সৌদির জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোয় রফতানি বাড়বে যুক্তরাষ্ট্রের

সৌদির জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোয় রফতানি বাড়বে যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি মার্চের রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি। আগামী মাসে রফতানি আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সৌদি আরবের উত্তোলন কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত এর প্রধান কারণ। এদিকে রফতানি বাড়ায় দেশটির মজুদও কমছে ক্রমবর্ধমান হারে। এরই মধ্যে মজুদ ইতিহাসের সর্বনিম্নে।

জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর নেতৃস্থানীয় সৌদি আরব। সম্প্রতি দেশটি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল বা ১০ শতাংশ করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে হিসাবে দৈনিক উত্তোলন দাঁড়াবে ৯০ লাখ ব্যারেলে। দেশটি জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখবে। পণ্যটির দাম সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার উদ্বেগে কমে গেছে।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, সৌদি আরবের এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র ও লাতিন আমেরিকার জন্য ইউরোপ এবং এশিয়ার বাজারে নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদকরা সৌদি আরবের কারণে ভালো দাম পাবেন বলেও আত্মবিশ্বাসী।

তথ্য পরিষেবা প্রতিষ্ঠান কেপলারের বিশ্লেষক ম্যাট স্মিথ বলেন, ‘‌বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি বৃদ্ধিতে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করছে।’

এ বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি দৈনিক ৪৫ লাখ ব্যারেল স্পর্শ করেছিল, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। চীনের অব্যাহত জ্বালানি তেল কেনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগিতামূলক দাম দেশটির জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধিতে রসদ জুগিয়েছে। রফতানি যুক্তরাষ্ট্রের মোট উত্তোলনের এক-তৃতীয়াংশ স্পর্শ করেছে। যার প্রভাবে মজুদ কমে রেকর্ড সর্বনিম্ন বা ৮১ কোটি ৫০ লাখ ব্যারেলে নেমেছে।

মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে দিয়েছিল। নতুন করে আরো ১০ লাখ ব্যারেল কমানোর সিদ্ধান্ত দেশটির রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

নিউইয়র্কভিত্তিক সানকি রিসার্চের পল সানকি বলেন, ‘‌এটি গুরুত্বপূর্ণ যে সৌদি আরব গ্রীষ্ম মৌসুমে উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন তাদের স্থানীয় বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। উত্তোলন কমলে তাদের রফতানিও কমাবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ সাতটি বেসিন থেকে শেল অয়েল (পাথরের খাঁজ থেকে উত্তোলিত তেল) উত্তোলন আগামী মাসে রেকর্ড সর্বোচ্চে উন্নীত হতে পারে। দেশটির এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেল অয়েল উত্তোলন দৈনিক ৪১ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়াবে দৈনিক ৯৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে।

যুক্তরাষ্ট্রের শেল অয়েল বেসিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় টেক্সাস ও নিউ মেক্সিকোর পারমিয়ান বেসিন। এ বেসিন থেকে অপরিশোধিত তেল উত্তোলন দৈনিক ১৫ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। দৈনিক উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে রেকর্ড ৫৭ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে।

উত্তর ডাকোটা ও মনটানা অঞ্চলে অবস্থিত বাকেন বেসিনে উত্তোলন প্রতিদিন ১৩ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১২ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে, যা ২০২০ সালের নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ।

অন্যদিকে দক্ষিণ টেক্সাস ঈগল ফোর্ড থেকে উত্তোলন প্রতিদিন দুই হাজার ব্যারেল করে বেড়ে দৈনিক ১১ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হতে পারে। গত বছরের নভেম্বরের পর এটি সর্বোচ্চ।

এদিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পাশাপাশি পাথরের খাঁজ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনও ব্যাপক হারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইআইএর প্রাক্কলন অনুযায়ী, বৃহৎ বেসিনগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন প্রায় দৈনিক ৩০ কোটি ঘনফুট করে বাড়তে পারে। দৈনিক উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে রেকর্ড ৯ হাজার ৭২০ কোটি ঘনফুটে। অর্থাৎ জুনে গত মাসের চেয়েও বেশি উত্তোলন হবে। গত মাসে উত্তোলনের পরিমাণ ধরা হয়েছে দৈনিক ৯ হাজার ৭০০ কোটি ঘনফুট।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া