আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে বেকারত্বের হার

চলতি বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব বেড়ে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে মজুরি বৃদ্ধির কারণে শ্রমবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মী চাহিদা কমে গেলেও স্বাস্থ্যসেবা, রেস্তোরাঁ ও হোটেলের মতো খাতগুলোয় এখনো চাহিদা ব্যাপক। শ্রমবাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ফেডারেল রিজার্ভ আপাতত সুদহার বাড়াবে না বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। খবর রয়টার্স।
মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্টে ৭ লাখ ৩৬ হাজার ব্যক্তি মার্কিন শ্রমবাজারে প্রবেশ করেছে। অংশগ্রহণের এ হার সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থনৈতিক মন্থরতার কারণে মানুষ নতুন করে চাকরির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। তবে অর্থনীতিতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সংখ্যা জুন ও জুলাইয়ের তুলনায় ১ লাখ ১০ হাজার কম। তার প্রধান কারণ ছিল নতুন চাকরি তৈরিতে সীমাবদ্ধতা। চাহিদা কমিয়ে আনার জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যার পরিণতি হিসেবে শ্রমবাজারে শিথিলতা দেখা দেয়।
নন-ফার্ম খাতে আগস্টে নতুন নিয়োগ হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার। জুলাইয়ে যার সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫৭ হাজার। গত তিন মাসে চাকরি বৃদ্ধি ছিল গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার। তার আগের তিন মাসে চাকরি বৃদ্ধি ছিল গড়ে ২ লাখ ৩৮ হাজার। রয়টার্সের অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসে দাবি করা হয়েছিল, নতুন চাকরি বাড়বে ১ লাখ ৭০ হাজার। প্রতি মাসে ১ লাখ লোকের কর্মসংস্থান দেশটির শ্রমবাজারকে গতিশীল রাখতে জরুরি বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
শিল্প খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছিল গত সাত মাসে সর্বোচ্চ। হলিউডে অভিনেতা ও অডিও শিল্পীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই চলতি বছরে ১৭ হাজার কর্মসংস্থান কমেছে। ট্রাক পরিবহন প্রতিষ্ঠান ইয়েলোর দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাকরি হারায় ৩৭ হাজার। এককালীন চাকরি হারানোর এ পরিসংখ্যান বাদ দিলে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান বাড়ে ২ লাখ ৪১ হাজার। বিনিয়োগপ্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরকের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিক রাইডার বলেন, ‘শ্রমবাজারের পরিস্থিতি এখনো আমাদের প্রত্যাশিত মাত্রার মধ্যে আসেনি। তবে এতটুকু আন্দাজ করা যায়, স্বাভাবিক হতে যাচ্ছে পরিস্থিতি।’
কিছু ক্ষেত্রে কর্মী চাহিদা কমে গেছে, এ কথা সত্য। তবে স্বাস্থ্যসেবা, রেস্তোরাঁ, বার ও হোটেলের মতো পরিষেবা খাতগুলো এখনো কর্মী খোঁজার জন্য হন্যে হয়ে আছে। আগস্টের কর্মসংস্থান বেড়েছে মূলত স্বাস্থ্যসেবা খাতের চাহিদার কারণে। মাসটিতে ৭১ হাজার নতুন কর্মী যুক্ত হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা, হাসপাতাল, নার্সিং ও আবাসিক চিকিৎসা বাবদ তৈরি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান।

অবকাশযাপন ও বিনোদনের ক্ষেত্রে নতুন নিয়োগের সংখ্যা ৪০ হাজার। শিল্প খাতে নতুন কর্মসংস্থান এখনো মহামারী-পূর্ব পরিস্থিতির তুলনায় কম। নির্মাণ খাতে নতুন চাকরি যুক্ত হয়েছে ২২ হাজার জন। অন্যদিকে শিল্পোৎপাদন খাতে নতুন যুক্ত কর্মসংস্থান ১৬ হাজার। পেশাজীবী ও ব্যবসা খাতে চাকরি বেড়েছে ১৯ হাজার।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
সুদহার অপরিবর্তিত রাখলো ফেডারেল রিজার্ভ

বৈশ্বিক সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। তাতে মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে একাধিকবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। সম্প্রতি আরেক দফা সুদহার বাড়ানোর গুঞ্জন উঠেছিলো। কিন্তু এবার আর নীতি সুদহার বাড়ায়নি সংস্থাটি। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে তারা এ সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে সুদহার না বাড়ালেও ফেডের কর্মকর্তারা মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে একধরনের যুদ্ধংদেহী অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ক্রমেই এ বিশ্বাস পোক্ত হচ্ছে যে নীতি সুদহার বৃদ্ধির মাধ্যমেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং তাতে অর্থনীতির বিশেষ ক্ষতি হয় না বা বেকারত্বের হারও তেমন একটা বাড়ে না। খবর রয়টার্সের।
এদিকে ফেডারেল রিজার্ভ যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে অবশ্য বলা হয়েছে, চলতি বছর সুদহার আরও একবার বাড়ানো হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে নীতি সুদহার ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ—এই ব্যাপ্তিতে উন্নীত হতে পারে। এ ছাড়া ২০২৪ সালেও নীতি সুদহার বেশি থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ফেড মনে করছে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলবে। গতকাল দুই দিনের বৈঠক শেষে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মানুষ মূল্যস্ফীতি ঘৃণা করে, ঘৃণা।’ মূল্যস্ফীতির এই দীর্ঘ লড়াইয়ে ভবিষ্যতে সুদহার আবারও বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ফেড।
মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লড়াইয়ে অর্থনীতির ক্ষতি হলেও এবার সে রকম কিছু হচ্ছে না। বরং মার্কিন অর্থনীতি এখন বেশ চাঙা, কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধির হারও ভালো। এ বাস্তবতার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন ফেডের চেয়ারম্যান।

২০২৬ সাল পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির হার বেশি থাকলে তখন পর্যন্ত নীতি সুদহারও বেশি থাকবে। তবে এ সময় পূর্বাভাস অনুসারে ১ দশমিক ৮ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
এমনকি চলতি বছরের বাকি সময় ও পরের বছরগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার কমলেও নীতি সুদহার তেমন একটা কমাবে না ফেড।
আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে সুদহার কমানো হতে পারে। সুদহার কমানো হলেও মূল্যস্ফীতির হার যদি বেশি থাকে, তাহলে অর্থের মূল্য কমে যায়।
জেরোম পাওয়েলের ভাষা এখনো অনমনীয় হলেও তাঁর কথায় একটি বিষয় পরিষ্কার। সেটা হলো, মার্কিন অর্থনীতি যে মন্দার কবলে পড়ছে না, সে বিষয়ে তাঁর মধ্যেও একধরনের প্রত্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। পাওয়েল বলেছেন, মন্দা এড়ানোর পথ সম্ভবত প্রশস্ত হচ্ছে, তবে এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে ফেড লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে। ফেডের নীতি প্রণেতারাও আশা করছেন, জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও কমে আসবে এবং বেকারত্ব ৪ দশমিক ১ শতাংশের ওপরে যাবে না।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার ৫ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে; ২০২৫ সালের শেষে যা ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নামতে পারে। চলতি বছরের শেষে মূল্যস্ফীতির হার ৩ দশমিক ৩, আগামী বছর ২ দশমিক ৫ ও ২০২৫ সালের শেষে ২ দশমিক ২ শতাংশে নামতে পারে।
এ ছাড়া ফেড আশা করছে, মূল্যস্ফীতি ২০২৬ সালে ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে চলে আসবে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চিনির বৈশ্বিক উৎপাদন কমার আশঙ্কা

২০২৩-২৪ মৌসুমে চিনির বৈশ্বিক উৎপাদন ১ দশমিক ২১ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে। এ সময় বাজার বড় ধরনের সরবরাহ ঘাটতির মুখে পড়তে পারে। ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশন (আইএসও) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবরে ২০২৩-২৪ বিপণন মৌসুম শুরু হবে। এ মৌসুমে চিনির বৈশ্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২১ লাখ ১৮ হাজার টন। সংস্থাটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, এ সময় ভোগ্যপণ্যটির বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়াবে ১৭ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার টনে। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার টন। এদিকে পণ্যটির ব্যবহার ১৭ কোটি ৬৫ লাখ ৩০ হাজার থেকে বেড়ে ১৭ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টনে উন্নীত হতে পারে।
বিশ্লেষকরা জানান, উৎপাদনের তুলনায় ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতির দিকে মোড় নেবে। চলতি মৌসুমে পণ্যটির উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৪ লাখ ৯৩ হাজার টনে।
এগ্রিমান্ডির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও উপল শাহ জানান, বৈশ্বিক উৎপাদন পরিস্থিতি বেশকিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ উৎপাদনে বড় প্রভাব রাখবে।
তিনি আরো জানান, এ বছর ব্রাজিলে রেকর্ড আখ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এর পরও চিনি উৎপাদন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাজ করছে। কারণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে মিলগুলো চিনির পরিবর্তে ইথানল উৎপাদন বাড়াতে পারে। আগামী কয়েক মাস চিনি উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চিনি উৎপাদক। কোটার ভিত্তিতে দেশটি চিনি রফতানি করে। আগামী মৌসুমে ভারত চিনি রফতানি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ খবর প্রকাশের পর চিনি সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন উপল শাহ। তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের শুরুতে পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে।’
আইএসওর নির্বাহী পরিচালক জশ ওরিভ বলেন, ‘নিউইয়র্কের ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে অপরিশোধিত চিনির দাম ১২ বছরের সর্বোচ্চে অবস্থান করছে। প্রতি পাউন্ড লেনদেন হচ্ছে ২৭ দশমিক ৪৪ সেন্টে।’
বৈশ্বিক উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখবে ভারতের উৎপাদন পরিস্থিতি। ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্কলন অনুযায়ী, দেশটিতে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ১৭ লাখ টনে। তবে শিল্পসংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠান মনে করছে, উৎপাদনের পরিমাণ তিন কোটি টনে নামতে পারে।
ভারতে মৌসুমের শুরুতে চিনির মজুদ দাঁড়াতে পারে ৫৭ লাখ টনে। মোট চিনি সরবরাহের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬১ লাখ টন। স্থানীয় বাজারে ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২ কোটি ৮১ লাখ টনে। মোট চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে ২ কোটি ৯১ লাখ টনে।
এদিকে শীর্ষ উৎপাদক দেশ ব্রাজিলে এখনো চিনির মজুদ নিম্নমুখী। মূলত বৃষ্টির কারণে দেরিতে আখ সংগ্রহ শুরু করায় চিনি উৎপাদনেও বিলম্ব হয়েছে, যা মজুদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে ইউরোপ, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, চীন ও মেক্সিকোয়ও উৎপাদনে নানা চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক ঋণে রেকর্ড

চলতি বছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক ঋণ রেকর্ড ৩০৭ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। দুই বছর নিম্নমুখী থাকার পর চলতি বছরে বিভিন্ন দেশের সরকার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেড়েছে ঋণ নেয়ার প্রবণতা। জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত ঋণ বেড়েছে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার। এক দশক আগের তুলনায় ঋণ বেড়েছে ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি বাণিজ্য ও আর্থিক পরিষেবাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স (আইআইএফ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর দ্য ন্যাশনাল।
আইআইএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক ঋণের ৮০ শতাংশের হিস্যা ছিল জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশের বাজারগুলোর। অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারত, চীন ও ব্রাজিলের।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি মাসের মাঝামাঝি দাবি করেছিল, বৈশ্বিক ঋণ দ্বিতীয় বছরের মতো ২০২২ সালে কমে ২৩৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে মহামারীপূর্ব পর্যায়ের চেয়েও বৈশ্বিক ঋণের বোঝা বেশি। গত বছর বৈশ্বিক ঋণ ছিল জিডিপির ২৩৮ শতাংশ, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় দুই দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে ঋণ। উদীয়মান অর্থনীতির তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশের বেসরকারি ঋণ কম হলেও ঝুঁকি বেশি। অর্ধেকের বেশি নিম্ন আয়ের দেশ ঋণসংক্রান্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
ধারাবাহিকভাবে সাত প্রান্তিক ধরে বৈশ্বিক ঋণ কমতে থাকলেও চলতি বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে ঋণ বেড়েছে। গত দুই বছরে ঋণ কমার প্রধান কারণ ছিল মূল্যস্ফীতির হঠাৎ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। এ কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও দেশ তাদের মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন এনেছে। আইআইএফের দাবি, মজুরি ও দ্রব্যমূল্যের ওপর থেকে চাপ ক্রমেই কমে আসছে। বছরের শেষ দিকে ঋণের হার ৩৩৭ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।
জিডিপির বিপরীতে গৃহস্থালি ঋণ উদীয়মান অর্থনীতিগুলোয় বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে কোরিয়া, চীন ও থাইল্যান্ড এগিয়ে তালিকায়। তবে উন্নত দেশগুলোয় সূচক ছিল নিম্নমুখী। প্রতিবেদন বলছে, আন্তর্জাতিক তহবিল স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। উদীয়মান অর্থনীতিগুলো বাড়িয়েছে ঋণ নেয়ার প্রবণতা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সৌদি আরব, পোল্যান্ড ও তুরস্ক ছিল ঋণগ্রহণে শীর্ষে।

উদীয়মান বাজারে পুঁজিপ্রবাহে সীমাবদ্ধতা একটা বড় ঘটনা হয়ে দেখা দিয়েছে চলতি সময়ে। আইআইএফ দাবি করেছে, বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুঁজি বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। নতুন প্রকল্প হাতে নিতে হবে বিনিয়োগকারীদের।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারত ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করলো কানাডা

কানাডা ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক অস্বস্তি ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। মূলত ‘খালিস্তান’ ইস্যুতে এই অস্বস্তি জন্ম নেয়। তার মধ্যে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড ও এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ ব্যাপারটাকে আরও উসকে দিয়েছে। এমন উত্তেজনার মধ্যেই নিজ নাগরিকদের ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা দিয়েছে কানাডা। খবর এনডিটিভি।
ট্রুডো সরকারের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলছে, এ সতর্কতার সঙ্গে শিখ নেতার হত্যার বিষয়টির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কানাডা তাদের নাগরিকদের এ ধরনের ভ্রমণ সতর্কতা প্রায়ই দিয়ে থাকে। দুই দেশের মধ্যে যখন কোনো ধরনের সমস্যা ছিল না— তখনও কানাডা ভারতের জম্মু-কাশ্মির এবং আসাম রাজ্যে ভ্রমণে সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলেছিল।
গত ১৮ জুন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক হারদ্বীপ সিংকে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় গুলি করে হত্যা করে দুই মুখোশধারী। তিনি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশকে নিয়ে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলনের নেতা ছিলেন। তাকে হত্যা করার পর কানাডায় বসবাসরত শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর কানাডিয়ান সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে। তদন্ত শেষে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেছেন, এই হতাক্যাণ্ডের সঙ্গে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কৃষ্ণ সাগর বন্দর ছাড়লো ইউক্রেনের শস্য বোঝাই জাহাজ

চুক্তি ভঙ্গের পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের শস্য বোঝাই করা অ্যাকার্গো জাহাজ কৃষ্ণ সাগর বন্দর ছেড়েছে। এ পথে পণ্য রপ্তানিতে রাশিয়ার হামলার হুমকি রয়েছে। তা সত্ত্বেও জাহাজ ছেড়েছে কিয়েভ। মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পেইজে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী অলেক্সান্ডার কুবরাকভ। খবর ডেইলি সাবাহর।
অলেক্সান্ডার কুবরাকভ ফেসবুকে বলেছেন, ‘৩ হাজার টন গম বহনকারী জাহাজটি চোরনোমর্স্ক বন্দর ছেড়েছে এবং বসফোরাসের দিকে যাচ্ছে। ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বেসামরিক জাহাজের জন্য একটি অস্থায়ী করিডোর দিয়ে গত সপ্তাহে চোরনোমর্স্কে প্রবেশ করা দুটি জাহাজের মধ্যে এটিই প্রথম।’
কুবরাকভ খোলা সমুদ্রে জাহাজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন।
ইউক্রেন গত মাসে কৃষ্ণ সাগরে একটি ‘মানবিক করিডোর’ ঘোষণা করেছে। এর আগে যুদ্ধের পরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন্দর অবরোধ করে রেখেছে রাশিয়া। কিছুদিন আগে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় পুনরায় শস্য রপ্তানি চুক্তি করেছিল মস্কো। তবে সেই চুক্তি বেশিদিন টিকেনি। চুক্তি ভঙ্গের পর এবারই প্রথম কোনো জাহাজ বন্দর ছাড়ল।
বাল্ক ক্যারিয়ার রেসিলিয়েন্ট আফ্রিকা এবং আরোয়াট শনিবার ইউক্রেনে পৌঁছেছে এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার জন্য প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন গম লোড করার পরে বন্দর ছাড়ার কথা ছিল।

কুবরাকভ বলেন, দ্বিতীয় জাহাজ আরোয়াট এখনও চোরনোমর্স্কে আটকে আছে এবং মিসরের জন্য গম বোঝাই করা হচ্ছে। মস্কো ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি অবকাঠামোতে ঘন ঘন ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে।
জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় চোরনোমর্স্কসহ ওডেসার তিনটি সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে রাশিয়ার আগ্রাসনের সময় দশ লক্ষ টন শস্য পাঠানো হয়েছিল।
অস্থায়ী করিডোর ব্যবহার করে ওডেসায় আটকে থাকা বেশ কয়েকটি জাহাজের মধ্যে পাঁচটি এখন পর্যন্ত বন্দর ছেড়ে গেছে।
রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালের জুলাই মাসে শস্য রপ্তানি চুক্তিটি হয়েছিল। ইউক্রেন এবং রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ শস্য রপ্তানিকারকদের মধ্যে অন্যতম।