চীনের আমদানি-রপ্তানিতে পতন

চীনের আমদানি-রপ্তানিতে পতন
চীনের আমদানি চলতি বছরের মে মাসে কমেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। একই সময়ে দেশটির রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। গতকাল প্রকাশিত দেশটির শুল্ক বিভাগের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।

বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস, বিশেষ করে উন্নত বাজারগুলোতে নিম্নমুখী চাহিদা ও ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিস্থিতিতে চীনের রপ্তানি কার্যক্রম মে মাসে প্রত্যাশার তুলনায় দ্রুত সংকুচিত হয়েছে।

কভিড-১৯-এর অভিঘাতে কয়েক বছর ধরে ধুঁকতে থাকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ অর্থনীতি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাশার তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি অর্জন করে। বিশ্বজুড়ে পণ্য ও পরিষেবা চাহিদা বৃদ্ধির সুফল পেতে শুরু করে দেশটি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ক্রমবর্ধমান সুদের হার এবং মূল্যস্ফীতি চাপের প্রভাব পড়েছে চীনের কারখানা কার্যক্রমে।

মে মাসে বছরওয়ারি রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। গতকাল চীনের শুল্ক বিভাগের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, রফতানি দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস হয়েছে, যা পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি। তাছাড়া জানুয়ারির পর থেকে যা সবচেয়ে বড় পতন। এদিকে আমদানি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, যা প্রত্যাশিত ৮ শতাংশের তুলনায় অনেক কম।

পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং বলেন, ‘দুর্বল রপ্তানির অর্থ হচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরগতির মধ্যে চীনকে অভ্যন্তরীণ চাহিদার ওপর নির্ভর করতে হবে। তাছাড়া বছরের বাকি সময়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির চাপ রয়েছে সরকারের ওপর, কারণ বিশ্বব্যাপী চাহিদা সম্ভবত চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে আরো দুর্বল হবে।’

প্রতিবেদন অনুসারে, এক বছর আগে কঠোর কভিড-১৯ নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের ব্যস্ততম সাংহাই বন্দরটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাণিজ্য পরিস্থিতি খারাপ ছিল। এদিকে মহামারীর পরবর্তী চীনের শেয়ার বাজারের শক্তিশালী অবস্থানেরও পরিবর্তন ঘটেছে। কারণ স্বতন্ত্র খুচরা বিনিয়োগকারীরা ইকুইটি সম্পর্কিত হতাশা থেকে স্টকে বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে।

এদিকে চীন থেকে সেমিকন্ডাক্টরের আমদানি হ্রাস পেয়েছে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। কারণ বৈশ্বিক বাজারে ভোক্তা ইলেকট্রনিকসের চাহিদার হ্রাস ঘটেছে। সেমিকন্ডাক্টর হলো স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য গ্যাজেটের মতো ভোক্তা ইলেকট্রনিকসসহ বিভিন্ন ডিভাইসে ব্যবহৃত অপরিহার্য ইলেকট্রনিক উপাদান। চীন যার প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত চীনের অফিশিয়াল পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) অনুসারে, কারখানার কার্যক্রম মে মাসে প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত সংকুচিত হয়েছে। তাছাড়া পিএমআই উপসূচকগুলো নির্দেশ করছে যে কারখানার উৎপাদন সম্প্রসারণ পরিস্থিতি থেকে সংকোচনের দিকে ধাবিত। রপ্তানিসহ নতুন ক্রয়াদেশ কমেছে দ্বিতীয় মাসের জন্য। প্রথম প্রান্তিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেলেও বিশ্লেষকরা এখন বছরের বাকি সময়ের জন্য তাদের পূর্বাভাস কমিয়ে দিচ্ছেন।

২০২২ সালে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলেও সরকার চলতি বছরের জন্য প্রায় ৫ শতাংশ শোভন জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের চীনের অর্থনীতির প্রধান জুলিয়ান ইভান্স-প্রিচার্ড রয়টার্সকে বলেন, ‘‌আমরা মনে করি চলতি বছরের শেষের দিকে রফতানি আরো কমবে। চীনের বাইরে অন্যান্য দেশে সুদের হার শীর্ষের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা চলতি বছরের শেষের দিকে উন্নত অর্থনীতিগুলোর অবস্থাকে দুর্বল করে দেবে এবং বেশির ভাগ দেশেই মৃদু মন্দার সূত্রপাত ঘটাবে।

অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া