ধর্ম ও জীবন
সুস্থ থাকতে ইফতারে করণীয় ও বর্জনীয়

বছর ঘুরে আবার এসেছে পবিত্র মাহে রমজান। সারা বছর অনেকেই অনিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করে এই রমজান পালনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। মূলত খাবারের সমস্যার জন্যই বেশিরভাগ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এজন্য রমজানে সুস্থ থাকতে হলে সঠিক ও পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করার জন্য পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ইফতার ও সেহেরিতে বেশকিছু খাবার এড়িয়ে চলা উত্তম। আবার কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় রাখলে প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে রোজা রাখার সময় কিছুটা হলেও সহজ হবে বলে আশা করা যায়।
খেঁজুর
ইফতারে অবশ্যই খেজুর বা খোরমা খাবেন। এতে আছে শর্করা, চিনি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, কপার, সালফার, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন ও ক্লোরিন ফাইবার। যা সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে খুবই দরকারি। সেহরিতেও একটি হলেও খেজুর খেতে পারেন। সেহরিতে খাবারের পর দুটি খেঁজুর খেয়ে নিলে সারাদিনে অনেকটা সাপোর্ট পেয়ে যাবেন।
দই
ইফতারিতে দই বা দই চিড়া খেতে পারেন। এতে সারাদিন অভুক্ত পেটে ঠান্ডা কিছু হজমক্রিয়া সচল রাখবে। এ ছাড়া অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে।

পর্যাপ্ত পানি বা ডাব
ইফতারের সময় একসাথে অনেক বেশি পানি পান করেন অনেকে। এতে খাবার ও পানি মিলে ভেতরে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি করে। এতে ইফতারের পর ইবাদতে, কাজে ক্লান্তি আসে। এটা না করে ইফতারের পর থেকে সেহরীর আগ পর্যন্ত একটু পর পর পানি খাওয়া উচিত।
সুষম খাবার
খাদ্য তালিকায় সব ধরনের খাবার থাকতে হবে। আমিষ, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন, দুধ, দই, মিনারেলস, ফাইবার ইত্যাদি। অর্থাৎ সুষম খাবার খেতে হবে।
কাঁচা ছোলা
ইফতারে ভাজা পোড়া না রেখে রাখতে পারেন কাঁচা ছোলা। কারণ ২৫-৩০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ১০০ ক্যালরি থাকে। কিন্তু ফ্যাট থাকে মাত্র ৫ গ্রাম, যা কি না রক্তের চর্বি কমায়। তাই সামান্য পরিমাণ খেয়ে নিলেই অনেক শক্তি পাওয়া যায়।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্ম ও জীবন
সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে আরও এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এবছরের চলমান হজ অনুষ্ঠানে নারীসহ ২ বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (৩ জুন) মক্কা বাংলাদেশ হজ কার্যালয়ের কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সদ্য মারা যাওয়া নারী হলেন শাহানারা বেগম (৬৪)। তার বাড়ি ঢাকার ডেমরায়। পাসপোর্ট নম্বর ইজি ০৭৫৩০৭৯।
জহিরুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর সৌদি আরবে বাংলাদেশি কোনো নারী হজযাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা এটিই প্রথম। এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের মক্কায় পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে দুই বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে এক জন পুরুষ ও ১ জন নারী রয়েছেন।
শনিবার সকাল পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৩৭৪ বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এবারের চলমান হজে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আট হাজার ৬৭৫ ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩৮ হাজার ৬৯৯ জন।
অর্থসংবাদ/এস.ইউ

অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
হজের পাঁচ দিন যেসব কাজ করতে হয়

হজের মাস জিলহজ। এ মাসে নির্ধারিত ৫ দিন পবিত্র নগরী মক্কার ৫ ঐতিহাসিক স্থানে অবস্থান করে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে পবিত্র হজ সম্পন্ন করতে হয়। হজের এসব নিধারিত সময়, স্থান ও কাজগুলো কী?
হজের নির্ধারিত সময়
জিলহজ মাসের ৮ তারিখ মিনায় যাওয়ার মাধ্যমে হজের কাজ শুরু হয়। আবার ১২ তারিখ সন্ধ্যার আগে মিনা থেকে পবিত্র নগরী মক্কার কাবা শরিফে ফিরে আসার মাধ্যমে পাঁচদিন অতিবাহিত হয়। হজের নির্ধারিত সময় হলো ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ।
হজের নির্ধারিত স্থান
হজ সম্পন্ন করার জন্য পবিত্র নগরী মক্কার পাঁচটি স্থানে অবস্থান করতে হয়। তাহলো-
১. মিনায় অবস্থান
মিকাত থেকে হজের ইহরাম বেঁধে ৮ জিলহজ মিনায় উপস্থিত হতে হয়।
২. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান
জিলহজে ৯ তারিখ সকালে মিনা থেকে আরাফায় উপস্থিত হতে হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করে দোয়া ও তওবা-ইসতেগফারে দিনটি অতিবাহিত করতে হয়।
৩. মুজদালিফায় রাতযাপন
জিলহজের ৯ তারিখ দিবাগত রাতটি মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে অতিবাহিত করতে হয়।
৪. জামারাতে পাথর নিক্ষেপ
মিনায় অবস্থিত জামারাতের নির্ধারিত স্থানে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে হয়।
৫. বাইতুল্লায় তওয়াফে জিয়ারত
জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করে কোরবানি (দমে শোকর) আদায় করে মাথামুণ্ডন করে ইহরাম থেকে বের হয়ে পবিত্র কাবা শরিফে এসে তওয়াফে জিয়ারত সম্পন্ন করা। তবে এ তওয়াফ ১০ জিলহজ মাথামুণ্ডনের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে সম্পন্ন করতে হবে।
যেসব কাজে সম্পন্ন হবে হজ
হজ পালনে রয়েছে ফরজ ও ওয়াজিব কাজ। হজের কোনো ফরজ বাদ পড়লে বা নষ্ট হয়ে গেলে; পরের বছর তা পুনরায় সম্পন্ন করতে হবে। যার কোনো কাফফারা নেই। হজের ফরজগুলো হলো-
১. ইহরাম বাঁধা
ইহরাম বাঁধা অর্থাৎ হজের নিয়তে মিকাত (নির্দিষ্ট স্থান) থেকে পুরুষদের সেলাইবিহীন দুই টুকরো সাদা কাপড় পরা। নারীরা তাদের নিজ নিজ পোশাক পরবে।
২. আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়া
হাদিসের পরিভাষায় ‘আলহাজ্জু আরাফাহ’ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়াই হজ। জিলহজের ৯ তারিখে সূর্যাস্তের আগের এক মুহূর্তের জন্য হলেও আরাফার ময়দানে অবস্থান করা। সূর্যাস্তের পর আরাফার ময়দান ত্যাগ করা।

৩. তাওয়াফে জিয়ারাহ করা
১০ জিলহজ কোরবানি ও মাথা মুণ্ডনের পর থেকে ১২ই জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ করাই হলো তাওয়াফে জিয়ারাহ। এটি ফরজ।
হজের ওয়াজিব কাজ
হজ পালনে অনেকগুলো কাজ করা ওয়াজিব বা আবশ্যক। যার কোনোটি বাদ পড়লে দম বা কোরবানি দিতে হয়। হজের আবশ্যক কাজগুলো হলো-
১. মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা
হজের উদ্দেশ্যে মিকাত (ইহরামের নির্দিষ্ট স্থান) ত্যাগ করার আগেই ইহরাম বাঁধা।
২. আরাফার ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান
সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতেরর ময়দানে অবস্থান (ওকুফ) করা।
৩. কোরবানি করা
ক্বিরান বা তামাত্তু হজ আদায়কারীর জন্য কোরবানি আদায় করা এবং তা কংকর নিক্ষেপ ও মাথা মুণ্ডন করার মর্ধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সম্পাদন করা।
৪. সাঈ করা
সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সাঈ করা। সাফা পাহাড় থেকে সাঈ শুরু করা।
৫. মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থান (ওকুফ) করা।
৬. তাওয়াফে জিয়ারাত আইয়্যামে নহরের (দিনের বেলায়) মধ্যে সম্পাদন করা।
৭. জামরায় শয়তানকে কংকর নিক্ষেপ করা।
৮. মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাঁটা। তবে মাথা মুণ্ডনের আগে কংকর নিক্ষেপ করা।
৯. মিকাতের বাইরের লোকদের জন্য তাওয়াফে সদর বা বিদায়ী তাওয়াফ করা।
মূল কথা হলো
জিলহজ মাসের ৮ তারিখ থেকে ৫ দিনে হজের নির্ধারিত স্থানে সুনির্দিষ্ট কাজগুলো সম্পাদন করার মাধ্যমে হজ সম্পন্ন করতে হয়। উল্লেখিত সিরিয়াল মতো কাজগুলো ঠিকঠাক পালনে পরিপূর্ণ হজ পালন সম্পন্ন হবে। ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা সব হাজিকে হজের নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত জায়গায় নির্ধারিত কাজগুলো আদায় করার মাধ্যমে হজ সম্পাদন কার তাওফিক দান করুন। সব হাজির হজ কবুল করুন। আমিন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার নামাজের আগে-পরের আমল ও নির্দেশনা

‘ইয়াওমুল জুমা’ সপ্তাহের সেরা মহিমান্বিত দিন। আল্লাহ তাআলার কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দিন এটি। কোরআন-সুন্নাহর বর্ণনায়ও ওঠে এসেছে জুমার দিনের অপরিসীম গুরুত্ব ও তাৎপর্য। এ দিনটির রয়েছে বিশেষ কিছু আমল। সেই আমলগুলো কী?
জুমার নামাজ পড়ার নির্দেশনা
আল্লাহ তাআলা জুমার দিনের করণীয় ও প্রাপ্তি বর্ণনায় একটি স্বতন্ত্র সুরাই নাজিল করেছেন। এ সুরাটির নাম দিয়েছে ‘সুরাতুল জুমআ’। এ সুরায় জুমার নামাজ পড়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়ে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত (মসজিদে) ছুটে যাও। আর বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সুরা জুমা : আয়াত ৯)
জুমা পড়ার পর আমল
জুমার নামাজ আদায়ের পর কী করণীয়। এ সম্পর্কেও মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-

فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অতঃপর (জুমার) নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ [সুরা জুমা : আয়াত ১০)
জুমার দিনের অন্যান্য আমল
জুমার নামাজের আগে ও পরে এমন অনেক আমল আছে যা পালন করা সহজ আর এতে সওয়াব অনেক বেশি। হাদিসের বর্ণনায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা তুলে ধরেছেন এভাবে-
১. ‘যে ব্যক্তি জুমা দিন গোসল করল, আগে আগে মসজিদে গেল, বাহনে না চড়ে পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল, ইমামের কাছাকাছি বসল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, কোনো অনর্থক কথা বা কাজ করল না, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রতি কদমে এক বছরের নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব দান করবেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)
২. জুমার দিন ফজরের ফরজ নামাজে সুরা সাজদা ও সুরা দাহর/ইনসান তেলাওয়াত করা।
৩. জুমার দিন ভালোভাবে গোসল করা।
৪. সবচেয়ে উত্তম পোশাক পরা।
৫. সুগন্ধি ব্যবহার করা (যদি থাকে)।
৬. জুমার নামাজের জন্য সবার আগে মসজিদে যাওয়ার চেষ্টা করা।
৭. সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৮. জুমার দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত করা। পুরো সুরা পড়তে না পারলেও প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করা।
৯. মসজিদে গিয়ে দুখুলুল মসজিদ ২ রাকাআত নামাজ পড়ে বসা। অনেকে কমপক্ষে ৪ রাকাআত সুন্নাত পড়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
১০. জুমার নামাজে ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা।
১১. মনোযোগ সহকারে খুতবা শোনা এবং খুতবা চলাকালীন চুপ থাকা আবশ্যক। কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ করুন‘ এ কথাও না বলা।
১২. দুই খুতবার মাঝের সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা এবং জুমার দিনের অন্য সময়ও দোয়া করা। কারণ এদিনে দোয়া কবুল হয়।
১৩. জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
১৪. জুমার দিন আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে ৮০ বার দরূদ পড়া, তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া এবং আসরের নামাজ পড়ে মাগরিবের নামাজের জন্য মসজিদে বসেই অপেক্ষা করা। মাগরিবের আজানের আগে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে রোনাজারি ও ক্ষমা প্রার্থনা করা। এ সময় মহান আল্লাহ বান্দার কোনো আবেদনই ফেরত দেন না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের বিশেষ আমলে দিনটি অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
হজ চিকিৎসক দল গঠন

সৌদি আরবে অসুস্থ বাংলাদেশি হজযাত্রীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া জন্য ২০০ সদস্যবিশিষ্ট হজ চিকিৎসক দল গঠন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। হজ চিকিৎসক দলে ১০২ জন চিকিৎসক, ৬৩ জন নার্স-ব্রাদার, ২১ জন ফার্মাসিস্ট ও ১৪ জন ওটি অ্যাসিসট্যান্ট-ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান রয়েছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (হজ) আবুল কাশেম মুহাম্মাদ শাহীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
চিকিৎসক দলের সদস্যরা ১৮ মে থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন। ২ জুলাই পর্যন্ত তারা মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফা ও জেদ্দায় দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে অবস্থানকালে চিকিৎসক দলের সদস্যরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবেন। দলনেতা ও উপ দলনেতার নির্দেশনা অনুসারে দায়িত্ব পালন করবেন।
চিকিৎসক দলের সদস্যদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও সহায়তাকারীরা হজপালন করার সুযোগ পাবেন না। তারা হজের দিনগুলোতে দলনেতার নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ হজ মেডিকেল টিম মক্কায় অবস্থান করে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেবেন। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে হজ চিকিৎসক দলের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর অন্যতম হলো- চিকিৎসক দলের কোনো সদস্য তার দায়িত্ব পালনকালে কোনোভাবেই স্বামী-স্ত্রী, সন্তান কিংবা আত্মীয়দের সঙ্গে নিতে পারবেন না। চিকিৎসক দলের সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন বলে বিবেচিত হবেন এবং যেকোনো সময় হজযাত্রীদের সেবা দিতে বাধ্য থাকবেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর মক্কায় চারটি হেলথ ক্লিনিক থাকবে। আর মদিনায় থাকবে দুটি। এছাড়া মিনা ও আরাফার ময়দানে এবার প্রথমবারের মতো হেলথ ক্লিনিক স্থাপন করা হবে।
মক্কা ও মদিনার স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে হজযাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা, বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ, জটিল রোগীদের সৌদি হাসপাতালে প্রেরণ, ভর্তি রোগীদের তত্ত্বাবধান, মৃত্যুবরণকারী হজযাত্রীদের দাফন ও অসুস্থ হজযাত্রীদের বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনের ১০ আমল

সপ্তাহের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাপূর্ণ দিন শুক্রবার। জুমার দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। ফজিলতের কারণে শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়াছে। এই দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)
জুমার দিনের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ আমল :
মর্যাদাপূর্ণ এই দিনের অনেক আমল হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে কিছু আমল ধারাবাহিক উল্লেখ করা হচ্ছে।

১. গোসল করা।
২. উত্তম পোশাক পরিধান করা।
৩. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৪. মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা।
এই চারটি আমলের কথা একসঙ্গে একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার কাছে থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে।
ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহর জন্য কাফ্ফারা হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ৩৪৩)
৫. বেচাকেনা বন্ধ রাখা: জুমার দিন আজানের পর বেচাকেনা বন্ধ রাখা গুরুত্বপূর্ণ আমল। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা : জুমআ, আয়াত : ৯)
৬. দ্রুত মসজিদে যাওয়া: উত্তম আমল হচ্ছে দ্রুত মসজিদে যাওয়া। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি মোটাতাজা উট কোরবানি করে।
এরপর যে আসে সে ওই ব্যক্তি যে একটি গাভি কোরবানি করে। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগি দানকারীর মতো। তারপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতাগণ তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনতে থাকেন। (বুখারি, হাদিস : ৯২৯)
৭. সুরা কাহফ তিলাওয়াত: মর্যাদাপূর্ণ এই দিনের বিশেষ একটি আমল হচ্ছে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে। (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)
৮. সুরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াত পাঠ : অপর হাদিসে সুরা কাহাফের শেষের আয়াত পাঠের সুফল হিসেবে দাজ্জালের ক্ষতি থেকে মুক্তির কথা বর্ণিত হয়েছে।
আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। যে ব্যক্তি অজুর পর এই দোয়া পড়বে তার নাম একটি চিঠিতে লেখা হবে। অতঃপর তাতে সিল দেয়া হবে, যা কেয়ামত পর্যন্ত আর ভাঙা হবে না। ’ (সহিহ তারগিব, হাদিস নম্বর : ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক : ২/৩৯৯)
৯. বেশি বেশি দরুদ পাঠ: এই দিনের আরেকটি আমল হচ্ছে নবীজির ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
এই মর্মে রাসুল (সা.) বলেন, দিনসমূহের মধ্যে জুমার দিনই সর্বোত্তম। এই দিনে হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙায় ফুঁ দেয়া হবে। এই দিনে সব সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে।
অতএব, তোমরা এই দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
১০. দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়া: জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ একটি আমল হচ্ছে দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ করা।
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে যে তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে যে দোয়া করবে আল্লাহ তা কবুল করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
অর্থসংবাদ/এসএম