জাতীয়
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রত্যাশা মিয়ানমার জেনারেলের

মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে দেশটির স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং-এর কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন।
পরিচয়পত্র পেশকালে রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের যথাসম্ভব দ্রুত, নিরাপদ, টেকসই ও স্বেচ্ছাধীন প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মিয়ানমারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এ বিষয়ে তার সরকারের আন্তরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রকাশ করে শিগগিরই প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) পরিচয়পত্র পেশকালে মিয়ানমারের রাষ্ট্রাচার বিভাগের প্রতিনিধিরা রাস্ট্রদূতকে দূতাবাসের প্রতিনিধিসহ হোটেল থেকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা যোগে রাষ্ট্রপতি ভবনে নিয়ে যান। সেখানে রাষ্ট্রাচার মহাপরিচালক তাকে স্বাগত জানান। এরপর রাষ্ট্রপতি ভবনের নতুন নির্মিত ক্রেডেনশিয়াল হলে রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন। পরিচয়পত্র গ্রহণ করে চেয়ারম্যান বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
আলোচনার শুরুতেই স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মিন অং হ্লাইং রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেনকে অভিনন্দন জানান এবং উপস্থিত মিয়ানমার সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি একজন দক্ষ ও পেশাদার কূটনীতিককে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ করার জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আলোচনাকালে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের প্রত্যাবাসন, বাণিজ্য সম্পর্ক, আকাশ, স্থল ও নৌ-পথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, মানব পাচার, মাদক পাচার ও অস্ত্র চোরাচালানসহ প্রথাগত ও অপ্রথাগত নিরাপত্তা-সহযোগিতা, সামরিক সহযোগিতা এবং জনযোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে মতবিনিময় হয়।
বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে অভিহিত করে রাষ্ট্রদূত যথাসম্ভব দ্রুত, নিরাপদ, টেকসই ও স্বেচ্ছাধীন প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
চেয়ারম্যান এ বিষয়ে তার সরকারের আন্তরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রকাশ করে শিগগিরই প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি দুই প্রতিবেশী দেশের অধিকতর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে জোরালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং আন্তঃদেশীয় সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। চেয়ারম্যান জনস্বাস্থ্য কূটনীতিতে রাষ্ট্রদূতের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে এ বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত তার পরিচয়পত্র গ্রহণ করার জন্য চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান। তিনি উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের লক্ষ্যে এবং একে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তার সহযোগিতা কামনা করেন।
অত্যন্ত আন্তরিক ও উষ্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত প্রায় ৪৫ মিনিট স্থায়ী এ আলোচনার শেষে রাষ্ট্রদূত স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল চেয়ারম্যানের শান্তি, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করেন। চেয়ারম্যান মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূতের কর্ম-মেয়াদের সাফল্য কামনা করেন এবং তার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান শোয়ে, স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের যুগ্ম-সচিব লে. জেনারেল ই এন উ, দূতাবাসের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) এবং ডিফেন্স অ্যাটাশে উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে

দেশে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা প্রায় এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এছাড়া সৌরশক্তি নিয়ে পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে পারলে সোলার প্রকল্পের কার্যকর বিকাশ সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সের নবম স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নসরুল হামিদ বলেন, সৌরশক্তিকে সারা বিশ্বেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বাংলাদেশেও সৌরশক্তির বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা প্রায় এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। যার মধ্যে সোলার পার্ক থেকে ৪৬১ মেগাওয়াট এবং সোলার রুফটপ থেকে প্রায় ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এক হাজার ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার পার্ক নির্মাণাধীন। এছাড়া নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্পগুলোর কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। সঠিক নীতি ও প্রবিধান দ্বারা সৌরশক্তিতে বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করা গেলে সৌর প্রকল্পগুলোর সম্প্রসারণ দ্রুত সম্ভব।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সৌরশক্তি বিকাশে ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সকে (আইএসএ) উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রবর্তন ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কেন্দ্রবিন্দু হতে হবে। দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি ও সদস্যদের চাহিদা বিবেচনা করে কর্মসূচি গ্রহণ করলে আইএসএ সৌর বিদ্যুৎ প্রসারে কার্যকরী অবদান রাখতে পারবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারতের বিদ্যুৎ এবং নতুন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী আর কে সিং। এতে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন- ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আইএসএর মহাপরিচালক ড. অজয় মাথুর এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জিএসপি সুবিধা পেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়বে রপ্তানি আয়

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে জিএসপি সুবিধা পায় না বাংলাদেশ। ফলে ১৫ শতাংশ শুল্ক কর দিয়ে পোশাক পণ্য রপ্তানি করতে হয়। কিন্তু পোশাক খাত যদি শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা পেত, তবে আরও ৪০০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব হতো।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ-মার্কিন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ’ বিষয়ক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এই তথ্য জানান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বাজারে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত সুবিধায় তুলা রপ্তানি করে। অথচ এই তুলার তৈরি পোশাক রপ্তানিতে জিএসপি সুবিধা পায় না। অর্থাৎ ১৫ শতাংশ শুল্ক কর দিয়ে পোশাক পণ্য রপ্তানি করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি জিএসপি সুবিধা দেয় তবে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য অতিরিক্ত রপ্তানি হবে ৪০০ মিলিয়ন থেকে ৮০০ মিলিয়ন ডলার। তাতে আগামী ৫ থেকে ৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বাজারে ৩ বিলিয়ন তুলা রপ্তানি করতে পারবে।
এতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বর্তমানে ১০ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশ রপ্তানি করছে। তার বিপরীতে ৩ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ পণ্য আমদানি করছে। এটা আরও বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানিতে জিএসপি স্কিম হলো-বাংলাদেশ সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত সুবিধায় (অর্থাৎ ১৫ শতাংশ সুবিধা) যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে সুতা আমদানি করে। গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় পোশাক সরবরাহকারী এবং সরকার যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পোশাকের উপর ১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ শুল্ক মওকুফের অনুমতি জন্য আলোচনা করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার তা দিচ্ছে না।

পিআরআই গবেষণা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশেরও ফাইবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত কারণ বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় ৯০ মিলিয়ন বেল তুলার দুই শতাংশেরও কম উৎপাদন করে না এবং প্রায় পুরো চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে ফাইবারের জন্য একটি ভালো উৎস হয়ে উঠছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক এবং বিশ্বব্যাপী বৃহৎ আয়তনের এবং কম মূল্যের পোশাকের জন্য তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদন কেন্দ্র।
বাংলাদেশের জন্য জিএসপি মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, তুলা জিএসপি স্কিম উভয় দেশের জন্য একটি জয়ী পরিস্থিতি হবে কারণ স্থানীয় মিলাররা মোট ৯টির মধ্যে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ তুলা আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়েক মিলিয়ন বেল প্রয়োজনীয় তুলা আমদানি করা হয়।
স্থানীয় সরবরাহকারীরা এক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট পোশাক আমদানির ৯ দশমিক ৭ শতাংশ চাহিদা মেটাতে পারে বলে মার্কিন বাজার ঘুরে দেখার অনেক সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ভারত থেকে ২০ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১১ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ৩ শতাংশ তুলা আমদানি করে।
তিনি বলেন, জো বাইডেন প্রশাসনকে ২০০৫ সালে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন অনুসরণ করা উচিত যেখানে উন্নত দেশগুলো ১০০ শতাংশ পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছিল, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৯৭ শতাংশ-এ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, তুলা থেকে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমবে না যদিও তুলাবিহীন ফাইবার তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা এবং সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন’ উদ্বোধন

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের একটি সাইড ইভেন্টে ‘ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন’ উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এটির উদ্বোধন করেন তিনি।
ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন এর মাধ্যমে ‘ডিজিটাল বৈষম্যমুক্ত বিশ্বের রূপকল্প’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও এটুআই-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়। গাম্বিয়া, উগান্ডা, ঘানা, সোমালিয়া, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাতিসংঘ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং এটুআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ই-কোয়ালিটি সেন্টারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সাউথ-সাউথ সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিগত বিভাজন দূর করা। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিষ্ঠিত এই সেন্টারটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার, গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্বের দেশগুলোর মাঝে প্রযুক্তিগত পার্থক্য দূরীকরণে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি হস্তান্তর, গবেষণা এবং অর্থনৈতিক সহায়তার মাধ্যমে সমতামূলক ডিজিটাল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যবস্থার উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের যাত্রার বিষয়টি তুলে ধরেন। উন্নয়নশীল দেশে প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা, দেশসমূহের মধ্যে সহযোগিতা, সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এবং ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণের ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইসিটি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি অনুবিভাগের মাধ্যমে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিতকরণ ও প্রয়োজনীয় উদ্ভাবনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল ভিশন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ই-কোয়ালিটি সেন্টারের কারিগরি ও ব্যবহারিক নানা দিক উপস্থাপন করা হয়। উপস্থিত বিভিন্ন দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এই উদ্যোগের ব্যাপারে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। তারা প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক বণ্টন, উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহের মধ্যে সহযোগিতা এবং নতুন ডিজিটাল বাস্তবতার চ্যালেঞ্জসমূহের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ লক্ষ্যে ই-কোয়ালিটি সেন্টার কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এই অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল আইসিটি ইনোভেশন ফ্যাসিলিটির বিজয়ী প্রকল্পসমূহকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুরষ্কার বিতরণ করেন।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের অংশগ্রহণে আরো একটি অনলাইন সেশন আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইসিটি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মুনতাসির মামুন এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা সেশনটিতে অংশগ্রহণ করেন। দেশ ও বিদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্যদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সাইড ইভেন্ট এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সাফল্যের সাথে সমাপ্ত হয়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
তিন দিনের সফরে পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আগামী বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তিন দিনের সফরে নিজ শহর পাবনা যাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জয়নাল আবেদীন বলেন, রাষ্ট্রপতি বুধবার বিকালে তিন দিনের সফরে পাবনা যাবেন। তিনি সেখানে একটি সমাবেশে ভাষণ দেবেন এবং জেলার বিভিন্ন পেশাজীবী ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে গত ২৪ এপ্রিল শপথ নেয়ার পর এটি হবে পাবনায় তার দ্বিতীয় সফর। রাষ্ট্রপ্রধান জেলার সাথিয়া উপজেলায় নৌকাবাইচ শুরুর আগে সমাবেশে ভাষণ দেবেন। তিনি পাবনা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি জেনারেল হাসপাতালের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ছাত্রনেতা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের আগমনকে কেন্দ্র করে পাবনা শহর ও আশপাশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এ উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসন।
রাষ্ট্রপতিকে তার পৈতৃক বাড়িতে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান

বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে বিশেষ করে মৎস্য খাতে সহযোগিতা-বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপান। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ জাপান সফর, বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন প্রকল্পে জাপানের বিনিয়োগ, উভয় দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপান যে ভূমিকা পালন করছে তা নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের অনন্য দৃষ্টান্ত। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা আমরা আরও সামনে এগিয়ে নিতে পারি। দু’দেশের জনগণ এবং উভয় দেশের সরকারের মধ্যে বিদ্যমান বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা আগামী বছরগুলোতে আরও শক্তিশালী হবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘ বন্ধুত্বের ইতিহাস আছে। বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে বিশেষ করে মৎস্য খাতে জাপান সহযোগিতা দিতে আগ্রহী। এ বিষয়ে দু’দেশের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে যৌথ পরামর্শ সভা হতে পারে। দু’দেশের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় সহজেই এক দেশে অন্য দেশে সহজেই পণ্য পরিবহন সম্ভব। তিনি বাংলাদেশে খাদ্য পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী। ভবিষ্যতে জাপান-বাংলাদেশ দু’দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জাপানের বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। যার মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ সময় বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিজাত পণ্যের বহুমুখীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনে জাপানী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে বলে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন মন্ত্রী।

এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মো. তোফাজ্জেল হোসেন, যুগ্ম সচিব অন্দ্রিয় দ্রং, নীলুফা আক্তার ও ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের তৃতীয় সচিব শিমমুরা কাৎসুমি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।