অর্থনীতি
ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর করের বোঝা বাড়বে

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট এবং আয়কর আইন ২০২৩ নিয়ে কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)। সংগঠনটি বলেছে, সংসদে পেশ করা অর্থ বিল এবং নতুন আয়কর আইনের বিলে এমন কিছু প্রস্তাব রয়েছে, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যয় বাড়াবে। এতে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। প্রস্তাবিত আয়কর আইনের বিধানগুলো গভীর ও বিস্তৃত পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। কারণ, এ আইনের কিছু বিধান আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর বিবেচনায় অযৌক্তিক।
বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে ফিকি এক সংবাদ সম্মলেনে এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট এবং খসড়া আয়কর আইনের বিষয়ে ফিকি সভাপতি এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, সরকার যেসব প্রগতিশীল পরিবর্তন বাস্তবায়নের দিকে নজর দিচ্ছে তা প্রশংসনীয়। তবে কিছু বিধান বাস্তবায়ন হলে ব্যবসা এবং ব্যক্তির প্রবৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের ওপর আরোপিত ভ্যাট এবং লোকসানে থাকা কোম্পানিগুলোর ওপর করের বোঝা বাড়ার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফিকির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দীপাল আবেইউক্রেমা, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশীদ, ট্যারিফ-ট্যাক্সেশন ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কমিটির কো-অর্ডিনেটর সাজ্জাদ রহিম চৌধুরী, ট্যারিফ-ট্যাক্সেশন ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য দেবব্রত রায় চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির ও কনসালট্যান্ট স্নেহাশিস বড়ুয়া।
সাজ্জাদ রহিম চৌধুরী বলেন, নতুন আয়কর আইন বেশ কিছু ‘খারাপ’ ধারা সংযোজিত হয়েছে। যেগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য তথা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। এই আইনটি কর বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই-বাছাই করে সংসদে পাস করা উচিত। নতুবা হিতে বিপরীত হতে পারে।

স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, নির্দিষ্ট খাতে সীমাবদ্ধ না থেকে নতুন খাত বের করতে হবে। নতুন আয়কর আইনে ভাষা কিছুটা সহজবোধ্য করা হয়েছে। তবে ইংরেজি ভার্সন না থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিপাকে পড়বেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নতুন আয়কর আইনে ন্যূনতম কর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে কার্বোনেটেড পানীয় বা বেভারেজ শিল্পের ন্যূনতম কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে মোট প্রাপ্তির ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কোমল পানীয়ের দাম ৩০ শতাংশেরও বেশি বাড়বে। এ শিল্পের বিকাশের সুযোগ দিতে সরকারকে ন্যূনতম ১ শতাংশ কর ধার্যের অনুরোধ জানিয়েছে ফিকি।
এসময় আরও জানানো হয়, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী প্রণোদনা বোনাস অতিরিক্ত লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি কোম্পানির ওপর আরও করের বোঝা চাপিয়ে দেবে এবং পরবর্তী সময়ে কর্মচারীদের উপার্জনের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যবসায়িক ক্ষতির বিপরীতে অন্য আয় সচল রাখার অনুমতি না দেওয়া করের চেতনার বিরুদ্ধে যায়। পাশাপাশি বিদেশি ঋণের সুদের ওপর করের বিধান এবং তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতার দ্বারা আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ প্রদানে ব্যর্থতার জন্য তার সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক দিতে অননুমোদন দেওয়ার বিধানটি বাদ দেওয়া উচিত।
ফিকি জানায়, কর্পোরেট এবং সংস্থাগুলোর জন্য নগদ লেনদেন সীমিত করা দেশের উন্নয়নকে সীমাবদ্ধ করবে। কারণ, বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি নগদহীন লেনদেন করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। সরকারের উচিত কোম্পানিগুলোর নগদ লেনদেনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ না করে তার খরচের ন্যূনতম শতাংশ ব্যয় করার অনুমতি দেওয়া। যেন পরবর্তী পাঁচ বছরে ধীরে ধীরে তারা শতভাগ নগদহীন লেনদেনের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান

বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে বিশেষ করে মৎস্য খাতে সহযোগিতা-বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপান। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ জাপান সফর, বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন প্রকল্পে জাপানের বিনিয়োগ, উভয় দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপান যে ভূমিকা পালন করছে তা নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের অনন্য দৃষ্টান্ত। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা আমরা আরও সামনে এগিয়ে নিতে পারি। দু’দেশের জনগণ এবং উভয় দেশের সরকারের মধ্যে বিদ্যমান বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা আগামী বছরগুলোতে আরও শক্তিশালী হবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘ বন্ধুত্বের ইতিহাস আছে। বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে বিশেষ করে মৎস্য খাতে জাপান সহযোগিতা দিতে আগ্রহী। এ বিষয়ে দু’দেশের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে যৌথ পরামর্শ সভা হতে পারে। দু’দেশের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় সহজেই এক দেশে অন্য দেশে সহজেই পণ্য পরিবহন সম্ভব। তিনি বাংলাদেশে খাদ্য পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী। ভবিষ্যতে জাপান-বাংলাদেশ দু’দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জাপানের বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। যার মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ সময় বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিজাত পণ্যের বহুমুখীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনে জাপানী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে বলে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন মন্ত্রী।

এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মো. তোফাজ্জেল হোসেন, যুগ্ম সচিব অন্দ্রিয় দ্রং, নীলুফা আক্তার ও ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের তৃতীয় সচিব শিমমুরা কাৎসুমি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রেমিট্যান্স বাড়লে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হতো

রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার কাঠামোগত সংস্কারের পথ খুঁজছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘এখন তো বহু মানুষ দেশের বাইরে যাচ্ছেন। তরুণরা স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে গিয়ে স্থায়ী হচ্ছেন। শ্রমিকরাও বৈধপথে বিদেশ যাচ্ছেন। কিন্তু সেই অনুপাতে দেশে রেমিট্যান্স আসছে না। রেমিট্যান্সটা যদি বাড়তো, যেভাবে আগে আসছিল; সেভাবে আসতো, তাহলে অর্থনৈকি সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো।’
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, ‘কেন রেমিট্যান্স বাড়ছে না, এটার সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজতে হবে। সমাধানের পথ বের করতে হবে। এজন্য আমাদের যারা অর্থনীতিবিদ রয়েছেন, এ সেক্টরের বিশেষজ্ঞ রয়েছেন, তাদের কাছে আমরা উদ্ভাবনী পরামর্শ চাইবো। আপনারা রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক রাখতে সংস্কারের প্রস্তাব-পরামর্শ দিলে আমরা গ্রহণ করবো।’
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং বিশ্বব্যাংকের গভর্ন্যান্স গ্লোবাল প্রাকটিসের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্র্যাকটিস ম্যানেজার হিশাস ওয়েলি।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থপনা পুনর্গঠন বিষয়ে প্যানেল আলোচনা হয়। এতে আলোচক ছিলেন সাবেক পাঁচ অর্থসচিব। তারা হলেন- মো. জাকির আহমেদ খান, ড. মোহাম্মদ তারেক, মো. ফজলে কবির, মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, আব্দুর রউফ তালুকদার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডলারের ভবিষ্যৎ দাম নির্ধারণে নতুন নিয়ম

ভবিষ্যতের ডলারের দাম বেঁধে দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য ভবিষ্যতের ডলারে গুণতে হবে সুদ নির্ধারণের পদ্ধতি ‘সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি’-এর সঙ্গে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ বেশি।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নিয়ম চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যে পদ্ধতিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, সেটি স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। জুলাইয়ে স্মার্ট রেট ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। আগস্টে তা বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা চলতি সেপ্টেম্বরেও অপরিবর্তিত রয়েছে।
কেউ এখন ভবিষ্যতের জন্য ডলারের বুকিং দিয়ে রাখলে তাকে এক বছর পর প্রতি ডলারে ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা পরিশোধ করতে হবে। আর মাসভিত্তিক দাম হলে তা মাস হিসাবেই কমে আসবে। বর্তমানে আমদানিতে ডলারের দাম ১১০ টাকা।
আমদানিকারকদের কাছে বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক গত রোববার নতুন নিয়মটি চালু করেছে।

ডলার ক্রয় ও বিক্রয় উভয়ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ দাম নির্ধারণ করা যায়। কোনো আমদানিকারক এখনই ডলার কিনে এক বছরের মধ্যে পণ্য আমদানি করতে পারেন। এ জন্য তাকে বর্তমান ডলারের সঙ্গে ব্যাংককে বাড়তি কমিশন দিতে হয়। ওই সময়ে দাম কমে গেলেও আমদানিকারককে বর্তমান দাম দিতে হবে। আবার দাম বেড়ে গেলে তিনি সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ বাড়তি দাম দিতে হবে না। এদিকে রপ্তানিকারকও নির্দিষ্ট সময় ডলার বিক্রি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দাম কমে গেলে রপ্তানিকারক লোকসানেও পড়তে পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন সময়ে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে। ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম প্রতি মাসেই বাড়ছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি মাস থেকে পণ্য বা সেবা খাতের রপ্তানি আয়ের ডলার ও প্রবাসী আয়ের ডলার কেনায় দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আগে ব্যাংকগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতি ডলারের জন্য প্রবাসীদের ১০৯ টাকা ও রপ্তানিকারকদের ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা দিত।
অন্যদিকে ব্যাংকগুলো এখন আমদানিকারকদের কাছে ১১০ টাকায় ডলার বিক্রি করছে। আগে আমদানি দায় মেটাতে ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের কাছে প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করত। তবে অভিযোগ আছে, বাস্তবে এই দামে ডলার কেনা-বেচা হচ্ছে খুব কম।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভোগ্যপণ্য আমদানিতে এলসি খোলা কমেছে ৩৯ শতাংশ

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা কমেছে ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। একই সময়ে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, মধ্যবর্তী পণ্য এবং জ্বালানি তেল সবকিছুরই এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি আগের চেয়ে কমছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের হাল নাগাদ ‘সেলেক্টেড ইকোনমিক ইনডিকেটরসে‘ এ চিত্র উঠে এসেছে।
তথ্য বলছে, জুলাই-আগস্ট প্রথম দুই মাসে ভোগ্যপণ্য আমদানি করতে এলসি খোলা হয়েছে ৯২৬ দশমিক ১১ মার্কিন মিলিয়ন ডলারের। আগের বছরের একই সময়ে এলসি খোলা হয়েছিল প্রায় এক দশমিক ৫২৪ বিলিয়ন ডলারের। আগের বছরের একই সময়ে ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি এলসি খোলা হয়েছিল।
তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট বন্দর থেকে ভোগ্যপণ্য ছাড় করানো হয়েছে এক দশমিক ২৩৮ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরে একই সময়ে বন্দর থেকে ছাড় করা হয়েছিল প্রায় এক দশমিক ২৪৭ বিলিয়ন ডলারের ভোগ্যপণ্য। চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট দুই মাসে এক শতাংশের কিছু কম এলসির ভোগ্যপণ্য বন্দর থেকে ছাড় করা হয়েছে।
তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল ৭ দশমিক ৭২২ বিলিয়ন ডলারের।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুই মাসে ৫৩ হাজার কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ

২০২৩-২৪ অর্থবছরের (জুলাই-আগস্ট) দুই মাসে পাঁচ হাজার ৩০৮ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। শস্য, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি উৎপাদন খাতে বেশ ঋণ নিয়েছেন কৃষকরা। আলোচিত সময় কৃষকের ঋণ পরিশোধও সন্তোষজনক। এসময় আগের নেওয়া ঋণ কৃষক ফেরত দিয়েছেন পাঁচ হাজার ২৫১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি করেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অপ্রত্যাশিত ক্ষতি ছাড়া ঋণের কিস্তি বকেয়া করেন না। যার কারণে এ খাতে বিতরণ করা ঋণের খেলাপির হার অনেক কম, কিছু ক্ষেত্রে নেই বললেই চলে। যেখানে বৃহৎ শিল্প গ্রুপের বড় ঋণে খেলাপির হার কয়েক গুণ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিতরণ করা মোট কৃষি ঋণের স্থিতি ৫৩ হাজার ২৩০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৮৭ কোটি টাকা বকেয়া। সার্বিকভাবে কৃষি খাতে ঋণ খেলাপির হার ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ তিন হাজার ৯২৪ কোটি।
এই দুই মাসে কৃষকদের সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। জুলাই-আগস্টে মোট ৮৫৩ কোটি টাকার কৃষি ঋণ দিয়েছে ব্যাংকটি। ৪৮৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেসরকারি খাতের ডাচ বাংলা ব্যাংক। আলোচ্য সময় ৩৯৭ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক ৩৫৩ কোটি এবং ব্র্যাক ব্যাংক ২২৩ কোটি টাকার কৃষি ঋণ দিয়েছে।

চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করেছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছর কৃষি ঋণের লক্ষ্য ছিল ৩০ হাজার ৮১১ কোটি টাকা।
কম সুদে কৃষকদের হাতে ঋণ পৌঁছাতে এবার ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থার (এমএফআই) ওপর বেসরকারি ব্যাংকের নির্ভরশীলতা আরও কমিয়ে আনা হচ্ছে। আর এ জন্য ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্তত ৫০ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা এতদিন ছিল ৩০ শতাংশ। এ ছাড়া কৃষিঋণের কত অংশ কোন খাতে দিতে হবে, তাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জন্য প্রণীত কৃষি ঋণ নীতিমালায় বলা হয়, ভবনের ছাদে বিভিন্ন কৃষি কাজ করা একটি নতুন ধারণা। বর্তমানে শহরাঞ্চলে যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত বাড়ির ছাদে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ফুল, ফল ও শাক-সবজির যে বাগান গড়ে তোলা হয় তা ছাদবাগান হিসেবে পরিচিত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নেটওয়ার্ক (শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, দলবদ্ধ ঋণ বিতরণ) ও ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ ব্যবহার করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ হতে হবে। আগে তা ছিল ৩০ শতাংশ। এছাড়া মৎস্য খাতে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৩ শতাংশ ও প্রাণিসম্পদ খাতে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে বলা হয়।
অর্থসংবাদ/এসএম