অর্থনীতি
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরো ২৯ লাখ ডলার দিচ্ছে জাপান

জাপান সরকার ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর আওতায় কক্সবাজার ও ভাসান চরে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রাখতে দেয়া হবে প্রায় ২৯ লাখ ডলার বা ৩৯ কোটি ১০ লাখ জাপানিজ ইয়েন।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় ইউএনএইচসিআর।
সংস্থার ঢাকাস্থ কার্যালয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
জাপানের এই অনুদানে ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় ও বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পাটি, কম্বল ও সাবান বিতরণে ব্যবহার করবে। শরণার্থীদের ঘর ও বিভিন্ন অবকাঠামো যেমন ড্রেন, সেতু, হাঁটার পথ, সিঁড়ি, পাহাড়ি ঢাল ধরে রাখার দেয়াল মেরামত ও মজবুত করা হবে।
ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও জানান, গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়ে জাপানের কাছ থেকে সহায়তাটি এল। সাম্প্রতিক কিছু অগ্নিকাণ্ড ও ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্যাম্পের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আবারো তাদের জীবন পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। এই অনুদান ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ভবিষ্যত দুর্যোগের ঝুঁকি থেকে শরণার্থীদের রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

এসব ক্ষয়-ক্ষতিতে বিশেষ করে ক্যাম্পের নারী ও শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজারের পাশাপাশি ভাসান চরে জাপানের অনুদানে শরণার্থীদের অংশগ্রহণে চলমান কিছু প্রকল্প সহায়তা পাবে। শরণার্থীদের সুরক্ষা বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে, যেমন পরিষেবায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুযোগ।
এদিকে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এ সহায়তা রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণ উভয়ের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, আমরা ইউএনএইচসিআরকে ২৯ লাখ ডলার দিতে পেরে আনন্দিত। আশা করি যে এই সহায়তা আশ্রয় নির্মাণ ও পুনর্বাসন, সাইট রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে অগ্নি প্রতিরোধসহ শরণার্থীদের সুরক্ষাকে শক্তিশালী করবে।
ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, জাপান মিয়ানমারে শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে সহায়তাসহ টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য ইউএনএইচসিআরের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের আগস্টে শরণার্থী সংকট শুরুর সময় থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক কার্যক্রমের অটল সমর্থক হিসেবে আছে জাপান। সদ্য ঘোষিত অর্থায়নের মাধ্যমে ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশে কর্মরত এনজিওগুলোকে জাপান এখন পর্যন্ত ২০ কোটি ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে।
ইউএনএইচসিআরের ডেপুটি হাইকমিশনার কেলি ক্লেমেন্টসের বাংলাদেশ সফরের ঠিক পরপরই এই চুক্তির ঘোষণা এল। সফরকালে শরণার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের প্রয়োজনীয় মানবিক ও জীবিকামূলক চাহিদার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। জানান, তহবিলের অভাবে শরণার্থীদের জন্য খাদ্যসহ জীবন রক্ষাকারী সরবরাহ কমে গেছে।
কক্সবাজারে নয় লাখ ৩০ হাজার ও ভাসান চরে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় ৪ লাখ ৯৫ হাজার বাংলাদেশীসহ প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে সহায়তার জন্য মানবিক সংস্থাগুলো এ বছর ৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের তহবিলের আবেদন করেছে। চলতি জুন পর্যন্ত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানটি প্রায় ২৮ শতাংশ অর্থায়ন পেয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
পোশাকের দাম বাড়ানোর আহ্বান বিজিএমইএর

শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়াতে আগামী ডিসেম্বর থেকে ব্র্যান্ডের পোশাকের মূল্য বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি পক্ষ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং ক্রেতাদের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি বোর্ড বর্তমান ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা করার জন্য কাজ করছে। বোর্ড ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সভা করেছে এবং বর্তমানে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করছে। তারা কারখানা পরিদর্শন করে শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
তিনি বলেন, এ বছরের নতুন ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হবে। বেশ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হবে। ন্যূনতম মজুরি বোর্ড একটি স্বাধীন সংস্থা, যেখানে শ্রমিক, মালিক এবং স্বাধীন গোষ্ঠীর সমান প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এটি স্বাধীনভাবে কাজ করে, তাই মজুরি বৃদ্ধি সম্পর্কে অনুমান করা আমার পক্ষে কঠিন। কিন্তু আমাদের কর্মীদের জীবনযাত্রার মান এবং ব্যয় এবং মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনা করে ১ ডিসেম্বর থেকে উৎপাদিত অর্ডারগুলোর জন্য বর্তমান মূল্য আলোচনায় যুক্তিসংগত মূল্য বৃদ্ধি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছি। এটি একটি নতুন মজুরি স্কেলে একটি মসৃণ রূপান্তরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসাকে সহজ ও দক্ষ করার জন্য আমরা সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সাম্প্রতিক অতীতে আমাদের কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই ফলাফল এনেছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি কার্গো ট্রেন এবং স্থল কাস্টম বন্দরে উন্নত গুদামজাতকরণ ক্ষমতা উন্নত বাণিজ্য সরবরাহের জন্য একটি গেটওয়ে খুলে দিয়েছে।

ফারুক হাসান বলেন, সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির জন্য বাধ্যতামূলক ফিউমিগেশনের নিয়মও মওকুফ করেছে। একই সঙ্গে এফওসি ভিত্তিতে কাঁচামাল আমদানির নিয়ম ৪ মাস থেকে ৬ মাস শিথিল করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মেগা অবকাঠামো প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে এবং আমরা এই বছরের শেষ নাগাদ ঢাকা বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল চালু হওয়ার অপেক্ষায় আছি। আরও সংস্কার ও মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এগুলো আগামী দিনে আমাদের ব্যবসায় আরও গতি যোগ করবে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঢাকায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট সামিট শুরু

ঢাকায় প্রথম বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট সামিট-২০২৩ এবং ১০ম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয়।
আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ মেলা আগামী শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত চলবে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলে ছাত্রছাত্রীদের কোনও প্রবেশমূল্য লাগবে না। তবে প্রবেশ টিকিটের বিপরীতে সবার জন্য রয়েছে র্যাফেল ড্র এবং এয়ারলাইন্স টিকিটসহ বেড়ানোর জন্য আকর্ষণীয় গিফট ভাউচার ও পুরস্কার। মেলার এ বছরের থিম ‘কানেক্টিং রিজিওনাল ট্যুরিজম’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলি, সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার প্রমুখ।
গত নয় বছরে এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার এ অঞ্চলের ভ্রমণপিপাসু মানুষ, শিল্প ও পর্যটন পেশাদারদের একত্রিত হওয়ার জন্য একটি প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। মেলার পাশাপাশি স্থানীয় পর্যটনের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট সামিটে (বিটিডিএস) নানান সেমিনার এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, নেপাল, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম এবং দুবাইসহ একাধিক দেশের ১৫০টি পর্যটন সংস্থা এতে অংশগ্রহণ করেছে।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুই মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৪ হাজার ৮৭ কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরে প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে ৪ হাজার ৮৭ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। ৫০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বড় রাজস্ব আদায়ের পেছনে ছুটতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রথম মাসের রাজস্ব ঘাটতি ছিল কোটি ১৮০০ কোটি টাকার বেশি। যা এখন দ্বিগুণ হয়েছে। এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব এসেছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে। যদিও ভ্যাট কিংবা আয়করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
জুলাই ও আগস্টে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৮৫ কোটি ১ লাখ টাকা। যেখানে আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ হলেও পিছিয়ে আছে ১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা।
একই সময়ে জুলাই ও আগস্টে ২ হাজার ৯৫৮ কোটি ১৬ লাখ টাকার আয়কর ও ভ্রমণ কর কম আদায় হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৫৯ কোটি টাকা, আর আদায় হয়েছে ১২ হাজার ১০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

ডলার সংকটের মাঝেও আমদানি ও রপ্তানি থেকে শুল্ক আদায় তুলনামূলক বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ১৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ১৯২ কোটি ১২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব এসেছে এ খাতে।
চলতি অর্থবছর এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে মূসক থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা, আয়কর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ও আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কমেছে বৈদেশিক অর্থছাড়, বেড়েছে ঋণ পরিশোধ

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই মাসে সরকার বৈদেশিক অর্থছাড় পেয়েছে ৪০৫ মিলিয়ন ডলার। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড় মিলেছিল ৪৮৮ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বৈদেশিক অর্থছাড় কমেছে প্রায় ১৯ শতাংশ। তবে অর্থছাড় কমলেও সরকারের ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৩৪ শতাংশের বেশি।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে সরকারি ঋণের সর্বশেষ চিত্র প্রকাশ করা হয়। যেখানে অর্থছাড় হ্রাসের বিষয়টি উঠে এসেছে। এর আগে এ বছরের মার্চ মাস থেকে ওয়েবসাইটে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে মাসিক আপডেট প্রকাশ বন্ধ রেখেছিল ইআরডি।
ইআরডির তথ্য মতে, জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ২৫১ মিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করেছে জাপান। ৭০ মিলিয়ন ডলার ছাড় করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এডিবি। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিশ্বব্যাংক থেকে এসেছে ৫৭ মিলিয়ন ডলার। তবে চীন এবং রাশিয়া থেকে কোনো অর্থছাড় কিংবা প্রতিশ্রুতি মেলেনি। যদিও ভারত থেকে ছাড় হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্থছাড় কমলেও সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে। এ বছরের জুলাই মাসে সরকার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে ২৫৩ মিলিয়ন ডলার। যেখানে সুদের পরিমাণ ছিল ১০৬ মিলিয়ন ডলার এবং আসল ছিল ১৪৬ মিলিয়ন ডলার। যদিও গত বছর একই সময়ে সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ১৭৯ মিলিয়ন ডলার। টাকার অংকে এ বছর পরিশোধ করা হয়েছে ২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। গত বছর এ পরিমাণ ছিল একহাজার ৬৮০ কোটি টাকা।
আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে নতুন কোনো ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। যদিও ৫ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার প্রকল্প অনুদানের অঙ্গীকার পাওয়া গেছে। ৩ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলার প্রকল্প অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমেরিকা এবং জাপান। আর জাতিসংঘ থেকে ২ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলারের অনুদানের প্রতিশ্রুতি এসেছে। এ সময়ে এডিবি, বিশ্বব্যাংক এবং ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকেও কোনো ঋণের প্রতিশ্রুতি আসেনি।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিদের কঠোর হুঁশিয়ারি

সম্প্রতি সময়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পর্ষদের চাপে পদত্যাগ করেন। এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় ব্যাংক পাড়ায়। প্রধান নির্বাহীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক ধরনের আতঙ্ক। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিদের ‘দ্বন্দ্ব’ বন্ধ করে কর্পোরেট গর্ভনেন্স মেনে চলার জন্য কড়া বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুল রউফ তালুকদার। একই সঙ্গে ডলার কারসাজি রোধে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন গভর্নর।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর এ তাগিদ দেন। বৈঠকে বিএবি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনজন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে এমডিদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব বন্ধ করা, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি মূল্যে ডলার কেনাবেচা না করা, মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও ঋণপত্রের (এলসি) মাধ্যমে ডলার পাচারসহ ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট গর্ভনেন্সের যাবতীয় নীতিমালা মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় ডলার কারসাজি রোধে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের কড়া বার্তা দেন গভর্নর।
বৈঠক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আমন্ত্রণেই বিএবির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। এটা পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক। ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বর্তমান দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, মূল্যস্ফীতি চাপ, রিজার্ভ পরিস্থিতি, ডলার, এক্সচেঞ্জ রেট এবং আমদানি রপ্তানি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে; এগুলো তাদের জানানো হয়েছে। পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিএবির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
গভর্নর ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট গভর্নেন্স মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, দেখা যাচ্ছে বাফেদার বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে গিয়ে অনেকে ডলার কেনাবেচা করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না। এমডিদের সঙ্গে চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব লাগছে। বৈঠকে এসব বিষয়গুলো সমাধানে কর্পোরেট গভর্নেন্স মানতে বলা হয়েছে।

ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করায় বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধান দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডলার কারসাজিতে অভিযুক্তদের কি শাস্তি দেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা আছে।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী, এই অপরাধে কমপক্ষে ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। যদি আইনের একই ধারার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রথম দিনের পর প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত এক হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা যায়।
ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করায় বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত সোমবার চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধানকে জরিমানা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ট্রেজারি বিভাগ ব্যাংকের টাকা ও ডলারের চাহিদা-জোগানের বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে। কোনো কোনো ব্যাংকে ট্রেজারি বিভাগের প্রধান পদে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাও রয়েছেন।
অর্থসংবাদ/এসএম