অর্থনীতি
টাকা জমা রেখে সর্বোচ্চ সুদ পান সরকারি কর্মচারীরা

সরকারি কর্মচারীদের সাধারণ ভবিষ্য তহবিল (জিপিএফ) ও প্রদেয় ভবিষ্য তহবিলে (সিপিএফ) টাকা জমা রাখার বিপরীতে সুদের হার আবার ১১ থেকে ১৩ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে ৩ আগস্ট রোববার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জিপিএফ মুনাফার হার ছক আকারে স্লাব অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মোট তিনটি স্লাব রাখা হয়েছে।
এই স্লাব অনুযায়ী, ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা রাখলে ১৩ শতাংশ হারে মুনাফা মিলবে। ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ জমা রাখলে মুনাফা পাওয়া যাবে ১২ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ ১ টাকা বা তার বেশি জমা রাখলে মুনাফা পাওয়া যাবে ১১ শতাংশ হারে।
এতে সিপিএফ এর বিষয়ে বলা হয়েছে, সব সিপিএফভুক্ত প্রতিষ্ঠানের (স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, করপোরেশন ইত্যাদি) আর্থিক সংগতি একরকম না হওয়ায় প্রতিষ্ঠান/সংস্থা তাদের নিজস্ব আর্থিক বিধিবিধান ও আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী, ছকে উল্লেখিত স্লাবভিত্তিক হারকে সর্বোচ্চ হার বিবেচনায় নিয়ে সিপিএফ -এ জমা করা আমানতের উপর হ্রাসকৃত হারে মুনাফা নির্ধারণ করতে পারবে।
এদিকে, বর্তমানে দেশে চার প্রকারের সঞ্চয়পত্র চালু রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, পরিবার সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র।

১৮ ও তদুর্ধ্ব বয়সের যে কোনো বাংলাদেশি মহিলা, শারীরিক প্রতিবন্ধী পুরুষ ও মহিলা এবং ৬৫ বছর ও তার বেশি যে কোনো বাংলাদেশি পুরুষ ও মহিলা পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। এই সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে সাড়ে ৯ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে সাড়ে ১০ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়।
পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়।
সকল শ্রেণি ও পেশার বাংলাদেশি নাগরিক এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ (অংশ-২) এর বিধি ৪৯-এর উপ-বিধি (২) এ সংজ্ঞায়িত স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল এবং ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ এর ১৯ নং) অনুযায়ী পরিচালিত ভবিষ্য তহবিলও বিনিয়োগ করতে পারবে।
পাশাপাশি আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর ৬ষ্ঠ তফসিল এর পার্ট এ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী, মৎস্য খামার, হাঁস-মুরগির খামার, পেলিটেড পোল্ট্রি ফিডস উৎপাদন, বীজ উৎপাদন, স্থানীয় উৎপাদিত বীজ বিপণন, গবাদি পশুর খামার, দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার, ব্যাঙ উৎপাদন খামার, উদ্যান খামার প্রকল্প, রেশম গুটিপোকা পালনের খামার, ছত্রাক উৎপাদন এবং ফল ও লতাপাতার চাষ হতে অর্জিত আয়-যা সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনার কর্তৃক প্রত্যয়ন করে এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা যাবে।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে ১০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে সাড়ে ১০ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়।
সকল শ্রেণি ও পেশার বাংলাদেশি নাগরিক এবং অটিস্টিকদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্য যে কোনো অটিস্টিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান (যাদের সঞ্চয়পত্রের মুনাফা অটিস্টিকদের সহায়তায় অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে) এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারবে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়।
এই সঞ্চয়পত্র অবসরভোগী সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপত, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী, সন্তানরা কিনতে পারেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
ঢাকায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট সামিট শুরু

ঢাকায় প্রথম বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট সামিট-২০২৩ এবং ১০ম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয়।
আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ মেলা আগামী শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত চলবে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলে ছাত্রছাত্রীদের কোনও প্রবেশমূল্য লাগবে না। তবে প্রবেশ টিকিটের বিপরীতে সবার জন্য রয়েছে র্যাফেল ড্র এবং এয়ারলাইন্স টিকিটসহ বেড়ানোর জন্য আকর্ষণীয় গিফট ভাউচার ও পুরস্কার। মেলার এ বছরের থিম ‘কানেক্টিং রিজিওনাল ট্যুরিজম’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলি, সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার প্রমুখ।
গত নয় বছরে এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার এ অঞ্চলের ভ্রমণপিপাসু মানুষ, শিল্প ও পর্যটন পেশাদারদের একত্রিত হওয়ার জন্য একটি প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। মেলার পাশাপাশি স্থানীয় পর্যটনের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট সামিটে (বিটিডিএস) নানান সেমিনার এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, নেপাল, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম এবং দুবাইসহ একাধিক দেশের ১৫০টি পর্যটন সংস্থা এতে অংশগ্রহণ করেছে।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুই মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৪ হাজার ৮৭ কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরে প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে ৪ হাজার ৮৭ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। ৫০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বড় রাজস্ব আদায়ের পেছনে ছুটতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রথম মাসের রাজস্ব ঘাটতি ছিল কোটি ১৮০০ কোটি টাকার বেশি। যা এখন দ্বিগুণ হয়েছে। এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব এসেছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে। যদিও ভ্যাট কিংবা আয়করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
জুলাই ও আগস্টে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৮৫ কোটি ১ লাখ টাকা। যেখানে আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ হলেও পিছিয়ে আছে ১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা।
একই সময়ে জুলাই ও আগস্টে ২ হাজার ৯৫৮ কোটি ১৬ লাখ টাকার আয়কর ও ভ্রমণ কর কম আদায় হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৫৯ কোটি টাকা, আর আদায় হয়েছে ১২ হাজার ১০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

ডলার সংকটের মাঝেও আমদানি ও রপ্তানি থেকে শুল্ক আদায় তুলনামূলক বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ১৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ১৯২ কোটি ১২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব এসেছে এ খাতে।
চলতি অর্থবছর এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে মূসক থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা, আয়কর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ও আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কমেছে বৈদেশিক অর্থছাড়, বেড়েছে ঋণ পরিশোধ

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই মাসে সরকার বৈদেশিক অর্থছাড় পেয়েছে ৪০৫ মিলিয়ন ডলার। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড় মিলেছিল ৪৮৮ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বৈদেশিক অর্থছাড় কমেছে প্রায় ১৯ শতাংশ। তবে অর্থছাড় কমলেও সরকারের ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৩৪ শতাংশের বেশি।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে সরকারি ঋণের সর্বশেষ চিত্র প্রকাশ করা হয়। যেখানে অর্থছাড় হ্রাসের বিষয়টি উঠে এসেছে। এর আগে এ বছরের মার্চ মাস থেকে ওয়েবসাইটে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে মাসিক আপডেট প্রকাশ বন্ধ রেখেছিল ইআরডি।
ইআরডির তথ্য মতে, জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ২৫১ মিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করেছে জাপান। ৭০ মিলিয়ন ডলার ছাড় করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এডিবি। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিশ্বব্যাংক থেকে এসেছে ৫৭ মিলিয়ন ডলার। তবে চীন এবং রাশিয়া থেকে কোনো অর্থছাড় কিংবা প্রতিশ্রুতি মেলেনি। যদিও ভারত থেকে ছাড় হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্থছাড় কমলেও সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে। এ বছরের জুলাই মাসে সরকার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে ২৫৩ মিলিয়ন ডলার। যেখানে সুদের পরিমাণ ছিল ১০৬ মিলিয়ন ডলার এবং আসল ছিল ১৪৬ মিলিয়ন ডলার। যদিও গত বছর একই সময়ে সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ১৭৯ মিলিয়ন ডলার। টাকার অংকে এ বছর পরিশোধ করা হয়েছে ২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। গত বছর এ পরিমাণ ছিল একহাজার ৬৮০ কোটি টাকা।
আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে নতুন কোনো ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। যদিও ৫ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার প্রকল্প অনুদানের অঙ্গীকার পাওয়া গেছে। ৩ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলার প্রকল্প অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমেরিকা এবং জাপান। আর জাতিসংঘ থেকে ২ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলারের অনুদানের প্রতিশ্রুতি এসেছে। এ সময়ে এডিবি, বিশ্বব্যাংক এবং ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকেও কোনো ঋণের প্রতিশ্রুতি আসেনি।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিদের কঠোর হুঁশিয়ারি

সম্প্রতি সময়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পর্ষদের চাপে পদত্যাগ করেন। এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় ব্যাংক পাড়ায়। প্রধান নির্বাহীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক ধরনের আতঙ্ক। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিদের ‘দ্বন্দ্ব’ বন্ধ করে কর্পোরেট গর্ভনেন্স মেনে চলার জন্য কড়া বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুল রউফ তালুকদার। একই সঙ্গে ডলার কারসাজি রোধে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন গভর্নর।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর এ তাগিদ দেন। বৈঠকে বিএবি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনজন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে এমডিদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব বন্ধ করা, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি মূল্যে ডলার কেনাবেচা না করা, মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও ঋণপত্রের (এলসি) মাধ্যমে ডলার পাচারসহ ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট গর্ভনেন্সের যাবতীয় নীতিমালা মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় ডলার কারসাজি রোধে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের কড়া বার্তা দেন গভর্নর।
বৈঠক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আমন্ত্রণেই বিএবির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। এটা পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক। ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বর্তমান দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, মূল্যস্ফীতি চাপ, রিজার্ভ পরিস্থিতি, ডলার, এক্সচেঞ্জ রেট এবং আমদানি রপ্তানি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে; এগুলো তাদের জানানো হয়েছে। পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিএবির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
গভর্নর ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট গভর্নেন্স মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, দেখা যাচ্ছে বাফেদার বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে গিয়ে অনেকে ডলার কেনাবেচা করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না। এমডিদের সঙ্গে চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব লাগছে। বৈঠকে এসব বিষয়গুলো সমাধানে কর্পোরেট গভর্নেন্স মানতে বলা হয়েছে।

ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করায় বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধান দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডলার কারসাজিতে অভিযুক্তদের কি শাস্তি দেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা আছে।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী, এই অপরাধে কমপক্ষে ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। যদি আইনের একই ধারার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রথম দিনের পর প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত এক হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা যায়।
ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করায় বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত সোমবার চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধানকে জরিমানা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ট্রেজারি বিভাগ ব্যাংকের টাকা ও ডলারের চাহিদা-জোগানের বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে। কোনো কোনো ব্যাংকে ট্রেজারি বিভাগের প্রধান পদে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাও রয়েছেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পদ্মা সেতুর টোল আদায় হাজার কোটি টাকা ছাড়ালো

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর দুই মাস ২৫ দিনের মাথায় টোল আদায় এক হাজার কোটি টাকা ছাড়ালো। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পদ্মা সেতুর সাইট অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পদ্মা সেতুর অতিরিক্ত পরিচালক মো. আমিরুল হায়দার চৌধুরী জানান, যান চলাচলের দিন থেকে আজ বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মাওয়া ও জাজিরার দুই টোল প্লাজায় ৭২ লাখ ৯৬ হাজার ৬২২টি গাড়ি সেতু অতিক্রম করেছে। এতে এখন পর্যন্ত এক হাজার কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার ৬০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৫ জুন বহুল কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর হতে দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা ও সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
অর্থসংবাদ/এসএম