অর্থনীতি
দুই দেশ থেকে ৩৪৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার

৩৪৬ কোটি ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ে মরক্কো ও কানাডা থেকে ৮০ হাজার মেট্রিকটন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় এই সার কেনা হবে।
বুধবার (২৪ মে) অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি, এস.এ থেকে তৃতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার ১২০ কোটি ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২০০ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে পঞ্চম লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার ২২৬ কোটি ৬৮ লাখ ১৪ হাজার টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
১১ হাজার কোটি টাকায় ১৮ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৮০ কোটি ৭৮ লাখ পাওয়া যাবে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ফরিদপুর জেলাধীন মধুমতি নদীর বাম তীরের ভাঙন হতে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি যাদুঘর সংযোগ রাস্তাসহ অন্যান্য এলাকা সংরক্ষণ ও ড্রেজিং’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘নেত্রকোণা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘আশ্রয়ণ-২ (৫ম সংশোধন)’ প্রকল্প।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ‘১০টি মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ‘পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, পটুয়াখালী (১ম সংশোধনী)’ প্রকল্প; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন’ ও ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (এইচইএটি)’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভটি প্রজেক্ট-১: শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ (প্রস্তাবিত ১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ‘সাভার সেনানিবাস এলাকায় মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন’ প্রকল্প; ‘ডিজিএফআই এর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন (টিআইএইচডিটিসিবি) (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প; রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধনী)’ প্রকল্প, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের মেয়াদ ৪র্থ বার বৃদ্ধি’ প্রকল্প ‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড’ প্রকল্প; ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা’ প্রকল্প এবং ‘নড়াইল জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এই.ইউ
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পণ্য সংরক্ষণে অঞ্চলভিত্তিক গুদাম নির্মানের নির্দেশ

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পেঁয়াজ সংরক্ষণে অঞ্চলভিত্তিক গুদাম নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় পেঁয়াজের পাশাপাশি পচনশীল সব পণ্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণের নির্দেশ দেন তিনি।
মঙ্গলবার (০৬ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় ১৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এসময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অনুমোদিত ১৮টি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুঃসময়েও চমৎকার বাজেট উপহার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে আমরা ধন্যবাদ জানিয়েছি। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ও বিদ্যুৎকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়াটা গ্রহণযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বৈদেশিক ঋণের চাপ কমাতে জিটুজি ঋণের ব্যবহার বাড়াতে হবে। আমাদের জায়গা থেকে এসব অর্থ ব্যয়ে জোর দিতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া, অনাবাদি জমি চাষ বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ফরিদপুর জেলাধীন মধুমতি নদীর বাম তীরের ভাঙন থেকে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি যাদুঘর সংযোগ রাস্তাসহ অন্যান্য এলাকা সংরক্ষণ ও ড্রেজিং’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘নেত্রকোণা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘আশ্রয়ণ-২ (৫ম সংশোধন)’প্রকল্প।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ‘১০টি মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ‘পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, পটুয়াখালী (১ম সংশোধনী)’ প্রকল্প; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন’ও‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (এইচইএটি)’প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘বাগেরহাট কালেক্টরেটের নতুন ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প; নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১: শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন (২য় সংশোধিত)’প্রকল্প।
এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ (প্রস্তাবিত ১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ‘সাভার সেনানিবাস এলাকায় মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন’ প্রকল্প; ‘ডিজিএফআইয়ের টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন (টিআইএইচডিটিসিবি) (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প; রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধনী)’ প্রকল্প এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের মেয়াদ ৪র্থ বার বৃদ্ধি’ প্রকল্প।
অর্থসংবাদ/এস.ইউ
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চট্টগ্রাম কাস্টমসে মে মাসে রেকর্ড রাজস্ব আয়

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে গত মে মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৬.২২ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। মে মাসে ৪৭১৭ কেটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয় ৭৮৪০.৫৮ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের (২০২১-২০২২) মে মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের মে মাসে রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে ৫৩.৮৩ শতাংশ। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মে মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ৫০৯৬৮২ কোটি টাকা।
আবার চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৬৫৩০.৬৮ কোটি টাকা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ১১ মাসে রাজস্ব আয় হয়েছিলো ৫৩১৫৭.৩৩ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোঃ বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানি সীমিত করায় ক্রমাগত গত কয়েক মাসে কমেছিলো আমদানির পরিমাণ। ফলে কমে গেছে রাজস্ব আয়। তবে গত এপ্রিল, মে মাসে আমদানি বাড়ায় কাস্টমসের রাজস্ব আদায় বেড়েছে। আশা করছি জুন মাসেও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।’
বাজেটকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত মার্চ থেকে বাড়তে শুরু করেছে আমদানি। তবে নতুন বাজেট শুরু হওয়ার আগে গত কয়েকমাসের তুলনায় মে মাসে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে আমদানি। এর ফলে দেশের বৃহৎ শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসেও মে মাসে রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন বাজেটকে টার্গেট করে অর্থবছরের শেষের দিকে আমদানি বৃদ্ধির প্রবণতা থাকে। বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক বৃদ্ধির আশংকা থেকে মূলত আমদানিকারকরা বাড়তি পণ্য আমদানিতে নজর দেয়। এ কারণে অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে অর্থাৎ এপ্রিল, মে, জুন মাসে আমদানি পূর্বের মাসগুলোর তুলনায় বেড়ে যায়। ফলে চলতি অর্থবছরের শেষ দিকে আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ১,১৮৮৩ টিইইউস (টুয়েন্টি ফুট ইকুয়েভিলেন্ট ইউনিট)। এপ্রিলে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিলো ১,০৭,৭৫২ টিইইউস। অর্থাৎ মে মাসে এপ্রিলের তুলনায় ৯১৩১ টিইইউ বেশি আমদানি হয়েছে।
গত মার্চে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিলো ৯৮,৭৩৬ টিইইউস। এপ্রিলে মার্চ মাসের তুলনায় আমদানি বেড়েছিলো ৯০১৬ টিইইউস। সেই হিসেবে দুই মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ মার্চ মাসের তুলনায় মে মাসে আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৮,১৪৭ টিইইউস।
এদিকে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে দেশে সার্বিক রপ্তানি আয় ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মে মাসে কমেছে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং। মে মাসে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৫০২৭৭ টিইইউস। এপ্রিল মাসে রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছিলো ৫৫৯৪০ টিইইউস। আর মার্চ মাসে রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয় ৫৫১৬০ টিইইউস।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘দেশে আমদানি বৃদ্ধির হওয়া অর্থনীতির জন্য সুখবর। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তীব্র ডলার সংকট তৈরি হয়। তাই চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানি করা যাচ্ছিল না। আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে যেমন সাপ্লাই চেইনে উন্নতি ঘটবে, তেমনি রাজস্ব আয়ও বাড়বে।’
টানা পাঁচ মাস কমার পর মে মাসে রাজস্ব আয়ে রেকর্ড চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের
টানা ৫ মাস রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পর মে মাসে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে কাস্টমসের। শুধু তাই নয় মে মাসে অর্থবছরের ১১ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ডও হয়েছে। এর আগে চলতি অর্থবছরের সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় হয়েছিলো গত আগস্ট মাসে ৫৪৯৮.৪৮ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়, গত এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে কাস্টমসের রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিলো ১.৫২ শতাংশ। মে মাসে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্বক হওয়ার আশংকা করেছিলেন কাস্টমস সংশ্লিষ্টরা। তবে মে মাসে রেকর্ড আয় হওয়ায় সার্বিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৫৩ শতাংশ।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেশি হয় এমন পণ্য গাড়ি, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিক্স সহ বিলাসজাতীয় পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কমে গেছে। তবে বাজেটের আগে মে মাসে গাড়ি আমদানি বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বেড়ে যায়।
মে মাসে জাপান থেকে দুটি জাহাজে আমদানি হয়েছে ২৬৪১টি গাড়ি, যা চলতি অর্থবছরের মধ্যে মাস হিসেবে সর্বোচ্চ গাড়ি আমদানির রেকর্ড। এসব গাড়ির মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয় ১,০০৯টি। বাকিগুলো খালাস হয়েছিলো মোংলা বন্দরে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা। আর জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭৩৬৪ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসের মধ্যে ৫ মাসে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্বক। অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ০.১৭ শতাংশ ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধি হয়। এরপর অক্টোবর, নভেম্বরে পজিটিভ প্রবৃদ্ধি হলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ক্রমাগত ঋণাত্বক প্রবদ্ধি হয়। এর ফলে কাস্টমসের সার্বিক প্রবৃদ্ধিও ক্রমাগত কমে যায়।
তবে মে মাসে রেকর্ড রাজস্ব আদায় কাস্টমসের সার্বিক রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। চলতি জুনে এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছর শেষে কাস্টমসে ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হবে বলে আশা করছেন তারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সাত বছরে ৭২ বার পেছালো বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির প্রতিবেদন

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আবারও পিছিয়েছে। এ নিয়ে গত সাত বছরে প্রতিবেদন দাখিলের দিন ৭২ বারের মতো পেছলো। সোমবার (৫ জুন) মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
আগামী ৩১ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ধার্য করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। জালিয়াত চক্র সেই টাকা ফিলিপাইনে পাচার করে।
ঘটনার পর ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। আন্তর্জাতিক জালিয়াতচক্রের সঙ্গে দেশের জালিয়াতচক্র জড়িত থাকতে পারে, এমন সন্দেহ থেকেই মামলাটি করা হয়।
আর পরদিন ১৬ মার্চ তদন্ত করে সিআইডিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর থেকে গত সাত বছরে ৭২ বার সময় নিয়েও প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশ মে মাসে ৪.০৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রফতানি করেছে

বাংলাদেশ মে মাসে পোশাক রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে ৪ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
গত মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার মূলের ওভেন পোশাক রপ্তানি করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ২৩ দশমিক ১৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আর নিট পোশাক রফতানি করেছে দুই দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার ৩২ দশমিক ৫৩ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
সোমবার (৫জুন) বিজিএমইএ- এর পরিচালক মহিউদ্দিন এই তথ্য জানিয়েছেন।
মে মাসে মোট পোশাক রফতানিতে ৪ দশমিক ০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৮ দশমিক ৩৩ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার।

এতে দেখা যায়, বাংলাদেশ গত মাসে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে পিছিয়ে রয়েছে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার বা ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
সেই আলোকে চলতি ১১ মাসে (জুলাই-মে) পর্যন্ত পোশাক রফতানি করে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৪২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।
যেখানে গত ২০২১-২২ অর্থবছর (জুলাই-মে) প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৮ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ জুলাই-মে সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশের বেশি।