জাতীয়
সংবিধানে কর্মকর্তা বলে কিছু নেই, সবাই কর্মচারী

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, সংবিধানে কর্মকর্তা বলে কোনো শব্দ নেই৷ আইনগতভাবে সবাই আমরা কর্মচারী। আমরা একটু খুশি হওয়ার জন্য কর্মকর্তা বলি। কিন্তু দেশের জনগণই আমাদের কর্তা। তাদের সম্মান করতে হবে৷ তাদের সেবা করতে হবে৷ জনগণই দেশের মালিক। সরকারি কর্মচারীদের প্রধান কাজই জনগণের সেবা করা।
আজ শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শহীদ তালেব ও কৃপেন্দ্র দাসের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু শেখ হাসিনা। তিনি গ্রামাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন। ভারতের চেয়েও আমরা এগিয়ে। বিদ্যুৎ ঘরে ঘরে দিয়েছি আমরা যা ভারত পাকিস্তানেও নেই। আরো অনেক কিছুতেই এগিয়ে আছি আমরা। আমাদের বীর সৈনিকরা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তাদের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে৷ তাদেরকে মনে রাখতে হবে৷ স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতার আদর্শকে বুকে লালন করে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে৷
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার উজ জামানের সভাপতিত্বে ও সমবায় কর্মকর্তা মাসুদ আহমদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম, শান্তিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সকিনা আক্তার, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রানী তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিতাংশু শেখর ধর সিতু, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসেন।
সভা শেষে দুপুরে পরিকল্পনামন্ত্রী শান্তিগঞ্জ উপজেলার ঈশাখপুর-শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাসসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। খবর বাসস।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
হাইকমিশনার বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।
যুক্তরাজ্যের নতুন হাইকমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ব্রিটেন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও কারিগরি উন্নয়নে যুক্তরাজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে প্রথমেই যুক্তরাজ্যে পদার্পণ করলে তাকে ব্যাপক সম্মান দেয়ায় রাষ্ট্রপতি তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও বৃটেনের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, সেই থেকেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের একসঙ্গে পথ চলা শুরু এবং কালের পরিক্রমায় এই সম্পর্ক আজ দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি যুক্তরাজ্যের নতুন রাজাকে অভিনন্দন জানান।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অংশীদারিত্ব মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বডুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহ উদ্দিন ইসলাম ও সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান ১৫-২০ দিনের মধ্যে

আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বিশ্ব সমুদ্র দিবস উপলক্ষ্যে এক সেমিনারে অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মন্দা ও যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এই সমস্যার জন্য আমরা দুঃখিত। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, এটা আসলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্ভাগ্য। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ৩৬শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন যেকোনো সময় ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা এই সরকারের আছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল। এখন দেশের শতভাগ মানুষ এর আওতায় এসেছে।
তিনি আরও বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ পেয়ে মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। এখন সব জায়গায় এসি চলে। আজ থেকে ১৪ বছর আগে এগুলো কখনো ভাবেনি মানুষ। মানুষের জীবনযাত্রায় বিশাল পরিবর্তন এসেছে। আমরা কী তাহলে ভুল করেছি এত সুযোগ সুবিধা দিয়ে। নিশ্চয় তা করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই অসুবিধাটা সাময়িক। খুব দ্রুত সমাধান হবে।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা আজ বড় গলায় কথা বলেন। তারা মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারেননি এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালিয়েছেন। বিদ্যুৎ দেওয়ার নাম করে খাম্বা দিয়েছেন। আর আমরা মানুষকে শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি, মানুষের অভ্যাসে পরিবর্তন হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্লথগতির শঙ্কা বিশ্বব্যাংকের

বৈশ্বিক অর্থনীতি আগামী কয়েক বছরে শ্লথগতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি জানিয়েছে, উচ্চ সুদহার, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি ও ব্যাংক খাতের অব্যাহত সংকটের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এরই মধ্যে তীব্রভাবে কমেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটির সম্প্রতি প্রকাশিত অর্ধবার্ষিক গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বলছে, চলতি বছর বৈশ্বিক প্রকৃত জিডিপি ২ দশমিক ১ শতাংশ বাড়বে। এ প্রাক্কলন হিসাব জানুয়ারিতে প্রকাশিত ১ দশমিক ৭ শতাংশের তুলনায় বেশি, কিন্তু ২০২২ সালের ৩ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় অনেক কম।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্ডারমিট গিলের মতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত অর্থনীতিগুলোও চলতি বছরে বাড়বে মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ হারে। গত বছরের রেকর্ড ২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় যা উল্লেখযোগ্য পতন। এছাড়া এটি হতে যাচ্ছে পাঁচ দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল প্রবৃদ্ধির হারগুলোর একটি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বের অর্থনীতি এখনো অনিশ্চিত। আগামী বছরের শেষ নাগাদও উন্নয়নশীল বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশের মাথাপিছু আয় ২০১৯ সালের শেষের দিকে যা ছিল তার চেয়ে কম থাকবে। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশের জন্য এটি পাঁচটি হারিয়ে যাওয়া বছর হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
তবে সর্বশেষ প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাংকের জানুয়ারির প্রাক্কলনের তুলনায় সামান্য উন্নতি চিহ্নিত করেছে। এর আগের প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছিল, বৈশ্বিক অর্থনীতি এ বছর প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। যেখানে নতুন প্রাক্কলনে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২ দশমিক ১ শতাংশ।
জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছিল, বৈশ্বিক জিডিপি মন্দার দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতিও এখন চাপের মধ্যে। ২০২৩ সালের জন্য বিশ্বব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ১ শতাংশ হিসাবে প্রাক্কলন করেছে। জানুয়ারির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের প্রাক্কলনের তুলনায় যা দ্বিগুণেরও বেশি। এদিকে চীনের প্রবৃদ্ধি এ সময় ৫ দশমিক ৬ পর্যন্ত উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা জানুয়ারির ৪ দশমিক ৩ শতাংশের তুলনায় কিছুটা বেশি।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক কঠোরতা এবং ব্যবসায়িক, আবাসিক বিনিয়োগে আরো সীমাবদ্ধ ক্রেডিট শর্তের কারণে উন্নয়ন ঋণদাতা সংস্থাটি জানুয়ারিতে ২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন ২ দশমিক ৭ শতাংশ করলেও নতুন প্রাক্কলনে কিছুটা কমিয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। এ কারণগুলো ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন আরো কমিয়ে আনবে এমনটাও আশঙ্কা। তবে ২০২৫ সালের প্রাক্কলনে প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে ৩ শতাংশ।
ফেডারেল রিজার্ভ ও অন্যান্য বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় ব্যাংক উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার জন্য একটি কঠোর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক দশকের মধ্যে দ্রুততম গতিতে সুদহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণ প্রদানের খরচ বাড়ার কারণে নিম্ন আয়ের দেশগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উচ্চ সুদের হুমকি এবং সম্প্রতি কয়েকটি মার্কিন ব্যাংক ধসে পড়ায় ব্যাংকিং সেক্টরে আরো অস্থিরতা বাড়তে পারে। ফলে চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো কমার আশঙ্কা রয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্ব অর্থনীতি এখনো অবরুদ্ধ। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে সংকট এবং রেকর্ড পরিমাণ ঋণের কারণে অনেক দেশ ক্রমেই দরিদ্র হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে চায় যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক বলেছেন, পারস্পরিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দেবে যুক্তরাজ্য।
তিনি বলেছেন, বহু বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের মধ্যে সুসর্ম্পক রয়েছে।
বুধবার (৭ জুন) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ভবনে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
বৈঠক শেষে সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের জানান, ব্রিটিশ হাইকমিশনার নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলেননি। বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষিত নার্স নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও বাড়াতে চায় দেশটি।
তিনি বলেন, ‘পণ্য বৈচিত্র্যকরণ করে যুক্তরাজ্যে কিভাবে রপ্তানি বাড়াতে পারে বাংলাদেশ; সে ব্যাপারে কথা হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইটি, কৃষি এবং সেবা খাতে বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশটি আমাদের দেশ থেকে প্রশিক্ষিত নার্স নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের নার্সের সংকট রয়েছে। আমি যখন লন্ডনে ছিলাম, তখন তাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছিলেন।’
‘আমি বলেছি, আমাদের এখানেও দক্ষ নার্সের চাহিদা আছে। ভবিষ্যতে দেশে নার্সের চাহিদা পূরণ হলেই তবে এটা নিয়ে চিন্তা করা যাবে।’
সালমান এফ রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশে বিমান চলাচল খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য একটি ‘অ্যাভিয়েশন পার্টনারশিপ’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে এয়ারবাস থেকে যাত্রীবাহী ও কার্গো বিমান কেনার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত আছে। এই ঘোষণাপত্রের আওতায় যুক্তরাজ্য আমাদের এখানে একটি কর্মশালা করতে চায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ফার্নেস অয়েলের মজুত আছে ১০ দিনের

ডলার সংকটে আটকা পড়েছে ফার্নেস অয়েল আমদানি। ঋণপত্র খুলতে পারছে না বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (আইপিপি)। একই অবস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনেরও (বিপিসি)। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে পারছে না। এতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন।
অপরদিকে আমদানি করতে না পারায় বেসরকারি মালিকরাও ফার্নেস অয়েলের জন্য বিপিসির সঙ্গে যোগযোগ করছে। বিপিসি বলছে, হঠাৎ ফার্নেস অয়েলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তাদের মজুত ফুরিয়ে আসছে। তাদের হাতে এই মুহূর্তে ৭ জুন পর্যন্ত ২৯ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল মজুত আছে। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন চাহিদা ধরলে এই মজুত দিয়ে ১০ দিন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চলবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ অবস্থায় লোডশেডিং আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দেশে এই মুহূর্তে ফার্নেস অয়েল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে কমপক্ষে ৬ হাজার মেগাওয়াট।
চলমান এই সংকটের কারণে ফার্নেস অয়েলভিত্তিক প্রায় সব বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রয়েছে। বিপিসি বলছে, এ অবস্থায় ১০ দিন পর কমপক্ষে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাবে। এতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও দ্বিগুণ বাড়বে।
বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকরা বলেছেন, পিডিবির কাছে তাদের বিদ্যুৎ বিক্রির বকেয়া বিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। তারা চরম তারল্য সংকটে পড়েছেন। পাশাপাশি আছে ডলার সংকট। জ্বালানির জন্য তাদেরও ভরসা এখন বিপিসি। কিন্তু বিপিসি বলছে, ২৫ জুনের আগে নতুন করে আর তেল আসছে না। শিডিউল অনুযায়ী ২০ জুন ফার্নেস অয়েলবাহী জাহাজ চট্টগ্রামে আসার কথা রয়েছে।

বিপিসি জানিয়েছে, এতদিন তারা শুধু সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য পিডিবির কাছে ফার্নেস ওয়েল বিক্রি করত। বেসরকারি মালিকরা নিজেরা ফার্নেস অয়েল আমদানি করতেন। কিন্তু চলমান ডলার সংকটে আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। ২০ জুন জাহাজ এলেও সবকিছু ঠিকঠাক করে বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে আরও ৪-৫ দিন লাগবে।
বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) সাবেক সভাপতি ইমরান করিম বলেন, ফার্নেস অয়েলের মজুত কমে আসার বিষয়টি সত্য। এ মুহূর্তে তাদের চরম তারল্য সংকট রয়েছে। ফার্নেস অয়েল আমদানি করার মতো সামর্থ্য নেই অধিকাংশ মালিকের। পিডিবির কাছে বকেয়া ১৮ হাজার কোটি টাকা। পর্যাপ্ত ডলারও নেই। তিনি বলেন, সরকার যদি রেশনিং করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, তাহলে বেসরকারিভাবে আমদানি করা ফার্নেস অয়েলের যে মজুত রয়েছে, তা দিয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে। আর যদি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে হয়, তাহলে এই মজুত দিয়ে সর্বোচ্চ ১০-১২ দিন চলবে। বেসরকারি উদ্যোগে নতুন জাহাজ আসার কথা রয়েছে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে।
বিপিসির সূত্র জানিয়েছে, ফার্নেস অয়েল ছাড়াও অন্যান্য ধরনের জ্বালানি আমদানিতে এলসি খোলার সমস্যার কারণে সেগুলোর মজুতও হ্রাস পাচ্ছে। ব্যাংকগুলোয় ডলারের দাম বাজার দরের চেয়ে কম হওয়ায় তারা ঘোষিত দরে বিপিসির জন্য আমদানির এলসি খুলতে অনীহা প্রকাশ করছে। চলমান ডলার সংকটকালে সরকার নির্ধারিত হারে অন্য ব্যাংকগুলো যাতে বিপিসিকে বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সহায়তা করে, এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।
চলতি বছর সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফার্নেস অয়েল সরবরাহের জন্য বিপিসিকে ৭ লাখ ৬৫ হাজার টনের চাহিদা দেয় পিডিবি। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৫৩ হাজার ৫০০ টনের বিপরীতে ৬৯ হাজার ৮৯৭ টন এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪৩ হাজার ৩০০ টনের বিপরীতে ৫৪ হাজার ৪০৬ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল নেয় পিডিবি। দুই মাসেই নেয় ২৭ হাজার ৫০৩ টন বেশি। পরে ২৩ মার্চ পিডিবিকে নতুন করে চিঠি দিয়ে আগের দুই মাসের সরবরাহ করা চাহিদার অবশিষ্ট ৬ লাখ ৪০ হাজার টনের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ২ লাখ ৮০ হাজার টনসহ ৯ লাখ ২০ হাজার টন ফার্নেস অয়েলের চাহিদা দেয় পিডিবি। এর মধ্যে এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাত মাসে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আইপিপি) জন্য ২ লাখ ৮০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল সরবরাহের চাহিদা দেওয়া হয়।
এতে আইপিপিগুলোর জন্য এপ্রিলে ৭৫ হাজার টন, মেতে ৫৫ হাজার, জুনে ৫৫ হাজার, জুলাইয়ে ৪৫ হাজার, আগস্টে ১৫ হাজার, সেপ্টেম্বরে ২০ হাজার এবং অক্টোবরে ১৫ হাজার টন ফার্নেস অয়েলের চাহিদা দেওয়া হয়। পাশাপাশি এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য ৬ লাখ ৪০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল সরবরাহের জন্য বিপিসিকে অনুরোধ করে পিডিবি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে পিডিবির চুক্তি অনুযায়ী নিজেদের আমদানির পাশাপাশি ১০-২০ শতাংশ ফার্নেস অয়েল বিপিসি থেকে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেন তারা। ওই শর্ত অনুযায়ী ১০ শতাংশ ফার্নেস অয়েল বিপিসি থেকে সরবরাহ করার প্রয়োজন হয়। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, বাংলাদেশে বিদেশি মুদ্রার সংকট এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে অনীহায় বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিজ দায়িত্বে ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে পারছে না। তাই বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জ্বালানি সংকটের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাসওয়ারি চাহিদা অনুযায়ী ফার্নেস অয়েল সরবরাহের জন্য বিপিসিকে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
অন্যদিকে আমদানি সুবিধা নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে ফার্নেস অয়েল আমদানি শুরু করে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এরপর আইপিপিগুলোয় ফার্নেস অয়েল সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বিপিসি। আইপিপিগুলোকে ফার্নেস অয়েল আমদানির সুযোগ দেওয়া হলেও শর্ত ছিল ১০-২০ শতাংশ ফার্নেস অয়েল বিপিসি থেকে নিতে হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কম থাকলে চুক্তির শর্ত মোতাবেক চাহিদার ১০-২০ শতাংশ জ্বালানি বিপিসি থেকে নেওয়ার কথা থাকলেও নিত না। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে গেলে আইপিপিগুলো সেই শর্ত কাজে লাগিয়ে বিপিসি থেকে ফার্নেস অয়েল নেওয়া শুরু করে। বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় এলসি খুলতে ব্যর্থ হয়ে পিডিবির মাধ্যমে বিপিসির দ্বারস্থ হচ্ছে আইপিপিগুলো।
দেশের বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) সভাপতি ফয়সাল করিম খান বলেন, আইপিপিগুলো অর্থসংকটে রয়েছে। পিডিবির কাছে ছয় মাসের বিল বকেয়া পড়েছে। ১৮ হাজার কোটি টাকার মতো বকেয়া হয়েছে। ব্যাংক ইনস্টলমেন্টগুলো নিয়মিত দিতে পারছে না আইপিপিগুলো। এতে জ্বালানি আমদানি ও খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি আইপিপিগুলোর জন্য দ্রুত অর্থছাড়ের দাবি জানান। তিনি বলেন, ফার্নেস অয়েল আমদানি এখন চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে এলসি খোলার জন্য আইপিপিগুলোর হাতে নগদ টাকা নেই। আবার এলসি খুললেও এসব এলসি নিষ্পত্তির জন্য পর্যাপ্ত ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।’
জানা যায়, মার্চে পিডিবি চাহিদা দিলেও সে অনুযায়ী ফার্নেস অয়েল সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিপিসি। এ নিয়ে বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে জুনের শুরুতে ফার্নেস অয়েল আমদানির কোনো চালান দেশে আসছে না। এতে ফার্নেস অয়েলের মজুতও আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। এ নিয়ে বিপিসির কেউ মুখ খুলছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এপ্রিলে ১ লাখ ৪০ হাজার টন এবং মেতে ১ লাখ ৩০ হাজার টন ফার্নেস অয়েলের চাহিদা ছিল পিডিবির। এর মধ্যে মেতেও ৭৬ হাজার টনের মতো সরবরাহ দিতে পেরেছে বিপিসি। চলতি জুনে ১ লাখ ২০ হাজার এবং জুলাইয়েও ১ লাখ ১০ হাজার টন ফার্নেস অয়েলের চাহিদা রয়েছে পিডিবির। কিন্তু সে অনুযায়ী ফার্নেস অয়েল দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিপিসির।