শিল্প-বাণিজ্য
ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ

রমজানে মানুষকে স্বস্তি দিতে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দেশের চারটি বড় কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দাম নির্ধারণ করা হয়। কোম্পানিভেদে ১৯০-১৯৫ টাকা বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে, আর ভোক্তা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২২০ টাকার বেশি হবে না বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, কোম্পানি পর্যায়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি সর্বোচ্চ ১৯৫ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। আর খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২২০ টাকা বিক্রি হবে। এর চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হলে তাদের রসিদ যাচাই-বাছাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজী ফার্মস লিমিটেড, আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড, সিপি বাংলাদেশ এবং প্যারাগন পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডকে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে ডাকা হয়। সর্বশেষ পাইকারি ও খুঁচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
দুই দিনে ৪ লাখ ৩৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি

দুই দিনে ৪ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এই অনুমতি দেয়া হয়।
অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজ আমদানিতে বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে গতকাল থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আমদানির তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, গতকাল থেকে আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৮ মেট্রিক টন আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে এসেছে। এদিকে আমদানির অনুমতির পর বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।
গত রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আমদানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পেঁয়াজ আমদানি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ শাখা থেকে আমদানির অনুমতি বা আইপি নিতে হয়। কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছিল মন্ত্রণালয়।

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
প্রথম দিনে ভারত থেকে এলো ১৪৫৭ টন পেঁয়াজ

আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের বাড়তি দামে কয়েকদিনের মধ্যে অস্থির হয়ে ওঠে দেশের বাজার। দিশেহারা হয়ে পড়েন ক্রেতারা। অবশেষে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি মিলেছে। এর প্রভাবে বাজারে কমতে শুরু করেছে দামও। কয়েকদিন ধরে স্থানভেদে ৮৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। সেই পেঁয়াজের দাম এখন স্থানভেদে ১০-২৫ টাকা কমেছে।
এদিকে আমদানি অনুমতির প্রথম দিন সোমবার (৫ জুন) ভারত থেকে ১৪৫৭ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ১ হাজার ৯৭ টন, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন ও দিনাজপুরের হিলি দিয়ে ৪০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর
আড়াইমাস পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ফের পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। বিকেল থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে এ পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। এরইমধ্যে পেঁয়াজ ভর্তি ৫৭টি ট্রাক সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে। যেখানে ১ হাজার ৯৭ টন পেঁয়াজ এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ।
এর আগে সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ পেঁয়াজ এসেছিল সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে। এরপরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।

ভোমরা স্থলবন্দর
আমদানির অনুমতি প্রাপ্তির প্রথম দিনে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ১১ ট্রাক (৩০০ টন) ভারতীয় পেঁয়াজ এসেছে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এসব ট্রাক বাংলাদেশের ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করে বলে নিশ্চিত করেন ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা মন্টু বিশ্বাস।
ভোমরা বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন বলেন, কয়েকজন ব্যবসায়ী আইপি (আমদানির অনুমতি পত্র) পেয়েছেন। সন্ধ্যায় ১১ ট্রাক পেঁয়াজ ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেছে।
হিলি স্থলবন্দর
দীর্ঘ আড়াই মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়েও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে পেঁয়াজবোঝাই দুটি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশে করে। এতে ৪০ টন পেঁয়াজ আনে এন আলম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মে মাসে রপ্তানি আয় ৫১ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা

গত দুই মাসে (মার্চ ও এপ্রিল) দেশের রপ্তানি আয় নেতিবাচক প্রভাব থাকলেও সদ্য সমাপ্ত মে মাসে তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মে মাসে মোট ৪৮৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৫১ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।
রোববার (৪ জুন) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের এ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
যদিও রপ্তানির এ আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ কম। মে মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১২ কোটি ডলার। আর ২০২২ সালের মে মাসে রপ্তানি থেকে ৩৮৩ কোটি ডলার আয় হয়েছিল।
ডলার সংকটের কারণে গত মার্চে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ, একইভাবে পরের মাস এপ্রিলে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয় ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) ৫ হাজার ৫২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৭১৭ কোটি ডলারের পণ্য।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। অন্যদিকে পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৪ হাজার ২৬৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে রপ্তানিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। যেখানে রপ্তানি হয়েছে ১১২ কোটি ডলারের পণ্য। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দশমিক ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১০২ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ খাতের রপ্তানি কমেছে ৩০ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
ভ্যাট কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বাড়লো

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বাড়ল। ভ্যাটের কোনো নথি যাচাই–বাছাই করার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের জন্য আর্থিক মূল্যের সীমা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে কোনো ভ্যাট কর্মকর্তা কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে চিঠি দিতে পারবেন।
বিষয়টি কীভাবে হবে, তা ব্যাখ্যা করা যাক। একজন ভ্যাটদাতার (প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি) পণ্যমূল্য বা সেবা বিক্রির পরিমাণ ১৫ লাখ টাকা। ভ্যাট রিটার্নে তিনি তা–ই দেখিয়েছেন। এত দিন এই নথি যাচাই–বাছাই করতে হলে উপকমিশনারের কাছে যেতে হতো। এখন থেকে এই নথি একজন সহকারী কমিশনার নিজেই যাচাই–বাছাই করতে পারবেন। আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়েছে কি না কিংবা মিথ্যা ঘোষণা দিয়েছেন কি না, তা দেখবেন সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কর্মকর্তা। এরপর কোনো বিরোধ থাকলে তা মীমাংসা করবেন।
কর্মকর্তাদের ভ্যাট–সংক্রান্ত অভিযোগ মীমাংসা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এভাবে চলতি বাজেটে ছোট ছোট পদবির ভ্যাট কর্মকর্তাদের এ ধরনের ক্ষমতা আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এসব প্রস্তাব করা হয়েছে।
এবার দেখা যাক, কার ক্ষমতা কতটা বাড়ল—
বিরোধ দেখা দিলে ভ্যাটের রাজস্ব কর্মকর্তারা আগে চার লাখ টাকা পর্যন্ত পণ্য বা সেবা বিক্রির নথি যাচাই–বাছাই করতে পারতেন। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, এখন থেকে রাজস্ব কর্মকর্তারা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনার সম্পৃক্ততা আছে, এমন নথি যাচাই–বাছাই করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে সহকারী কমিশনারদের ক্ষমতা দ্বিগুণ করা হয়েছে। এখন থেকে তাঁরা ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনার সম্পৃক্ততা আছে, এমন নথির মীমাংসা করতে পারবেন। উপকমিশনারদের ক্ষমতা ছিল ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নথি। এখন তা বাড়িয়ে ৩০ লাখ টাকা করা হয়েছে। যুগ্ম কমিশনারদের ক্ষমতা ৩০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকার নথি করা হয়েছে।

অন্যদিকে অতিরিক্ত ভ্যাট কমিশনাররা আগে ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনার সম্পৃক্ততা আছে, এমন ভ্যাটের নথি যাচাই করতে পারতেন। এখন তা বাড়িয়ে এক কোটি টাকা করা হয়েছে। আর এক কোটি টাকার বেশি ফাঁকির অভিযোগ থাকলে কমিশনারের কাছে যেতে হবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এতে অপেক্ষাকৃত ছোট পদবির ভ্যাট কর্মকর্তারা ভ্যাট ফাঁকি–সংক্রান্ত যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারবেন। একদিকে এর সুবিধা হলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমবে। অন্যদিকে অসুবিধা হলো বড় বড় ভ্যাটের নথি ছোটখাটো কর্মকর্তাদের কাছে আটকে থাকার প্রবণতা বাড়তে পারে।
এর আগে ২০২১ সালে একইভাবে শুল্ক কর্মকর্তাদের এমন ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছিল।
এদিকে এবারের বাজেটে করদাতাদের ওপর নোটিশ জারি করার প্রবণতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। এত দিন কোনো ভ্যাট ফাঁকি ধরা পড়লে প্রথমে ওই ফাঁকির পরিমাণ উল্লেখ করে তা পরিশোধের জন্য ভ্যাটদাতাকে চিঠি দেওয়া হয়। পরে আবার আরেকটি চিঠিতে কেন জরিমানা আরোপ হবে না, তা নিয়ে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়। এখন থেকে একটি চিঠির মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি ও জরিমানার অর্থ পরিশোধের বিষয়টি জানানোর জন্য বাজেটে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জব্দ হিসাব থেকে কর আদায় নয়
ভ্যাট ফাঁকি ধরা পড়লে কিংবা অভিযোগ থাকলে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে জব্দ হিসাব থেকে সরকারের প্রাপ্য অর্থ আদায়ের নির্দেশও দেন ভ্যাট কর্মকর্তারা। এখন থেকে এটি আর করা যাবে না।
বাজেটের প্রস্তাব অনুযায়ী, এখন কোনো ভ্যাট কর্মকর্তা কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে চিঠি দিতে পারবেন। কিন্তু ওই হিসাব থেকে সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব কেটে রেখে তা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন না।
জানা গেছে, অনেক সময় এ ধরনের ভ্যাট–সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হলে তা ভ্যাটদাতার পক্ষেও যেতে পারে। তখন অর্থ ফেরত দিতে হয়।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটের ওপর বিসিআই’র প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন। শনিবার (৩ জুন) সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সচিব কামরুন নাহার শিউলির সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিসিআই সভাপতি বলেন, বাজেটে সরকার ৫টি ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যার মধ্যে আছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি ও সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ উন্নয়ন।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা এখন ৯ শতাংশের বেশি। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে জোর দেওয়া হবে। কিন্তু দেশীয় শিল্প সক্ষমতা ও টেকসই করার কোন নিদৃষ্ট দিকনির্দেশনা নেই বিশেষ করে মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নয়নে কোন দিকনির্দেশনা নেই। মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প করোনা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫% ঝরে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আয় প্রধানত বেসরকারী খাত থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে উচ্চমূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, জ্বালানি সমস্যা কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, ফলে উৎপাদনশীল কারখানাগুলোর প্রবৃদ্ধি হারিয়েছে। এদিকে বেসরকারি খাতের ক্রেডিট গ্রোথ নিম্নগামী। রফতানিও মন্থর এবং রেমিট্যান্সও ওই পরিমাণে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে গেলে আমদানি বিকল্প শিল্প এবং কীভাবে কারখানাগুলোর প্রবৃদ্ধির সক্ষমতা ফিরিয়ে আনা যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোন দিকনির্দেশনা নেই।

বিসিআই সভাপতি বলেন, শুধু আইএমএফ এর শর্তের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে দেশের অর্থনীতি কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে সে দিকে গুরুত্বারোপ করতে হবে। আমাদের এখন স্থানীয় শিল্প, আমদানি বিকল্প শিল্পের সক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং টেকশই করা এবং কর্মসংস্থান ধরে রাখার দিকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
বিসিআইর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেনির করমুক্ত আয়ের সীমাঃ সাড়ে ৩ লাখ করা হয়েছে যা বিসিআই স্বাগত জানায় তবে উচ্চমূল্যস্ফীতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী কর বৎসরের ব্যক্তি শ্রেনির করমুক্ত আয়ের সীমাঃ ৫ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব করছি। এবং উচ্চমূল্যস্ফীতির এ সময়ে করযোগ্য নয় এমন টিনধারীদের ওপর ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর করের বোঝা তৈরি করবে। তাই এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
এতে আরও বলা হয়, বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। যার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা যা বিগত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৬.২০% বেশি। অথচ গত এপ্রিল পর্যন্ত চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে মোট লক্ষ্যের মাত্র ৬১ শতাংশ। বিদ্যমান ডলারসংকট এবং আমদানিতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ থাকায় এই রাজস্ব আদায় নতুন র্অবছরে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াবে।
সরকারের আয় মূলত বেসরকারি খাত ও রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যেমে হয়ে থাকে। বিসিআই মনে করে, বেসরকারি খাতে জ্বালানি স্বল্পতা, বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এবং নিরবিচ্ছিন্ন সাপ্লাই না থাকার কারণে শিল্প কারখানাগুলো ৫০-৬০ শতাংশের বেশি উৎপাদন ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না। সাথে সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের কন্ট্রাকশন পলিছির কারণে গত ১০ মাসে শিল্প গুলি মূলধনি যন্ত্রপাতি ৫৬%, মধ্যবর্তি কাঁচামাল ৩১.৩% এবং কাঁচামাল ৩১.৫% কম ঋণপত্র খুলেছে। এব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকা দরকার যেন কোন অবস্থাতেই শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্থ না হয় এবং সরকারকে কমমূল্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তা না করলে দেশিয় শিল্প তাদের সক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে তাতে করে মূল্যস্ফিতি কমবে না সাথে সাথে বেকারত্বের হার বেড়ে যাবে। যার ফলে এনবিআর এরও তাদের কর আহরন বাধাগ্রস্থ হতে হবে। বেসরকারি খাত এবং এনবিআরকে একসাথে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে রাজস্ব বোর্ডের প্রাকটিসেরও পরিবর্তন আনা বাঞ্চনীয়।
বিসিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেক্টর ভিত্তিক থামরুলে গ্রোস প্রফিট (জিপি) ধরে শুল্কায়ন না করে কোম্পানি বিশেষে একচূয়াল একাউন্টিং প্রাক্টিস এর ভিত্তিতে শুল্কায়ন করা উচিৎ যেমন- একচূয়াল প্রফিট অথবা একচূয়াল লস মেনে কোম্পানি ওয়াইজ হিসেবে শুল্কায়ন করলে যে সব কোম্পানি যারা কর দিচ্ছে না তারা কর দিতে আগ্রহী হবে। সাথে সাথে কর নিট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা মনে করি ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে মোট করের ৮০% এর উপর সংগ্রহ হয়ে থাকে অথচ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় ৪৫% অন্যান্ন জেলায় অবস্থিত। এসকল অঞ্চলে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মানুষের কাছে গেলে কর আদায় বৃদ্ধি পাবে এবং করনেট প্রসারিত হবে। ব্যবসায়ি এবং এনবিআরকে দায়িত্ব নিয়ে দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে এগিয়ে আসতে হবে।