শিল্প-বাণিজ্য
কফির দাম ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

আন্তর্জাতিক বাজারে ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে কফির দাম। শীর্ষ উৎপাদক দেশগুলোয় সংকুচিত সরবরাহ পানীয় পণ্যটির বাজারদরকে আকাশছোঁয়া উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
আইসিই ফিউচারস এক্সচেঞ্জে গত শুক্রবার জুলাইয়ে সরবরাহের জন্য নির্ধারিত রোবাস্তা কফির দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রতি টনের মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৮৩ ডলারে, যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ডিলাররা জানান, শীর্ষ রোবাস্তা কফি উৎপাদক ভিয়েতনামে সরবরাহ অনেক কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিপরীতে ব্রাজিল থেকে সরবরাহ ফের বাড়ার প্রত্যাশায় আছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
রাবোব্যাংক এক নোটে জানায়, ব্রাজিলিয়ান রোবাস্তা কফির রফতানি নিম্নমুখী হয়ে ওঠার বিষয়টিও দাম বাড়াতে সহায়তা করছে। তবে আমাদের বিশ্বাস দেশটিতে কফির মজুদ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। ক্রমান্বয়ে দেশটি রফতানিও বাড়াতে সক্ষম হবে। কারণ দেশটিতে কফির ব্যবহার কম। এছাড়া ব্রাজিলের রফতানিকে উৎসাহিত করতে দাম বাড়ার প্রয়োজন আছে বলেও জানায় রাবোব্যাংক।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটের ওপর বিসিআই’র প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন। শনিবার (৩ জুন) সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সচিব কামরুন নাহার শিউলির সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিসিআই সভাপতি বলেন, বাজেটে সরকার ৫টি ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যার মধ্যে আছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি ও সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ উন্নয়ন।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা এখন ৯ শতাংশের বেশি। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে জোর দেওয়া হবে। কিন্তু দেশীয় শিল্প সক্ষমতা ও টেকসই করার কোন নিদৃষ্ট দিকনির্দেশনা নেই বিশেষ করে মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নয়নে কোন দিকনির্দেশনা নেই। মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প করোনা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫% ঝরে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আয় প্রধানত বেসরকারী খাত থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে উচ্চমূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, জ্বালানি সমস্যা কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, ফলে উৎপাদনশীল কারখানাগুলোর প্রবৃদ্ধি হারিয়েছে। এদিকে বেসরকারি খাতের ক্রেডিট গ্রোথ নিম্নগামী। রফতানিও মন্থর এবং রেমিট্যান্সও ওই পরিমাণে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে গেলে আমদানি বিকল্প শিল্প এবং কীভাবে কারখানাগুলোর প্রবৃদ্ধির সক্ষমতা ফিরিয়ে আনা যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোন দিকনির্দেশনা নেই।

বিসিআই সভাপতি বলেন, শুধু আইএমএফ এর শর্তের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে দেশের অর্থনীতি কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে সে দিকে গুরুত্বারোপ করতে হবে। আমাদের এখন স্থানীয় শিল্প, আমদানি বিকল্প শিল্পের সক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং টেকশই করা এবং কর্মসংস্থান ধরে রাখার দিকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
বিসিআইর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেনির করমুক্ত আয়ের সীমাঃ সাড়ে ৩ লাখ করা হয়েছে যা বিসিআই স্বাগত জানায় তবে উচ্চমূল্যস্ফীতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী কর বৎসরের ব্যক্তি শ্রেনির করমুক্ত আয়ের সীমাঃ ৫ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব করছি। এবং উচ্চমূল্যস্ফীতির এ সময়ে করযোগ্য নয় এমন টিনধারীদের ওপর ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর করের বোঝা তৈরি করবে। তাই এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
এতে আরও বলা হয়, বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। যার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা যা বিগত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৬.২০% বেশি। অথচ গত এপ্রিল পর্যন্ত চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে মোট লক্ষ্যের মাত্র ৬১ শতাংশ। বিদ্যমান ডলারসংকট এবং আমদানিতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ থাকায় এই রাজস্ব আদায় নতুন র্অবছরে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াবে।
সরকারের আয় মূলত বেসরকারি খাত ও রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যেমে হয়ে থাকে। বিসিআই মনে করে, বেসরকারি খাতে জ্বালানি স্বল্পতা, বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এবং নিরবিচ্ছিন্ন সাপ্লাই না থাকার কারণে শিল্প কারখানাগুলো ৫০-৬০ শতাংশের বেশি উৎপাদন ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না। সাথে সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের কন্ট্রাকশন পলিছির কারণে গত ১০ মাসে শিল্প গুলি মূলধনি যন্ত্রপাতি ৫৬%, মধ্যবর্তি কাঁচামাল ৩১.৩% এবং কাঁচামাল ৩১.৫% কম ঋণপত্র খুলেছে। এব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকা দরকার যেন কোন অবস্থাতেই শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্থ না হয় এবং সরকারকে কমমূল্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তা না করলে দেশিয় শিল্প তাদের সক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে তাতে করে মূল্যস্ফিতি কমবে না সাথে সাথে বেকারত্বের হার বেড়ে যাবে। যার ফলে এনবিআর এরও তাদের কর আহরন বাধাগ্রস্থ হতে হবে। বেসরকারি খাত এবং এনবিআরকে একসাথে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে রাজস্ব বোর্ডের প্রাকটিসেরও পরিবর্তন আনা বাঞ্চনীয়।
বিসিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেক্টর ভিত্তিক থামরুলে গ্রোস প্রফিট (জিপি) ধরে শুল্কায়ন না করে কোম্পানি বিশেষে একচূয়াল একাউন্টিং প্রাক্টিস এর ভিত্তিতে শুল্কায়ন করা উচিৎ যেমন- একচূয়াল প্রফিট অথবা একচূয়াল লস মেনে কোম্পানি ওয়াইজ হিসেবে শুল্কায়ন করলে যে সব কোম্পানি যারা কর দিচ্ছে না তারা কর দিতে আগ্রহী হবে। সাথে সাথে কর নিট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা মনে করি ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে মোট করের ৮০% এর উপর সংগ্রহ হয়ে থাকে অথচ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় ৪৫% অন্যান্ন জেলায় অবস্থিত। এসকল অঞ্চলে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মানুষের কাছে গেলে কর আদায় বৃদ্ধি পাবে এবং করনেট প্রসারিত হবে। ব্যবসায়ি এবং এনবিআরকে দায়িত্ব নিয়ে দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে এগিয়ে আসতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বিদেশ থেকে সোনা আনলে কর গুনতে হবে দ্বিগুণ

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকরা দেশে ফেরার সময় স্বর্ণালংকার ও সোনার বার নিয়ে আসেন। এখন থেকে সোনা আনলে আগের চেয়ে দ্বিগুণ কর পরিশোধ করতে হবে। কয়েকদিন আগেও যেখানে এক ভরি স্বর্ণের জন্য ২ হাজার টাকা কর দিতে হতো, এখন তা বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা দিতে হবে। তার সাথে স্বর্ণের পরিমাণও কমানো হয়েছে। এত দিন সর্বোচ্চ ২৩৪ গ্রাম বা ২০ দশমিক শূন্য ৬ ভরি পর্যন্ত সোনা আনা যেত, যা কমিয়ে ১১৭ গ্রাম বা ১০ দশমিক শূন্য ৩ ভরি করা হচ্ছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে কর বৃদ্ধির এই প্রস্তাব তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ জাতীয় সংসদে এই বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা, ২০১৬–এর বিধি ৩–এর উপ-বিধি (১০) মোতাবেক একজন যাত্রী বিদেশ হতে আসার সময় ২৩৪ গ্রাম ওজনের স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড সকল প্রকার শুল্ক–কর পরিশোধ সাপেক্ষে আমদানি করতে পারেন। দেশে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি করার জন্য উক্ত স্বর্ণের পরিমাণ ২৩৪ গ্রামের পরিবর্তে ১১৭ গ্রাম করার প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে এর বেশি অতিরিক্ত স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড বহন করলে শাস্তির বিধান সুস্পষ্ট না থাকায় তা বাজেয়াপ্তকরণের লক্ষ্যে বিদ্যমান ব্যাগেজ বিধিমালা সংশোধন করার প্রস্তাব করছি।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় একজন যাত্রী বিদেশ থেকে আসার সময় স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড আনার ক্ষেত্রে প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রাম (এক ভরি) স্বর্ণের জন্য সর্বমোট ২ হাজার টাকা শুল্ক–কর পরিশোধ করে থাকেন। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রাম স্বর্ণের জন্য ৪ হাজার টাকা শুল্ক-কর পরিশোধের বিধান করার প্রস্তাব করছি।’
শুধুমাত্র ২০২২ সালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বৈধ উপায়ে প্রায় ৫৪ টন সোনা এসেছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। শুধুমাত্র বৈাধ উপায়ে আসা এসব স্বর্ণালংকারের পরিমাণ ২০২১ সালের তুলনায় ৫৩ শতাংশ বেশি। তবে সোনা আনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসার ওপর প্রভাব পড়ছে। সে জন্যই সোনা আনার ওপর কর বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলিতে গমের ভুসি আমদানি বাড়লেও দাম কম

ঈদুল আজহা ও দেশের বাজারে গোখাদ্যের বাড়তি চাহিদাকে সামনে রেখে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে গমের ভুসি আমদানি বেড়েছে। কিন্তু সম্প্রতি বোরো ধান ওঠায় বাজারে খড়ের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে গম ও ভুট্টার দাম কমায় চাহিদা কমেছে আমদানীকৃত গমের ভুসির।
কেজিপ্রতি ৮-৯ টাকা করে ভুসির দাম কমিয়ে দিয়েও ক্রেতা পাচ্ছেন না আমদানিকারকরা। কিছু ভুসির মান খারাপের কারণে আরো কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা ও পাইকার না পাওয়ায় আমদানি পণ্য বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারিতে বন্দর দিয়ে ৬০২টি ট্রাকে ১৩ হাজার ৬৮০ টন, ফেব্রুয়ারিতে ৮৪১টি ট্রাকে ১৯ হাজার ৬০৭, মার্চে ১ হাজার ৮টি ট্রাকে ২৩ হাজার ৯২৬, এপ্রিলে ১ হাজার ১৬২টি ট্রাকে ২৭ হাজার ২৭০ ও ২৯ মে পর্যন্ত ২২ কর্মদিবসে ১ হাজার ২৬৩টি ট্রাকে ২৯ হাজার ৮৮২ টন গমের ভুসি আমদানি হয়েছে।
আমদানি অব্যাহত থাকলেও দাম খানিকটা কম। বর্তমানে ভালোমানের গমের ভুসি প্রকারভেদে ৩৯-৪২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর চেয়ে একটু খারাপ ৩৬-৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর যেগুলো গোটা ধরে গেছে, সেগুলো ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি কেজি ৪৮-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
হিলি স্থলবন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুসি সরবরাহকারী আইয়ুব আলী বলেন, ‘সম্প্রতি বোরো ধান ওঠার কারণে বাজারে খড়ের সরবরাহ যেমন বেড়েছে, তেমনি এর দাম কম রয়েছে। সেসঙ্গে নতুন ধানের গুঁড়া বাজারে এসেছে। ফলে অনেক খামারি বা গরুর মালিকরা সেগুলো কিনে খাওয়াচ্ছেন। এতে দেশের বাজারে ভুট্টা ও গমের দাম কমতির দিকে।’

আরেক সরবরাহকারী সিদ্দিক হোসেন বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানের ক্রেতাদের চাহিদামতো আমরা হিলি স্থলবন্দর থেকে গমের ভুসি ক্রয় করে সেখানে পাঠাতাম। দেখা যাচ্ছে, গড়ে প্রতিদিন পাঁচ-সাত ট্রাক গমের ভুসি সরবরাহ করা হতো। এমন সময় গেছে ক্রেতাদের চাহিদামতো আমরা সরবরাহ করতে পারিনি। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ চিত্র উল্টো।
হিলি স্থলবন্দরের ভুসি আমদানিকারক হারুন উর রশীদ বলেন, ‘ঈদুল আজহাকে ঘিরে গোখাদ্য ভুসির আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। চাহিদা কমায় এরই মধ্যে ভুসির দাম কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা করে কমে গেছে। দাম কমার পরেও ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের বেশকিছু পণ্য বন্দরের ভেতরে কিছুদিন ধরে আটকা পড়ে ছিল।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বন্দর দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ভারত থেকে গমের ভুসির ব্যাপক আমদানি হচ্ছে। এতে সরকারের রাজস্ব আহরণ যেমন বাড়ছে, তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন যে আয় সেটিও বাড়ছে। সেসঙ্গে বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের আয় বাড়ায় তারাও বেশ খুশি ছিল। কিন্তু আগের তুলনায় বন্দরের ভেতরে পণ্যটির খালাস প্রক্রিয়া কিছুটা ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। আগে যেমন ভুসির ট্রাক বন্দরে প্রবেশের দু-তিনদিনের মধ্যেই আমদানিকারকরা খালাস করে নিতেন। এখন সেখানে ১৫-২০ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। এতে বন্দরের ভেতরে পণ্যবাহী ট্রাক হল্টেজ থাকার সংখ্যা বাড়ায় পণ্যজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে সে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
ব্যাংক ঋণ পরিশোধে আরও সময় চায় বিটিএমএ

প্রতিটি স্পিনিং মিলের ক্ষেত্রে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ৩০ মিলিয়ন থেকে ২০ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থের অভাবে মিলগুলো উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না। এর ফলে ব্যাপক লোকসানে পড়তে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোকে। তাই এসব মিলের ব্যাংক ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন।
মঙ্গলবার (৩০ মে) বিটিএমএ আয়োজিত টেক্সটাইল খাতের বিরাজমান সমস্যা ও উত্তরণ সংশ্লিষ্ট এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) অনিয়মিত বরাদ্দ ও ঋণের পরিমাণ কমেছে। প্রয়োজনীয় ডলারের অভাবে তুলা আমদানির জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক এলসি খুলতে পারছে না। রপ্তানিমূখী টেক্সটাইল স্পিনিং মিলগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ইডিএফ ফান্ড। আমাদের টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাণিজ্যে এই ফান্ডের ইতিবাচক প্রভাব দশ্যমান। তবে গত এক বছরে এ তহবিলটির আকার প্রতিটি স্পিনিং মিলের ক্ষেত্রে ৩০ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে ঋণের পরিমাণ কমেছে। অর্থের অভাবে মিলগুলো উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না। এর ফলে ব্যাপক লোকসানে পড়তে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
তিনি বলেন, মিলের ব্যাংক ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় চেয়ে ঋণের অর্থ ব্লক একাউন্টে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে সহজ শর্তে ঋণের কিস্তি পরিশোধের সুবিধাও চেয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জামানত প্রদানের কারণে স্পিনিং মিলগুলোর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ গত ১৫ মাসে (জানুয়ারি ২০২২ – মার্চ ২০২৩) প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি গভীর চক্রান্তের সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমানে ঘরে ঘরে পাকিস্তানি কাপড়ে ভরে গেছে। সরকার ২০৩০ সালে টেক্সটাইল ও ক্লথিং থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে খাতাটির এই নাজুক অবস্থা দীর্ঘদিন থাকলে সরকারের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।

এছাড়াও তিনি বলেন, স্পিনিং মিলগুলো তাদের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে, শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধসহ ইউটিলিটি বিল নিয়মিত প্রদানের জন্য লোকসানে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ অপেক্ষা ১৮ থেকে ২০ শতাংশ কম মূল্যে সুতা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে মিলগুলো। এতে গড়ে একটি মিলকে গ্যাস ব্যবহার না করেও বছরে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত গ্যাস বিল প্রদান করতে হবে।
বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট বলেন, আশা করেছিলাম করোনা পরবর্তী সময়ের পর থেকে আমাদের মিলগুলো ঈদুল ফিতরের বাজারটি পাবে। তবে তীব্র ডলার সংকটের পরেও ঈদুল ফিতরসহ সকল সময়ে বন্ডেড ওয়্যার হাউসের মাধ্যমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের আমদানি করা বিদেশি সুতা শহরের বড় শপিং মলগুলোতে অবাধে বিক্রয় করা হয়। এতে স্থানীয় মিলগুলোর অবস্থা সংকটের মধ্যে পড়েছে ।
তিনি বলেন, পাকিস্তান ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন থেকে আসা সুতা-কাপড়সহ বিভিন্ন ড্রেস-ম্যাটেরিয়েল বিভিন্ন নগরীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকার ইসলামপুরের বিক্রমপুর প্লাজাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এগুলো ব্যাপকভাবে বিক্রয় হচ্ছে। আমরা জানিনা সরকার এর মাধ্যমে কি পরিমাণ রাজস্ব পেয়েছে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায় এর ফলে দীর্ঘ দিনে গড়ে ওঠা প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতে বিদ্যমান ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি আজ অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে রয়েছে।
এসময় খোরশেদ আলম নামে এক উদ্যোক্তা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিকদের বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। আমার ৩৭ বছরের শিল্প জীবনে এমন গ্যাসের সংকট দেখা যায়নি। গ্যাসে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা থাকে না এ কারনে আমার একটা ইউনিট বন্ধ, অন্য ইউনিটের ৩৫ শতাংশ কাজ চলছে। বিদ্যুতের সমস্যাও ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে এলো আরও একটি জাহাজ

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি বসুন্ধরা ম্যাজেস্টি’।
সোমবার (২৯ মে) রাত ৯টায় বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়ীয়ার-৮নম্বর অ্যাংকোরেজে ভেড়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে আসা এ জাহাজটি। এরপর রাতেই শুরু হয় জাহাজ থেকে কয়লা খালাস ও পরিবহনের কাজ।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ‘টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের খুলনার সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, গত ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি বসুন্ধরা ম্যাজেস্টি ৩০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। এরপর জাহাজটি সোমবার রাত ৯টার দিকে বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়ীয়ার-৮ নম্বর অ্যাংকোরেজে ভেড়ে। জাহাজটি ভেড়ার পর রাতেই কয়লা খালাসের কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, খালাস করা কয়লা লাইটারেজে করে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে নেওয়া হচ্ছে। এরপর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটির নিজস্ব গ্রাস্পের (কামড়িকল) মাধ্যমে লাইটারেজ থেকে উত্তোলিত কয়লা স্বয়ংক্রিয় বেল্টে করে তা মজুত করা হচ্ছে গোডাউনে।
এর আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ১৬ মে মোংলা বন্দরে আসে জাহাজ ‘এমভি বসুন্ধরা ইমপ্রেস’।