশ্বে ১ হাজার ৭৮০ সালে প্রথম ডেঙ্গু মহামারী দেখা দেয়। এরপর ১৯৫০ সালে থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে এ সংক্রমণ ছড়ায়। পরে ১৯৬৩ সালে কলকাতা ও ১৯৬৪ সালে ঢাকায় সংক্রমণ ঘটায় ডেঙ্গু। সে সময় ডেঙ্গুকে ঢাকা ‘ফিভার’ নামে অভিহিত করা হয়েছিল।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ছয় দেশের অংশগ্রহণে রাজধানীতে হেলথকেয়ার মেলা শুরু

৬টি দেশের ৩০টির অধিক দেশি-বিদেশি হাসপাতাল ও হেলথকেয়ার পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে রাজধানীতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপো-২০২৩। এই মেলা চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এই মেলার উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শারফুদ্দিন আহমেদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন, ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপোর আয়োজক মুরাদ হোসাইন, এমপ্যাথি সলিউশনের (ইন্ডিয়া) ডিরেক্টর দালিপ কুমার চোপড়া, এনএবিএইচের প্রশিক্ষক ডা. শক্তি দত্ত শর্মা, বামরুনগাদ হসপিটাল থাইল্যান্ডের সিবিও রাজিব রাজন, মেদান্তা হাসপাতাল ইন্ডিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নবনীত মালহোত্রা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন বলেন, এক্সপোতে ৮ থেকে ১০টি বৈজ্ঞানিক সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা এই সেমিনারের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের নানা ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ মিলবে। যেহেতু বিশ্বে ভিন্ন দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে, বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। সুযোগ এসেছে দেশের বাইরে থেকেও বাংলাদেশে এসে কম খরচে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কিডনি প্রতিস্থাপন, হৃদরোগ, বন্ধ্যাত্বের সুচিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। অন্যান্য দেশের মানুষ চাইলে বাংলাদেশে এসে কম খরচে চিকিৎসা সেবা নিতে পারে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, অনেকেই এই মেলার উদ্দেশ্য সম্পের্ক জানতে চান। আমি বলতে চাই এই মেলার উদ্দেশ্য বিভিন্ন দেশের হাসপাতাল ও মেডিকেল প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ ও পারস্পরিক প্রযুক্তি বিনিময়ের সুযোগ তৈরি। যার ফলে নিজের প্রয়োজনে জেনে শুনে মানুষ যেমন দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যেতে পারবেন, একইভাবে যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে সেসব চিকিৎসা বাংলাদেশে এসে নেওয়া সুযোগ পাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দুদিনব্যাপী কয়েকটি সেশনে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অংশ গ্রহণে বৈজ্ঞানিক সেমিনার ও চিকিৎসক, মেডিকেল ভ্যালু ট্রাভেল ফ্যাসিলিটেটর, স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকছে।
ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপো-২০২৩ এ বাংলাদেশসহ ভারত, ইরান, তুরস্ক, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ার হাসপাতালসহ ৩০টির বেশি হাসপাতাল ও হেলথকেয়ার পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই মেলা চলবে। মেলাতে দর্শনার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পরিদর্শনের সুযোগ থাকছে।
মেলাতে পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বশেষ প্রযুক্তি, পণ্য এবং পরিষেবা প্রদর্শন করবে। এটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যসেবা/পেশাজিবীদের সঙ্গে বিশ্বের সর্বাধুনিক চিকিৎসা উদ্ভাবন তথ্য আদান-প্রদান, স্বাস্থ্য সেক্টরে পারস্পরিক সহায়তা, নলেজ শেয়ারিং, টেকনোলজি ট্রান্সফারের সুযোগ করে দেবে যা বাংলাদেশ এবং এর বাইরেও স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যত গঠনে সহায়তা করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
একদিনে ডেঙ্গুতে আরও ১৫ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯৪৩ জনের। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ১২৩ জন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে মুঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ১২৩ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৭৪ জন ও ঢাকার বাইরের দুই হাজার ৩৪৯ জন।
মৃত ১৫ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা পাঁচজন ও ঢাকার বাইরের ১০ জন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৯৩ হাজার ৮৮১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮০ হাজার ৪৯০ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ১৩ হাজার ৩৯১ জন।

একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৮২ হাজার ৭৮২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৬ হাজার ২৯২ জন এবং ঢাকার বাইরের এক লাখ ৬ হাজার ৪৯০ জন।
এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদান জরুরি

সম্প্রতি কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে দেশব্যাপী উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ ও মৃত্যু কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে ওষুধের সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে এ খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিএমএ ভবনে ‘হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৪ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। ডব্লিউএইচও এর গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন ২০২৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের হার খুবই কম, মাত্র ৩৮ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২ লক্ষ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেছে, যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ।
কর্মশালায় এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানী লিমিটেড (ইডিসিএল) এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জাকির হোসেন জানান, আগামী অর্থবছরে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনাচরণে পরিবর্তন আনা জরুরি।
উল্লেখ্য, ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত প্রতি ৫ জনে ৪ জনই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পায়না। এক্ষেত্রে সেবার আওতা বাড়ানো হলে ২০৫০ সালের মধ্যে ৭.৬ কোটি মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হবে।
সভায় আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ঢাকা ট্রিবিউন এর নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল বিষয়ক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের এবং প্রজ্ঞার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কর্মসূচির সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা।
অর্থসংবাদ/এমআই