খেলাধুলা
এশিয়া কাপে স্বর্ণের লড়াইয়ে দিয়া-রুবেল

এশিয়া কাপ ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং আরচারি টুর্নামেন্ট স্টেজ-১ এর ফাইনালে উঠে পদক নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। চাইনিজ তাইপেতে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছে রিকার্ভ মিশ্র দলগত বিভাগে।
দেশসেরা নারী আরচার দিয়া সিদ্দিকী ও হাকিম আহমেদ রুবেল জুটি সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫-১ সেট পয়েন্টে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে।
এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ ৬-২ সেট পয়েন্টে পরাজিত করে মালয়েশিয়াকে। বাংলাদেশ ১৯ মার্চ ফাইনালে কাজাখস্তানের মুখোমুখি হবে।
এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের ৯ সদস্যের দল। ১০ ইভেন্টের মধ্যে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে ৭ টিতে। সেগুলো হচ্ছে- রিকার্ভ পুরুষ একক, রিকার্ভ মহিলা একক, রিকার্ভ পুরুষ দলগত, রিকার্ভ মিশ্র দলগত, কম্পাউন্ড পুরুষ একক, কম্পাউন্ড মহিলা একক এবং কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত।
বাংলাদেশ দল
মোহাম্মদ হাকিম আহমেদ রুবেল (রিকার্ভ পুরুষ), মো. সাগর ইসলাম (রিকার্ভ পুরুষ), রাম কৃষ্ণ সাহা (রিকার্ভ পুরুষ), দিয়া সিদ্দিকী (রিকার্ভ মহিলা), মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান (কম্পাউন্ড পুরুষ), শ্যামলী রায় (কম্পাউন্ড মহিলা)।
মো. আয়নাল হক স্বপন: টিম ম্যানেজার, মার্টিন ফ্রেডরিক: প্রধান প্রশিক্ষক, মোহাম্মদ হাসান: প্রশিক্ষক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

খেলাধুলা
শূন্য রানে ৭ উইকেট নিলেন নারিন

কি অবিশ্বাস্য বোলিং! যে কোনো ধরনের ক্রিকেটই হোক, শূন্য রানে একজন বোলার ৭ উইকেট শিকার করবেন, ভাবা যায়? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্ময় স্পিনার সুনিল নারিন সেই অবিশ্বাস্য কাজটিই করেছেন ঘরোয়া লিগে।
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর (টিঅ্যান্ডটি) পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ছিল টিঅ্যান্ডটি ক্রিকেট বোর্ড প্রিমিয়ার ডিভিশন ওয়ানের। চার দিনের এই ম্যাচে নারিন মাঠে নামেন কুইনস পার্ক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে, প্রতিপক্ষ ছিল ক্লার্ক রোড ইউনাইটেড।
ম্যাচে ৬.৪ ওভার বল করে ৬টিই মেইডেন নিয়েছেন নারিন। শূন্য রান দিয়ে শিকার ৭ উইকেট। বোলিং ফিগার: ৬.৪-৬-০-৭!
ক্লার্ক রোডের শেষ ৭ উইকেট তুলে নেন ডানহাতি এ অফ স্পিনার। এর মধ্যে চারজন আউট হন ক্যাচ দিয়ে, দুজন এলবিডব্লিউ আর একজন বোল্ড।
শুধু এই ম্যাচেই নয়, গত তিনটি ম্যাচে নারাইন ৩১টি উইকেট নিয়েছেন। তার মধ্যে টানা চারটি ম্যাচে ইনিংসে পাঁচ উইকেট।
কিছুদিন পরেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল খেলতে শহরে চলে আসবেন নারিন। তার আগে বিধ্বংসী ছন্দে পাওয়া গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের এই স্পিনারকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ভুটানের জালে ৮ গোল বাংলাদেশের মেয়েদের

ভুটানকে ৮-১ গোলে উড়িয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ সাফে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। জোড়া গোল করেছেন শ্রীমতি তৃষ্ণারানী ও থুইনু মারমা। একটি করে গোল সুরভী আকন্দ প্রীতি, সুলতানা আক্তার, সাগরিকা ও মুন্নির।ম্যাচ জুড়েই আধিপত্য দেখিয়েছে স্বাগতিক মেয়েরা। বাংলাদেশের আগ্রাসী ফুটবলের সামনে চিড়েচ্যাপটা হয়ে যায় ভুটান। পরিষ্কার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। সেক্ষেত্রে কোনো কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়নি বাংলাদেশের রক্ষণভাগকে।
১৬তম মিনিটে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন তৃষ্ণারানী। বক্সের ডান প্রান্ত থেকে সুরভীর শট ঝাঁপিয়েও আটকাতে পারেনি ভুটানি গোলরক্ষক দিকশা রয়। দূরের পোস্টের দিকে যাওয়া বলে আলতো ছোঁয়ায় জালে পাঠান ফাঁকায় থাকা তৃষ্ণা রানী। ২৩তম মিনিটে নুসরাত জাহান মিতুর দারুণ এক রক্ষণচেরা পাসে বাঁ প্রান্ত থেকে কোনাকুনি শটে দলকে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে নেন তৃষ্ণা রানী। ৩৫তম মিনিটে সুলতানা আক্তারের গোলে ব্যবধান ৩-০ করে ফেলে বাংলাদেশ। ৪২তম মিনিটে গোল পেয়ে যান সুরভী আকন্দ প্রীতিও।
দ্বিতীয়ার্ধেও দাপুটে ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। ৬০তম মিনিটে বদলি নেমেই গোল করেন থুইনু মারমা। দুই মিনিট পর ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে ব্যবধান আরও বাড়ান আরেক বদলি মুন্নি আক্তার। স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ৬৪তম মিনিটে এক গোল শোধ করে ভুটান। এরপর ৭৬তম মিনিটে থুইনু মারমা দ্বিতীয় এবং ৮৫তম মিনিটে সাগরিকার গোলে বিশাল জয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে গতকাল শিলজি শাহজির হ্যাটট্রিকে নেপালকে ৪-১ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে ভারত। আগামী ২২ মার্চ রাশিয়ার বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
বাংলাদেশের জয় কেড়ে নিলো বৃষ্টি!

এক ইনিংস শেষ হয়েছিল পুরোটাই। মুশফিকুর রহিমের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। আইরিশদের সামনে তাই লক্ষ্য ছিল ৩৫০ রানের। শক্তিমত্তা বিবেচনায় যা বলতে গেলে প্রায় অসম্ভবই হতো সফরকারীদের জন্য।
তবে আইরিশদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বৃষ্টি। বাংলাদেশ ইনিংস শেষ হওয়ার পর মুষলধারে যে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল, সেটি না থামায় অবশেষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন আম্পায়াররা।
কাট-অফ টাইম মানে ম্যাচ শুরু করার শেষ সময় ছিল রাত ৯টা ৩৩ মিনিট। তবে জোর বৃষ্টি থামার কোনো আভাস না থাকায় ৮টা ৩২ মিনিটেই ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা করেন আম্পায়াররা।
ওয়ানডের নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচের ফল আসতে কমপক্ষে ২০ ওভার করে খেলা হতে হবে দুই ইনিংসে। কিন্তু বৃষ্টির তোড় এতটাই ছিল যে আইরিশদের ২০ ওভার ব্যাটিং করানোরও সম্ভাবনা ছিল না। তাই বারকয়েক মাঠ পরিদর্শনের পর ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
এর আগে আইরিশ বোলারদের নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ছেলেখেলায় মাতে বাংলাদেশ। ফিফটি পেলেন লিটন দাস আর নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর রীতিমত তাণ্ডব চালান মুশফিকুর রহিম আর তাওহিদ হৃদয়।
পঞ্চম উইকেটে তারা গড়েন ৭৮ বলে ১২৮ রানের অবিশ্বাস্য এক জুটি। যে জুটিতে ভর করেই বড় সংগ্রহের ভিত হয়ে যায়। শেষটা করেন মুশফিক। ৬০ বলে হার না মানা সেঞ্চুরি উপহার দেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। বাংলাদেশ পায় ৬ উইকেটে ৩৪৯ রানের পুঁজি।
ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। আগের ম্যাচেই ৩৩৮ রানের সংগ্রহ গড়ে এই রেকর্ড গড়েছিলো টাইগাররা, আজ সেটা ভাঙলো।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। তামিম ইকবাল আর লিটন দাস শুরুটা করেছিলেন বেশ দেখেশুনে।
১০ ওভার কাটিয়ে দেন তারা। শেষপর্যন্ত তামিম-লিটনের ৪২ রানের জুটিটি ভাঙে দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে। ভালো ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দিয়ে তামিম উইকেটে সেট হতে যাচ্ছিলেন কেবল। তখনই ভুলটা করে বসলেন এবং দুর্ভাগ্যের শিকার হলেন।
দশম ওভারের শেষ বলে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তামিম লিটনকে কল দিয়েছিলেন রান নেয়ার জন্য। শর্ট রানের জন্য দৌড় দেয়ার আগেই বল কুড়িয়ে সরাসরি থ্রো করেন মার্ক অ্যাডেয়ার।
সরাসরি থ্রোটি আঘাত হানে নন-স্ট্রাইকপ্রান্তের স্ট্যাম্পে। তখনও ক্রিজে পৌঁছার অনেক পথ বাকি তামিমের। ৩১ বলে ২৩ রান করে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এর মধ্যেই মেরেছেন ৪টি বাউন্ডারির মার।
আগের ম্যাচে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন। ফিরতে হয় ২৬ রানে। তবে এবার আর কোনো ভুল করেননি ড্যাশিং এই ওপেনার। ছক্কা মেরে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন, ৫৩ বলে।
দ্বিতীয় উইকেটে লিটন আর নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে ৯৬ বলে যোগ করেন ১০১ রান। ৭১ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৭০ রানের ইনিংস খেলে কুর্তিস ক্যাম্ফারকে উইকেট বিলিয়ে দেন লিটন। মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
১৯ বলে ১৭। উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু আগের ম্যাচে নাইন্টিজে কাটা পড়া এই ব্যাটার এবার ইনিংসটা বড় করতে পারেননি।
আইরিশ পেসার গ্রাহাম হুমেকে তুলে মারতে গিয়ে মিসটাইমিংয়ে বল আকাশে ভাসিয়ে দেন সাকিব। টপ এজ হয়ে গালিতে ধরা পড়েন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ভাঙে শান্ত-সাকিবের ৩৬ বলে ৩৯ রানের জুটি।
সাকিবকে ফেরানোর পর এক ওভার পর এসে আরেক সেট ব্যাটার শান্তকেও তুলে নেন হুমে। লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হন শান্ত। ৭৭ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় গড়া তার ইনিংসটি ছিল ৭৩ রানের।
সাকিব আর শান্তকে ৮ রানের ব্যবধানে ফিরিয়ে কিছুটা লড়াইয়ে ফিরেছিল আইরিশরা। কিন্তু পঞ্চম উইকেট জুটিতে মারমুখী ব্যাটিংয়ে ফের সফরকারীদের কোণঠাসা করে দেন মুশফিকুর রহিম আর তাওহিদ হৃদয়।
১৩ ওভারে ১২৮ রানের বিধ্বংসী জুটি গড়ে ফেরেন হৃদয়। তবে আগের ম্যাচে নাইন্টিজে কাটা পড়া এই তরুণ আরও একবার ফিরেছেন হতাশা নিয়ে। মাত্র এক রানের জন্য ফিফটি করতে পারেননি হৃদয়।
৩৪ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৪৯ রান করে মার্ক এডায়ারের শিকার হন তিনি, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বলটা নিচু হয়ে ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। তবে হৃদয় হাফসেঞ্চুরি মিস করলেও মুশফিক সেঞ্চুরি মিস করেননি।
আইরিশ পেসার গ্রাহাম হুমে ৫৮ রান খরচায় নেন ৩টি উইকেট।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ব্রাজিলের কোপার শিরোপা জয়

কনমেবল বিচ সকার কোপা আমেরিকা-২০২৩ এর ফাইনালে মাঠে নেমেছিল লাতিন আমেরিকার দুই পরাশক্তি আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। রোজারিওতে অনুষ্ঠিত এই ফাইনালে লে আলবিসেলেস্তেদের ১৩-৫ গোলে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছে সেলেসাওরা।
রোববার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। ম্যাচে দারুণ খেলে তৃতীয়বারের মতো এই শিরোপা জিতেছে সেলেসাওরা।
ফাইনাল ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বজায় রেখে খেলতে থাকে ব্রাজিলিয়ানরা। ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৫-০ লিডে এগিয়ে থেকে মাঠ ছাড়ে সেলেসাওরা। ব্রাজিলের হয়ে ফিলিপে দুইটি গোল করেন। এ ছাড়া এডসন হাল্ক, জে লুকাস ও জর্ডানের এক গোলে এই লিড পায় ব্রাজিলের বিচ ফুটবলাররা।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠে ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধে গুনে গুনে আরও ৮টি গোল দেয় তারা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল লে আলবিসেলেস্তেরা। তবে ম্যাচের গোল ব্যবধান কমানো ছাড়া কোনো ফল পায়নি আর্জেন্টাইনরা। আর্জেন্টিনার হয়ে ডি সোসা, রিভাদেনেইরা, পোমার ও মেদেরো গোল করেন। শেষ পর্যন্ত ১৩-৫ গোল ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
এদিকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে প্যারাগুয়েকে ৭-৫ গোলে হারিয়েছে কলম্বিয়া। কলম্বিয়ার হয়ে কর্ডোবা, ওসা ও অ্যাকোস্টা দুইটি করে আর ক্লাভিজো একটি গোল করেন। অন্যদিকে প্যারাগুয়ের হয়ে মার্টিনেজ দুটি এবং বেনিতেজ, রোলন ও ক্যান্তেরোর একটি করে গোল করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচেও মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৮-২ গোলে হারায় ব্রাজিলের বিচ ফুটবলাররা।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের বড় জয়

ব্যাটার সাকিব আল হাসান এবং তৌহিদ হৃদয়ের অবদানে বড় সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। বড় লক্ষ্য তাড়ায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেছে আইরিশদের ব্যাটিং লাইনআপ। তাসকিন-এবাদতদের তোপের মুখে ১৫৫ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারী আয়ারল্যান্ড। এর ফলে ১৮৩ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে টাইগাররা। যা নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়।
শনিবার (১৮ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে রেকর্ড ৩৩৮ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৩০ ওভার ৫ বল খেলে ১৫৫ রান তুলে অলআউট হয়ে গেছে সফরকারীরা।
বাংলাদেশের দেওয়া ৩৩৯ রানের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করতে নেমে ধীরগতির ব্যাটিংয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে আয়ারল্যান্ড। দুই আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ধোয়েনি ও পল স্টার্লিংকে দুই প্রান্ত থেকেই চেপে ধরেন তাসকিন-মুস্তাফিজরা। প্রথম ছয় ওভারে সফরকারীরা কোনো উইকেট না হারালেও স্কোরবোর্ডে তুলে ২৩ রান। আর তাতে আইরিশদের প্রয়োজনীয় রান রেইট বেড়ে দাঁড়ায় ৭ এর ওপরে।
শুরুর সেই চাপ কমাতে এরপর আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন দুই আরিশ ওপেনার। কাউন্টার অ্যাটাকে কিছুটা হলেও সাফল্য পেয়েছেন তারা। পাওয়ার প্লের শেষের ৪ ওভারে ২৮ রান তোলে আইরিশরা। তাতে শুরুর পাওয়ার প্লে শেষে বিনা উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৫১ রান যোগ করেছে আয়ারল্যান্ড। এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারেনি আইরিশদের উদ্বোধনী জুটি। বিপজ্জনক হয়ে উঠার আগেই ধোয়েনিকে সাজঘরে ফেরান সাকিব আল হাসান। এই স্পিনারের করা ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেছেন তিনি।
ধোয়েনি ফেরার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেলেন না পল স্টার্লিং। একটি করে চার ও ছক্কায় ২২ রানে থেমেছেন এই ওপেনার। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি খানিকটা শর্ট লেন্থে রেখেছিলেন এবাদত হোসেন। সেটা আগে থেকেই বুঝতে পেরে পুল করতে যান স্টার্লিং কিন্তু বলে বাড়তি বাউন্স থাকায় ঠিকমতো টাইমিং করতে পাররেননি এই ওপেনার। তাতে বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে মুশফিকের গ্লাভসে জমা পড়ে। এদিন উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিক।
আগের ওভারে স্টার্লিংকে ফেরানোর পর নিজের পরের ওভাররেই হ্যারি ট্যাক্টরকেও ফেরান এবাদত। ঠিক যেন আগের ওভারের কার্বন কপি! পার্থক্য ছিল শুধু ব্যাটারে, স্টার্লিংয়ের জায়গায় ট্যাক্টর। এবারও ওভারের দ্বিতীয় বলটি শট লেন্থে ছিল তাতে ব্যাটার পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরার আগে ট্যাক্টরের ব্যাট থেকে এসেছে ৮ বলে ৩ রান।
এবাদত পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নেওয়ার পর দুই প্রান্ত থেকেই পেস আক্রমণে যান তামিম। আর বোলিংয়ে ফিরেই অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন তাসকিন। ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে বার্লবির্নিকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন এই পেসার। তার আগে ৫ রান এসেছে আইরিশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে। তাসকিনের এই ওভারের কোনো বল থেকেই রান নিতে পারেনি আইরিশরা, ফলে উইকেট মেইডেইন পান তিনি।
নিজের পরের ওভারে আক্রমণে ফিরে আবারও উইকেটের দেখা পান তাসকিন। এবার তার শিকার টাকার। ওভারের প্রথম বলটি শট লেন্থে ফেলে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে রেখেছিলেন এই পেসার, সেখানে অন সাইডে টেনে খেলতে গিয়ে ইয়াসির রাব্বির হাতে ধরা পড়েন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬ রান। ওভারের বাকি বল গুলোতেও কোনো রান দেননি তাসকিন, ফলে পরপর দুটি উইকেট মেইডেন পেয়েছেন এই পেসার।
৬০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ৭৬ রান তুলতেই সাজঘরে টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটার। ১৬ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে আইরিশরা যখন ধুঁকছে তখন দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলার চেষ্টা করেন জর্জ ডকরেল ও কুর্টিস ক্যাম্পার।
ষষ্ঠ উইকেটে এই দুজনে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। তবে অসহায় ছিলেন বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের সামনে। তাদের জুটিতে একশো পার হয় সফরকারীরা। কিন্তু দলীয় রান তিন অঙ স্পর্শ করার পর আর বেশিদূর এগোয়নি এই জুটি। ১৬ রান করা ক্যাম্পারকে ফিরিয়ে ৩৩ রানের এই জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ।
২৪তম ওভারের চতুর্থ বলটি অফ এবং মিডল স্ট্যাম্পের ওপর রেখে ফুল লেন্থে করেছিলেন নাসুম। বলে সামান্য টার্ন থাকায় ডিফেন্স করতে গিয়ে লাইন মিস করেন ক্যাম্পার। তাতে বল সরাসরি পায়ে আঘাত হানলে নাসুমের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি এই আইরিশ অলরাউন্ডার। ফলে রিভিও নেন তিনি। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।
নিজের পরের ওভারে বোলিংয়ে ফিরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন নাসুম। ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান করা গেরেথ ডেলানিকে লেগবিফোরের ফাঁদে ফেলানোর পরের বলেই অ্যান্ড্রি ম্যাকব্রাইনকেও ফিরিয়েছেন এই স্পিনার। মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে রানের খাতা খুলতে পারেননি ম্যাকব্রাইন। ইনিংসে এটা নাসুমের তৃতীয় শিকার।
ব্যাটারদের এমন আসা-যাওয়ার মিছিলেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ডকরেল। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। তার ৪৫ রান শুধুই হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৩০ ওভার ৫ বল খেলে ১৫৫ রান তুলে অলআউট হয়েছে আয়ারল্যান্ড।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ দল। তবে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি তাদের। ব্যক্তিগত ৩ রানের মাথায় আইরিশ পেসার মার্ক অ্যাডায়ারের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর শুরুর সেই চাপ কিছুটা সামলে নেন লিটন দাস এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দলীয় ৪৯ রানের সময় সাজঘরে ফেরেন লিটনও। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে পল স্টার্লিংয়ের হাতে তালুবন্দী হওয়ার আগে তিনি ৩১ বলে ২৬ রান করেছেন।
এরপর দলেকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নেন সাকিব আল হাসান সঙ্গে থাকেন শান্ত। তবে বেশিদূর এই জুটি এগোতে পারেনি। দলীয় ৮১ রানে শান্ত সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত ২৫ রান করে। তখনও অপরপ্রান্তে অবিচল ব্যাট হাতে সাকিব। এরপর উইকেটে আসেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। সাকিবকে নিয়ে গড়েন বড় জুটি। এদিনই সাকিব ওয়ানডেতে নিজের ৭ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
অন্যপ্রান্তে অভিষিক্ত হৃদয়ও দারুণ খেলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধ শতক। যদিও দুজনের সামনেই সেঞ্চুরির সুযোগ থাকলেও কেউই পারেননি ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাতে। ৯৩ রানের মাথায় বিদায় নেন সাকিব। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে ইয়র্কার ধরনের ডেলিভারি করেছিলেন গ্রাহাম হিউম। দূর থেকেই খেলার চেষ্টা করলেন সাকিব। তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে গেল কিপার লরকান টাকারের হাতে। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানাতেই ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা ধরলেন সাকিব।
এই অলরাউন্ডারের বিদায়ের পরই মারমুখী হতে থাকেন হৃদয়। অন্যপ্রান্তে মুশফিুকর রহিম খেলেন টর্নেডো ইনিংস। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকান অভিজ্ঞ এই টাইগার ক্রিকেটার। যদিও শেষ পর্যন্ত অর্ধ শতক তোলার আগেই বিদায় নেন মুশফিক। ২৫ বলে ৪১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।
তখনও ব্যাট হাতে লড়ছিলেন হৃদয়। অবশ্য অভিষেকে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও তা আর পাওয়া হল না। নেহায়েত কপাল মন্দ! সাকিবের মতো নার্ভাস নাইন্টিতে কাটা পড়েন তরুণ এ ব্যাটারও। গ্রাহাম হিউমের করা ৪৬তম ওভাররের পঞ্চম বলটি গুড লেন্থে পড়ে লেগ স্ট্যাম্প বরাবর আসছিল, সেখানে ঘুরে দাঁড়িয়ে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে লফটেট শট খেলতে চেয়েছিলেন হৃদয়। কিন্তু ব্যাটে-বলে কোনো রকম সংযোগই হয়নি, তাতে বল সরাসরি তার উইকেটে আঘাত হানে। শেষপর্যন্ত ৯২ রানে বোল্ড হয়েই থেমে যায় হৃদয়ের ইনিংস, দলের রান তখন ২৯৭।
এরপর দলের হয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন ইয়াসির আলি রাব্বি। যদিও অন্যপ্রান্তে তাসিকন আহমেদ ফিরে যান ১১ রান করে। এরপর রান আউটে কাটা পড়ে রাব্বি ফেরেন ১৭ রান করে। নাসুম আহমেদ অপরাজিত থাকেন ১১ রানে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে তামিম ইকবালের দল । আইরিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট সংগ্রহ ইনিংসের সেরা বোলার গ্রাহাম হিউম।