পুঁজিবাজার
মৃত ব্যক্তিকে বিমা কোম্পানির পরিচালক দেখিয়ে নেয়া হলো ঋণ

প্রায় এক যুগ আগে মৃত ব্যক্তিকে এখনো পরিচালক হিসেবে দেখাচ্ছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি বিমা কোম্পানি। একইসঙ্গে মৃত ব্যক্তির শেয়ার বন্ধক রেখে একটি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণও নেওয়া হয়েছে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটিয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। গত দশ বছর ধরে মৃত ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক দেখানোর বিষয়টি স্বীকারও করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে মৃত ওই পরিচালকের নামের কিছু অংশ পরিবর্তন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। অর্থসংবাদের অনুসন্ধানে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ধারাহিক তিন পর্বের প্রথম পর্ব থাকছে আজ।
সূত্র মতে, রুপালী ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন খান ২০১২ সালের ১৮ মে ধানমন্ডির কম্পোর্ট নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অথচ ১১ বছর পরও নাজিম উদ্দিনকে নিজেদের পরিচালক হিসেবে দেখাচ্ছে রুপালী ইন্স্যুরেন্স।
জানা গেছে, ২০১০ সালে নাজিম উদ্দিন খান ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) খোলেন। বিও হিসাব নং: ১২০১৯৫০০৩৯৩৩১৩৬৩। তাঁর বিও হিসাবে বর্তমানে রুপালী ইন্স্যুরেন্সের ২১ লাখ ১৫ হাজার ৮০২টি শেয়ার রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে ১৮ লাখ ৩১ হাজার ৮৬৪টি শেয়ার বন্ধক দেখানো হচ্ছে ইবিএল সিকিউরিটিজ থেকে। অনুসন্ধানে জানা গেছে ইবিএল সিকিউরিটিজ থেকে উত্তরা ফাইন্যান্স ক্যাপিটালে এ শেয়ারগুলো বন্ধক (Pledge) দেওয়া হয়েছে। কিভাবে এই শেয়ার বন্ধক দেওয়া হলো তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি ইবিএল সিকিউরিটিজ এবং রুপালী ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালে নাজিম উদ্দিন খানের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী-সন্তানরা রুপালী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বুঝে নিতে চাইলেও কালক্ষেপন করতে থাকে কোম্পানিটি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিআইবি (সেন্ট্রাল ইনফরমেশন ব্যুরো) প্রতিবেদন অনুযায়ী নাজিম উদ্দিনের নামে কোন ঋণ নেই। তাহলে প্রশ্ন উঠেছে নাজিম উদ্দিনের শেয়ার বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছে কে? কিভাবে ইবিএল সিকিউরিটিজ থেকে উত্তরা ফাইন্যান্সে লিয়েন করে ঋণ নেওয়া হলো? আর এই ঋণের অনুমতিই দিয়েছে কে? এসব প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি কোন প্রতিষ্ঠান থেকেই।
সূত্র জানায়, উচ্চ আদালতের আদেশের পর গত ২ মে মৃত পরিচালকের উত্তরাধিকারীদের শেয়ার বুঝে নিতে অনাপত্তি দেয় রুপালী ইন্স্যুরেন্স। যদিও এখনো পর্যন্ত শেয়ার বুঝে নিতে পারেননি নাজিম উদ্দিন খানে উত্তরাধিকারীরা। রুপালী ইন্স্যুরেন্স, উত্তরা ফাইন্যান্স এবং ইবিএল সিকিউরিটিজের যোগসাজশে তাঁরা শেয়ার বুঝে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। নাজিম উদ্দিন খানের পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১৮ই মে ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে নাজিম উদ্দিনের শেয়ার কার নির্দেশে কবে বন্ধক রাখা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মৃত নাজিম উদ্দিন খানের বড় ছেলে সিরাজ উদ্দিন খান মিন্টু অর্থসংবাদকে বলেন, আমার বড় মামা একসময় রুপালী ইন্স্যুরেন্সের পরিচালক ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর বড় মামি এসব বিষয় দেখভাল করতেন। আমরা তখন এসব বিষয়ে বুঝতাম না। এখন উচ্চ আদালতের আদেশের পর রুপালী ইন্স্যুরেন্স শেয়ার স্থানান্তরে অনাপত্তি দিয়েছে। অনাপত্তি পেয়ে ইবিএল সিকিউরিটিজে যোগাযোগ করলে জানতে পারি শেয়ারগুলো বন্ধক দেওয়া অবস্থায় আছে। তবে কেন বন্ধক রয়েছে, সে বিষয়ে তাঁরা কিছু বলছে না। তাঁরা সিডিবিএল থেকে শেয়ার লক ফ্রি করতে বলেছে। পরে আমরা সিডিবিএলে যোগাযোগ করলে সংস্থাটি জানায় এটি তাদের কাজ নয়। বরং সিডিবিএল থেকে আমাদের এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে বলা হয়।
এদিকে মো. নাজিম উদ্দিন খান ২০১২ সালে মারা গেলেও গত এক যুগ ধরেই তাকে রুপালী ইন্স্যুরেন্সের পরিচালক দেখাচ্ছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। যদিও মো. নাজিম উদ্দিন খানকে শুধু নাজিম উদ্দিন হিসেবে দেখাচ্ছে রুপালী ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির অন্যান্য পরিচালকের ছবি থাকলেও বার্ষিক প্রতিবেদনে নাজিম উদ্দিনের কোন ছবি নেই। এছাড়াও ইবিএল সিকিউরিটিজ নাজিম উদ্দিন খানের বিও হিসাবের ছবি পরিবর্তন করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বজনরা। তার সত্যতাও মিলেছে অর্থসংবাদের অনুসন্ধানে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছায়েদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির সিডিবিএলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরহাদ মোর্শেদ সনি অর্থসংবাদকে বলেন, মো. নাজিম উদ্দিনের বিও হিসাব বিএসইসি স্থগিত করে রেখেছে। বিএসইসিতে স্থগিতের জন্য উনার উত্তরাধিকারীরাই আবেদন করেছে। আমরা তো জিম্মাদার। উনাদের বলেছি স্থগিতাদেশ তুলে নিন।
তিনি বলেন, উত্তরা ফাইন্যান্সে কিভাবে শেয়ার লিয়েন (বন্ধক) করা হয়েছে সেটি ক্লায়েন্ট (নাজিম উদ্দিন) আর রুপালী ইন্স্যুরেন্স বলতে পারবে। ক্লায়েন্টের বিও হিসাবের নাম আর ডেথ সার্টিফিকেটের নামে মিল নেই। মূলত ইবিএল সিকিউরিটিজ এ বিষয়ে কিছুই জানে না।
ফরহাদ মোর্শেদ বলেন, তাদেরকে অসহযোগিতা করার কিছুই নেই। হাইকোর্টের আদেশ যেহেতু নিয়ে আসছে আমরা দিতে বাধ্য। কিন্তু বিও হিসাব স্থগিত থাকায় আমরা শেয়ার বুঝিয়ে দিতে পারছি না। তবে নাজিম উদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিও হিসাব স্থগিত করার জন্য তাঁরা কোথাও কোন আবেদনই করেনি।
জানতে চাইলে উত্তরা ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান বলেন, কি কারণে শেয়ার বন্ধক রাখা হয়েছে, তা সুস্পস্টভাবে বলা কঠিন। মূলত ঋণের বিপরীতে শেয়ার বন্ধক রাখা হয়। শেয়ার বন্ধক আমাদের কাছে থাকলেও বন্ধকের কারণ আমরা বলতে পারবো না। এটি মূল কোম্পানি বলতে পারবে।
রুপালী ইন্স্যুরেন্সর কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আতিকুর রহমান অর্থসংবাদকে বলেন, নাজিম উদ্দিন খান ২০২২ সাল পর্যন্ত পরিচালক ছিলেন, এখন আর নেই। তিনি যে ২০১২ সালে মারা গেছে সেটি আমাদের কেউ জানায়নি। তাই এতদিন পর্ষদে ছিলেন। একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পরও কিভাবে পরিচালক নির্বাচিত হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এগুলো পরিচালকদের বিষয়। আমি ফোনে এসব বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না।
২০১২ সালে মারা গেলে ২০১৭ সালে কিভাবে শেয়ার বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে কোম্পানি সচিব বলেন, সেটি আমি জানি না। এটি যাদের শেয়ার তাঁরা জানে। লিয়েন করতে কি কোম্পানিকে জিজ্ঞেস করতে হয়? মূলত আমি ওই সময় রুপালী ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানি সচিব ছিলাম না। তবে আমরা এখন নাজিম উদ্দিন খানের উত্তরাধিকারীদের শেয়ার হস্তান্তরের অনুমতি দিয়েছি। শেয়ার হস্তান্তর যেহেতু পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের বিষয়, তাই একটু দেরি হয়েছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন অর্থসংবাদকে বলেন, যদি এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকে সেটি অবশ্যই নজিরবিহীন, চাঞ্চল্যকর এবং অনিয়ম। শেয়ার লিয়েন এবং প্লেজ করা বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব না। এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকলে বোর্ডের সবাই এর জন্য দায়ী। একজন মৃত ব্যক্তি তো দূরের কথা, কেউ বোর্ড মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকলে সেটির কারণও জানাতে হয়। সেখানে মৃত ব্যক্তিকে পর্ষদে রাখাতো বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়া সম্ভব নয়। এর জন্য পুরো বোর্ডই রেসপন্সিবল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচাল মো. রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এসআরএমআইসি বিভাগ এ বিষয়টি দেখভাল করে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কমিশন দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, ১৯৫৭ সালের উত্তরাধিকার আইনের ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী নাজিম উদ্দিন খানের স্ত্রী-সন্তানদের রুপালী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বুঝিয়ে দিতে আদেশ দেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী, নাজিম উদ্দিন খানের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে- তাঁর স্ত্রী হাজী রোকেয়া বেগম ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪৭৫টি শেয়ার পাবেন। দুই ছেলে ৪ লাখ ৬২ হাজার ৮৩১টি করে শেয়ার পাবেন। আর চার কন্যা রহিমা জামান, ফাহিমা ওয়াহিদ, শামীমা নামিজ এবং সায়মা নাজিম প্রত্যেকেই পাবেন ২ লাখ ৩১ হাজার ৪১৫টি শেয়ার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
প্রস্তাবিত বাজেট পুনর্বিবেচনার দাবি ডিএসইর

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারবান্ধব নীতি বলবত রাখায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে অভিনন্দন জানিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে চারটি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার (৩ জুন) ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার পুঁজিবাজারকে আন্তর্জাতিকীকরণের লক্ষ্যে নানাবিধ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুঁজিবাজারের সহায়ক ইকোসিস্টেম ও সার্বিক সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন করার জন্য আগের বছরের বাজেটের পুঁজিবাজারবান্ধব নীতি বলবত রাখায় ডিএসই অর্থমন্ত্রীকে আবারও অভিনন্দন জানাচ্ছে৷
একইসাথে ডিএসই পুঁজিবাজারকে প্রাণবন্ত ও বিনিয়োগবান্ধব করার লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দাবিগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছে।
ডিএসইর দাবিগুলো হলো

১. বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি
বর্তমানে কর্পোরেট বন্ডের বাজারের আকার খুবই ছোট যা এটি পুঁজিবাজারের পাশাপাশি অর্থ বাজারেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। একটি কার্যকরী বন্ড বাজার অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যদি সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা হলে একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে।
২. লভ্যাংশ আয়ের ওপর উৎসে কর সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হিসেবে বিবেচনাকরণ
কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, লভ্যাংশের ওপর কর এক ধরনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের করারোপণ। লভ্যাংশের ওপর উৎস কর চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচিত হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে৷
৩. স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেকহোল্ডারদের উৎসে কর কমানো
ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার (ব্রোকারেজ হাউজের মালিক) কোম্পানির প্রধান আয় (অর্থাৎ টার্ন-ওভার) হচ্ছে কমিশন। যদি বেশি হারে কর নেওয়া হয়, তবে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হবে।
৪. তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোর জন্য হ্রাসকৃত-রেয়াতযোগ্য হারে কর আরোপ
ডিএসইর তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কর প্রদান করতে হয়, যা কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং এসএমই কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ হারাচ্ছে। ফলে এ সব কোম্পানির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কর আদায় সম্ভব হচ্ছে না। যদি এই জাতীয় কোম্পানিগুলোকে হ্রাসকৃত হারে কর ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে উক্ত কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে সরকারের কর আদায় বৃদ্ধি পাবে।
ডিএসইর প্রত্যাশা, সরকারের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে উল্লেখিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করলে বাজারে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং জাতীয় অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। এতে করে বেসরকারি খাত আরেও শক্তিশালী ও বিকশিত হয়ে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হবে যা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি আকৃষ্ট করবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে জীবন বীমা খাত

বিদায়ী সপ্তাহে (২৮মে-১জুন) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে জীবন বীমা খাত। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ অবদান রয়েছে এই খাতে।
ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে,জীবন বীমা খাতে ১৫ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সাধারণ বীমা খাতে ১৪.৮ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
তালিকায় থাকা অন্য খাতগুলোর মধ্যে আইটি খাতে ৮.৯ শতাংশ,খাদ্য খাতে ৮ শতাংশ, ফার্মা খাতে ৭.২ শতাংশ, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে ৬ শতাংশ, বিবিধ খাতে ৫.৮ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ৫.৪ শতাংশ, ভ্রমণ-অবকাশ খাতে ৪.৯ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ৪.৮ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ৪.৬ শতাংশ, কাগজ খাতে ৪.২ শতাংশ, সেবা খাতে ৩.১ শতাংশ, ট্যানারি খাতে ২.৩ শতাংশ, ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও আর্থিক খাতে ১.২ শতাংশ, পাট খাতে ০.৭ শতাংশ ও সিরামিক খাতে দশমিক ০.৬ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
পিপলস লিজিংয়ের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করলেন হাইকোর্ট

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পিকে হালদারের লুটপাটের শিকার আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের (পিএলএফএসএল) পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হাসান শহীদ ফেরদৌসকে।
সম্প্রতি বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ পিএলএফএসএল’র বোর্ড পুনর্গঠন করে আদেশ দেন।
পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা হলেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী আনোয়ারুল হক, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) কাজী তৌফিকুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম, মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম রানা, সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি আতিকুর রহমান এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিনই মামলার শুনানি শেষে অবসায়নের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া অবসায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজনকে অবসায়ক নিয়োগ দিতে বলা হয়। পরে সাময়িক অবসায়ক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ওই মামলার ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে আদালত পিপলস লিজিংয়ের বিভিন্ন ঋণ খেলাপিদের তলব করেছিলেন।

পরে আমানতকারীরা কোম্পানিটি অবসায়ন না করে পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দেন। এরপর ২০২১ সালের ২৮ জুন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডকে (পিএলএফএসএল) পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। গঠন করে দিয়েছিলেন বোর্ডও। কিন্তু বোর্ডের সদস্যদের পদত্যাগ, স্বাস্থ্যগত কারণে মিটিংয়ে হাজির না হওয়ার কারণে কোম্পানি পরিচালনায় সমস্যা হলে পিএলফএসএল’র পক্ষে একটি আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড পুনর্গঠন করলেন হাইকোর্ট।
আদালতে পিএলএফএসএলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম ও কাজী এরশাদুল আলম।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে

বিদায়ী সপ্তাহে (২৮মে-১জুন) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে ডিএসইর পিই রেশিও দশমিক ০৩ পয়েন্ট বা দশমিক ২০ শতাংশ কমেছে।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ১৪.৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৪.৫৫ পয়েন্ট।
খাতভিত্তিক হিসাবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭.৫ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ১২.৩ পয়েন্ট, সিরামিকস খাতে ৪৩.১ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতে ৭১.৯ পয়েন্ট, খাদ্য খাতে ১৮.৬ পয়েন্ট, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে ১৬.১ পয়েন্ট, সাধারণ বিমা খাতে ১৭.৭ পয়েন্ট, আইটি খাতে ২৫.৪ পয়েন্ট, বিবিধ খাতে ১৪.১ পয়েন্ট, আর্থিক খাতে ৪২.৬ পয়েন্ট,ওষুধ খাতে ১৮ পয়েন্ট, সেবা-আবাসন খাতে ২৪.৪ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতে ৩৬.৮ পয়েন্ট, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ১৬.৩ পয়েন্ট ও ভ্রমণ-অবকাশ খাতে অবস্থান করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষে জুট স্পিনার্স

বিদায়ী সপ্তাহে (২৮মে-১জুন) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দর পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে জুট স্পিনার্স লিমিটেড।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানির দর কমেছে ১৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বমোট ৩ কোটি ৬৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার দর কমেছে ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বমোট ২১ কোটি ৪৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৭ হাজার ৮০০ টাকা।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বমোট ২৪ কোটি ৫৯ লাখ ৮ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ৪ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার ৬০০ টাকা।

তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে– দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ১২.৬৬ শতাংশ, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ১০.১৯ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের ৯.১৭ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের ৮.৫৬ শতাংশ, বিজিআইসির ৮.০১ শতাংশ, আজিজ পাইপসের ৬.৭৮ শতাংশ এবং গ্লোবাল ইন্সুরেন্সের ৬.৫২ শতাংশ।