ইরাকের এত তেল গেল কোথায়?

ইরাকের এত তেল গেল কোথায়?
ওপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবের পর ইরাক হলো দ্বিতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল উৎপাদক। কিন্তু ইরাকের বিশাল তেলসম্পদ এবং অপরিশোধিত তেল রফতানি থেকে ব্যাপক রাজস্ব সত্ত্বেও দেশটি তার গ্যাসের প্রায় ৪০ ভাগ ইরান থেকে আমদানি করে এবং অধিবাসীদের জ্বালানি প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রকট বিদ্যুৎ সঙ্কট এবং জ্বালানি ঘাটতির ফলে লোকজন দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে। দৈনন্দিন কাজ করাই তাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‌'ইরাক মুক্ত' করার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০ বছর আগে। একটি সমৃদ্ধ, তেলপুষ্ট অর্থনীতি ও গণতান্ত্রিক ইরাক এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ইরাকে মার্কিন-নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের পরিণতিতে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, দুর্নীতি এবং স্থিতিশীল ও জবাবদিহিযুক্ত সরকার প্রতিষ্ঠার ব্যর্থতা।

মার্কিন-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হামলার পর কেবল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার অভাবই সৃষ্টি হয়নি, সেইসাথে দেশটির অর্থনীতি, অবকাঠামো, সামাজিক বন্ধনও ভেঙে গেছে। এমনকি পর্যাপ্ত বিদেশী বিনিয়োগ পর্যন্ত আকৃষ্ট করতে পারছে না দেশটি। আর ইরাকিদের দুর্দশা বেড়েছে আইএসের মতো চরমপন্থী গ্রুপের উত্থানে। তবে ইরাকিরা আরেকটি ভয়াবহ সমস্যার মুখেও পড়েছে। সেটি হলো দুর্নীতি।

দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা

২০২২ সালের অক্টোবরে একটি দুর্নীতির ঘটনায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার বাগিয়ে নেয়ার তথ্য সামনে আসে। এটিকে 'শতাব্দীর সেরা ডাকাতি' হিসেবে অভিহিত করা হয়। তবে তহবিল তছরুপসহ নানা ধরনের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার এটি একটি খণ্ডচিত্র মাত্র। এক হিসাবে দেখা গেছে, সাদ্দাম যুগের পর ১৫ বছরে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় ৩২০ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির মাধ্যমে লোপাট হয়েছে।

কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদেরা তেল রাজস্বসহ সরকারি অর্থ লোপাটে ব্যবস্থা। ভুতুরে বেতন, ভুতুরে কর্মী, ঘুষ, তেল পাচার একেবারে সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের কল্যাণে ব্যয় করার মতো অর্থ থাকছে না।

নিয়ন্ত্রণহীন তেল অঞ্চল

ইরাকের তেল-সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোর কয়েকটি আবার বাগদাদ কর্তৃপক্ষের হাতে নেই। বিশেষ করে উত্তরের কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে থাকা তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ কুর্দিস্তান রিজিওন্যাল গভার্নমেন্টের হাতে। এখানে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুত আছে। তবে আঞ্চলিক সরকারই এই তেলের খবরদারি করে, সরকারের কোনো আদেশ-নিষেধের পরোয়া তারা করে না। তারা তুরস্কের সাথে পাইপলাইন স্থাপন করেছে।

ইরাকে প্রমাণিত তেল মজুতের পরিমাণ প্রায় ১৪৫ বিলিয়ন ব্যারেল। এই তেল দিয়ে দেশের মানুষের ভাগ্য সহজেই উন্নতি করা যায়। কিন্তু সেজন্য প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত কার্যকর সরকার।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া