আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ১৫ মাসে সর্বনিম্ন

বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নেই বৈশ্বিক ব্যাংক খাত। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আবারো দেখা দিয়েছে মন্দার আশঙ্কা। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারেও দেখা দিয়েছে পণ্যটির চাহিদা পতনের সম্ভাবনা। এর ধারাবাহিকতায় বাজারে এখন দ্রুতগতিতে দাম কমছে জ্বালানি তেলের। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম এখন নেমে এসেছে ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে।
কয়েকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমছে অবাধে। নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) গত সপ্তাহেও ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। শুক্রবার মার্কিন বাজার আদর্শটির সাপ্তাহিক বাজার স্থির হয়েছিল প্রতি ব্যারেল ৬৬ ডলার ৭৪ সেন্টে। সেখান থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গতকাল সাপ্তাহিক বাজারের প্রথম দিনে একপর্যায়ে তা নেমে আসে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ ডলার ৮৬ সেন্টে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম শুক্রবার দিন শেষে ছিল প্রতি ব্যারেল ৭২ ডলার ৯৭ সেন্ট। সেখান থেকে আরো ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গতকাল একপর্যায়ে তা নেমে আসে ৭০ ডলার ৯০ সেন্টে।
ডব্লিউটিআই ও ব্রেন্টসহ জ্বালানি তেলের প্রায় সব বাজার আদর্শেই এখন মূল্য নেমে এসেছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর সর্বনিম্নে। বৈশ্বিক আর্থিক খাতের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিগগিরই পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম।
চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। দেশে পণ্যটির ৯৮ শতাংশই আমদানি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার প্রভাবে সংস্থাটির জ্বালানি তেল আমদানি বাড়লেও এ বাবদ ব্যয় অনেকখানিই কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিপিসির সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সংস্থাটির জ্বালানি তেল আমদানি বাবদ ব্যয় কমেছে অন্তত ৪২ কোটি ডলার।

ব্যয় কমলেও দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করতে এখনো প্রস্তুত নয় বিপিসি। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ চুক্তির শর্তে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি মাসেই বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলা রয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দাম নিম্নমুখী থাকলেও এখনো দেশের বাজারে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। সংস্থাটির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। জ্বালানির দাম কমলেই সঙ্গে সঙ্গে দেশে কমানো সম্ভব হয় না। এলসি বা ক্রয়াদেশে যে মূল্য থাকে সে দামেই জ্বালানি কেনা হয়। জ্বালানি তেলের এলসি করার পর আমদানি, পরিশোধন ও মজুদ করা হয়। নতুন দামে কেনা জ্বালানি বাজারে ছাড়ার আগে পুরনো মজুদ শেষ করতে হয়। সব মিলিয়ে আমদানির পর জ্বালানি তেল চূড়ান্ত ক্রেতার হাত পর্যন্ত পৌঁছতে অনেক সময় লেগে যায়। দেশের বাজারে এখন যে জ্বালানি তেল পাওয়া যায় তা আগে করা এলসির ভিত্তিতে আমদানীকৃত। ফলে এখনই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে জ্বালানি তেলের দাম কমানো সম্ভব নয়।
বিষয়টি নিয়ে বিপিসি চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ এনডিসিসহ ঊর্ধ্বতন কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ মুহূর্তে জ্বালানি তেলের বাজারদর নিম্নমুখী হয়ে ওঠার পেছনে প্রধানত বৈশ্বিক ব্যাংক খাতের সংকটকেই দায়ী করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা। সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতনের পর পশ্চিমা দেশগুলোয় খাতটি ঘিরে রীতিমতো আতঙ্ক দেখা দেয়। এ আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে তোলে ক্রেডিট সুইসের ধসের আশঙ্কা। পরবর্তী সময়ে সুইস ব্যাংক ইউবিএস ক্রেডিট সুইসকে অধিগ্রহণের ঘোষণা দিলেও খাতটির বর্তমান দুর্দশা নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে গতকালও ব্যাংক খাতের শেয়ার ও বন্ডের দাম ছিল নিম্নমুখী।
জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রফতানিকারকদের সংগঠন ওপেক প্লাসও পণ্যটির বর্তমান বাজার পরিস্থিতির পেছনে ব্যাংক খাতের দুর্দশাকেই দায়ী করছে। জোটসংশ্লিষ্ট সূত্রদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০০৮ সালের মতোই আর্থিক খাতে বড় আরেকটি ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের বাজারে উদ্বেগের আরেকটি বড় কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে ফেডের সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা। আগামীকাল এ-সংক্রান্ত একটি ঘোষণা আসার কথা রয়েছে। রয়টার্সের এক জরিপের তথ্যানুযায়ী, ওইদিনের বৈঠকে ফেড সুদহার ২৫ বেসিস পয়েন্ট (দশমিক ২৫ শতাংশ) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর্থিক ও মুদ্রাবাজারের বর্তমান অস্থিতিশীলতার মধ্যে এ সিদ্ধান্ত খাতটির সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের অনেকের। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এখন ফেডের প্রতি এ মুহূর্তে সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংকের কমোডিটি রিসার্চ বিভাগের প্রধান বাডেন মুর রয়টার্সকে বলেন, ‘অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গোটা বাজারে সবার মনোযোগ এখন ব্যাংক খাতের অস্থিতিশীলতা ও ফেডের সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনার ওপর নিবদ্ধ।’
অনেকটা একই বক্তব্য দিয়ে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আইএনজি ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক নোটে বলা হয়, আগামী আরো কিছুদিন গোটা আর্থিক খাত নিয়ে আশঙ্কা বৃহদায়তনে জ্বালানি তেলের বাজারে সবচেয়ে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।
কিছুদিন আগেই চলতি বছরের পুরো সময় ধরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমানোর ঘোষণা দেয় ওপেক প্লাস জোট। ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৩ শেষে জোটভুক্ত দেশগুলোর দৈনিক উত্তোলন গত বছরের তুলনায় ২০ লাখ ব্যারেল কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ানোর এ প্রয়াসও পণ্যটির বাজারকে উত্তোলনকারীদের লক্ষ্যমাফিক ঊর্ধ্বমুখী করতে পারছে না। আগামী আরো কিছুদিন বাজারে এ পরিস্থিতি চালু থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
এশিয়ার শীর্ষ দেশগুলোয় বাড়তি চালের দাম

এশিয়ার চালের বাজারে চলতি সপ্তাহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। এর মধ্যে শীর্ষ রফতানিকারক ভারতে শস্যটির দাম কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলক কম দামের কারণেই ক্রেতারা ভারতীয় চালের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। এদিকে ভিয়েতনাম তুলনামূলক বেশি দামে চাল বিক্রি করছে। ফলে দেশটির চালের চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ভারত চলতি সপ্তাহে ৫ শতাংশ ভাঙা চাল রফতানি করছে প্রতি টন ৩৭৫-৩৮০ ডলারে। গত সপ্তাহে একই চাল রফতানি হয়েছিল টনপ্রতি ৩৭৪-৩৭৮ ডলারে। অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাডাভিত্তিক রফতানিকারক জানান, নিম্নমুখী দামের কারণে এশিয়ার দেশগুলোতে ক্রয়ের পরিমাণ বেশ ভালোই বেড়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্রেতাই এখনো সাইডলাইনে।
ভিয়েতনাম ৫ শতাংশ ভাঙা চাল রফতানি করছে ৪৯০-৪৯৫ ডলারে। গত সপ্তাহের মতোই এটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে এ দাম এপ্রিলের শেষ দিকের তুলনায় সর্বোচ্চ। হো চি মিন সিটিভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে অনেক ক্রেতা ক্রয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে বাণিজ্যিক কার্যক্রম কিছুটা শ্লথ।
সরকারি তথ্য বলছে, ভিয়েতনাম চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৩৯ লাখ টন চাল রফতানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
তবে বার্ষিক চাল রফতানি লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভিয়েতনাম। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি রফতানির পরিমাণ ৪০ লাখ টনে নামিয়ে আনবে, যা বর্তমান সময়ের তুলনায় অন্তত ৪৪ শতাংশ কম। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে দেশটির সরকার তথ্যটি নিশ্চিত করে।

ভিয়েতনাম বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক। ভারত ও থাইল্যান্ডের পরই দেশটির অবস্থান। গত বছরও দেশটি ৭১ লাখ টন চাল রফতানি করেছে। তবে আগামী বছরগুলোয় রফতানি এর চেয়ে অনেক কমিয়ে আনা হবে। উদ্দেশ্য স্থানীয় খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি উচ্চমানসম্পন্ন চাল রফতানি বাড়ানো।
সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়, এর ফলে ২০৩০ সাল নাগাদ চাল রফতানি থেকে দেশটির বার্ষিক আয় কমে ২৬২ কোটি ডলারে নামতে পারে, গত বছর যা ছিল ৩৪৫ কোটি ডলার।
হো চি মিন সিটিভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভিয়েতনামে ধানের আবাদ কমায় চাল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। কৃষকরা এখন অন্য ফসল উৎপাদনে বেশি আগ্রহী। চিংড়ি চাষও বাড়াচ্ছেন তারা। মেকং ডেল্টার কৃষকরা তাদের আবাদি জমির একটি অংশকে ফলের বাগানে রূপান্তর করছেন। যদিও বড় সংখ্যক কৃষক এখনো চালের ওপরই নির্ভরশীল।
প্রসঙ্গত, ২০২৩-২৪ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ৫২ কোটি ১০ লাখ টন চাল উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি)। আগের মাসের মতোই এটির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ২০২২-২৩ মৌসুমের তুলনায় উৎপাদন লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়বে। বাণিজ্য পূর্বাভাসও ৫ কোটি ৪০ লাখ টনে অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে শস্যটির ব্যবহার ১০ লাখ টন বেড়ে ৫২ কোটি টনে উন্নীত হতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
প্রেসিডেন্টের শপথ নিলেন এরদোয়ান

তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটে টানা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার এক সপ্তাহ পর তুরস্কের প্রেসিডেন্টের শপথ নিয়েছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। শনিবার শপথ গ্রহণের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে তৃতীয় দশকে নিয়ে গেছেন তুরস্কের এই প্রেসিডেন্ট।
আঙ্কারায় পার্লামেন্ট ভবনে শপথ নেওয়ার সময় এরদোয়ান বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মহান তুর্কি জাতি ও তুরস্কের ইতিহাস-অখণ্ডতার প্রতি আমার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
গত ১৪ মে তুরস্কে নির্বাচনে ৪৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পান এরদোয়ান। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলু পেয়েছিলেন ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট। কোনও প্রার্থী ৫১ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রান-অফ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি।
রাফ-অফ নির্বাচনে ৫২ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তুরস্কে দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান। ৯ বছর প্রেসিডেন্ট আর ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করা এরদোয়ানের নেতৃত্বে ক্রমাগত কর্তৃত্ববাদী শাসনের পথে হাঁটা তুরস্কে স্মরণকালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এরদোয়ানের পেশীবহুল পররাষ্ট্র নীতি আর অপ্রচলিত উপায়ে দেশের অর্থনীতি পরিচালনার ফলে রেকর্ড মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।
এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ভোটে এরদোয়ানের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল তিন মাস আগে দেশটিতে আঘাত হানা স্মরণকালের ভয়াবহ এক ভূমিকম্প। ওই ভূমিকম্পে অর্ধ-লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ভূমিকম্পের পর উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে দেশ ও বিদেশি তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হয় এরদোয়ান নেতৃত্বাধীন সরকারকে।

পার্লামেন্টে শপথ গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে একটি অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর আরবান ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানসহ ৭৮টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে।
শনিবারই তুরস্কের নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করার কথা রয়েছে এরদোয়ানের। তুরস্কের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর প্রচেষ্টায় তার অপ্রচলিত নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারো শপথ নিলেন এরদোগান

প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারো শপথ নিলেন তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। এটি তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে শপথ এবং শাসক হিসেবে টানা ২০ বছর শেষে আরো পাঁচ বছর মেয়াদে ক্ষমতাসীন হওয়া।
প্রথম পর্বের অমীমাংসিত ভোটের পর দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন তিনি।
শনিবার (৩ জুন) তিনি এ শপথ নেন।
এদিন আঙ্কারার পার্লামেন্টে এক অনুষ্ঠানে এরদোগান বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রপতি হিসেবে মহান তুর্কি জাতি ও ইতিহাসের সামনে আমার সম্মান ও অখণ্ডতার শপথ করছি – রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য… সংবিধান, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, আতাতুর্কের নীতি ও সংস্কার এবং ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের নীতি রক্ষার।’
তার বক্তব্যটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

৬৯ বছর বয়সী এ নেতার আজই দিনের পরের দিকে তার নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করার কথা। দেশটির চলমান অর্থনৈতিক সংকট বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি ও লিরার (রাষ্ট্রীয় মুদ্রা) দরপতনে কাজ করতে হবে এ মন্ত্রিসভাকে।
তুরস্কের দীর্ঘতম সময়ের শাসক এরদোগানকে পশ্চিমের সাথে চলমান উত্তেজনার সাথে সাথে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
শনিবার পার্লামেন্টে শপথ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পর রাজধানী আঙ্কারার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে এক জমকালো অনুষ্ঠান হবে, যেখানে কয়েক ডজন বিশ্ব নেতা উপস্থিত থাকবেন।
গত ২৮ মে দ্বিতীয় পর্বের (রান-অফ) নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী জোটকে হারিয়ে নির্বাচিত হন এরদোগান। এ পর্বে এরদোগান পান ৫২.২ শতাংশ ভোট আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগ্লু পান ৪৭.৮ শতাংশ।
এ নির্বাচনের সামনে গত ফেব্রুয়ারিতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের বেশি প্রাণহানি এবং অর্থনৈতিক সংকট তার সামনে ছিল চ্যালেঞ্জ হিসেবে।
আর প্রথম পর্বে কেউই নিয়ম অনুসারে ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। যে কারণে দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচনে যেতে হয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশনকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যৌথ বাহিনী গঠন করবে ইরান-সৌদি-ওমান-আরব আমিরাত

চীনা পৃষ্ঠপোষকতায় ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান এই চার দেশে মিলে যৌথ নৌবাহিনী গঠন করতে যাচ্ছে। পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এ বাহিনী গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে ইরানের নৌ বাহিনীর কমান্ডার রিয়াদ এডমিরাল শাহরাম ইরানি।
কাতারি নিউজ ওয়েবসাইট আল-জাদিদেদর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে পার্সটুডে।
শুক্রবার রাতে টেলিভিশনে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি ঘোষণা করেন, পারস্য অঞ্চলীয় দেশগুলো নিজেদের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে এ বাহিনী গঠন করবে।
চীন এরইমধ্যে তেহরান, রিয়াদ ও আবু ধাবির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। এর আগে গত মার্চ মাসে তেহরান ও রিয়াদের সম্পর্কে টানাপড়েনের অবসান ঘটিয়ে তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে ভূমিকা রাখে বেইজিং।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো বেইজিংয়ের মধ্যস্থতা মেনে নিতে যে সম্মতি দিয়েছে তার ফলে প্রমাণিত হয় ওয়াশিংটনের ক্ষয়প্রাপ্ত প্রভাবের বিপরীতে এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব দিন দিন বাড়ছে।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব হওয়ার পর থেকে তেহরান পারস্য উপসাগর থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এসেছে। ইরান আরো বলেছে, আঞ্চলিক যেকোনো সমস্যার সমাধান আঞ্চলিক দেশগুলোকেই করতে হবে। কোনো বহিঃশক্তি এখানকার সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।
অর্থসংবাদ/এস.ইউ
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
তাইওয়ান-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক চুক্তি, চীনের হুশিয়ারি

তাইওয়ানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক চুক্তি সই করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ওই বাণিজ্য যুক্তি সম্পাদিত হয়।
তাইওয়ানের সঙ্গে যে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক লেনদেনের ব্যাপারে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিয়েছে বেইজিং। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বেইজিংয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ হুশিয়ারি দেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে যেসব দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে, তাইওয়ানের সঙ্গে সেসব দেশের যে কোনো ধরনের লেনদেনের বিরোধী তার দেশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ও তাইপে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করে। প্রায় এক বছরের আলোচনা শেষে ওই চুক্তি সম্পাদন করে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ান। ২০২১ সালে জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এই প্রথম দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি সই করা হলো।
প্রসঙ্গত, ‘এক চীন’ নীতির অধীনে তাইওয়ানের ওপর সার্বভৌম ক্ষমতা রয়েছে চীনের। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ ‘এক চীন’ নীতি মেনে চলার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তার পরও চীনকে উপেক্ষা করে তাইওয়ানকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।