হাই-ভোল্টেজ ক্যাবল উৎপাদনে ৩ শতাংশ হারে উৎসে কর চালু করতে যাচ্ছে সরকার

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আন্ডারগ্রাউন্ড (ভূ-গর্ভস্থ) হাই-ভোল্টেজ ক্যাবলস উৎপাদনে (৩৩ কেভি থেকে ৫০০ কেভি) স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে উৎসে কর দিতে হবে ৩ শতাংশ, যা আগে ২ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত দিতে হতো।

স্থানীয় উদ্যোক্তারা বলছেন, প্রস্তাবিত বাজাটে হাই-ভোল্টেজ ক্যাবলস উৎপাদনে টিডিএস (ট্যাক্স ডিডাকটেড অ্যাট সোর্স) নির্দিষ্ট করে ৩ শতাংশ করা হলে ক্যাবল শিল্পে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

বর্তমানে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোতে হাই-ভোল্টেজ ক্যাবল ব্যবহৃত হচ্ছে, যার একটি বড় অংশই আমদানি করা হয় বিদেশ থেকে। সরকার ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনে যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেক্ষেত্রে হাই-ভোল্টেজ ক্যাবলসের চাহিদা আগামীতে আরও বাড়বে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উদ্যোক্তারা এ ধরনের ক্যাবলসে বিনিয়োগ বাড়াবে। কারণ এখন স্থানীয় কোম্পানিগুলো হাই-ভোল্টেজ ক্যাবলস উৎপাদনে এগিয়ে আসছে।

দেশের বৃহত্তম ক্যাবল প্রস্তুতকারক বিআরবি ক্যাবলস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড হাই-ভোল্টেজ কেবল উত্পাদনে ইতোমধ্যেই প্রচুর বিনিয়োগ করেছে।

কোম্পানিটি কুষ্টিয়ায় ১,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাই-ভোল্টেজ ক্যাবল উৎপাদনের কারখানা স্থাপন করেছে। কারখানাটির বছরে প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদনে সক্ষমতা।

বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি বলেন, সরকারের ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন প্রকল্পে ১৩২ কেভি থেকে ৪০০ কেভি ক্যাবল ব্যবহার করা হবে।

তিনি জানান, বড় শহরের সব বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন মাটির নিচ দিয়ে যাবে। এরমধ্যে ১১ কেভি ও ৩৩ কেভির ব্যবহারটা অনেকটা কমে হবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হাই-ভোল্টেজ ক্যাবলস ব্যবহার করা হবে।

আগামীতে হাই-ভোল্টেজ ক্যাবলসের চাহিদাকে সামনে রেখে বিআরবি ইতোমধ্যে বড় বিনিয়োগ করেছে। নতুন এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩২ থেকে ৪০০ কেভি পর্যন্ত ক্যাবলস উৎপাদন করা যাবে।

এদিকে, বিবিএস ক্যাবস তার ফ্যাক্টরি ইউনিট ২ প্রকল্পে ১৩৩ থেকে ২৪৫ কেভি পর্যন্ত ক্যাবলস উৎপাদন করছে, যার বেশির ভাগই সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহার করছে।

বিবিএস ক্যাবলস কোম্পানির সেক্রেটারি গোলাম হাবিব বলেন, কোম্পানি বর্তমানে ১,৬০০ মেট্রিক টন হারে উৎপাদন করছে। এর বেশির ভাগের ক্রেতা সরকার। উৎসে কর কমলে এখাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এদিকে পার্টেক্স ক্যাবলস বলছে, কোম্পানিটি ১১ এবং ৩৩ কেভি ক্যাবলস উৎপাদনে বেশি মনোযোগী হচ্ছে। কারণ এই দুই গ্রেডের কেবলসের চাহিদা অনেক বেশি।

সারাদেশে বিদ্যুতায়নের পাশাপাশি ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং এসএমই ও হাউজিং সেক্টরসহ ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের কারণে বাংলাদেশে ক্যাবলের বাজার প্রতি বছর গড়ে ২০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক দশকে দেশীয় ক্যাবলের বাজারের আকার ২ হাজার কোটি টাকা থেকে ১২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। বড় ব্র্যান্ডসহ ১২০ টিরও বেশি কোম্পানি মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে। এই খাত দেশে ৫০ হাজারেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ