ধর্ম ও জীবন
হজ প্যাকেজ অমানবিক: হাইকোর্ট

ধর্ম মন্ত্রণালয় একটি অথর্ব মন্ত্রণালয়; হজে যাওয়ার জন্য যে প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে তা অমানবিক। একই সঙ্গে হজ যাত্রীদের জন্য সরকারিভাবে যে হজ প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে তা অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
হজের প্যাকেজ মূল্য পুনঃনির্ধারণ চেয়ে রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট এ মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। আদালত এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করেন।
আদালত বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বাজেট রাখে, কিন্তু বাংলাদেশে এটি নেই। হজের প্যাকেজ মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় আমরা হজে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর গরিব মানুষরা কীভাবে যাবে।
এর আগে রোববার (১২ মার্চ) হজের প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে পুনরায় প্যাকেজ ঘোষণা করতে রিট দায়ের করা হয়। রিটে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়াও যেকোনো এয়ারলাইন্সে টিকিট কেটে হজে যাওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ উজ জামান জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
সম্প্রতি ঘোষিত হজ প্যাকেজের খরচ কমিয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্ম ও জীবন
রমজান শুরু কবে, জানা যাবে বুধবার

পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে বৃহস্পতি (২৩ মার্চ) নাকি শুক্রবার (২৪ মার্চ), তা জানা যাবে আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যায়। বাদ মাগরিব সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে সভায় বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি মো. ফরিদুল হক খান।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমীন এ তথ্য জানান।
বুধবার সন্ধ্যায় হিজরি ১৪৪৪ সনের রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে বৃহস্পতিবার থেকে রমজান মাস গণনা শুরু হবে ও মুসলমানরা রোজা রাখবেন। সেক্ষেত্রে বুধবার রাতেই এশার নামাজের পর ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পড়বেন, রোজা রাখতে শেষ রাতে প্রথম সেহরিও খাবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
অন্যদিকে বুধবার চাঁদ দেখা না গেলে বৃহস্পতিবার শাবান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে, রমজান মাস গণনা শুরু হবে শুক্রবার। এক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার এশার নামাজের পর তারাবি নামাজ পড়বেন ও শেষ রাতে খেতে হবে সেহরি।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭ টেলিফোন এবং ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১ ফ্যাক্স নম্বরে বা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) জানানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
হজ পালনে সর্বনিম্ন বয়সসীমার শর্ত তুলে নিল সৌদি

হজ পালনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়সসীমার শর্ত তুলে নিয়েছে সৌদি আরব। সোমবার (২০ মার্চ) এ তথ্য জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
‘হজযাত্রীদের বয়সসীমা সংক্রান্ত’ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজকীয় সৌদি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী হিজরি ১৪৪৪/২০২৩ সনের হজে হজযাত্রীদের নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা নেই। ১২ বছরের নিচের বয়সের ব্যক্তিরাও পবিত্র হজ পালন করতে পারবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশক্রমে অবহিত করা হলো।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি এবার হজ পালনে সৌদি আরবের দেওয়া চারটি শর্তের কথা জানিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। শর্তগুলোর মধ্যে ছিল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯), মেনিনজাইটিস ও সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা দিতে হবে। যারা হজ করেননি এবার হজে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া। হজ পালনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে ১২ বছর। হজযাত্রীর কোনো বড় দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকা যাবে না।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
চলতি বছর (২০২৩) সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজে যেতে নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ইতোমধ্যে চার দফা নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বাড়ানো সময় অনুযায়ী নিবন্ধনের শেষ সময় ২১ মার্চ। কিন্তু এখনও কোটা পূরণ হয়নি।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মোট এক লাখ ১২ হাজার ৬৬৪ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এরমধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৭৪৯ জন ও বেসরকারিভাবে এক লাখ ২ হাজার ৯১৫ জন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
রোজার আগে বিশ্বনবি যে দোয়া বেশি বেশি পড়তেন

পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তার জানান দেয় রজব ও শাবান মাস। এ কারণেই রমজানের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব ও শাবান জুড়ে ইবাদত ও রোজা রেখে প্রস্তুতি নিতেন। আর বেশি বেশি একটি দোয়া পড়তেন।
আরবি চান্দ্রবর্ষের সপ্তম মাস হলো রজব। ‘রজব’ অর্থ ‘সম্ভ্রান্ত’, ‘প্রাচুর্যময়’, ‘মহান’। হারাম তথা সম্মানিত ও যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ মাসগুলোর অন্যতম হলো রজব। চারটি মাসকে হারাম মাস হিসেবে ধরা হয়। এগুলো হলো জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা আসমান-জমিন সৃষ্টি করার দিন থেকেই বছর হয় বারো মাসে। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত; তিনটি একাধারে জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং চতুর্থটি হলো ‘রজব মুদার’, যা জুমাদাল উখরা ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী।’ (মুসলিম)।
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘যখন রজব মাস আসত, তা আমরা নবীজি (সা.)–এর আমলের আধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম।’ কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়, নবীজি (সা.) রজব মাসে ১০টি রোজা রাখতেন, শাবান মাসে ২০টি রোজা রাখতেন; রমজান মাসে ৩০টি রোজা রাখতেন। (দারিমি)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রজব হলো আল্লাহর মাস, শাবান হলো আমার (নবীজির) মাস; রমজান হলো আমার উম্মতের মাস।’ (তিরমিজি)।
‘যে ব্যক্তি রজব মাসে (ইবাদত দ্বারা) খেত চাষ দিলো না এবং শাবান মাসে (ইবাদতের মাধ্যমে) খেত আগাছামুক্ত করল না; সে রমজান মাসে (ইবাদতের) ফসল তুলতে পারবে না।’ (বায়হাকি)।
রজব মাসের বিশেষ আমল হলো বেশি বেশি নফল রোজা রাখা। বিশেষত প্রতি সোমবার, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং মাসের ১, ১০; ১৩, ১৪, ১৫; ২০, ২৯, ৩০ তারিখ রোজা রাখা। অধিক হারে নফল নামাজ পড়া।
রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব ও শাবান মাসব্যাপী এ দোয়া বেশি পরিমাণে পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান’। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রজব ও শাবান মাস জুড়ে এ দোয়াটি বেশি বেশি করে পড়ার এবং আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ লাভের তাওফিক দান করুন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
হজের খরচ সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার দাবি

হজের খরচ চার লাখ ৫০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ। গতকাল শুক্রবার (১৭ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানান তারা। এ সময় বক্তারা বলেন, আগামী ২০ মার্চের মধ্যে এ দাবি না মানলে ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
এসময় সভাপতির বক্তব্যে পরিষদর সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, হজের খরচ কমিয়ে প্যাকেজ ঘোষণা করা সরকারের দায়িত্ব হলেও তা না করে সিন্ডিকেটের সদস্যদের লাভবান করতে সাধারণ ধর্মপ্রাণ হজযাত্রীদের কষ্টের জমানো অর্থ দিয়ে বিমানের লোকসান কাটিয়ে লাভবান করতে প্রায় এক লাখ টাকা বিমান ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। যে ক্ষেত্রে সরকারের ভর্তুকি দেয়ার কথা সেক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করে অমানবিক হজ প্যাকেজ ঘোষণার মাধ্যমে সরকার মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে। একই সাথে সরকার কোরবানির সময়ে পশুর চামড়ার মূল্য কমিয়ে দিয়ে গরিবের হক নষ্ট করে অমানবিক কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় তিনি বিমান ভাড়া হ্রাস এবং সকল প্রকার ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করে ভর্তুকি দিয়ে হলেও পাশের দেশগুলোর সাথে মিল রেখে হজের খরচ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পুনর্নির্ধারণ করার দাবি জানান।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুহাম্মাদ মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তৃতা করেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, প্রজন্ম পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদুজ্জামান মোল্লা, মো. আবু শোয়াইব খান, মো. আবদুল কুদ্দুস, মো. আবদুর রাজ্জাক, মুফতি মুজিবুর রহমান, মো. শফিকুল ইসলাম বিশ্বাস ও মুফতি ইসহাক মোহাম্মদ আল আমিন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
রোজার জন্য যেসব প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বৃহস্পতি কিংবা শুক্রবার রমজানের রোজা শুরু হবে। রমজান এমন একটি মাস, যার রয়েছে এত এত বৈশিষ্ট্য, এত এত মাহাত্ম্য। এই মাসকে কী দিয়ে বরণ করবে মুমিন মুসলমান? কোন জিনিস দিয়ে তাকে ‘খোশ আমদেদ‘ জানাবে? রমজানের রোজার জন্য এখনই কী কী প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি?
রমজানের মর্যাদা অন্য সব মাসের চেয়ে বেশি। এ মাসে আল্লাহ তাআলা মানুষের সর্বোত্তম জীবন ব্যবস্থা পবিত্র কোরআনুল কারিম দান করেছেন। যাতে মানুষ এ কোরআনের আলোকে জীবন পরিচালনা করতে পারে। কেননা কোরআনের আলোকে জীবন গড়ার মাস রমজান। এ মাসে রোজাদারের জন্য অনেক নির্দেশনা রয়েছে। রমজানের প্রস্তুতিতে এ নির্দেশনাগুলো মেনে চলা আবশ্যক। তাহলো-
১. কোরআন তেলাওয়াত
অল্প সময় কিংবা অল্প পরিমাণে হলেও রমজানে প্রতিদিন পবিত্র কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা। কোরআন তেলাওয়াতের সময় অবশ্যই তা বিশুদ্ধভাবে তারতিলের সঙ্গে তেলাওয়াত করা। যেটুকু পরিমাণ তেলাওয়াত করবেন তার অর্থ ও ব্যাখ্যা জেনে নেয়াও উত্তম।
২. তারাবির তেলাওয়াত
যারা খতম তারাবি পড়বেন, তাদের জন্য প্রতিদিনের কোরআন তেলাওয়াতের নির্ধারিত অংশ দেখে নেওয়া উত্তম। এতে নামাজে মনোযোগ বাড়বে।
৩. জামাতে নামাজ পড়া
এখন থেকেই প্রতিদিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। যদিও সবসময়ই জামাতে নামাজ আদায় করা গুরুত্বপূর্ণ। ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় রমজানে মানুষের মাঝে জামাতে নামাজ পড়ার চেতনা উজ্জীবিত হয়। তাই এ সময়টিতে জামাতে নামাজের প্রতি মনোযোগী হওয়া।
৪. তারাবিহ পড়া
রমজানে নিয়মিত তারাবিহ নামাজ আদায় করা। এ নামাজের প্রসঙ্গে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে রমজানের রাতের (তারাবিহ) নামাজ পড়বে, তার বিগত জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ এ হাদিস থেকেই তারাবিহ নামাজের গুরুত্ব সুস্পষ্ট হয়ে যায়।
৫. রাত জেগে ইবাদত
তারাবিহ নামাজ যদিও গভীর রাতের লম্বা ক্বেরাতের ইবাদত। কিন্তু তা বিভিন্ন কারণে গভীর রাতে কিংবা দীর্ঘ সময়ে আদায় করা হয় না। তাই একাকি হলেও রমজানজুড়ে রাত জাগরণ করে জিকির-আজকার, নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও তওবা-ইসতেগফারে রাত অতিবাহিত করার প্রস্তুতি নেওয়া উত্তম।
৬. কম ঘুমানোর চেষ্টা করা
রমজানের ফজিলত পেতে মাসজুড়ে কম ঘুমানোর চেষ্টা করা। আর রমজানের অন্যতম ৩টি শিক্ষার একটি হলো কম ঘুমানো। বছরব্যাপী এ অভ্যাস তৈরিতে রমজানের বিকল্প নেই। তাই বরকতময় এ মাসে সময়কে কাজে লাগানোর পাশাপাশি কম ঘুমানোর বাস্তব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার প্রস্তুতি নেওয়া।
৭. অন্যকে ইফতার করানো
প্রতিদিন সাধ্য মোতাবেক কাউকে ইফতার করানোর প্রস্তুতি নেওয়া। রমজানে অন্যকে ইফতার করানোর ফজিলত ও সওয়াব অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে-
হজরত যায়েদ ইবনে জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাল, তারও রোজাদারের ন্যায় সাওয়াব হবে; তবে (এ কারণে) রোজাদারের সাওয়াব বা নেকি বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ)
রোজাদারকে ইফতার করালে তার প্রতিদান আল্লাহ তাআলা নিজের পক্ষ থেকে প্রদান করবেন, রোজাদারের পক্ষ থেকে নয়। এ কারণেই রোজাদারের কোনো নেকি হ্রাস করা হবে না। এটা বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ।
সুতরাং সামান্য পানি বা খাবার দিয়ে হলেও অন্যকে ইফতারে শরিক করা। অসহায়, গরিব, মুসাফির, আলিম, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-পড়শিদের মধ্য থেকে কাউকে না কাউকে নিয়মিত ইফতার করানোর প্রস্তুতি নেওয়া।
৮. রমজানে নারীর কাজে সহযোগিতা করা
রমজানের রোজা নারী-পুরুষ সবার জন্যই ফরজ। তাই ঘরের কাজে নারীদের সহযোগিতা করা। আর এটি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতও বটে। বছরের অন্যান্য সময় না পারলেও অন্তত রমজানে যতটুকু সম্ভব নারীদের কাজে সহযোগিতা করার প্রস্তুতি নেওয়া।
৯. সেহরির সময় প্রতিবেশিকে জাগিয়ে দেওয়া
রমজানে রাত জেগে ইবাদতের কারণে অনেকে ঘুমে থাকে। তারা সেহরি খেতে ওঠতে পারে না। তাই আগে ওঠলে সেহরির সময় বাড়ির লোকদের কিংবা প্রতিবেশিদের জাগিয়ে দেওয়া। যাতে তারাও সেহরি গ্রহণ করে বরকত অর্জন করতে পারে।
১০. মন্দ ত্যাগ করে ভালো অভ্যাস গঠন করা
রমজানজুড়ে অন্যকে গালিগালাজ কিংবা সমালোচনা বন্ধ করে দেওয়া। হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি থেকে দূরে থাকা। অধীনস্ত কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী, সন্তান-সন্ততি কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি সদয় হওয়া। নিজেদের মধ্যে ক্ষমার অভ্যাস গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেওয়া।
১১. গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা
রমজানের নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। যারা কবিরা গুনাহে অভ্যস্ত কিংবা যে কোনো গুনাহে অভ্যস্ত তারা সব ধরনের গুনাহ থেকে নিজেদের বিরত রাখার প্রস্তুতি এখন থেকে নেওয়াই জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত কাজগুলোর ব্যাপারে রমজান মাসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বছরজুড়ে তা আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।