স্বাস্থ্য
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় নতুন মশাল ‘এআই’

বিশ্বের পুরুষ জনসংখ্যার ৭ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছে। এখন আশা করা হচ্ছে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এই সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে।
ড. স্টিফেন ভ্যাসিলেস্কু বলছেন, তিনি এবং তার দল যে এআই সফটওয়্যার তৈরি করেছেন তা মারাত্মকভাবে বন্ধ্যা পুরুষদের অণ্ডকোষ থেকে নেওয়া নমুনায় উচ্চ প্রশিক্ষিত যে কোনো মানুষের চেয়ে হাজার গুণ দ্রুত শুক্রাণু শনাক্ত করতে পারে।
ভ্যাসিলেস্কু বলেন, ‘সংগ্রহ করা নমুনাতে কী দেখা যাচ্ছে মানুষের পক্ষে তা বোঝার আগেই এই এআই প্রোগ্রামটি সম্ভাব্য স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু হাইলাইট করতে পারে।’
ভ্যাসিলেস্কু অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনির (ইউটিএস) একজন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং মেডিকেল সংস্থা নিওজেনিক্স বায়োসায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা।
তিনি এবং তার সহকর্মীরা যে সিস্টেমটি তৈরি করেছেন তার নাম স্পার্মসার্চ। এই সিস্টেমটি এমন পুরুষদের সহায়তা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে— বীর্যপাতের পর যাদের বীর্যে শুক্রাণুর উপস্থিতি থাকে না। এই অবস্থাকে বলা হয় নন-অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়া (এনওএ)। বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত ১০ শতাংশ পুরুষের এ সমস্যা রয়েছে।

এই ক্ষেত্রে সাধারণত অণ্ডকোষের একটি ছোট অংশ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরিয়ে পরীক্ষাগারে নেওয়া হয়। সেখানে একজন ভ্রূণবিশেষজ্ঞ নমুনায় স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু অনুসন্ধান করেন।
ল্যাবে টিস্যুটি বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং একটি মাইক্রোস্কোপের নীচে পরীক্ষা করা হয়। যদি কোনও স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু পাওয়া যায় তবে সেগুলো বের করে ডিম্বাণুতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
ড. ভ্যাসিলেস্কু বলেন, এই প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকজন কর্মীকে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে ক্লান্তি এবং ভুল শুক্রাণু পর্যবেক্ষণের ঝুঁকি রয়েছে।
তিনি ব্যাখ্যা করেন যে- যখন একজন ভ্রূণবিজ্ঞানী মাইক্রোস্কোপের নিচে নমুনায় তাকান, তখন তিনি সেখানে আকাশে ছড়ানো নক্ষত্রের মতো করে অসংখ্য কোষ দেখতে পান।
ভ্যাসিলেস্কু আরও বলেন, এর মধ্যে রক্ত এবং টিস্যু থাকে। পুরো জিনিসটার মধ্যে মাত্র ১০টা শুক্রাণু থাকতে পারে, বাকি লাখ লাখ হয়তো অন্যান্য কোষ থাকতে পারে। এটা অনেকটা খড়ের স্তূপে সুঁই খোঁজার মতো।
তিনি আরও বলেন যে, অন্যদিকে স্পার্মসার্চ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেখান থেকে স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু খুঁজে পেতে পারে। আর সঙ্গে সঙ্গে এর ছবি কম্পিউটারে আপলোড করে দেয়।
এভাবে কমপ্লেক্স টিস্যু নমুনা থেকে স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু খুঁজে পাওয়ার প্রশিক্ষণ দিতে ডা. ভ্যাসিলেস্কু এবং তার টিম এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এই জাতীয় হাজার হাজার ছবি দেখিয়েছে।
সিডনির ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং টিম এক প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলেছে, শুক্রাণু অনুসন্ধানের এই পরীক্ষাটি অভিজ্ঞ যেকোনো ভ্রূণ বিজ্ঞানীর চেয়ে এক হাজার গুণ দ্রুত।
এই স্পার্মসার্চ এআই কোনোভাবেই ভ্রূণবিজ্ঞানীদের প্রতিস্থাপনের জন্য তৈরি করা হয়নি বরং তাদের সহায়তার জন্য তৈরি করা হয়েছে এটি।
ইউনিভার্সিটি অব ডান্ডির প্রজনন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. সারাহ মার্টিন্স দা সিলভা বলেন, শুক্রাণু খুঁজে বের করার এই গতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
‘যদি আপনার কাছে এমন কেউ থাকে যিনি ডিম্বাণু সংগ্রহ করেছেন এবং ইতোমধ্যে সেই ডিম্বাণু নিষিক্ত করা দরকার, তবে সেটা করতে আমাদের হাতে খুব বেশি সময় থাকে না। তাই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করা খুবই উপকারী হবে।’
গত চার দশকে শুক্রাণুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসার পর পুরুষের বন্ধ্যাত্বকে একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পুরুষের উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে দূষণ, ধূমপান, অপুষ্টি, অপর্যাপ্ত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এ সমস্যা থেকে পুরুষকে মুক্তি দিতে কাজ করছেন আরেক বিজ্ঞানী ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের সেন্টার ফর সিস্টেমস মডেলিং অ্যান্ড কোয়ান্টিটেটিভ বায়োমেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ড. মোরিগ গ্যালাগার। নতুন ইমেজিং সফটওয়্যার পদ্ধতি ব্যবহার করে বন্ধ্যাত্বজনিত সমস্যায় আক্রান্ত পুরুষদের শুক্রাণুর কার্যকারিতা ট্র্যাক করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ থেকে শুক্রাণুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো আমাদের বলতে পারে যে শুক্রাণু পরিবেশগত চাপের মধ্যে রয়েছে, মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বা জৈবিক সংকেতের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
এদিকে, বেলফাস্ট-ভিত্তিক ফার্টিলিটি ফার্ম এক্সামেন ‘সিঙ্গেল সেল জেল ইলেক্ট্রোফোরেসিস’ নামে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করছে যার মাধ্যমে শুক্রাণুতে ডিএনএ’র কোনো ক্ষতি থাকলে তা শনাক্ত করা যায়।
অধ্যাপক শিনা লুইস এবং তার দল ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এর উন্নয়নে কাজ করছেন।
কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের প্রজনন মেডিসিনের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং এক্সামিনের সিইও শিনা লুইস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক হলেও মেডিসিনের অগ্রগতি বেশ মন্থর।
উদাহরণস্বরূপ স্পার্মসার্চ বর্তমানে ‘প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট’ পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে ছোট একটি পরীক্ষাও চলেছে যেখানে মাত্র সাত জন রোগী ছিলেন।
অধ্যাপক শিনা বলেন, এখনও হয়তো এসবের কোনো অর্থ নেই। কোনও কিছু প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট পর্যায়ে থাকা থেকে বাণিজ্যিকভাবে পেতে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
‘আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এটি পুরুষদের একটি খুব ছোট গ্রুপকে লক্ষ্য করে এগোচ্ছে, যাদের নন-অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়া রয়েছে। আপনি দুর্দান্ত অনেক কিছু হয়তো করতে পারবেন, তবে এটি কখনই মূলধারায় পরিণত হবে না।’
ড. ভ্যাসিলেস্কু বলেন, এ ধরনের চিকিৎসাতে এটাই শেষ ধাপ। একটি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করা আর চিকিৎসা থামিয়ে দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য হলো এটা।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি ভ্রূণবিজ্ঞানীদের আরও দক্ষ এবং আরও নির্ভুল করতে পারি তবে তারা হয়তো সেই শুক্রাণু খুঁজে পাবেন আগে যা পাওয়া যেত না। এটি একজন পুরুষকে তার জৈবিক সন্তান ধারণের সুযোগ করে দেবে।
ইউটিএস টিম এখন তাদের এআইকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে নিতে চান। কেউ সত্যি সত্যি গর্ভবতী হবেন- এটাই এখন আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য, বলেন ডা. ভ্যাসিলেস্কু।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

স্বাস্থ্য
একদিনে ডেঙ্গুতে আরও ১৫ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯৪৩ জনের। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ১২৩ জন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে মুঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ১২৩ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৭৪ জন ও ঢাকার বাইরের দুই হাজার ৩৪৯ জন।
মৃত ১৫ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা পাঁচজন ও ঢাকার বাইরের ১০ জন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৯৩ হাজার ৮৮১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮০ হাজার ৪৯০ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ১৩ হাজার ৩৯১ জন।

একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৮২ হাজার ৭৮২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৬ হাজার ২৯২ জন এবং ঢাকার বাইরের এক লাখ ৬ হাজার ৪৯০ জন।
এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদান জরুরি

সম্প্রতি কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে দেশব্যাপী উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ ও মৃত্যু কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে ওষুধের সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে এ খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিএমএ ভবনে ‘হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৪ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। ডব্লিউএইচও এর গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন ২০২৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের হার খুবই কম, মাত্র ৩৮ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২ লক্ষ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেছে, যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ।
কর্মশালায় এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানী লিমিটেড (ইডিসিএল) এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জাকির হোসেন জানান, আগামী অর্থবছরে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনাচরণে পরিবর্তন আনা জরুরি।
উল্লেখ্য, ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত প্রতি ৫ জনে ৪ জনই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পায়না। এক্ষেত্রে সেবার আওতা বাড়ানো হলে ২০৫০ সালের মধ্যে ৭.৬ কোটি মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হবে।
সভায় আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ঢাকা ট্রিবিউন এর নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল বিষয়ক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের এবং প্রজ্ঞার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কর্মসূচির সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে একদিনে ২১ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর একদিনে সর্বোচ্চ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু ৮৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ১৫ জন।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া তিন হাজার ১৫ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৫৭ জন। ঢাকার বাইরে ২১৫৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গুতে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১০ জন এবং ঢাকার বাইরের ১১ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৭৬ হাজার ৮১০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৫ হাজার ৮৩৩ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৯৭৭ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭১ হাজার ৪২৬ জন এবং ঢাকার বাইরের ৯৪ হাজার ২৫৪ জন।

এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে একদিনে হাসপাতালে ভর্তি ৩ হাজার, মৃত্যু ৭

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৩ হাজার ২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৪৯ জন এবং ঢাকার ভর্তি হয়েছেন ২১৭৪ জন।
একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত ৮৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০ হাজার ১০২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৮১৪ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ২৮৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৭৪ হাজার ৯৭৬ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৮ হাজার ৮১৯ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৪৭ জন। ঢাকায় ৭০ হাজার ৫৮৪ এবং ঢাকার বাইরে ৯২ হাজার ২৬৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
২০ লাখ স্যালাইন কিনবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

২০ লাখ আইভি ফ্লুইড স্যালাইন ক্রয়ের জন্য অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় হবে ২৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুমোদনের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) এ আদেশ বাস্তবায়ন করবে।
জরুরি প্রয়োজনের কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির ব্যাপকতায় ডেঙ্গু মশার বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ায় সারা দেশের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে সারা দেশে আইভি ফ্লুইডের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। এ পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার স্বার্থে জরুরি প্রয়োজনে আরও ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিএমপি) অনুসরণে ক্রয় করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
কিছুদিন ধরে বিভিন্ন জেলায় স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে নির্দিষ্ট দাম থেকে দুই-তিনগুণ বেশি দরে। কোথাও আবার ৮৭ টাকার স্যালাইনের দাম নেয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এ অবস্থা রাজধানী ঢাকার মধ্যেও দেখা দিয়েছে।

সংকট তুলে ধরেন হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এম এইচ লেলিন চৌধুরী। তিনি বলেন, এখন চাহিদার তুলনায় স্যালাইনের সংকট অনেক বেশি। আমরা কোম্পানিকে ১০০ ব্যাগ স্যালাইনের চাহিদা দিলে ১০ বা ২০ ব্যাগ স্যালাইন পাই। আগে আমরা একজন লোক পাঠিয়ে মিডফোর্ড মার্কেট থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী স্যালাইন নিতে পারতাম। এখন স্যালাইনের খোঁজে তিন চারজনকে মিডফোর্ড মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে পাঠাতে হচ্ছে। স্যালাইনের সর্বোচ্চ দাম ৯০-৯৫ টাকা ছিল, এখন সেই স্যালাইন আমরা ২০০ টাকা প্যাকেট কিনছি।
অর্থসংবাদ/এসএম