তরুণ প্রজন্ম কোন অংশেই পিছিয়ে নেই

আমাদের দেশের তরুনরা এখন কোন অংশেই পিছিয়ে নেই, অনেক সারা জাগানো সাফল্য রয়েছে আমাদের বর্তমান তরুন প্রজন্মের। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গন, গবেষনা,ব্যসায়িক ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে ইনোভেটিভ আইডিয়া তৈরী করে বিষ্ময়কর সাফল্য অর্জন করছে আমাদের তরুনরা। যা সত্যিই অবাক করার মত। বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমান সময়ে তরুনরা অনেক এগিয়েছে। তরুনপ্রজন্মের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি অর্থসংবাদের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব মন্তব্য করেন তরুণপ্রজন্মের প্রতিনিধি ও সমাজকর্মী এবং তরুন রাজনীতিবিদ শাফি মোদ্দাসের খান (জ্যোতি)। অধিকাংশ মানুষ তাকে জ্যোতি নামেই চিনেন। তিনি একই সঙ্গে একজন তরুন ব্যবসায়ীও। সাক্ষাতকারের চুম্বক অংশ অর্থসংবাদের পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো।



অর্থসংবাদ: বর্তমান তরুনপ্রজন্ম কোন দিকে যাচ্ছে, সম্ভাবনা কতটুকু?


জ্যোতি: আমাদের দেশের তরুনদের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই তরুণ। যার কারনে বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ বাংলাদেশ। গত ৮ থেকে ৯ বছর সময়ে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে, ফলে দেশের তরুণরাও তাদের সৃজনশীল আইডিয়া বাস্তবায়ন করে সাফল্য পাচ্ছে। আমাদের দেশে তরুনরা প্রযুক্তি তথা আইটিতে এখন বেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য আমাদের তরুনদের আইকন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের অনেক অবদান রয়েছে। যার কারনে গোটা দেশের তরুনরা তাকে মনে প্রানে ভালোবাসে।

অর্থসংবাদ: বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কোন প্রভাব তরুনপ্রজন্মের উপর পড়বে কি?


জ্যোতি: অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে উজ্জিবীত হয়ে দেশের তরুন প্রজন্ম আরো এগিয়ে যাবে। কারন তরুণপ্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে আদর্শ মনে করে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাবের ফলে তরুণরা কর্মস্পৃহা পাবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে দলীয় এবং ব্যাক্তিগতভাবে অনেকেই নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি নিজেও “চিরঞ্জীব মুজিব” নামের টেক মুভিতে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটা তরুনদের উজ্জীবিত করবে। এই মুভির স্ক্রীপ্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে দেখে পছন্দ করেছেন।



অর্থসংবাদ: ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে তরুণদের বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?


জ্যোতি:অন্যান্য সেক্টরের মত ব্যবসা-বানিজ্যেও বর্তমান তরুন প্রজন্ম অনেক ভালো করছে। ব্যবসা মানেই হচ্ছে সেবা দেয়া, আর সেক্ষেত্রে তরুনরা পণ্যের গুনগত মান বজায় রেখে ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবায় নতুনত্ব নিয়ে আসছে। প্রগতিশীল চিন্তাভাবনায় তরুণরা এগিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা বানিজ্যেও।


অর্থসংবাদ: সাম্প্রতিক সময়ে তরুনরা রাজনীতিতে খুবই আগ্রহী, এটাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?


জ্যোতি: বর্তমানে উচ্চশিক্ষিত অনেক তরুন রাজনীতিতে আসছে, যেটা খুবই ইতিবাচক দিক। কারন বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে সুস্থ্য পরিবেশ বিরাজ করছে। যার ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল রয়েছে। ইতিবাচক মনোভাব থাকলে দেশের রাজনীতিতে ভালো পরিবর্তন আসবে।বর্তমানে তরুণরা রাজনীতিতেও ভালো করছে। বিগত ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও মানুষ রাজনীতিকে ভালোভাবে দেখতো না। ফলে তরুনদেরও এক্ষেত্রে আগ্রহ ছিল কম। কিন্তু বর্তমান সময়ে উচ্চ শিক্ষিত তরুনরা রাজনীতিতে আসছে এবং অত্যন্ত ভালো করছে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীপরিষদেও বেশ কয়েকজন তরুন মন্ত্রী রয়েছেন। এছাড়াও ঢাকা সিটি নির্বাচনেও দেখা যাচ্ছে সবাই তরুন এবং শিক্ষিত। বর্তমান সরকার তরুনদের এগিয়ে নিতে যেভাবে কাজ করছে তার ধারাবাহিকতা থাকলে আমাদের দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিনত হতে বেশি সময় লাগবে না। আর রাজনীতিকে হীনভাবে দেখার সুযোগ নেই, রাজনীতি একটি পবিত্র কাজ। কারন রাজনীতির মাধ্যমেই দেশে এবং দেশের সেবা করা যায়। তাই মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে। নিজের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় হিসেবে দেখতে হবে, আর এক্ষেত্রে তরুনরা তুলনামূলকভাবে এগিয়ে রয়েছে।



অর্থসংবাদ: বর্তমান তরুণপ্রজন্মের মধ্যে কি ধরনের সমস্যা রয়েছে বলে আপনি মনে করেন ?


জ্যেতি: দেশের তরুণদের সম্ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমস্যাও রয়েছে। বিশেষ করে মাদক বর্তমান সময়ে একটা বড় সমস্যা। সঙ্গ দোষে তরুনদের একটা বড় অংশ মাদক সেবনের দিকে ঝুকে পড়েছে, তরুনদের মাঝে মাদক ঢুকে গেছে। অনেক সময় পরিবেশের কারনে, অথবা হতাশার কারনে তরুনরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমান সরকার মাদক রোধে খুব চমৎকারভাবে কাজ করছে। তবে দেশের তরুন প্রজন্মের সামনে মাদকের ক্ষতিকর দিক গুলো সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলে এ সমস্যা থাকবে না। বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমানে মাদক অনেকটা রোধ হয়েছে, প্রশাসন আরও কঠোর হলে মাদক রোধ হবেই। আমরা সাধারনত নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে যেভাবে প্রচার করি, সেভাবে কিন্তু ভালো কাজগুলোকে প্রচার করা হয় না। তাই তরুনদের ভালো কাজগুলোকে প্রচার করতে হবে। তরুনদের জন্য বর্তমান সরকার অনেক ভালো ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো প্রচার করা উচিত।


অর্থসংবাদ: সফলতার জন্য তরুণদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?


জ্যোতি: সফলতার জন্য প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। আর এখন নেটওয়ার্কিং এবং সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। তাই ইনোভেটিভ আইডিয়া এবং ইচ্ছা থাকলে ফান্ড বা অর্থনৈতিক সমস্যা কোন বিষয়ই না। হতাশ হলে চলবে না, হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না, প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। হতাশা মানুষের জীবনে থাকবেই, একসময় আমারও ছিল। হতাশা কাটিয়ে উঠতে দৃঢ় মনোবল থাকতে হবে। ব্যার্থতার থেকেই সফলতার জন্ম, তাই সফলতার জন্য লেগে থাকতে হবে।


শাফি মোদ্দাসের খান (জ্যোতি)
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সাভার রিফ্র্যেক্টরিজ লিমিটেড
কার্যনির্বাহী সদস্য, তেঁজগাও থানা আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

খেলাপির ফাঁদে ব্যাংক খাত: সমাধান কোন পথে
বাণিজ্যিক বিবেচনায়  ‘সৌরবিদ্যুৎ’ টেকসই এবং অনেক বেশি লাভজনক
কক্সবাজার: বাংলাদেশে অফুরন্ত পর্যটন সুযোগ উন্মোচন
বাংলাদেশে ঈদ উৎসব ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনা
অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করতে বন্ধ করতে হবে মানিলন্ডারিং
ওএসডি কোন নীতিমালার মধ্যে পড়ে
নেট দুনিয়ার ব্যাংকিং
সর্বজনীন কল্যাণে ইসলামী ব্যাংক: আন্তরিক সেবার ৪০ বছর
সুইডেনের ইনফ্লেশন ১২ শতাংশ, গোল ২ শতাংশ
ব্যাংকের নাম: লিমিটেড থেকে পিএলসি