জাতীয়
লালদীঘিতে ২৪ জনকে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা, ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রামের লালদীঘিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভায় ২৪ জনকে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার বিকালে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি কারাগারে আছেন। অপর আসামি ইন্সপেক্টর জেসি মণ্ডল পলাতক।
এর আগে রোববার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

প্রসঙ্গত ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভা শুরুর আগে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাক আদালত ভবনের দিকে আসার সময় গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এতে ২৪ জন মারা যান। গুলিবর্ষণের সময় মানববেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনাকে আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় ১৯৯২ সালে আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে মামলা করেন। ১৯৯৭ সালে মামলার প্রথম অভিযোগপত্র এবং অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
পুরো বাজেটই গরিবের জন্য উপহার

পুরো বাজেটই গরিব মানুষের জন্য উপহার বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এ দেশে অনেক মধ্য আয়ের মানুষ আছে, সময় এসেছে তাদের ট্যাক্স পেমেন্ট করতে হবে। যারা আয় করেন ট্যাক্স দেয়ার সক্ষমতা আছে তাদের ট্যাক্স দিতে হবে।
শুক্রবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাজেটে যেসব কমিটমেন্ট বা অঙ্গীকার দিয়েছি, সবগুলো পূরণ করেছি। দুই কোটি ৪৫ লাখ চাকরির ব্যবস্থা করেছি। ধীরে ধীরে কর্মসংস্থান বাড়ছে। কর্মসংস্থানের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি।
অর্থমন্ত্রী এ সময় বলেন, আমরা এখানে যারা উপস্থিত হয়েছি প্রত্যেকের দেশপ্রেম আছে। দেশপ্রেম আছে বলেই আমরা বারবার বিজয়ী হয়েছি। আমরা ফেল করি না।
তিনি বলেন, এ দেশের সব কিছুর মূলে হলো মানুষ। তাদের কর্মদক্ষতা, দেশের প্রতি তাদের মায়া-মমতা, দায়বদ্ধতা অসাধারণ এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমার বিশ্বাস আমরা পরাজিত হব না, বিজয়ী হবোই হব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, মন্ত্রিপরিষদসচিব মো: মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা প্রমুখ।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
১০ মেগা প্রকল্পে বাজেটের পরিমাণ ৬০ হাজার কোটি

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের আগ্রযাত্রাকে সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাওয়া ১০ মেগা প্রকল্পে বাজেটের পরিমাণ ৬০ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। উন্নয়ন বাজেটের উল্লেখযোগ্য অংশ খরচ হবে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোতে।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে বলেন, ‘অবকাঠামো ও সামাজিক খাতে দ্রুত উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দরিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে সরকার পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নে এডিপিতে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করেছে।’
প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে বেশি অর্থ পেয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প। প্রকল্পটি বরাদ্দ পেয়েছে ৯ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প (১ম সংশোষিত)। এই প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় ৯ হাজার ৮১ কোটি টাকা। প্রায় ৮ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪)।
প্রায় ৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, হযরত শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (১ম পর্যায়) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট (পিএফডি) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা আর ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

আলোচিত এই বাজেটে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ ধরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। সে হিসেবে বাজেটের আকার দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরেও জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ ধরে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়। চলতি বাজেটের তুলনায় আসন্ন বাজেটের আকার বাড়ছে ৮৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
ব্যয়ের বিপরীতে সরকার মোট রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১০ শতাংশ। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আসবে। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক অনুদান হিসেবে আসবে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
চলতি বাজেটে মোট রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা,যা মোট বাজেটের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং জিডিপি ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩২ কোটি, আর সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। ফলে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়বে ২৬ হাজার ৬১ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে যা ২৪ শতাংশ।
বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার। আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার পরিচালন ব্যয়ের প্রাক্কলন করেছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। এ ছাড়া উন্নয়ন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকলেও আগামী অর্থবছর গড় মূল্যস্ফীতির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশিমক ৬৪ শতাংশ। এদিকে আগামী অর্থবছরে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ নির্ধারণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ; তেল, গ্যাস ও সারের বিপুল ভর্তুকি প্রদান, রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর মতো বিষয়গুলোকে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বাজেট উপস্থাপনের পর নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সংসদ সদস্যরা আলোচনা করবেন। এরপর আগামী ২৬ জুন প্রস্তাবিত বাজেট পাশ হবে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট এটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট এটি। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি পঞ্চম বাজেট।
স্বাধীনতা-পরবর্তী ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশে মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট দেন তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৭২ সালের ৩০ জুন ওই বাজেট পেশ হয়। তাজউদ্দীন আহমদ ওই দিন একই সঙ্গে ১৯৭১-৭২ ও ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর, অর্থাৎ দুই অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। এরপর আরও দুবার বাজেট দেন তাজউদ্দীন আহমদ, সেটি সবশেষ দাঁড়ায় ১ হাজার ৮৪ কোটি টাকার। ১৩ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার বাজেট দিয়েছেন সদস্য প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও এম সাইফুর রহমান। দুজনেই ১২টি বাজেট উত্থাপন করেছেন। তবে আবুল মাল আবদুল মুহিতই আওয়ামী লীগের হয়ে টানা ১০ বার বাজেট পেশ করেছেন। তিনি প্রথম বাজেট দেন ১৯৮২-৮৩ সালে, এরশাদের শাসনামলে। সেটার আকার ছিল ৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। আর সবশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তার বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার।
অর্থসংবাদ/এস.ইউ
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মাথাপিছু বরাদ্দ ৪৪ হাজার ৮৬৩ টাকা

দেশের মানুষের মাথাপিছু বরাদ্দ ২ হাজার ৯৩০ টাকা বাড়িয়ে ৪৪ হাজার ৮৬৩ টাকা করা হয়েছে। একইভাবে আয় বেড়েছে ২ হাজার ৬৬৯ এবং ঘাটতি থেকে গেছে ২৬২ টাকা।
তবে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক ২১ শতাংশ।
এবার জিডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। প্রতিযোগী দেশগুলোতে বাজেট জিডিপির ২৫ শতাংশের ওপরে। ফলে আকার অনেক বড় করে দেখানো হলেও জনসংখ্যার বিবেচনায় বাজেটের একেবারেই বড় নয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে ২০২২ সালে দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ। অন্যদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে মোট বরাদ্দ ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এ হিসেবে মাথাপিছু বরাদ্দ ৪৪ হাজার ৮৬৩ টাকা। চলতি বছরের বাজেটে যা ছিল ৪১ হাজার ৯৩৩ টাকা। এ হিসাবে আলোচ্য সময়ে বরাদ্দ বেড়েছে ২ হাজার ৯৩০ টাকা। আগের বছর যা বেড়েছিল ৪ হাজার ৬শ টাকা। এছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে মোট আয় ৪ লাখ কোটি টাকা।
আর মাথাপিছু আয় ২৯ হাজার ৪৪৬ টাকা। আগের বছর যা ছিল ২৬ হাজার ৭৭৭ টাকা। এ হিসাবে আয় বেড়েছে ২ হাজার ৬৬৯ টাকা। আগের বছর বেড়েছিল ২ হাজার ৫০৫ টাকা। এছাড়াও ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে মাথাপিছু ঘাটতি ১৫ হাজার ৪১৭ টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৫ হাজার ১৫৫ টাকা।

অন্যদিকে এবার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। আর মাথাপিছু এডিপিতে বরাদ্দ ১৫ হাজার ৪৮৮ টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৫ হাজার ২১৭ টাকা। আলোচ্য সময়ে মাথাপিছু এডিপি বেড়েছে ২৭১ টাকা। আগের বছর যা বেড়েছিল ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
অর্থসংবাদ/এস.ইউ
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন শুরু

আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শুক্রবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত আছেন, কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, বাজিণ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন প্রমুখ।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ৬ শতাংশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করেছে সাড়ে ৭ শতাংশ। প্রস্তাবে বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে যে ছক এঁকেছে তা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।

বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম দেওয়া হয় ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’
বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসাবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ফলে এবারও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
আসন্ন বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে (অনুদান ছাড়া) দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান সহ এ ঘাটতি দাঁড়ায় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে তারও একটি ছক তৈরি করেছে।
ছক অনুযায়ী, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসাবে নেবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা আছে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধার নিতে চায় ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ১ লাখ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা আর অন্যান্য খাত থেকে আসবে পাঁচ হাজার এক কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় দর কমলো

বৃহস্পতিবার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির রেট ১ দশমিক ৫ টাকা বাড়িয়ে ১০৬ টাকা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এর আগে গত এপ্রিলের শেষদিন স্থানীয় মুদ্রার দামের ১ দশমিক ৫ টাকা অবমূল্যায়ন করা হয়। এ নিয়ে দুইবার টাকার দাম ১ দশমিক ৫ টাকা কমানো হলো, যা চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ।
এর আগে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির দাম সর্বোচ্চ ১ টাকা করে বাড়ানোর প্রবণতা ছিল।
বৃহষ্পতিবার নতুন দামে ৪৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে রিজার্ভ থেকে।
চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে রেকর্ড ১২ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে মহামারিকালে আমদানি কম থাকায় এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল।
প্রায় প্রতিদিনই ডলার বিক্রি করায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কমছে।
বৃহস্পতিবার দিনশেষে দেশের গ্রস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলারে। গত কয়েকদিন আগেও এটি ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল।
গত বছরের ১ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮৯ টাকা রেটে ডলার বিক্রি করেছিল। এক বছরের ব্যবধানে সেই ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৬ টাকা। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকই এক বছরে টাকা অবমূল্যায়ন করেছে ১৯ শতাংশের এর বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন সিনিয়র নির্বাহী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক মূলত দুটি কারণে দ্রুত হারে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে। প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্দেশ্য হলো রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির চাপ কমানো এবং দ্বিতীয়ত, একটি ইউনিফাইড বিনিময় হার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
অর্থসংবাদ/এসএম