শিল্প-বাণিজ্য
সুগন্ধি চালের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে

নিষেধাজ্ঞার প্রায় এক বছর পর সরকার সুগন্ধি চালের রপ্তানির অনুমতি দিতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। দেশে চালের বাজারে স্থিতিশীলতার জন্য গত বছরের জুনে সুগন্ধি চালের রপ্তানি বন্ধ করে দেয় সরকার।
সে সময় খাদ্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে রপ্তনি বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছিল। এবার দেশে চালের উৎপাদন ভালো হওয়ায় খাদ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি চালুর বিষয়ে সুপারিশ করায় এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্ধের আগে যাদের রপ্তানির অনুমতি নেয়া ছিল তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন করে সময় বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, প্রায় ৪১টি প্রতিষ্ঠানের রপ্তানির অনুমতি নেয়া ছিল। যে পরিমাণ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়, তার বেশিরভাগই রপ্তানি করতে পারেনি। এখন তারা নতুন আবেদন করলে তাদেরকে রপ্তানির অনুমতি দেয়া হবে।
জানা যায়, রপ্তানি বন্ধের আগে প্রতি বছর ৯,৫০০ থেকে ১০,৫০০ মেট্রিক টন সুগন্ধি চাল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ইউরোপ, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩৬টি দেশে রপ্তানি হতো।

বড় রপ্তানিকারকদের একটি হলো স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। রপ্তানি বন্ধের আগে এটির তিন হাজার মেট্রিক টনের অনুমতি নেয়া ছিল, কিন্তু তারা তা রপ্তানি করতে পারেনি।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অপারেশস অফিসার বলেন, ‘সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমরা যে রপ্তানি বাজার হারাতে বসেছিলাম সেটা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করব এবং দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারব।’
বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন মঙ্গলবার (২৩ মে) খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও রপ্তানিকারকদের নিয়ে একটি সভা করে।
ওই সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান জানান, দেশে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় খাদ্য মন্ত্রণালয় সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করে। দেশে এ বছর চাহিদা অনুযায়ী চাল উৎপাদন হওয়ায় সরকার কেস টু কেস ভিত্তিতে রপ্তানির বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তানিয়া ইসলাম বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আপত্তি না থাকলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানির বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করবে।
এ প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্ত হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেস টু কেস ভিত্তিতে সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি প্রদানের বিষয় বিবেচনা করবে এবং পরবর্তীসময়ে রপ্তানি নীতিতে সুগন্ধি চাল রপ্তানির বিষয়টি নিশ্চিতের জন্য কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বিশ্লেষণাত্নক প্রতিবেদন প্রদান করবে।
এ সময় রপ্তানিকারকেরা জানান, দেশে সুগন্ধি চালের উৎপাদন ১৮.৩৫ লাখ মেট্রিক টন। এর সর্বোচ্চ ২ শতাংশ পর্যন্ত রপ্তানি করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বাণিজ্য ঘাটতি কমে ১ হাজার ৫৭৩ কোটি ডলার

ডলার সংকট ও আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে ধারবাহিকভাবে কমছে বাণিজ্য ঘাটতি। এপ্রিল মাস শেষে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১ হাজার ৫৭৩ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৬৫ কোটি। ২০২২ সালের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭৬৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ঘাটতি কমেছে ৪৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। গত মার্চে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৪৬১ কোটি ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে চলতি হিসাবের লেনদেন ভারসাম্যের ঘাটতিও কমে হয়েছে ৩৭৭ কোটি ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৫৪৯ কোটি ডলার। এ হিসাবে কমেছে ১ হাজার ১৭২ কোটি ডলার।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ও চলতি হিসাবের পরিসংখ্যানের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে উভয় হিসাবেই আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঘাটতি কমেছে।
হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭৩ কোটি ডলার। এক বছর আগে গত মার্চে এ ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৭৬৯ কোটি ডলার। এ হিসাবে ঘাটতি কমেছে ১ হাজার ১৯৬ কোটি ডলার (১০.৯৬ বিলিয়ন)। শতকারা হিসাবে কমেছে ৪৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৮৭৮ কোটি ডলার, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের তুলনায় ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের আলোচিত সময়ে আমদানি খাতে ব্যয় ছিল ৬ হাজার ৮৬৭ কোটি ডলার।

চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত আমদানি ব্যয় ছিল ৫ হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার। এ হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ডলার বা ২৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রপ্তানি খাতে আয় হয়েছে ৪ হাজার ৯৭ কোটি ডলারের, যা গত অর্থবছরের আলোচিত সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ মাসে রপ্তানি থেকে আয় এসেছিল ৩ হাজার ৯৩১ কোটি ডলার।
চলতি অর্থবছর রেকর্ড ৩৩ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি এবং ১৮ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ে শুরু হয়েছিল। এর পর নানামুখী উদ্যোগে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসার প্রভাবে এ সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতিও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে। চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা মানে নিয়মিত লেনদেনে কোনো ঋণ করতে হয় না দেশকে। আর ঘাটতি থাকলে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।
রিজার্ভ কমে আসা এবং চলতি হিসাবে রেকর্ড ঘাটতির মধ্যে সরকার বাজেট সহায়তাসহ আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী ও দেশের কাছে অর্থায়নের চেষ্টা শুরু করে। এর অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার। এর প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই পেয়েছে বাংলাদেশ। কিস্তিতে অবশিষ্ট অর্থ পাওয়া যাবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।
অপরদিকে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে গত বুধবার ৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী জুন নাগাদ আরও কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে ঋণে অর্থ পাওয়ার আশায় রয়েছে বাংলাদেশ। এসব অর্থ ছাড় হলে চলতি হিসাবের ঘাটতি আরও কমে তা ভারসাম্য আনতে সহায়ক হবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে গত এপ্রিল শেষে সামগ্রিক লেনদেনের (ওভার অল ব্যালান্স) ঘাটতি দেখা দিয়েছে ৮৪০ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫২৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার কম। ২০২১-২২ অর্থবছরের এপ্রিলে ঘাটতির এ পরিমাণ ছিল ৮১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে, বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে, এপ্রিল শেষে যা দাঁড়িয়েছে ২১৬ কোটি ডলারে। ২০২১-২২ অর্থবছরের মার্চে এ হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল ১১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। গত মার্চে এ হিসাবে ঘাটতি ছিল ২২১ কোটি ডলার।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি

দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গত চারদিনে ৫ লাখ ৪ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এর বিপরীতে ভারত থেকে ১৫ হাজার টন পেঁয়াজ দেশে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সোমবার (৫ জুন) থেকে সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেবে বলে গত রোববার (৪ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। নিজেরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন ইচ্ছামতো। ঈদুল আজহার একমাস আগেই বাজারে পেঁয়াজের দাম হয়ে যায় আকাশচুম্বী।
গত শনিবার পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকায় উঠেছিল। রোববার সন্ধ্যায় পর দিন (সোমবার) থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার খবর আসে। সোমবার আইপিও দেওয়া শুরু হওয়ার পরপরই পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা পর্যন্ত কমে যায়। তবে ওইদিন খুচরা বাজারে দামে কোনো প্রভাব পড়েনি।

বুধবার দেশের পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। এর প্রভাবে কমেছে দেশি পেঁয়াজের দামও। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৪ টাকায়। তবে পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে দাম কমার প্রবণতা অনেক ধীর।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
আগামী ৬ বছর বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত চান বাণিজ্যমন্ত্রী

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) থেকে বের হওয়ার পরবর্তী ছয় বছর বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধার আওতায় রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের সমর্থন চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
আগামী বছরের শুরুতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৩তম মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে দেশগুলোর সমর্থন চান তিনি।
লন্ডনের মার্লবোরো হাউসে ৫ থেকে ৬ জুন অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ বাণিজ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মহামারি করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। এই সংকটে সদ্য এলডিসি থেকে উত্তরণপ্রাপ্ত দেশগুলো অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধার বাইরে গেলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তাই উত্তরণ পর্যায়ে থাকা স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অন্তত ছয় বছর অগ্রাধিকারমূলক বাজারের প্রবেশ সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে।
বাংলাদেশ গত বছরগুলোতে কমনওয়েলথের বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা কমনওয়েলথের ‘বিজনেস টু বিজনেস কানেকটিভিটি ক্লাস্টার’ লিড কান্ট্রি হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। এ ছাড়া দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্ত-কমনওয়েলথ বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছি।

অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই বাণিজ্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উপায় এবং কোভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও উদ্ভূত বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই ও স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে।
টিপু মুনশি জানান, বাংলাদেশ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেডের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি অনুমোদনকারী প্রথম এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে একটি কাগজবিহীন বাণিজ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার জাতীয় রোডম্যাপ তৈরি করছে।
এ সময় অংশ নেওয়া কমনওয়েলথ মন্ত্রীরা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত দেশ এবং ক্ষুদ্র ও দুর্বল অর্থনীতিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অবদান রাখে, তা নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত সহযোগিতা ও শক্তিশালী অংশীদারত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেন।
কমনওয়েলথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ গভীর করার জন্য প্রতিশ্রুতি জানান কমনওয়েলথ মন্ত্রীরা। তারা ২০৩০ সালের মধ্যে আন্তকমনওয়েলথ বাণিজ্য দুই ট্রিলিয়নে উন্নীত করার জন্য আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
দুই দিনে ৪ লাখ ৩৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি

দুই দিনে ৪ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এই অনুমতি দেয়া হয়।
অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজ আমদানিতে বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে গতকাল থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আমদানির তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, গতকাল থেকে আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৮ মেট্রিক টন আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে এসেছে। এদিকে আমদানির অনুমতির পর বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।
গত রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আমদানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পেঁয়াজ আমদানি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ শাখা থেকে আমদানির অনুমতি বা আইপি নিতে হয়। কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছিল মন্ত্রণালয়।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
প্রথম দিনে ভারত থেকে এলো ১৪৫৭ টন পেঁয়াজ

আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের বাড়তি দামে কয়েকদিনের মধ্যে অস্থির হয়ে ওঠে দেশের বাজার। দিশেহারা হয়ে পড়েন ক্রেতারা। অবশেষে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি মিলেছে। এর প্রভাবে বাজারে কমতে শুরু করেছে দামও। কয়েকদিন ধরে স্থানভেদে ৮৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। সেই পেঁয়াজের দাম এখন স্থানভেদে ১০-২৫ টাকা কমেছে।
এদিকে আমদানি অনুমতির প্রথম দিন সোমবার (৫ জুন) ভারত থেকে ১৪৫৭ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ১ হাজার ৯৭ টন, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন ও দিনাজপুরের হিলি দিয়ে ৪০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর
আড়াইমাস পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ফের পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। বিকেল থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে এ পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। এরইমধ্যে পেঁয়াজ ভর্তি ৫৭টি ট্রাক সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে। যেখানে ১ হাজার ৯৭ টন পেঁয়াজ এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ।
এর আগে সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ পেঁয়াজ এসেছিল সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে। এরপরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।

ভোমরা স্থলবন্দর
আমদানির অনুমতি প্রাপ্তির প্রথম দিনে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ১১ ট্রাক (৩০০ টন) ভারতীয় পেঁয়াজ এসেছে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এসব ট্রাক বাংলাদেশের ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করে বলে নিশ্চিত করেন ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা মন্টু বিশ্বাস।
ভোমরা বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন বলেন, কয়েকজন ব্যবসায়ী আইপি (আমদানির অনুমতি পত্র) পেয়েছেন। সন্ধ্যায় ১১ ট্রাক পেঁয়াজ ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেছে।
হিলি স্থলবন্দর
দীর্ঘ আড়াই মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়েও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে পেঁয়াজবোঝাই দুটি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশে করে। এতে ৪০ টন পেঁয়াজ আনে এন আলম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।