অর্থনীতি
বেগুন-বরবটির শতক, টমেটো সবাইকে ছাড়িয়ে

উচ্চ মূল্যস্ফীতির ছোঁয়া থেকে বাঁচতে পারেনি দেশে উৎপাদিত সবজির বাজার। গত কয়েকমাস ধরে সবজির বাজারে যেন আগুন লেগেছে। কোনো সবজিই কেজি প্রতি সর্বনিম্ন দাম ৭০-৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুন ও বরবটির দাম ১০০তে দাঁড়িয়েছে। তবে বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো, যার দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা। সব মিলিয়ে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। ফলে সবজি কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গোল সবুজ বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকায়। তবে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। বরবটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দাম বলতে পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া ঝিঙা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, প্রতি পিস জালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকায়। কাঁচা কলা প্রতি হালি (৪টি) ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বাজারে মূলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৫ টাকায়, এছাড়া আগের আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।
এদিকে কাঁচা বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। রাজধানীর মহাখালী কাঁচা বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, সবজির দামও যদি ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তাহলে আমরা খাব কী? পেঁপে ছাড়া বাজারে সব সবজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুও কিনিতে হয় ৫০ টাকা কেজিতে। এত দাম হলে আমরা সাধারণ ক্রেতারা তো মাছ মাংসের মতো সবজিও কিনতে পারব না। এছাড়া বরবটি, বেগুন, টমেটো তো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। সব মিলিয়ে এমন দাঁড়িয়েছে যে এখন সবজি কিনে খাওয়াও বিলাসিতা হয়ে যাচ্ছে।
সবজির দাম বৃদ্ধি পাওয়া বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, কিছু দিন ধরে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে। আজকের বাজারে বরবটি, বেগুন আর টমেটোর দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা আর বাকিগুলো ৭০ থেকে ৮০ টাকার ঘরে আছে। সবজির দাম বাড়ার মূল কারণ এখন অনেকগুলো সবজির মৌসুম নয় তাই দাম বেশি যাচ্ছে। এছাড়া পরিবহন খরচ, রাস্তা খরচ সব মিলিয়ে আমরা কিছুটা লাভ করে সবজি বিক্রি করছি। যে কারণে ক্রেতা পর্যায়ে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে।

তিনি বলেন, দাম বাড়তি যাওয়ার কারণে আমাদের ব্যবসায়ও অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে যে ক্রেতা দুই কেজি কিনত এখন সেই ক্রেতা কিনছে এক কেজি, অনেকে কিনছে আধা কেজি। ফলে আমাদেরও ব্যবসা কমে গেছে, আগের চেয়ে এখন অনেক কম মাল আনি তবুও সব বিক্রি হয় না। তবে নতুন সবজি ওঠার আগ পর্যন্ত সবজির বাজার এমন বাড়তি যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
ঋণ খেলাপিতে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বাংলাদেশ

খেলাপি ঋণ একটি দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় বাধা সৃষ্টি করে। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে খেলাপি ঋণের হার কমলেও বাংলাদেশে বাড়ছে আশঙ্কাজনকহারে। দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণের হার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশে। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্দশায় থাকা শ্রীলঙ্কা। এমনকি উচ্চ মূল্যস্ফীতির পাকিস্তানও ঋণ খেলাপিতে বাংলাদেশ থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত রোববার খেলাপি ঋণের হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, দেশে খেলাপি ঋণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। জুন শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা এপ্রিল-জুন সময়ে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা বেড়েছে।
বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে মোট ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কায় খেলাপি ঋণের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। পাকিস্তানে তা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।
ভারতে খেলাপি ঋণের হার অনেক কম। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ভারতে খেলাপি ঋণের হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ধারণা হলো, ভারতে আগামী বছর খেলাপি ঋণের হার ৩ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসবে।
বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দেশে খেলাপি ঋণের হিসাব তাদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরে। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার নিয়মিত বাড়ছে। যেমন ২০১৩ সালে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৪ দশমিক ৮ শতাংশ; পরের বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালে তা একলাফে ৯ দশমিক ৪ শতাংশে উঠে যায়।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি দাঁড়ায় ২০১৮ সালে। এরপর কিছুটা কমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, এখন আবার খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে।
ভারতে খেলাপি ঋণের চিত্রও আছে বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে। তাদের হিসাবে, ২০১৭ সালে ভারতের খেলাপি ঋণ ছিল মোট ঋণের ১০ শতাংশ, যা কমতে কমতে ২০২১ সালে সাড়ে ৬ শতাংশে নামে।
বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) পাকিস্তানে খেলাপি ঋণ ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য দিক হলো, দুর্দশার মধ্যেও দেশটিতে খেলাপি ঋণ কমেছে। আগের বছরের একই সময়ে পাকিস্তানে খেলাপি ঋণ ছিল ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, দেশটিতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, তবে হার এখনো কম। সেটা ৩ শতাংশের আশপাশে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে মালদ্বীপের খেলাপি ঋণ ছিল ৬ শতাংশের কম। ভুটানের ক্ষেত্রে এই হার ছিল ৮ শতাংশের নিচে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দামের কারসাজি বন্ধে আলু আমদানির সুপারিশ

ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে দেশে হুট করে বাড়ছে নির্দিষ্ট পণ্যের দাম। পেঁয়াজ, চিনি, মুরগি, ডিমের পরে বর্তমানে আলুর বাজারে অস্থিরতা বিরাজমান। তাতে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের নানান সতর্কতা এবং অভিযান পরিচালনা অনেক সময় কাজে আসেনি। ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়ে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাতে পেঁয়াজের দামে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। এবার লাগাম ছাড়া আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সীমিত পরিসরে আলু আমদানির সুপারিশ করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর।
সম্প্রতি আলু নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবে দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনো কোনো ডিম আমদানি হয়নি। এখন আলু আমদানির সুপারিশের ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কী পদক্ষেপ নেয়, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন আমদানিকারকেরা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, বর্তমান সংকট মোকাবিলায় সীমিত আকারে আলুর অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণনব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রকৃত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া হিমাগার, ব্যাপারী, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যারা অস্থিরতা তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে আরও যেসব সুপারিশ করা হয়েছে তার মধ্যে আছে- কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কৃষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া, কৃষকদের জন্য শস্য বিমা চালু, কৃষিপণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজারে নজরদারি বাড়ানো, টেকসই বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রান্তিক কৃষকদের ন্যায্যমূল্যে বীজ আলু, সার ও কীটনাশকপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার মতো বিষয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ভোক্তার প্রতিবেদনে আমদানির সুপারিশের পাশাপাশি কিছু পর্যবেক্ষণও তুলে ধরা হয়েছে। এই পর্যবেক্ষণ তৈরি হয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন বাজার ও হিমাগার অভিযানের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। বিশেষ করে আলু উৎপাদনকারী বড় চার জেলা মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর ও নীলফামারীতে হিমাগার পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, কৃষিঋণ প্রকৃত কৃষকেরা পাচ্ছেন না। হিমাগারমালিকেরা এই সুবিধা নিচ্ছেন কৃষকদের নামে। পরে তারা এজেন্টদের মাধ্যমে আলু উৎপাদন মৌসুমে দাদন প্রথা চালু করেন। এর মাধ্যমে হিমাগার মালিকেরা কৃষকদের স্বল্প মূল্যে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করেন। আর এজেন্টরা প্রাপ্ত অর্থ ব্যবহার করে কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে আলু কিনে তা হিমাগারে সংরক্ষণ করে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বনানীতে হস্ত ও কুটির শিল্পের মেলা অনুষ্ঠিত

রাজধানীর বনানীতে চাঁদনী স্টুডিওতে ‘মেলা বিফোর সেপ্টেম্বর এন্ডস’ নামে একটি হস্ত ও কুটির শিল্পের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই মেলা চলে।
মেলার আয়োজন করে ‘চাঁদনী স্টুডিও’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। যার প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি ও শিল্পী নকশাকার পাপিয়া সারওয়ার দিঠি এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি, বংশীবাদক ও ক্যালিগ্রাফার নাজেম আনোয়ার।
স্থপতি পাপিয়া সারওয়ার নিজেও একজন উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, কাজের সূত্রে আরও অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়; যারা অনেক রুচিশীল, অনুপম, বিরল পণ্য তৈরি করেন। এই সৃজনশীল মানুষগুলোকে একটি প্ল্যাটফর্ম করে দেওয়ার উদ্দেশে তাদের এই আয়োজন।
টানা দুদিন চলা এই মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ফারজানা আহমেদ উর্মির ‘কাঁচপোকা’, তারান্নুম নিবিড়ের ‘উড়ুক্কু’, লায়লা আহমেদের ‘মায়াবী বনসাই’, পাপিয়া সারওয়ার দিঠির ‘বানাই’, নাজেম আনোয়ারের ‘নাজেম আনোয়ার ক্যালিগ্রাফি’, মোহাম্মদ শাহাদাতের ‘ফুটপাত’, চিত্রশিল্পী শামা শাইওম-রুহানি-জিহানের ‘অয়ময়’, সৈকতের ‘ইন্টারনাল হাব’, তন্ময়ের ‘সতত’, তামিমের ‘রেইন-সে-আর্য’, ফেরদৌস স্বপ্নিলের ‘পরিভ্রমণ’, এলমা-বাঁধন-শশীর ‘চিত্রলিপি’, নাবিলা তাবাস্সুমের ‘গোড়া’, হাফসা কেয়ার ‘চারু-অলংকার’, শিমলা হকের ‘হোল্লা’ এবং নওশীনের ‘মুনলাইট’।
এ ছাড়া মেলায় খাবারের আয়োজনও ছিল। খন্দকার দিল আফরোজের ‘খোনদাস কিচেন’ এবং আসিফের ‘গ্রাম-চা’ এবং জান্নাতুল ফেরদৌস মিষ্টির ‘বোন-সিস্টার, জুস কর্নার’।

মেলায় শিল্পী, ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী, বিদেশি পর্যটক এবং সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সেপ্টেম্বরে কমেছে রপ্তানি আয়

ডলার সংকটের ভরাডুবিতে জোগানের উৎসে সুখবর পাচ্ছে না বাংলাদেশ। সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয়ের সাথে রপ্তানি আয়ও কমেছে। সেপ্টেম্বরে দেশে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩১ কোটি মার্কিন ডলার। যেখানে আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় কমেছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এছাড়া চলতি অর্থবছরের তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রপ্তানি আয় ছিল সেপ্টেম্বরে।
বিদায়ী মাসে তৈরি পোশাক ছাড়া বড় সব খাতেই রপ্তানি কমে গেছে। তবে এ আয় গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল পণ্য রপ্তানির এ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এ তথ্যে দেখা গেছে, জুলাই ও আগস্ট মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল যথাক্রমে ৪৫৯ ও ৪৭৮ কোটি ডলারের। সেপ্টেম্বরে তা কমে ৪৩১ কোটি ডলার হয়েছে। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় গত মাসে (সেপ্টেম্বর) পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে। এর মধ্যে জুলাইয়ের তুলনায় কমেছে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ আর গত আগস্টের তুলনায় কমেছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
সার্বিকভাবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রপ্তানি আয় ছিল ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫ দশমিক ২৬ শতাংশ।
মূলত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি থাকায় চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, বাইসাইকেলসহ প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ডলার সংকটে ভুগছে। পণ্য রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি ডলার আয়ের অন্যতম উৎস হচ্ছে প্রবাসী আয়। প্রকট ডলার-সংকটের সময় প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে উত্থান-পতন অর্থনীতির জন্য দুশ্চিন্তার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট পণ্য রপ্তানির ৮৫ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক খাতের মধ্যে ৬৭৬ কোটি ডলারের নিট পোশাক ও ৪৮৫ কোটি ডলারের ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ সময়ে নিট পোশাকে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। ওভেন পোশাকের প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাকের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ২৬ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। এছাড়া প্রথম প্রান্তিকে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ৯ দশমিক ৬৭, হোম টেক্সটাইলে ৪৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ, চামড়াবিহীন জুতায় ১ শতাংশ ও হিমায়িত খাদ্যের রপ্তানি ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ কমেছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রেকর্ড গড়েছে খেলাপি ঋণ

দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ নিয়মিত রেকর্ড গড়েই চলেছে। চলতি বছরের জুন শেষে রেকর্ড খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এতে গত তিন মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া বছরের ব্যবধানে খেলাপি ৩০ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণ কম দেখাতে পুনঃতফসিলের নীতি উদার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন চাইলে নিজেরাই যেকোনো ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারছে। নীতি ছাড়ের এ সুযোগে ব্যাংকগুলোও ঋণ পুনঃতফসিলের রেকর্ডও গড়েছে। শুধু ২০২২ সালেই ব্যাংকগুলোর পুনঃতফসিলকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। গণহারে ঋণ পুনঃতফসিল অব্যাহত রয়েছে চলতি বছরেও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে দেশে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশই এখন খেলাপি, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের তিনগুণের বেশি। কারণ, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। অর্থাৎ ছয় মাসে খেলাপি বেড়েছে ৩৫ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। যদিও এক বছরের ব্যবধানে তা কিছুটা কম বেড়েছে। কারণ সাধারণত ডিসেম্বরে প্রভিশন ঘাটতি কমাতে ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখায়।

২০২২ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৩০ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদ/এমআই