অর্থনীতি
রোজার প্রথম দিনই কমলো ব্রয়লার মুরগির দাম

পবিত্র রমজান মাস শুরু হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্বস্তি কাটছে না। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। তবে রমজানের প্রথম দিনই কিছুটা স্বস্তি মিলেছে ব্রয়লার মুরগির বাজারে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত।
পোলট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি নির্ধারণের পরেই বাজারে এমন নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেল।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা দরে। যা গতকাল বৃহস্পতিবারও ছিল ২৭০-২৮০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যে দাম আরও কমবে। খামারে মুরগি ১৯০ টাকা বিক্রি হলে সেটা খুচরা বাজারে ২৩০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। তবে সেজন্য দু-একদিন সময় লাগবে।
রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা বাজারের ব্রয়লার ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা যে মাল বিক্রি করছি সেটা আগের দামে কেনা। তারপরও পাইকারি বাজার কিছুটা কমায় কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে বিক্রি করছি। যারা আজ (শুক্রবার) সকালে কাপ্তান বাজার থেকে মাল এনেছেন, তারা কেজিতে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি করতে পারছেন।

এদিন খিলগাঁও রেলগেটে ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকা। যা দুদিন আগেও ছিল ৪০০ টাকা ছুঁই ছুঁই।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে অধিকাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে বলে মুরগির চাহিদা কমে গেছে। সকাল থেকে বাজারে ক্রেতাও খুব কম। অনেক দোকান সকাল থেকে জুমার নামাজ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। চাহিদা কমায় দামও কিছুটা কমেছে।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা সালাম জানান, ফার্ম থেকে ১৯০-১৯৫ টাকায় মুরগি বিক্রি হলে খুচরায় ২৩০-২৪০ টাকায় কিনতে হবে ভোক্তাদের। পরিবহন, ঘাটতিসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দামের পার্থক্য থাকে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানের প্রথম দিন সকালে মুরগির দোকানে ভিড় ছিল তুলনামূলক কম। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আজ তারা পাইকারি বাজার থেকে ব্রয়লার ২৩৫ টাকা আর সোনালি মুরগি কিনেছেন ৩৪০ টাকা দরে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদে বদলির মাধ্যমে প্রেষণে নিয়োগ করা হলো।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুই সিটিতে ব্যাংক বন্ধ সোমবার

বরিশাল ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষ্যে আগামী সোমবার (১২ জুন) নির্বাচনী এলাকায় সব ব্যাংক বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার ( ৮ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপরিভিশন এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী- খুলনা ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এবং ২টি পৌরসভার (নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার পৌরসভা ও কক্সবাজার পৌরসভার) এবং ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষ্যে ১২ জুন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত তফশিলি ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ সব শাখা ও উপশাখা বন্ধ থাকবে।
এর আগে, গত ৩ এপ্রিল খুলনা ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ওই তফশিল অনুযায়ী আগামী ১২ জুন দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনে সংসদে বিল

ব্যাংকের পরিচালক বা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অনিয়মে আর্থিক ক্ষতি পূরণে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে ব্যাংক। এমন বিধান যুক্ত করে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) বিল ২০২৩ সংসদে তোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিলটি সংসদে তোলেন। পরে তা ৭ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এর আগে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বিলটি উত্থাপনে আপত্তি জানালে তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়। আপত্তি তোলার সময় ফখরুল ইমাম অভিযোগ করেন, আইএমএফের শর্ত মেনে এই সংশোধনী বিলটি আনা হয়েছে। সংসদে কোনো কিছু গোপন করা উচিত নয়।
তবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কারো পরামর্শে এই সংশোধনী আনা হচ্ছে না। আধুনিক ও সময়োপযোগী ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কিছু সংশোধন আনা হচ্ছে। পরে কণ্ঠভোটে ফখরুল ইমামের আপত্তি নাকচ হলে বিলটি সংসদে তোলেন অর্থমন্ত্রী।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একটি একক পরিবারের সদস্যের বাইরে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা নিয়ন্ত্রণাধীন সর্বোচ্চ দুটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক থাকতে পারবে। তবে কোনো ব্যাংকের পর্ষদে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে একজনের অধিক ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক নিযুক্ত হতে পারবে না।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পর্ষদে প্রাকৃতিক ব্যক্তিস্বত্ত্বা বিশিষ্ট ব্যক্তি শেয়ারহোল্ডারের পক্ষে অপর কোনো ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবেন না। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের শেয়ারের মালিক হলে তার প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কোনো ব্যক্তিকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যাংক পরিচালক একইসময়ে অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকতে পারবেন না। তবে এই আইন কার্যকর হবার পর সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে বিমা কোম্পানির পরিচালক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। যদিও ২০১০ সালে প্রণীত বিমা আইন অনুযায়ী কোনো বিমা কোম্পানির পরিচালক ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হতে পারেন না।
সংশোধনী খসড়ায় কোনো ব্যাংক পরিচালকের একইসঙ্গে বিমা কোম্পানির পরিচালক পদে থাকার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে।
তবে কোনো পরিচালক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে বিদ্যমান আইনে কিছু বলা নেই। কিন্তু একজন পরিচালক আরও কোন কোন কোম্পানিতে পরিচালক থাকতে পারবেন না বলে বিলে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি বা এসব কোম্পানির কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন না।
এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এমন কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যা ওই ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিমা কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ বা যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তার করে- এমন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকবে না বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যমান আইনে বিকল্প পরিচালক নিয়োগের সুযোগ থাকলেও তার মেয়াদকাল এবং বিকল্প পরিচালকদের যোগ্যতা সম্পর্কে কিছু বলা নেই। নতুন আইনে এসব বিষয় সুনির্দিষ্ট করা হচ্ছে। খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো পরিচালক কমপক্ষে নিরবচ্ছিন্নভাবে তিন মাস বিদেশে অবস্থান করলে তার অনুপস্থিতির কারণে পর্ষদ চাইলে মূল পরিচালকের বিপরীতে বছরে সর্বোচ্চ একবার একজন বিকল্প পরিচালক নিযুক্ত করতে পারবে। পরিচালক নিয়োগের যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো বিকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক-কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার স্বার্থে উহার পর্ষদ এবং পর্ষদ কমিটি সমূহের কর্মপরিধি বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সময় সময় নির্দেশনা জারি করতে পারবে।
নতুন আইনে ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পাবে। এতে নতুন ধারা যোগ করে বলা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যেই ব্যাংক কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত হার বা পরিমাণের বেশি সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধন হিসেবে বিনিয়োগ করতে পারবে না।
নতুন আইনের আওতায় সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যোগ্যতা ও উপযুক্ততার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করবে।
ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিদেশ যাওয়া, বাড়ি-গাড়ি ও কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তাদের রাজনৈতিক দলের কমিটিতে না রাখার বিধান রেখে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অধিকতর সংশোধন করতে একটি বিল সংশোধন আনা হয়েছে। এই বিলে এক পরিবার থেকে তিন জনের বেশি ব্যাংক পরিচালক হওয়া যাবে না এমন বিধান রয়েছে।
২০১৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়ে পরের বছরের মধ্যে খসড়া তৈরি করা হলেও তা চূড়ান্ত করতে খুবই ধীর গতিতে কাজ চলছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরের সময় আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই খসড়া আইনটিকে পার্লামেন্টে বিল আকারে উত্থাপনে আইএমএফ শর্ত দেওয়ার পর গত ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা খসড়াটির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
আইনি অস্পষ্টতার জায়গাগুলো দূর করতে এবং মন্দ ঋণের লাগাম টেনে ধরার জন্য অতি-জরুরি এই সংশোধনীগুলো বছরের পর বছর প্রক্রিয়াধীন ছিল। অংশীজনের মতামত নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২০ সালেই খসড়া তৈরি করে। এতে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর বেশ কয়েকটি বিধানের পরিবর্তন এবং কিছু নতুন বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবশ্য বিদ্যমান আইনেও ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিধিনিষেধ আছে।
সংসদে উপস্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্ত করা ও চূড়ান্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুটি পৃথক কমিটি গঠন করবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সময়ে সময়ে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে।
তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে আপিল করতে পারবে এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এছাড়া, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে নীতির স্থায়িত্ব প্রয়োজন

দেশের অর্থনীতি বর্তমানে কঠিন সময় পার করছে। এর মধ্যেই আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন। এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে নীতিগত বিষয়গুলোর স্থায়িত্ব থাকতে হবে। যেমন আয়কর, কার্বন শুল্ক, বৈদেশিক মুদ্রানীতি, রফতানি বৈচিত্র্যকরণ, জ্বালানি, আমদানি শুল্ক, ন্যূনতম করহার, ডিজিটাল ইকোনমি, ব্যাংক খাতের স্থায়িত্ব, লজিস্টিক ইত্যাদি। সরকারের বিভিন্ন নীতিতে খুব দ্রুত পরিবর্তন দেখা যায়, যেটি অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
বুধবার রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (অ্যামচেম) আয়োজিত ‘বাজেট-পরবর্তী প্যানেল আলোচনা’য় বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা বাস্তবসম্মত হয়নি। তবে তা আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সম্ভব হতে পারে। সরকারকে এখনই গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের মজুদ বাড়াতে হবে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) প্রত্যেক জেলায় মজুত বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে কাজ শুরু করতে হবে, যাতে করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।’
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সরকারকে নতুন কর নীতি সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে। আমাদের এখন আয়কর প্রশ্নে নতুন আইনের প্রয়োজন এটা সত্য। কিন্তু সেটি যেন জনগণের জন্য বোঝা না হয়ে যায়। আমাদের এখন আন্তর্জাতিক মানের একটি আয়কর আইন প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে যে আইনটি সংসদে আলোচনার জন্য অপেক্ষমাণ সেটি কি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের? আমরা কি এ ক্ষেত্রে শুধু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের ওপরই নির্ভর করব? আমার মনে হয় এর সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে আমি সরকারকে বলব, তাড়াহুড়ো না করতে। সময় নিন, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করুন, আন্তর্জাতিক মানের দিকেও খেয়াল করুন। এটি নিয়ে আরো ভাবুন। তারপর সংসদে আলোচনার জন্য নিয়ে আসুন।’
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্লথগতির শঙ্কা বিশ্বব্যাংকের

বৈশ্বিক অর্থনীতি আগামী কয়েক বছরে শ্লথগতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি জানিয়েছে, উচ্চ সুদহার, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি ও ব্যাংক খাতের অব্যাহত সংকটের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এরই মধ্যে তীব্রভাবে কমেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটির সম্প্রতি প্রকাশিত অর্ধবার্ষিক গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বলছে, চলতি বছর বৈশ্বিক প্রকৃত জিডিপি ২ দশমিক ১ শতাংশ বাড়বে। এ প্রাক্কলন হিসাব জানুয়ারিতে প্রকাশিত ১ দশমিক ৭ শতাংশের তুলনায় বেশি, কিন্তু ২০২২ সালের ৩ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় অনেক কম।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্ডারমিট গিলের মতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত অর্থনীতিগুলোও চলতি বছরে বাড়বে মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ হারে। গত বছরের রেকর্ড ২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় যা উল্লেখযোগ্য পতন। এছাড়া এটি হতে যাচ্ছে পাঁচ দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল প্রবৃদ্ধির হারগুলোর একটি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বের অর্থনীতি এখনো অনিশ্চিত। আগামী বছরের শেষ নাগাদও উন্নয়নশীল বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশের মাথাপিছু আয় ২০১৯ সালের শেষের দিকে যা ছিল তার চেয়ে কম থাকবে। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশের জন্য এটি পাঁচটি হারিয়ে যাওয়া বছর হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
তবে সর্বশেষ প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাংকের জানুয়ারির প্রাক্কলনের তুলনায় সামান্য উন্নতি চিহ্নিত করেছে। এর আগের প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছিল, বৈশ্বিক অর্থনীতি এ বছর প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। যেখানে নতুন প্রাক্কলনে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২ দশমিক ১ শতাংশ।
জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছিল, বৈশ্বিক জিডিপি মন্দার দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতিও এখন চাপের মধ্যে। ২০২৩ সালের জন্য বিশ্বব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ১ শতাংশ হিসাবে প্রাক্কলন করেছে। জানুয়ারির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের প্রাক্কলনের তুলনায় যা দ্বিগুণেরও বেশি। এদিকে চীনের প্রবৃদ্ধি এ সময় ৫ দশমিক ৬ পর্যন্ত উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা জানুয়ারির ৪ দশমিক ৩ শতাংশের তুলনায় কিছুটা বেশি।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক কঠোরতা এবং ব্যবসায়িক, আবাসিক বিনিয়োগে আরো সীমাবদ্ধ ক্রেডিট শর্তের কারণে উন্নয়ন ঋণদাতা সংস্থাটি জানুয়ারিতে ২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন ২ দশমিক ৭ শতাংশ করলেও নতুন প্রাক্কলনে কিছুটা কমিয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। এ কারণগুলো ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন আরো কমিয়ে আনবে এমনটাও আশঙ্কা। তবে ২০২৫ সালের প্রাক্কলনে প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে ৩ শতাংশ।
ফেডারেল রিজার্ভ ও অন্যান্য বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় ব্যাংক উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার জন্য একটি কঠোর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক দশকের মধ্যে দ্রুততম গতিতে সুদহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণ প্রদানের খরচ বাড়ার কারণে নিম্ন আয়ের দেশগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উচ্চ সুদের হুমকি এবং সম্প্রতি কয়েকটি মার্কিন ব্যাংক ধসে পড়ায় ব্যাংকিং সেক্টরে আরো অস্থিরতা বাড়তে পারে। ফলে চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো কমার আশঙ্কা রয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্ব অর্থনীতি এখনো অবরুদ্ধ। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে সংকট এবং রেকর্ড পরিমাণ ঋণের কারণে অনেক দেশ ক্রমেই দরিদ্র হচ্ছে।