আন্তর্জাতিক
পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। শুক্রবার (১৭ মার্চ) এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স ও বিবিসি।
ইউক্রেনে মানবতার বিরুদ্ধে পুতিন অপরাধ করেছে অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে শুক্রবার এ পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পৃথকভাবে আদালত একই অভিযোগে রাশিয়ার শিশু অধিকার কমিশনার মারিয়া আলেকসেয়েভনা লভোভা-বেলোয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
গতবছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর সেখানে মানবাধিকার লঙ্গন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করে আসছে ইউক্রেন ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা। তবে মস্কো বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রাশিয়া দাবি করে আসছে ইউক্রেনে যুদ্ধ চলাকালে কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়নি।
শিশুদের বেআইনি নির্বাসন এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়া ফেডারেশনে লোকদের বেআইনিভাবে স্থানান্তরের সন্দেহে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ১৫ মাসে সর্বনিম্ন

বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নেই বৈশ্বিক ব্যাংক খাত। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আবারো দেখা দিয়েছে মন্দার আশঙ্কা। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারেও দেখা দিয়েছে পণ্যটির চাহিদা পতনের সম্ভাবনা। এর ধারাবাহিকতায় বাজারে এখন দ্রুতগতিতে দাম কমছে জ্বালানি তেলের। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম এখন নেমে এসেছে ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে।
কয়েকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমছে অবাধে। নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) গত সপ্তাহেও ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। শুক্রবার মার্কিন বাজার আদর্শটির সাপ্তাহিক বাজার স্থির হয়েছিল প্রতি ব্যারেল ৬৬ ডলার ৭৪ সেন্টে। সেখান থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গতকাল সাপ্তাহিক বাজারের প্রথম দিনে একপর্যায়ে তা নেমে আসে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ ডলার ৮৬ সেন্টে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম শুক্রবার দিন শেষে ছিল প্রতি ব্যারেল ৭২ ডলার ৯৭ সেন্ট। সেখান থেকে আরো ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গতকাল একপর্যায়ে তা নেমে আসে ৭০ ডলার ৯০ সেন্টে।
ডব্লিউটিআই ও ব্রেন্টসহ জ্বালানি তেলের প্রায় সব বাজার আদর্শেই এখন মূল্য নেমে এসেছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর সর্বনিম্নে। বৈশ্বিক আর্থিক খাতের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিগগিরই পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম।
চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। দেশে পণ্যটির ৯৮ শতাংশই আমদানি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার প্রভাবে সংস্থাটির জ্বালানি তেল আমদানি বাড়লেও এ বাবদ ব্যয় অনেকখানিই কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিপিসির সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সংস্থাটির জ্বালানি তেল আমদানি বাবদ ব্যয় কমেছে অন্তত ৪২ কোটি ডলার।
ব্যয় কমলেও দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করতে এখনো প্রস্তুত নয় বিপিসি। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ চুক্তির শর্তে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি মাসেই বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলা রয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দাম নিম্নমুখী থাকলেও এখনো দেশের বাজারে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। সংস্থাটির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। জ্বালানির দাম কমলেই সঙ্গে সঙ্গে দেশে কমানো সম্ভব হয় না। এলসি বা ক্রয়াদেশে যে মূল্য থাকে সে দামেই জ্বালানি কেনা হয়। জ্বালানি তেলের এলসি করার পর আমদানি, পরিশোধন ও মজুদ করা হয়। নতুন দামে কেনা জ্বালানি বাজারে ছাড়ার আগে পুরনো মজুদ শেষ করতে হয়। সব মিলিয়ে আমদানির পর জ্বালানি তেল চূড়ান্ত ক্রেতার হাত পর্যন্ত পৌঁছতে অনেক সময় লেগে যায়। দেশের বাজারে এখন যে জ্বালানি তেল পাওয়া যায় তা আগে করা এলসির ভিত্তিতে আমদানীকৃত। ফলে এখনই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে জ্বালানি তেলের দাম কমানো সম্ভব নয়।
বিষয়টি নিয়ে বিপিসি চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ এনডিসিসহ ঊর্ধ্বতন কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ মুহূর্তে জ্বালানি তেলের বাজারদর নিম্নমুখী হয়ে ওঠার পেছনে প্রধানত বৈশ্বিক ব্যাংক খাতের সংকটকেই দায়ী করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা। সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতনের পর পশ্চিমা দেশগুলোয় খাতটি ঘিরে রীতিমতো আতঙ্ক দেখা দেয়। এ আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে তোলে ক্রেডিট সুইসের ধসের আশঙ্কা। পরবর্তী সময়ে সুইস ব্যাংক ইউবিএস ক্রেডিট সুইসকে অধিগ্রহণের ঘোষণা দিলেও খাতটির বর্তমান দুর্দশা নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে গতকালও ব্যাংক খাতের শেয়ার ও বন্ডের দাম ছিল নিম্নমুখী।
জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রফতানিকারকদের সংগঠন ওপেক প্লাসও পণ্যটির বর্তমান বাজার পরিস্থিতির পেছনে ব্যাংক খাতের দুর্দশাকেই দায়ী করছে। জোটসংশ্লিষ্ট সূত্রদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০০৮ সালের মতোই আর্থিক খাতে বড় আরেকটি ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের বাজারে উদ্বেগের আরেকটি বড় কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে ফেডের সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা। আগামীকাল এ-সংক্রান্ত একটি ঘোষণা আসার কথা রয়েছে। রয়টার্সের এক জরিপের তথ্যানুযায়ী, ওইদিনের বৈঠকে ফেড সুদহার ২৫ বেসিস পয়েন্ট (দশমিক ২৫ শতাংশ) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর্থিক ও মুদ্রাবাজারের বর্তমান অস্থিতিশীলতার মধ্যে এ সিদ্ধান্ত খাতটির সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের অনেকের। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এখন ফেডের প্রতি এ মুহূর্তে সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংকের কমোডিটি রিসার্চ বিভাগের প্রধান বাডেন মুর রয়টার্সকে বলেন, ‘অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গোটা বাজারে সবার মনোযোগ এখন ব্যাংক খাতের অস্থিতিশীলতা ও ফেডের সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনার ওপর নিবদ্ধ।’
অনেকটা একই বক্তব্য দিয়ে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আইএনজি ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক নোটে বলা হয়, আগামী আরো কিছুদিন গোটা আর্থিক খাত নিয়ে আশঙ্কা বৃহদায়তনে জ্বালানি তেলের বাজারে সবচেয়ে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।
কিছুদিন আগেই চলতি বছরের পুরো সময় ধরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমানোর ঘোষণা দেয় ওপেক প্লাস জোট। ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৩ শেষে জোটভুক্ত দেশগুলোর দৈনিক উত্তোলন গত বছরের তুলনায় ২০ লাখ ব্যারেল কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ানোর এ প্রয়াসও পণ্যটির বাজারকে উত্তোলনকারীদের লক্ষ্যমাফিক ঊর্ধ্বমুখী করতে পারছে না। আগামী আরো কিছুদিন বাজারে এ পরিস্থিতি চালু থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কুয়েতে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা

কুয়েতে পাইপলাইন ফুটো হয়ে তেল ছড়িয়ে পড়ায় ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে একটি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি।
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে তেল ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার এ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। কুয়েত অয়েল কোম্পানি তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।
তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বা তেল উৎপাদনে কোনও ব্যঘাত ঘটেনি বলেও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। তেল কোম্পানির মুখপাত্র কুসাই আল–আমের বলেন, ঘটনাস্থলে কোনও বিষাক্ত ধোঁয়া শনাক্ত হয়নি। মাটিতে পাইপলাইন ছিদ্র হয়েছে। তবে তা কোনও আবাসিক এলাকায় নয়।
ছিদ্র কোথায় হয়েছে তা খুঁজে বের করা এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিম পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। কুয়েতের আল রাই পত্রিকার টুইটারে প্রকাশিত এক ভিডিওতে একটি বিরান ভূমিতে তেলের পাইপ থেকে বিপুল পরিমাণ তেল বেরোতে দেখা গেছে।
বিশ্বের অন্যতম তেল উৎপাদনকারী দেশ কুয়েত। দেশটির ৯০ শতাংশ রাজস্বই আসে তেল থেকে। কুয়েত অয়েল কোম্পানি এর আগেও ২০১৬ ও ২০২০ সালে পাইপলাইন ছিদ্র হয়ে তেল ছড়িয়ে পড়ার কথা জানিয়েছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চারশ বছরের পুরনো শহরে টুপি পরে মসজিদ উদ্বোধন নিউইয়র্কের মেয়রের

নিউইয়র্কের ইস্ট এলমর্হাস্টে ইসলামিক সেন্টার অব জ্যাকসন হাইটস ইনক এর ‘মসজিদ আবু হুরায়রা’ উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস।
ইস্ট এলহার্স্টে মসজিদ উদ্বোধন ঘিরে ছিলো উৎসবের আমেজ। প্রবাসী বাংলাদেশী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদ উদ্বোধন করে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র।
অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র এবং জনপ্রতিনিধিদের পবিত্র কোরান উপহার দেন অ্যাটর্নী মঈন চৌধুরী। মসজিদ পরিচালনা কমিটির নেতারা ছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন মসজিদ নির্মাণের রিয়েলটর গৌরাঙ্গ কুন্ডু।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, চারশ বছরের পুরনো নিউইয়র্ক শহরে তিনি সম্ভবত প্রথম টুপি পরে মসজিদ উদ্বোধন করলেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মেলিন্ডা কেট্জ, অ্যাসেম্বলিওমেন জেনিফার রাজকুমার এবং অন্যরা।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পতনের ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ২০০ ব্যাংক

যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ধসের পরেই বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া পুঁজিবাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটির তিন ব্যাংকে ধস নামে। এই ধস বিশ্ব পুঁজিবাজারে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার আরো প্রায় ২০০ ব্যাংক পতনের ঝুঁকি মুখে রয়েছে। আমেরিকার চারজন বিশেষজ্ঞের গবেষণা রিপোর্টের বরাত দিয়ে আরটি এ তথ্য জানিয়েছে।
গবেষণা রিপোর্ট বলা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি অস্থিতিশীল বাজার শান্ত করার জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা সত্ত্বেও এসব ব্যাংক পতনের ঝুঁকি মুখে রয়েছে। আমেরিকার প্রায় ২০০ ব্যাংক সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের ভাগ্যবরণ করতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৭ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ৬ মার্চ পর্যন্ত মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক শতকরা ৪.৫৭ ভাগ সুদের হার বাড়িয়েছে যার কারণে এই সময়ে ব্যাংকগুলোর গচ্ছিত সম্পদের মূল্য উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে যায়। মার্কিন চার অর্থনীতিবিদের গবেষণা রিপোর্ট সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কে এ গত সপ্তাহে প্রকাশ হয়। একদিকে ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়িয়ে উচ্চহার সুদে ঋণ দিয়ে নিজেরা লাভবান হয়েছে, অন্যদিকে অনেক ব্যাংক তাদের অতিরিক্ত নগদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মার্কিন ট্রেজারিতে রেখে দিয়েছে। সুদের হার বাড়ানোর কারণে এইসব গচ্ছিত বন্ডের মূল্য এখন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। খবর- পার্সটুডে
এদিকে আমেরিকার মাল্টিন্যাশনাল বিনিয়োগ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী লরেন্স ফিঙ্ক সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক ব্যাংকিং খাত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দেশটির মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে বাড়তে পারে সুদ হার। আর্থিক পরিস্থিতিকে ‘সহজ অর্থের মূল্য’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার আরও বৃদ্ধির প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার শঙ্কায় বিনিয়োগ যাচ্ছে সোনায়

যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া ব্যাংক খাতের সংকট বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা ডেকে আনতে পারে-এমন শঙ্কায় গ্রাহকরা নিরাপদ হিসেবে সোনায় বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। গ্রাহকরা নগদ অর্থ তুলতে শুরু করায় যুক্তরাষ্ট্রে ছোট ও মাঝারি ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়ছে। এ অবস্থায় দুটি ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর আরো বেশ কিছু ব্যাংক ঝুঁকিতে রয়েছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস জানায়, বিশ্বে ব্যাংক খাতে অস্থিরতা শুরু হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা সোনায় অর্থ ঢালছেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে গত শুক্রবার এক দিনে সোনার দাম প্রায় ৬৯ ডলার বেড়ে প্রতি আউন্স হয় এক হাজার ৯৮৮ ডলার। অর্থাৎ দুই হাজার ডলারের কাছাকাছি। এক দিনে সোনার দাম বেড়েছে ৩.৫৯ শতাংশ এবং এক সপ্তাহে বেড়েছে ৬.৪৪ শতাংশ। দুই দিনের ছুটি কাটিয়ে সোমবার বাজার খুললে মূল্যবান ধাতুর দাম আরো বাড়তে পারে।
সোনার পাশাপাশি বাড়ছে রুপার দামও। গত শুক্রবার বিশ্ববাজারে রুপার দাম ৪.১১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স হয় ২২.৬০ ডলার। এক সপ্তাহে বেড়েছে ১০.২০ শতাংশ।
সংস্থা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু হওয়া এ সংকটে বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বৃদ্ধির পথ থেকে ফিরে আসবেন বড় ধরণের মন্দা এড়াতে। সে কারণে বাড়ছে সোনার দাম।
এরই মধ্যে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) নীতি সুদহার ৫০ বিপিএস বাড়িয়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছেন, যা এ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর কথা থাকলেও তা থেকে পিছু হটতে পারে ফেড।
নিউ ইয়র্কভিত্তিক মূল্যবান ধাতু ব্যবসায়ী তাই ওয়াংগ বলেন, ‘ব্যাংক খাতের আরো অনেক মন্দ খবর আসতে পারে, এমন উদ্বেগ থেকে সোনার দাম বাড়ছে। এমনকি বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ফেডের পরবর্তী বৈঠকে সুদহার বাড়ানো হবে না।’
এফএক্সটিএমের সিনিয়র গবেষক লুকম্যান ওটুনুগা বলেন, ‘ব্যাংক খাতের অস্থিতিশীলতার কারণে বিনিয়োগকারীরা ঢাল হিসেবে সোনায় বিনিয়োগ করছেন।’ তাঁর মতে, ডলার ও শেয়ারবাজার নিম্নমুখী রয়েছে। ফলে মূল্যবান ধাতু আরো আকর্ষণীয় বিনিয়োগ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় সবাই নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনায় বিনিয়োগ বাড়ায়।
গত ১০ মার্চ মূলধনসংকটে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি) বন্ধ করে দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই বন্ধ করে দিতে হয় সিগনেচার ব্যাংকও। এ অবস্থায় আতঙ্কের পারদ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে আসে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক ক্রেডিট সুইসে। যদিও সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫৩.৭ বিলিয়ন ডলার সহায়তায় আপাতত দেউলিয়ার হাত থেকে রক্ষা পেল ক্রেডিট সুইসে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীল হিসেবে বিনিয়োগকারীদের কাছে সোনার মূল্য অনেক, বিশেষ করে অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে। এর আগে বৈশ্বিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের নির্বাহী পরিচালক ওয়েনে গর্ডন বলেছিলেন, ‘২০২৩ সালেই সোনার দাম প্রতি আউন্স দুই হাজার ডলার অতিক্রম করবে।’ তিনি বলেন, ‘গত বছর সুদের হার বৃদ্ধির কারণে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হলেও এখন আবার দুর্বল হচ্ছে। এ অবস্থায় ডলারের বিপরীতে নিরাপদ ঢাল হতে পারে সোনা।’
এদিকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও। সবচেয়ে ভালো মানের সোনার (২২ ক্যারেট) দাম ভরিতে সাত হাজার ৬৯৮ টাকা বেড়ে হয়েছে ৯৮ হাজার ৭৯৪ টাকা।
অর্থসংবাদ/এসএম