জাতীয়
রং ফর্সাকারী ১৮ ধরনের ক্রিম নিষিদ্ধ

শরীরের রং ফর্সাকারী ১৮ ধরনের ক্রিম ও একটি লোশন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পারদসহ ক্ষতিকর উপাদান থাকায় এসব ক্রিম ও লোশন নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসটিআই জানিয়েছে, এই ১৮ ধরনের রং ফর্সাকারী ক্রিম ও একটি লোশনে বিপজ্জনক মাত্রায় পারদ (মার্কারি) এবং হাইড্রোকুইনোন পাওয়া গেছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব ক্রিম দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে চর্মরোগসহ বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে। এজন্য এসব ক্রিম বিক্রি ও বিতরণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ১৯ ধরনের ক্রিম ও লোশনের মধ্যে পাকিস্তানের তৈরি ১৫টি, ইন্ডিয়ার ১টি, চায়না ১টি, আর দুটি পণ্য নামবিহীন।
পাকিস্তানে তৈরি ক্রিমগুলো হলো- এসজে এন্টারপ্রাইজের চাঁদনী ক্রিম, গৌরী কসমেটিকসের (প্রা.) গৌরী ক্রিম, ক্রিয়েটিভ কসমেটিকসের ডিউ, কিউসি ইন্টারন্যাশনালের নিউ ফেস, নুর গোল্ড কসমেটিকসের নুর গোল্ড বিউটি ক্রিম, নুর গোল্ড কসমেটিকসের নুর হারবাল বিউটি ক্রিম, হোয়াইট পার্ল কসমেটিকস ইন্টারন্যাশনালের হোয়াইট পার্ল ক্রিম, গোল্ডেন পার্ল কোম্পানির গোল্ডেন পার্ল ক্রিম, পুনিয়া ব্রাদার্স (প্রা.) লিমিটেডের ফাইজা ক্রিম, ফেস লিফট কসমেটিকসের ফেস লিফট ক্রিম, লাইফ কসমেটিকসের ফ্রেশ অ্যান্ড হোয়াইট ক্রিম, শাহিন কসমেটিকসের ফেস ফ্রেশ ক্রিম, আনিজা কসমেটিকসের আনিজা গোল্ড, লোয়া ইন্টারন্যাশনালের পাক্স ও নাভিয়া ক্রিম।
এছাড়া নিষিদ্ধ হওয়া ক্রিমগুলোর মধ্যে চীনের শুয়াংজ বায়ো টেকনোলজির ডা. রাসেল নাইট ক্রিম রয়েছে। নিষিদ্ধ হওয়া লোশনটি ভারতের অ্যারোমা কেয়ার কসমেটিকসের, নাম ডা. ডেভি স্কিন লোশন।

নিষিদ্ধ হওয়া নামবিহীন দুটি ক্রিম হচ্ছে, ফোর কে প্লাস এবং জাওলি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
খাদ্য মূল্যস্ফীতির অস্বস্তি কমেনি

খাদ্য পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে কোনভাবেই স্বস্তি মিলছে না। বাজারের মাছ-মাংসের পাশাপাশি সবজি, মুদি বাজারে যেন হাত দেওয়া বারণ! সম্প্রতি যে হারে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে তাতে বেশ বিপাকে পড়ছে সাধারণ মানুষ। সেপ্টেম্বরে গ্রাম-শহরনির্বিশেষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো ১২ শতাংশের ওপরে রয়ে গেছে। গত আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে ওঠে।
তবে গত সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে কোন সুখবর না আসলেও সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য কমেছে। এই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশে নেমেছে, যা আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গতকাল মঙ্গলবার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ হয়েছে, যা আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর শহরে সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, গত মে মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে উঠেছিল, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। এরপর জুন ও জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে। তা জুন মাসে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ ও জুলাইয়ে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়। তবে আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে যায়। এ মাসে মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
লক্ষণীয় দিক হচ্ছে, দেশে গত আগস্ট মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ করে অনেক বেড়ে যায়। এ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয় ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতির এই হার ১১ বছর ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশে উঠেছিল।

বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে গ্রাম-শহর মিলিয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের মাস, অর্থাৎ আগস্টে এই হার ছিল ১২ দশমিক ৫৪। এর মানে, সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে মাত্র দশমিক ১৭ শতাংশ। গত জুলাই মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সেপ্টেম্বর মাসে গ্রাম এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা শহর এলাকায় ১২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
অন্যদিকে গ্রাম-শহর মিলিয়ে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি আগস্টের ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ থেকে কমে সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমেছে। সেপ্টেম্বরে গ্রাম এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ ও শহর এলাকায় এটি কিছুটা কমে ৮ দশমিক ১২ শতাংশ হয়েছে।
এ ছাড়া গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, যা বছরভিত্তিক হিসাবে গত এক যুগে সর্বোচ্চ।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে ২০২৫ সালে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসবে। বুধবার (৪ অক্টোবর) পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, সাধারণত নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণে ১০-১৫ বছর সময় লাগে। সে হিসেবে মাত্র ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ একটা মাইলফলক। এসবই প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে।
রাশিয়ান কোম্পানিকে প্রকল্পের পেমেন্ট জটিলতা নিয়ে তিনি বলেন, সারা বিশ্বেই এ জটিলতা এখন চলছে। কিন্তু আমরা পেমেন্ট করছি, আশা করছি জটিলতা কেটে যাবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরীক্ষামূলক উৎপাদনে আসবে এবং এর ১০ মাস পর বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে।
পুরো প্রকল্পের কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথম ইউনিটের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের কাজ যেভাবে এগিয়েছে, সঞ্চালন লাইনের কাজ সেভাবে আগায়নি। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রিড লাইন নির্মাণে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সব মন্ত্রণালয় কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিষয়টি কো-অর্ডিনেট করা হচ্ছে। ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র গ্লোবালি রিকগনাইজ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সাইবার নিরাপত্তায় একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-ভারত

সাইবার জগৎকে নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, আমরা যেভাবে পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে দুদেশ থেকে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূল করেছি তেমনিভাবে সাইবার হামলা ও হুমকি মোকাবিলা করে সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখবো।
বুধবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও ভারতের সহযোগিতামূলক যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সাইবার-মৈত্রী ২০২৩ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র যদি শক্তিশালী হয় এবং সেই রাষ্ট্র যদি পাশে থাকে তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারত যখন একসঙ্গে শক্রুর মোকাবিলা করে তখন লড়াইটা অনেক সহজ হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে যুদ্ধ করেছে। কোভিড-১৯ মহামারি একসোঙ্গে মোকাবিলা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণেও দুদেশ একসঙ্গে কাজ করেছে। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ ভিশন বাস্তবায়নে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।
ভারতের সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমকে (সিইআরটি) পাশে পেয়ে সাইবার হামলা মোকেবিলা ও অপরাধ দমনে আমরা অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী বলেও তিনি জানান।
পলক বলেন, বর্তমান আন্তঃসংযুক্তির বিশ্বে প্রযুক্তি রৈখিক গতির পরিবর্তে সূচকীয় গতিতে অগ্রসর হচ্ছে এবং তা আমাদের জন্য বিশাল সম্ভাবনা ও সুযোগ তৈরি করছে। এর পাশাপাশি সাইবার জগতের কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এমন বাস্তবতায় সাইবার হামলা ও হুমকি মোকাবিলায় সাইবার মৈত্রীর মতো আরও উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

বিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক রনজিত কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, সিইআরটি, ইন্ডিয়া এর সিনিয়র ডিরেক্টর এস এস শর্মা।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি (ইডিজিই) প্রকল্প আয়োজিত তিন দিনের প্রশিক্ষণে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামোতে কর্মরত আইটি-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেন ভারতের সিইআরটি’র বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের ৩২টি সিআইআই থেকে ৬৪ জন এ অনুশীলনে অংশ নেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
১৬ দিনের সফর শেষে দেশে প্রধানমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি আজ (বুধবার) দুপুর সোয়া ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার।
মঙ্গলবার লন্ডন সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে (বিজি-২০৮) লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান।

অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেসরকারি খাতে ২২ মাসে সর্বনিম্ন ঋণ প্রবৃদ্ধি

বৈশ্বিক চলমান সংকটে শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর বেশ প্রভাব পড়েছে। কেউ কেউ খরচ কমাতে ব্যবসার আকার সীমিত করে নিচ্ছেন। আবার দেশে ডলার সংকটের জন্য আমদানির কড়াকড়িতে অনেকে পর্যাপ্ত কাঁচামাল ক্রয় করতে পারছেন না। ফলে বেসরকারি খাতে আগের তুলনায় ঋণ বিতরণ কমে এসেছে। গত আগস্টে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে ২২ মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা আগস্টে কমে হয়েছে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ঋণে এই প্রবৃদ্ধি গত ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ক্ষেত্রে যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল, এটি তার চেয়ে ১ শতাংশের মতো কম। এর আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে বেসরকারি খাতের ঋণে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এরপর কখনোই তা ১০ শতাংশের নিচে নামেনি।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি খাতের ঋণের বড় অংশ ব্যয় হয় আমদানিতে। তবে ডলার-সংকটের কারণে চাহিদামতো ঋণপত্র (এলসি) খোলা যাচ্ছে না। তাই আমদানি কমে গেছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় এখন কেউ নতুন করে প্রকল্প নিতে চাইছেন না। ফলে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুনের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। তখন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এরপর জুলাইয়ে ঋণ কমে ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকায় নামে। তাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমে হয় ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। গত আগস্টে ঋণ বেড়ে হয়েছে ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। ফলে ঋণের প্রবৃদ্ধি আগস্টে আরও কমে হয়েছে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই থেকে আগস্ট—এই এক মাসে বেসরকারি খাতের ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। আর জুন থেকে জুলাইয়ে ঋণ কমেছিল ৮ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। বর্তমান মুদ্রানীতিতে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ।

এদিকে জুলাই থেকে নতুন পদ্ধতিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, যা স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। জুলাইয়ে স্মার্ট রেট ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, যা আগস্টে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। ফলে ব্যাংকঋণের সুদহার বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ১৪ শতাংশ। সেপ্টেম্বের স্মার্ট রেট বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। ফলে চলতি মাসে সুদহার বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। আগে ব্যাংকঋণের সুদহার ছিল সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। ঋণের সুদ বৃদ্ধির ফলেও চাহিদা কিছুটা কমেছে।
দেড় বছর ধরে দেশে ডলারের সংকট চলছে। এতে ডলারের দাম ৮৫ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় উঠেছে। মাঝে ডলারের দাম বাড়ার কারণেও বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়েছিল। কারণ, প্রতি ডলারে খরচ ২৫ টাকার বেশি বেড়ে গিয়েছিল। তবে এখন আমদানি ঋণ কমে যাওয়ায় বেসরকারি ঋণ কমে গেছে বলে ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন।
অর্থসংবাদ/এমআই