আন্তর্জাতিক
‘রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ কয়েক দশক ধরে চলতে পারে’

টানা ১৫ মাস ধরে চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। যুদ্ধের এতদিনেও ইউক্রেনে রুশ সংঘাত অবসানের কোনো লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। আর এমনই এক পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধ কয়েক দশক ধরে চলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষস্থানীয় মিত্রদের একজন। শুক্রবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রাশিয়ার বার্তাসংস্থা আরআইএ’র বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ মিত্র দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ কয়েক দশক ধরে চলতে পারে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের পর দীর্ঘসময় রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্বপালন করেছেন দিমিত্রি মেদভেদেভ। বর্তমানে তিনি রাশিয়ার সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান। বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষস্থানীয় এই মিত্র ভিয়েতনাম সফরের সময় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সর্বশেষ ওই মন্তব্য করেন।
অবশ্য রাশিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট প্রায়শই কঠোর নানা মন্তব্য করে থাকেন। এমনকি গত মাসে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষকে সংক্রমণ হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলেন তিনি। এছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়া হারলে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সতর্ক করে দিয়েছিলেন এই পুতিন মিত্র।

ভিয়েতনাম সফরের সময় দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, ‘এই সংঘাত খুব দীর্ঘ সময় ধরে চলবে, সম্ভবত কয়েক দশক।’
ইউক্রেন নাৎসি রাষ্ট্র বলে মস্কোর দাবির পুনরাবৃত্তি করে রাশিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যতদিন দেশটিতে এই ধরনের (সরকার) ক্ষমতায় থাকবে, সেখানে দেখা যাবে তিন বছরের যুদ্ধবিরতির পর দুই বছর ধরে সংঘাত হচ্ছে এবং এগুলোর সবকিছুরই বার বার পুনরাবৃত্তি হবে।’
এর আগে গত জানুয়ারিতে মেদভেদেভ বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া পরাজিত হলে পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করতে পারে তার দেশ। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা মেদভেদেভ সেসময় বলেন, ‘পরমাণু শক্তিধর দেশগুলো বড় ধরনের সংঘাতে কখনই হারেনি। কারণ এর ওপর তাদের ভাগ্য নির্ভর করে।’
এখন পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষ দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ পারমাণবিক ওয়ারহেডের দখল রয়েছে। রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেবল প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাতে রয়েছে।
রাশিয়ার ওপর প্রচলিত সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ন্যাটোর থাকলেও পারমাণবিক অস্ত্রের হিসেবে ইউরোপের জোটের তুলনায় মস্কোর পারমাণবিক শক্তি বেশি রয়েছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলা হয়ে থাকে দিমিত্রি মেদভেদেভকে। ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মেদভেদেভ রাশিয়ার দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এছাড়া ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে ভয়াবহ এক সংঘাত এবং ১৯৬২ সালের কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর মস্কো ও পশ্চিমের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
চীনের আমদানি-রপ্তানিতে পতন

চীনের আমদানি চলতি বছরের মে মাসে কমেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। একই সময়ে দেশটির রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। গতকাল প্রকাশিত দেশটির শুল্ক বিভাগের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।
বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস, বিশেষ করে উন্নত বাজারগুলোতে নিম্নমুখী চাহিদা ও ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিস্থিতিতে চীনের রপ্তানি কার্যক্রম মে মাসে প্রত্যাশার তুলনায় দ্রুত সংকুচিত হয়েছে।
কভিড-১৯-এর অভিঘাতে কয়েক বছর ধরে ধুঁকতে থাকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ অর্থনীতি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাশার তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি অর্জন করে। বিশ্বজুড়ে পণ্য ও পরিষেবা চাহিদা বৃদ্ধির সুফল পেতে শুরু করে দেশটি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ক্রমবর্ধমান সুদের হার এবং মূল্যস্ফীতি চাপের প্রভাব পড়েছে চীনের কারখানা কার্যক্রমে।
মে মাসে বছরওয়ারি রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। গতকাল চীনের শুল্ক বিভাগের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, রফতানি দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস হয়েছে, যা পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি। তাছাড়া জানুয়ারির পর থেকে যা সবচেয়ে বড় পতন। এদিকে আমদানি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, যা প্রত্যাশিত ৮ শতাংশের তুলনায় অনেক কম।
পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং বলেন, ‘দুর্বল রপ্তানির অর্থ হচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরগতির মধ্যে চীনকে অভ্যন্তরীণ চাহিদার ওপর নির্ভর করতে হবে। তাছাড়া বছরের বাকি সময়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির চাপ রয়েছে সরকারের ওপর, কারণ বিশ্বব্যাপী চাহিদা সম্ভবত চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে আরো দুর্বল হবে।’

প্রতিবেদন অনুসারে, এক বছর আগে কঠোর কভিড-১৯ নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের ব্যস্ততম সাংহাই বন্দরটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাণিজ্য পরিস্থিতি খারাপ ছিল। এদিকে মহামারীর পরবর্তী চীনের শেয়ার বাজারের শক্তিশালী অবস্থানেরও পরিবর্তন ঘটেছে। কারণ স্বতন্ত্র খুচরা বিনিয়োগকারীরা ইকুইটি সম্পর্কিত হতাশা থেকে স্টকে বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে।
এদিকে চীন থেকে সেমিকন্ডাক্টরের আমদানি হ্রাস পেয়েছে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। কারণ বৈশ্বিক বাজারে ভোক্তা ইলেকট্রনিকসের চাহিদার হ্রাস ঘটেছে। সেমিকন্ডাক্টর হলো স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য গ্যাজেটের মতো ভোক্তা ইলেকট্রনিকসসহ বিভিন্ন ডিভাইসে ব্যবহৃত অপরিহার্য ইলেকট্রনিক উপাদান। চীন যার প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত চীনের অফিশিয়াল পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) অনুসারে, কারখানার কার্যক্রম মে মাসে প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত সংকুচিত হয়েছে। তাছাড়া পিএমআই উপসূচকগুলো নির্দেশ করছে যে কারখানার উৎপাদন সম্প্রসারণ পরিস্থিতি থেকে সংকোচনের দিকে ধাবিত। রপ্তানিসহ নতুন ক্রয়াদেশ কমেছে দ্বিতীয় মাসের জন্য। প্রথম প্রান্তিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেলেও বিশ্লেষকরা এখন বছরের বাকি সময়ের জন্য তাদের পূর্বাভাস কমিয়ে দিচ্ছেন।
২০২২ সালে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলেও সরকার চলতি বছরের জন্য প্রায় ৫ শতাংশ শোভন জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের চীনের অর্থনীতির প্রধান জুলিয়ান ইভান্স-প্রিচার্ড রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা মনে করি চলতি বছরের শেষের দিকে রফতানি আরো কমবে। চীনের বাইরে অন্যান্য দেশে সুদের হার শীর্ষের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা চলতি বছরের শেষের দিকে উন্নত অর্থনীতিগুলোর অবস্থাকে দুর্বল করে দেবে এবং বেশির ভাগ দেশেই মৃদু মন্দার সূত্রপাত ঘটাবে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাজার থেকে সোয়া এক লাখ গাড়ি তুলে নিচ্ছে ফোর্ড

বাজার থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকল (এসইউভি) ও ট্রাক তুলে নিচ্ছে ফোর্ড। নির্মাণ ত্রুটিগত কারণে এসব গাড়ির ইঞ্জিন অকালে ব্যর্থ ও আগুন ধরে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে ২০২২ সালের জুলাইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোর্ড এস্কেপ, লিঙ্কন কর্সেয়ার ও ফোর্ড ম্যাভেরিক ট্রাকসহ এক লাখ যানবাহন প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহারের কারণ ছিল ইঞ্জিন থেকে আগুন বা ধোঁয়া বের হওয়া। এ ধরনের প্রায় ২৩টি ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর গাড়িগুলো প্রত্যাহার করা হয়। এটি ঘটেছিল ব্লক বা তেল প্যানের ত্রুটির কারণে।
ব্লক বা তেল প্যান ত্রুটির কারণে ফুটো হয়ে তেল নির্গত হতে পারে। তাছাড়া ইঞ্জিন অত্যধিক গরম হয়ে আগুন ধরে যাওয়া বা ধোঁয়া নির্গত করতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এটি যাত্রীসহ অন্যদের নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করে।
তবে ফোর্ড নিশ্চিত করেছে, ২০২২ সালের জুলাইয়ে প্রত্যাহারসংক্রান্ত মেরামতের পরও কমপক্ষে তিনটি ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনাও রয়েছে।
ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনএইচটিএসএ) অনুসারে, ফোর্ড বলেছে যে এ গাড়িগুলো তারা পুনরায় মেরামত করছে। যার মধ্যে প্লাগ-ইন হাইব্রিড ইঞ্জিনসহ ২০২০ থেকে ২০২৩ মডেল বছরের মধ্যে এস্কেপ, লিঙ্কন কর্সেয়ার এসইউভি এবং ফোর্ড ম্যাভেরিক কমপ্যাক্ট পিকআপ ট্রাক অন্তর্ভুক্ত।

ফোর্ডের মতে, ত্রুটিগত কারণে ইঞ্জিন অকালে ব্যর্থ হতে পারে, পরবর্তী সময়ে তা থেকে তেল বা জ্বালানি বাষ্প নির্গত করতে পারে, যা আগুন ও আঘাতের ঝুঁকিগুলোকে বাড়িয়ে দেয়।
এদিকে ফোর্ড ও এনএইচটিএসএর পক্ষ থেকে গাড়ির মালিকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে, ইঞ্জিনের অপ্রত্যাশিত শব্দ শুনতে পেলে, গাড়ির গতি হ্রাস পেলে বা ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া নির্গত হতে দেখলে গাড়ি থামিয়ে ইঞ্জিন বন্ধ করে দিতে হবে। গত সপ্তাহে ফোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগুনের ঝুঁকির কারণে ১ লাখ ৪২ হাজার লিঙ্কন এমকেসি ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্লথগতির শঙ্কা বিশ্বব্যাংকের

বৈশ্বিক অর্থনীতি আগামী কয়েক বছরে শ্লথগতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি জানিয়েছে, উচ্চ সুদহার, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি ও ব্যাংক খাতের অব্যাহত সংকটের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এরই মধ্যে তীব্রভাবে কমেছে। খবর ফক্স বিজনেস।
ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটির সম্প্রতি প্রকাশিত অর্ধবার্ষিক গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বলছে, চলতি বছর বৈশ্বিক প্রকৃত জিডিপি ২ দশমিক ১ শতাংশ বাড়বে। এ প্রাক্কলন হিসাব জানুয়ারিতে প্রকাশিত ১ দশমিক ৭ শতাংশের তুলনায় বেশি, কিন্তু ২০২২ সালের ৩ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় অনেক কম।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্ডারমিট গিলের মতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত অর্থনীতিগুলোও চলতি বছরে বাড়বে মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ হারে। গত বছরের রেকর্ড ২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় যা উল্লেখযোগ্য পতন। এছাড়া এটি হতে যাচ্ছে পাঁচ দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল প্রবৃদ্ধির হারগুলোর একটি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বের অর্থনীতি এখনো অনিশ্চিত। আগামী বছরের শেষ নাগাদও উন্নয়নশীল বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশের মাথাপিছু আয় ২০১৯ সালের শেষের দিকে যা ছিল তার চেয়ে কম থাকবে। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশের জন্য এটি পাঁচটি হারিয়ে যাওয়া বছর হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
তবে সর্বশেষ প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাংকের জানুয়ারির প্রাক্কলনের তুলনায় সামান্য উন্নতি চিহ্নিত করেছে। এর আগের প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছিল, বৈশ্বিক অর্থনীতি এ বছর প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। যেখানে নতুন প্রাক্কলনে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২ দশমিক ১ শতাংশ।
জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছিল, বৈশ্বিক জিডিপি মন্দার দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতিও এখন চাপের মধ্যে। ২০২৩ সালের জন্য বিশ্বব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ১ শতাংশ হিসাবে প্রাক্কলন করেছে। জানুয়ারির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের প্রাক্কলনের তুলনায় যা দ্বিগুণেরও বেশি। এদিকে চীনের প্রবৃদ্ধি এ সময় ৫ দশমিক ৬ পর্যন্ত উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা জানুয়ারির ৪ দশমিক ৩ শতাংশের তুলনায় কিছুটা বেশি।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক কঠোরতা এবং ব্যবসায়িক, আবাসিক বিনিয়োগে আরো সীমাবদ্ধ ক্রেডিট শর্তের কারণে উন্নয়ন ঋণদাতা সংস্থাটি জানুয়ারিতে ২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন ২ দশমিক ৭ শতাংশ করলেও নতুন প্রাক্কলনে কিছুটা কমিয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। এ কারণগুলো ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন আরো কমিয়ে আনবে এমনটাও আশঙ্কা। তবে ২০২৫ সালের প্রাক্কলনে প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে ৩ শতাংশ।
ফেডারেল রিজার্ভ ও অন্যান্য বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় ব্যাংক উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার জন্য একটি কঠোর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক দশকের মধ্যে দ্রুততম গতিতে সুদহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণ প্রদানের খরচ বাড়ার কারণে নিম্ন আয়ের দেশগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উচ্চ সুদের হুমকি এবং সম্প্রতি কয়েকটি মার্কিন ব্যাংক ধসে পড়ায় ব্যাংকিং সেক্টরে আরো অস্থিরতা বাড়তে পারে। ফলে চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো কমার আশঙ্কা রয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্ব অর্থনীতি এখনো অবরুদ্ধ। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে সংকট এবং রেকর্ড পরিমাণ ঋণের কারণে অনেক দেশ ক্রমেই দরিদ্র হচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কয়লা তুলতে ভারতের নতুন বরাদ্দ ২ হাজার ৯৮০ কোটি রুপি

দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির চাহিদা মেটাতে ভারত আরও কয়লা খনি খনন করবে। এ লক্ষ্যে দেশটির সরকার ২ হাজার ৯৮০ কোটি রুপি অনুমোদন করেছে। সেই সঙ্গে তারা ভবিষ্যতে খনি খননের জন্য নিলামও করবে।
ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি ভারত সরকার জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও করবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি বলেছেন, কয়লা খনি খননের কাজ বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানিকেও দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে তারা ১৪টি কোম্পানিকেও তালিকাভুক্ত করেছে। এত দিন এই কাজ করত ভারতের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর।
যোশি ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে ২০২৫-২৬ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৯৫০ বর্গকিলোমিটার খনি খনন করা যাবে বলে তিনি আশা করছেন। সে বছরই হবে ভারতের পঞ্চদশ ফাইন্যান্স কমিশনের শেষ বছর।
কয়লা উত্তোলনের দুটি পর্যায়ে আছে। প্রথমত, আঞ্চলিক বা অগভীর খনন; দ্বিতীয়ত, গভীর খনন। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অগভীর খননের জন্য ১ হাজার ৬৫০ কোটি রুপি এবং গভীর খননের জন্য ১ হাজার ৩৩০ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে।

২০২৩ সালের জন্য ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের হিসাবে বলা হয়েছে, ভারতের প্রাথমিক জ্বালানির ৪৫ শতাংশ আসে কয়লা থেকে, গত ৪০ বছরে যার হিস্যা একরকম স্থিতিশীল আছে। তবে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি ২০২১ সালে বলেছিল, ভারত যতই পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিক না কেন, কয়লাই হবে তার মূল উৎস। দেশটির সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা ভাবছে।
তবে কত কয়লা মাটির নিচে আছে, তা জানার জন্য অনুসন্ধান জরুরি। অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে যে ভূতাত্ত্বিক প্রতিবেদন পাওয়া যায়, তা নতুন ব্লক ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়; এরপর যারা কাজ পায়, তাদের কাছ থেকে সেই ব্যয় তোলা হয়।
এদিকে ইকোনমিক টাইমসের আরেক সংবাদে বলা হয়েছে, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কয়লার আমদানি–নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে চায় ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় কয়লা ও খনিমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি বারবারই বলেছেন, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার জন্য ভারত শিগগিরই আমদানি-নির্ভরতা কাটিয়ে উঠবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মধ্যে সরকার কয়লার অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ঘাটতি শূন্যে নামিয়ে আনতে চায়।
এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২০ কোটি টন কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা করেছে ভারত। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে বর্তমানে ভারত যে পরিমাণ কয়লা উত্তোলন করে, তার চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন করতে হবে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে ভারতের কয়লাবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সে জন্যই কয়লা উৎপাদন বাড়াতে নতুন করে এই তহবিল অনুমোদন করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের সাথে নিরাপত্তা ও বাণিজ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

নিরাপত্তা ও বাণিজ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক ও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে নিজেদের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, ‘গত বছর আমরা একটি বার্ষিকী উদযাপন করেছি, যেটি বাংলাদেশের সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্পর্কিত এবং ২০২৩ সালে আমরা সেই সম্পর্কটিকে আরো গভীর করার জন্য উন্মুখ। এমন বেশকিছু ক্ষেত্র রয়েছে যেগুলোতে আমরা এই সহযোগিতা আরো গভীর করতে চাই।’
৭ জুন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিরাপত্তা সহযোগিতা ছাড়াও জলবায়ু, বাণিজ্য ও অন্যান্য অনেক বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমনে মার্কিন সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে প্যাটেল বলেন, ‘অবশ্যই এটি এমন একটি সমস্যা যা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমি আপনাদের কিছু সহকর্মীর সাথে এই বিষয়ে অনেক কথা বলেছি। তার মধ্যে একটি অবশ্যই ছিল বাংলাদেশের সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতার সুযোগ।’