অর্থনীতি
অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের জন্য বন্ড চালুর দাবি

বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের জন্য বন্ড চালু করার দাবি জানিয়েছেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা। শনিবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এক সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনে ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) প্রেসিডেন্সির বিশেষ দূত মো. আবুল কালাম আজাদ। বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
কাউন্সিল সদস্য মো. হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইসিএবি সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান, ভাইস প্রেসিডেন্ট এমবিএম লুৎফুল হাদী এবং আইসিএবি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ বসু।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বৃহৎ প্রকল্পে অর্থায়নে যেন বৈদেশিক মুদ্রার চাপ অনুভূত না হয় এবং বেসরকারি খাত উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রাকে কাজে লাগানো যায় সেজন্য বন্ড চালু করা যায়। বর্তমানে, এলসি খোলার সীমিত অ্যাক্সেসের কারণে উৎপাদনকারী এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিকারকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে দেশের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করবে।
বক্তারা আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ একটি সামগ্রিক ধারণা এবং তাই এটিকে শুধুমাত্র ডিজিটাল স্পেসের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা অতীন্দ্রিয় হবে। যদিও চারটি উপাদানের অনেকগুলি দিক ডিজিটাল রূপান্তরের উপর ফোকাস করে যেমন নাগরিকের জন্য শতভাগ ডিজিটাল অ্যাক্সেস, শতভাগ কাগজবিহীন সরকার ব্যবস্থা, সমাজের জন্য ডিজিটাল সহনশীলতা এবং অর্থনীতির জন্য আইসিটি শিল্পের বিকাশ, কিন্তু এই চারটি উপাদানের প্রতিটিতে আরও অনেকগুলি অন্তর্নিহিত কারণ রয়েছে যার জন্য ব্যাপক প্রয়োজন। ইনপুট চারটি উপাদানের প্রতিটির অধীনে যেখানে চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে সরকারকে সহায়তা করতে সক্ষম ভূমিকা পালন করতে পারে।
তারা বলেন, বিস্তৃত অটোমেশন এবং ডিজিটাইজেশনের অর্থ হল বর্তমান কাগজ ভিত্তিক প্রক্রিয়া বিদ্যমান থাকবে না, মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়া করার প্রয়োজন হবে না,
তারা বলেন, ট্রিলিয়ন ডলার প্লাস জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে যাত্রা সহজতর করার জন্য বিভিন্ন নীতি সংস্কারের প্রয়োজন। কর ব্যবস্থা, এফডিআই, শিক্ষা ব্যবস্থা, সাইবার নিরাপত্তা, ডেটা শেয়ারিং, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ, ব্যবসা করার সহজতা উন্নত করার জন্য বিভিন্ন সরকারী প্রক্রিয়ার সরলীকরণের ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন।
সম্মেলনের প্রথম টেকনিক্যাল অধিবেশনে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য জার্নি টু ২০৪১’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট প্রোগ্রামের (এটুআই) প্রজেক্ট অ্যানালিস্ট ডেপুটি সেক্রেটারি মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং ডেভো টেক টেকনোলজি পার্কের চেয়ারম্যান আহমেদ রায়হান শামসি।
সেশনের প্যানেল আলোচক ছিলেন আইসিএমএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক একেএম আফতাবুল ইসলাম, এমসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও টেকনোহেভেনের সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম, বেসিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিরা জুবেরি হিমিকা।
বিকর্ণ কুমার ঘোষ তার মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, যে সরকার দেশব্যাপী হাই-টেক ইনফ্রাস্ট্রাকচার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য মেগা পরিকল্পনা নিয়েছে যার মধ্যে কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি, যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, ঢাকায় জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, সিলেটে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক, রাজশাহীতে শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক, চুয়েটে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর। কুয়েটে খুলনা আইটি ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের পাশাপাশি দেশের ৮টি জেলায় আইটি ইনকিউবেশন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান ই-কমার্স বাজারের আকার ৩.১ বিলিয়ন ডলার এবং এটি ২০২৫ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান যে ২০৭১ সালের মধ্যে স্মার্ট গ্রিন ইকোনমি বাস্তবায়ন হলে দূষণের অস্তিত্ব, পরিবেশগত হুমকি থাকবে না।
দ্বিতীয় টেকনিক্যাল সেশনে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ অ্যাচিভিং এ ট্রিলিয়ন-ডলার প্লাস ইকোনমি’ এর উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের কাছে একটি টেকসই কৌশলের প্রতিশ্রুতি থাকা উচিত যা ঝুঁকি মোকাবেলাসহ শিল্পের স্থাপনের জন্য উপযুক্ত ও সক্ষম ভূমিকা রাখবে। স্মার্ট গভর্নমেন্ট তৈরি করার জন্য নিয়ন্ত্রকদের কমপ্লায়েন্স পালনে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে । কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এবং আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫০-এর মতো আইনগুলির আধুনিকীকরণ করতে হবে।
আলী হোসাইন আকবর আলী ‘২০৪১ সালের মধ্যে একটি ট্রিলিয়ন-ডলার প্লাস ইকোনমি’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দ্বিতীয় টেকনিক্যাল সেশনের প্যানেল আলোচক ছিলেন জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট হিকারি কাওয়াই এমসিসিআই সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও জাভেদ আখতার এবং সোহজের প্রতিষ্ঠাতা মালিহা কাদির।
টেকনিক্যাল সেশন-৩ এ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আইসিএবির কাউন্সিল মেম্বার মো. আব্দুল কাদের জোয়াদ্দার হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং-এর পার্টনার এবং আইসিএবির কাউন্সিল সদস্য সাব্বীর আহমেদ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ সেশনে প্যানেল আলোচক ছিলেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি ও এক্সপো গ্রপের সিইও মাহমুদউল হাসান খসরু. এমএবিএস অ্যান্ড জে পার্টনারস চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের পার্টনার আখতার মতিন চৌধুরী, রহমান রহমান হকের পার্টনার আলী আশফাক, হাওলাদার মারিয়া অ্যান্ড কোং-এর স্বত্বাধিকারী মারিয়া হাওলাদার, দি কম্পিউটারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার আতিক-ই-রব্বানী।
সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন আইসিএবির কাউন্সিল সদস্য মোঃ ইয়াসিন মিয়া।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
এক বছরে বাংলালিংকের আয় বেড়েছে ১২ শতাংশ

বার্ষিক রাজস্ব আয়ে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর কোম্পানি বাংলালিংক। গত বছর প্রতিষ্ঠানটির আয় আগের বছরের তুলনায় ১২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। আর সব মিলিয়ে বাংলালিংকের আয় বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলালিংক বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ভিওনের গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কান তেরজিওগ্লু, বাংলালিংকের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা চেম ভেলিপাসাওগ্লু, প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা উপাঙ্গ দত্ত প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ২০২২ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলালিংক বলছে, গত বছর পরিষেবা থেকে তাদের আয় বেড়েছে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ডেটা থেকে আয় বেড়েছে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এ নিয়ে টানা তিন প্রান্তিকে আয়ের ক্ষেত্রে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলালিংকের।
আয়ের পাশাপাশি বেড়েছে মুঠোফোন কোম্পানিটির গ্রাহকসংখ্যাও। গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বাংলালিংকের গ্রাহকসংখ্যা আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৭ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে দেশে মুঠোফোন অপারেটরদের মধ্যে বাংলালিংক সর্বোচ্চসংখ্যক গ্রাহক অর্জন করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা এখন ৪ কোটি।
দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে দাবি বাংলালিংকের। এ ছাড়া গত বছর বাংলালিংক প্রায় ৪০ শতাংশ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ফলে মোট সাইটের সংখ্যা ১৪ হাজার ১০০ ছাড়িয়েছে।
বাংলালিংকের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ভিওনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বাংলালিংকের ডিজিটাল বিনোদনের প্ল্যাটফর্ম টফির সক্রিয় মাসিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ কোটি ১২ লাখ ছাড়িয়েছে। আর দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫২ লাখ, যা আগের বছরের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি। কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের এক্সক্লুসিভ লাইভস্ট্রিমিংয়ের কারণে টফির জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলালিংক।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলালিংক বোর্ডের চেয়ারম্যান কান তেরজিওগ্লু বলেন, টানা তিন প্রান্তিকে বাংলালিংকের রাজস্ব আয়ে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধিতে আমাদের সাফল্যের প্রমাণ। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল মার্কেটে ধারাবাহিকভাবে উন্নত ডিজিটাল সেবা দিচ্ছে বাংলালিংক।
বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস বলেন, ‘গত বছর আমাদের প্রবৃদ্ধির হার টেলিকম খাতের মোট প্রবৃদ্ধির হারের দ্বিগুণ। দ্রুততম ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করে ও দেশের প্রতিটি এলাকায় উন্নত ডিজিটাল সেবা দিয়ে আমরা দেশব্যাপী বিস্তৃত অপারেটরের মর্যাদা অর্জন করেছি।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আরও ৪ জেলায় ‘বাংলা কিউআর’ কোডে লেনদেন চালু

সর্বজনীন কুইক রেসপন্স কোডের (কিউআর) মাধ্যমে নগদ লেনদেনহীন ব্যবস্থা ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ সেবা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে সেবাটির সম্প্রসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সেবায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, নাটোর ও রংপুর জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সোমবার (২০ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ মিলনায়তনে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ অন বিজনেস এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও বিভিন্ন ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়াও, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, নাটোর ও রংপুর জেলার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে এ উদ্যোগে যেসব ব্যাংক সম্পৃক্ত রয়েছে, সেগুলো হলো- ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, পূবালী ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংক। এ ছাড়া মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান বিকাশ, এমক্যাশ, রকেট এবং আন্তর্জাতিক পরিশোধ স্কিম মাস্টারকার্ড, ভিসা ও অ্যামেক্স এ সেবায় যুক্ত হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমরা এই সেবা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।
প্রতি বছর কোরবানির পশু কেনার সময় শোনা যায় অনেকের পকেটে টাকা নাই। চুরি হয়ে যায়। নতুন এ নগদ লেনদেনহীন ব্যবস্থা এ সমস্যা বন্ধের পাশাপাশি কেনাকাটাকে আরও সহজ ও সময় সাশ্রয়ী করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, টাকা বহন, প্রটেকশন ইত্যাদি কাজে প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচুর টাকা খরচ করতে হয়। এই টাকাটা আসলে জনগণের ট্যাক্সের টাকা। আমরা যদি এই ক্যাশলেস ব্যবস্থা চালু করতে পারি তাহলে টাকা বহন, নিরাপত্তা ইত্যাদি কাজগুলো অনেক সাশ্রয়ী হবে। এক্ষেত্রে সর্ব সাধারণের মাঝে এ সেবা ছড়িয়ে দেয়া জরুরি বলে তিনি মনে করেন। এ সেবাকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন গভর্নর আব্দুর রউফ।
এমন উদ্যোগ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতার মাসে এমন একটি মহান উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন যেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। এর সূচনা হয়েছিল ২০১৯ সালে কিন্তু এটির সম্প্রসারণে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং সেই সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এজন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ জানাই।
ভিসি আরো বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অর্জনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে সেবার গুণগত মান ও স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হলো। এটির পুরো মাত্রায় সফলতা আনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় সহযোগিতা করবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’র কার্যক্রম শুরু হয়। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের ১৮ই জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর শুভ সূচনা করে। এ সেবার আওতায় বাংলা কিউআর নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত যে কোনো ব্যাংক বা মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীরা অন্য যে কোনো ব্যাংক বা এমএফএস অ্যাকাউন্টধারী ব্যবসায়ীদের কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোড স্ক্যান করে পণ্য বা সেবামূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অনলাইন উদ্যোক্তাদের বড় সুযোগ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

অনলাইন উদ্যোক্তাদের খুচরা কেনাকাটায় লেনদেন সম্পন্ন করতে ‘ব্যক্তিগত রিটেইল হিসাব’ নামে ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে এই হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের নামে কোনও ফি না নেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রোববার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ব্যক্তিক রিটেইল হিসাবগুলোর বিপরীতে কোনও প্রকার হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি আদায় করা যাবে না।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজস্ব পণ্য বিক্রি বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত সেবার লেনদেন করা ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে (এমএফএস) গ্রাহকের জন্য ন্যূনতম জমার বাধ্যবাধকতা হতে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শ্রম নির্ভর অতিক্ষুদ্র বা ভাসমান উদ্যোক্তা, প্রান্তিক পেশায় নিয়োজিত পণ্য বিক্রেতা ও সেবা প্রদানকারীরাও এ ধরনের হিসাবের মাধ্যমে কেনাবেচা করতে পারবেন।
নির্দেশনা অনুযায়ী, উদ্যোক্তারা ব্যাংক বা এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টে খোলা চলতি হিসাবের মাধ্যমেও লেনদেন করতে পারবেন। যাদের হিসাব নেই তাদের ক্ষেত্রে চলতি হিসাব খুলে এ ধরনের রিটেইল ব্যাংকিং সুবিধা দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে কোনও লেনদেন সীমা থাকবে না।
তবে ইলেকট্রনিক কেওয়াইসি (গ্রাহক তথ্য) দিয়ে খোলা হিসাবে মাসে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা লেনদেন করা যাবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা পেশাজীবী সমিতির দেওয়া প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে ব্যাংক বা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নিজস্ব কর্মকর্তার সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে এ হিসাব খোলা যায়। তবে সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের মাধ্যমে এ হিসাব খোলা যাবে না। মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কর্মকর্তার সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে হিসাব খুলতে হয়।
এ ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পেমেন্ট নিতে পারেন। নিজের ব্যাংক হিসাবে টাকা স্থানান্তর করতে পারেন। তবে এই হিসাবে নগদ টাকা জমা, অন্য কারও হিসাবে টাকা পাঠানো, ব্যাংক থেকে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে টাকা আনা যায় না।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন এ ধরনের হিসাবে ৩০ হাজার টাকা বিক্রয়মূল্য সংগ্রহ করতে পারবেন। মাসে এই সীমা ৫ লাখ টাকা। মাসে পাইকারের পাওনা পরিশোধ করতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা। এছাড়া মোবাইল ওয়ালেট সেবার আওতায়ও এ ধরনের হিসাব খোলা যায়। সেখানেও মাসে সর্বোচ্চ লেনদেনের সীমা ১০ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে অনলাইন উদ্যোক্তাদের খুচরা কেনাকাটায় লেনদেন সম্পন্ন করতে ‘ব্যক্তিগত রিটেইল হিসাব’ নামে ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে জাল নোট প্রতিরোধে বিশেষ নির্দেশনা

বিভিন্ন উৎসবে জাল নোট চক্রের অপতৎপরতা বাড়ে। তেমনি পবিত্র রমজান মাসে কেনাকাটাসহ ব্যবসায়ীক লেনদেন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এর সুযোগ নেয় নোট জালকারী চক্র। তাই রমজানে নোট জালকারী চক্রের অপতৎপরতা রোধে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য বিশেষ কয়েকটি নির্দেশনা পালন করতে বলা হয়েছে।
রোববার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
এর মধ্যে রাজধানীতে ৫৮ স্থানে জাল নোট প্রতিরোধে ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ভিডিও বিভিন্ন ব্যাংককে জনগণের সামনে প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ভিডিও চিত্র রমজান মাসে ঢাকা শহর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাগুলোর নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বগুড়া জেলাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরের গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগমস্থল, রাস্তার মোড়ে সন্ধ্যার পর কমপক্ষে ১ ঘণ্টা করে প্রচার করতে হবে। দেশের ব্যাংকগুলোর শাখায় গ্রাহকদের জন্য স্থাপিত টিভি মনিটরগুলোতে ভিডিও চিত্রটি পুরো ব্যাংকিং সময়ে প্রদর্শন করতে হবে।
ব্যাংকের শাখাগুলোতে উচ্চ মূল্যমানের নোট গ্রহণ ও প্রদানকালে এবং এটিএম মেশিনে টাকা ফিডিংয়ের পূর্বে আবশ্যিকভাবে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন দ্বারা নোট পরীক্ষা করতে হবে। রমজান মাস শেষ হওয়ার পর ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে আলোচিত নির্দেশনা পরিপালনের স্বপক্ষে একটি সচিত্র প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে জমা দিতে হবে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে ২২ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা

রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতিষ্ঠানটির আয়কর, ভ্যাট এবং শুল্ক, তিন বিভাগেই ঘাটতি চলমান রয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৮ মাসে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। এলসি খুলতে না পারায় আমদানি ও রপ্তানিতে ধীরগতি ও মূল্যস্ফীতিতে রাজস্ব ঘাটতি প্রকট হয়েছে।
এনবিআরের কাঁধে চলতি অর্থবছরে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এরমধ্যে ৮ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৯৭৮ হাজার কোটি টাকা।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বলছে, আট মাসে ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের আদায় সবচেয়ে বেশি। এ খাতে আদায় হয়েছে ৭৬ হাজার ৪০১ কোটি টাকা। ঘাটতি হয়েছে ৫ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। এই সময়ে মূসক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮২ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। যদিও গত অর্থবছরের তুলনায় একই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ।
আয়কর খাতে ৮ মাসে আদায় হয়েছে ৬০ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। এ খাতে লক্ষ্যের চেয়ে ২ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা পিছিয়ে আছে এনবিআর। এই খাতে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ।
একই সময়ে আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৫৯ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। এই খাতে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা। এই খাতে ৮ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৩ হাজার ১৩ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদ/এসএম